নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:৪৭ এএম, ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
আমাদের শিক্ষার্থীরা জিপিএ ৫ পাচ্ছে, ভাল ফলাফল করছে কিন্তু সে কি সৎ মানুষ হচ্ছে, সে কি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী হচ্ছে? লাখো শহিদের রক্তে ভেজা এই মাটি ও মানুষের প্রতি তাঁর যে দায়িত্ব ও কর্তব্য আছে, সে কি সেই দায়িত্ব ও কর্তব্যগুলো ঠিকমত পালন করছে? তাঁরা যদি সেই দায়িত্ববোধ সম্পর্কে সচেতন থাকত, তাহলে আমাদের (সকলেই না) ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষকদের মধ্যে এত অনৈতিকতা, এত লোভ কেন?
চলতি মাসেই শুরু হচ্ছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা। তীব্র প্রতিযোগিতার কারণে কেউ কেউ আবার অবৈধ পন্থা অবলম্বন করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির উপায় খোঁজে। তাই ভর্তিকে কেন্দ্র করে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের মধ্যে নানা সংশয় দেখা দিচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিকে কেন্দ্র করে সংশয়, আশঙ্কা ও বাস্তবতার বিষয়ে বাংলা ইনসাইডারকে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এবং রোকেয়া হলের প্রভোস্ট ড. জিনাত হুদা অহিদ। তাঁর সাক্ষাতকারটি নিন্মে তুলে ধরা হল বাংলা ইনসাইডারের পাঠকদের জন্যে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আসন পেতে শিক্ষার্থীরা তীব্র প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয়। প্রতিযোগিতার এই বিষয়টিকে সমাজবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে আপনি কিভাবে মূল্যায়ন করবেন?
উচ্চ শিক্ষার দ্বার বিশ্বের অন্যান্য দেশে অনেক সীমিত। তবে বাংলাদেশে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের দ্বার অবারিত। সমাজতাত্ত্বিক ব্যাখ্যানুযায়ী, সামাজিক ভাবে যদি একটি পরিবারকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই, সেই পরিবারের সন্তানটি যদি উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত না হয়, তবে সেই পরিবারটিকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। এখানে শিক্ষা হচ্ছে একটি সামাজিক মই, যেটা বেয়ে বেয়ে একটি শিক্ষার্থী এবং সেই সঙ্গে তাঁর পরিবারও এগিয়ে যায়। শিক্ষাই আমাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে নিয়ে যায়। বৈষম্যহীন সমাজ গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও শিক্ষা একটি বড় বিষয়। আবার উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত বা সম্পদশালী একটি পরিবারে সন্তানও যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙ্গিনা না পেরোয় তাহলে সেই পরিবারটির সামাজিকভাবে মর্যাদা অনুজ্জ্বল হয়ে যায়। এছাড়াও আমাদের দেশে শিক্ষার অবাধ সুযোগ থাকায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার জন্যে ধনী-গরীব, ধর্ম-বর্ণ, শহর-গ্রাম সকল অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়। এইসব কারণেই বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আসন পেতে এমন তীব্র থেকে তীব্রতর প্রতিযোগিতা বিরাজ করে।
আমাদের আগামী প্রজন্মকে আমরা উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করার পাশাপাশি কতটা মানবিক চেতনাবোধ ও সামাজিক দায়িত্ববোধ সম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারছি?
এখানে একটি বিষয় হচ্ছে, বেঁচে থাকার সংগ্রাম, জীবনে প্রতিষ্ঠিত হবার সংগ্রাম, সমাজে সামাজিক মর্যাদা পাবার সংগ্রাম। এজন্য আমাদেরকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে হয়। এটা হচ্ছে কঠিন বাস্তবতা। আরেকটি বিষয় হচ্ছে মানুষের মানবিক গুণাবলি, চেতানাবোধ। এগুলোও শিক্ষার অমূল্য অনুষঙ্গ। একটা সময় আমরা শুনতাম লেখাপড়া করে যে, গাড়িঘোড়া চড়ে সে, এখন কিন্তু এই বিষয়টা আর সত্য না। অনেক শিক্ষিত মানুষের সামাজিক অবস্থানও এখন অনেক নাজুক দেখা যায়। আবার অন্যদিকে লেখাপড়া না করেও, দুর্নীতি, অসততা ও রাজনৈতিক জগতে দুর্বৃত্তায়ন করে অনেক টাকা পয়সা অর্জন করে কেউ কেউ। আমাদের সমাজে তাদেরকেই মানুষ সালাম ঠুকছে। যেগুলোকে আমরা মানবিক গুণ বলি, সততার সঙ্গে চলা, জীবন জগত আলোকিত করা, নিজেকে ভোগবিলাস ও লোভ-লালসা থেকে দূরে রাখা, নিজেকে প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা এগুলোইতো শিক্ষার মুল লক্ষ্য। আমরা বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, এই জায়গায় আমরা দিনে দিনে হেলে পরছি, দুর্বল হয়ে পরছি, মানবিক গুণাবলির স্থানগুলো আমরা ধরে রাখতে পারছি না।
আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে প্রকৃত মানুষ গড়ে তোলার জন্য আমাদের করণীয় কি?
আমাদের শিক্ষার্থীরা জিপিএ ৫ পাচ্ছে, ভাল ফলাফল করছে কিন্তু সে কি সৎ মানুষ হচ্ছে, সে কি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী হচ্ছে? লাখো শহিদের রক্তে ভেজা এই মাটি ও মানুষের প্রতি তাঁর যে দায়িত্ব ও কর্তব্য আছে, সে কি সেই দায়িত্ব ও কর্তব্যগুলো ঠিকমত পালন করছে? তাঁরা যদি সেই দায়িত্ববোধ সম্পর্কে সচেতন থাকত, তাহলে আমাদের (সকলেই না) ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষকদের মধ্যে এত অনৈতিকতা, এত লোভ কেন? দেশপ্রেমের চেতনা, ভালো মানুষ হওয়ার শিক্ষা, সমাজকে ভালবাসার শিক্ষা, সবার সঙ্গে সহযোগিতা মূলক আচরণের শিক্ষা, প্রাথমিক শিক্ষার কারিকুলামেই থাকা প্রয়োজন। কিন্তু প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষায় এই বিষয়গুলো এখন একেবারেই অনুপস্থিত। ছোট বেলা থেকেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও পরিবারের এই বিষয়গুলোর প্রতি জোড় দেওয়া উচিৎ।
অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদেরকে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যরিষ্টার হওয়ার জন্য বাড়তি চাপ দেয়। এই বিষয়ে আপনার মতামত কি?
অভিভাবকদের নিকট আমার অনুরোধ যে, আপনারা আপনাদের সন্তানকে জানুন, তাদের ইচ্ছাকে গুরুত্ব দিন। বাচ্চাদের মনস্তত্ত্বে হিমালয় পর্বতের মত বোঝা মাখিয়ে দিয়েন না। আমাদের সমাজে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যারিস্টারের যেমন প্রয়োজন আছে, তেমনি আমাদের খেলোয়াড়, সাংস্কৃতিক কর্মী বা অন্যান্য সেক্টরের লোকও প্রয়োজন আছে। ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার না হলে যে মানসম্মান থাকবে না বিষয়টা এমন না। প্রতিটি শিশুর মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিভা আছে, তাঁর সেই প্রতিভাকে বিকশিত হওয়ার সুযোগ করে দিন। তাদেরকে ভাল মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার দিকে নজর দিন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি ইচ্ছুক ছাত্রছাত্রীদের প্রতি আপনার পরামর্শ বা উপদেশ কি?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ না পেলে, বা অন্য কোন স্থানে ভর্তি হতে না পারলে, হতাশ হওয়ার কিছু নাই। বর্তমান সরকার দেশের বিভিন্ন স্থানে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে দিয়েছেন, এগুলোতেও ভালো মানের লেখাপড়ার সুযোগ আছে। সুতরাং কোন একটি নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে না পারলে হেরে যাওয়ার কিছু নাই, সবকিছু হারিয়ে ফেলারও কোনো কারণ নাই। কারোও মধ্যে যদি কোন যোগ্যতা, একাগ্রতা, নিষ্ঠা বা মেধা থাকে, সে যেখানেই থাকুক, যে বিশ্ববিদ্যালয়েই পড়ুক না কেন, সে সামনের দিকে এগিয়ে যাবেই আজ অথবা কাল। তাঁকে কেউ আটকিয়ে রাখতে পারবে না।
বাংলা ইনসাইডার/আরকে/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয় বুয়েট ঢাবি
মন্তব্য করুন
এসএসসি ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড
মন্তব্য করুন
আগামী ৩০ জুন থেকে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা। শেষ হবে ১১ আগস্ট। আর ব্যবহারিক পরীক্ষা ১২ আগস্ট থেকে ২১ আগস্টের মধ্যে শেষ করতে হবে। মঙ্গলবার আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর আবুল বাশার স্বাক্ষরিত রুটিন প্রকাশ করা হয়েছে।
রুটিন অনুযায়ী, ৩০ জুন থেকে শুরু হচ্ছে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। প্রথম দিন বাংলা প্রথমপত্রের পরীক্ষা হবে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে পরীক্ষা চলবে দুপুর ১টা পর্যন্ত।
এর আগে চলতি বছর ২০২৪ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা জুন মাসের শেষ সপ্তাহে শুরু করার প্রস্তাব পাঠায় আন্তঃশিক্ষা বোর্ড। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর আজ ৩০ জুন পরীক্ষার তারিখ ঠিক করে রুটিন প্রকাশ করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন
ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)
ক্যাম্পাসে গত বুধবার মধ্যরাতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের প্রবেশের প্রতিক্রিয়ায় চলমান
আন্দোলনে একটি ‘অন্ধকার সংগঠনের’ ইন্ধন দেখছেন প্রতিষ্ঠানটির পাঁচ ছাত্র। এই ছাত্ররা
বলছেন, শিক্ষার্থীদের আবেগকে ব্যবহার করে একটি অন্ধকার সংগঠনের ইন্ধনে বুয়েটে বিশৃঙ্খলা
সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বুয়েটে কার্যক্রম চালাচ্ছে ইসলামী ছাত্রশিবির ও নিষিদ্ধ
সংগঠন হিযবুত তাহরীর। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির হয়ে যিনিই কথা বলছেন, তাঁকেই ‘ছাত্রলীগ’
ট্যাগ দিয়ে বারবার অত্যাচার করা হচ্ছে৷
শনিবার (৩০ মার্চ) বেলা তিনটার পর বুয়েট শহীদ মিনারে সংবাদ সম্মেলন
করে এসব কথা বলা হয়। এতে অংশ নেওয়া পাঁচ বুয়েট ছাত্র নিজেদের ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়
বিশ্বাসী ছেলে’ হিসেবে দাবি করেছেন।
মধ্যরাতে বুয়েটে ছাত্রলীগের প্রবেশের ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ
হোসেন বুয়েট থেকে স্থায়ী বহিষ্কার ও ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালকের (ডিএসডব্লিউ)
পদত্যাগসহ পাঁচ দফা দাবিতে টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা বর্জন করে আজ দ্বিতীয় দিনের মতো ক্যাম্পাসে
সকাল ৭টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন কয়েক শ শিক্ষার্থী৷
এমন প্রেক্ষাপটে বেলা তিনটার পর ওই পাঁচ ছাত্র বুয়েট শহীদ মিনারের
সামনে সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান তানভীর মাহমুদ। তিনি দাবি
করেন, তারা পাঁচজন কোনো ছাত্রসংগঠনের পদধারী নন। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘২০২৩ সালের
জুলাইয়ে সুনামগঞ্জের হাওরে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র ও নাশকতার অভিযোগে বুয়েটের প্রাক্তন
এবং বর্তমান ৩৪ জন শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার হন। তাদের নামে এখনো আদালতে মামলা চলমান এবং
সবাই জামিনে আছেন৷ এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা কয়েকজন সাধারণ শিক্ষার্থী মৌলবাদের বিরুদ্ধে
মানববন্ধন করি৷ এই মানববন্ধন করার পর আমাদের চিহ্নিত করে ব্যক্তিগত আক্রমণ এবং জবাবদিহি
চাওয়া হয়। বিভিন্ন হলের কক্ষে কক্ষে রাত ১১টা থেকে ৪টা পর্যন্ত ডেকে জবাবদিহি চাওয়া
হয়। এমনকি মানববন্ধনকে একটি অপরাধের সঙ্গে তুলনা করে আমাদের হল থেকে বের করে দেওয়ারও
হুমকি দেওয়া হয়।’
তানভীর মাহমুদ বলেন, ‘বুয়েটের অভ্যন্তরীণ ফেসবুক গ্রুপগুলোতে আমাদের
পক্ষে কেউ নিজের কোনো মতামত রাখতে গেলে তাঁকে বুলিং এবং নানা ধরনের হুমকির শিকার হতে
হয়৷ আমাদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক কিংবা পরিচয় থাকায় অনেককেই কটাক্ষের স্বীকার হতে হয়৷
যে কারোরই পারিবারিকভাবে বা ব্যক্তিগতভাবে কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তির সঙ্গে, বিশেষ করে
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের শক্তি বা আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত হলেই বা পরিচয় থাকলে
তাঁকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা হয়; পরিবার নিয়েও অশালীন মন্তব্য করা হয় অনলাইন ও অফলাইনে।’ তিনি
আরও বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী আমাদের মতো গুটিকয়েক ছেলের বিরুদ্ধে কারা
এবং কাদের ইন্ধনে এসব হচ্ছে, তা একটু ভেবে দেখার সময় হয়েছে৷ মিথ্যাচার করে আমাদের দোষী
করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করার চেষ্টা করছে একটি মৌলবাদী গোষ্ঠী।’
সংবাদ সম্মেলনে ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ সংগঠনের কার্যক্রমের বিষয়ে কয়েকটি
ঘটনা তুলে ধরেন আরেক বুয়েট ছাত্র আশিক আলম৷ তিনি বলেন, ‘ক্যাম্পাসের কিছু ঘটনা এবং
আমাদের ওপর একের পর এক আক্রমণ প্রমাণ করে দেয় যে ছাত্ররাজনীতিবিহীন বুয়েট ক্যাম্পাসে
এখন প্রকাশ্যেই হিযবুত তাহরীর তাদের কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে৷ এই নিষিদ্ধ সংগঠন তাদের স্বার্থ
হাসিল করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটি আবেগ নিয়ে৷ বুয়েটে আবরার ফাহাদ ভাইয়ের সঙ্গে খুব
খারাপ একটি ঘটনা ঘটেছে৷ আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই৷ কিন্তু হিযবুত তাহরীর ও
শিবির সাধারণ শিক্ষার্থীদের এই আবেগকে পুঁজি করে প্রকাশ্যেই নিজেদের প্রচার-প্রচারণা
চালাচ্ছে৷’ তিনি আরও বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির হয়ে যিনিই কথা বলবেন, তাঁকেই
ছাত্রলীগ ট্যাগ দিয়ে বারবার অত্যাচার করা হচ্ছে৷ আমাদের সঙ্গে উপস্থিত হওয়ার জন্য অনেক
শিক্ষার্থী থাকলেও ভয়ে ও হুমকিতে আসতে পারছেন না৷ আরও ২০-২৫ জন এখানে আসতে চাইলেও তাঁদের
ভয় দেখানো হচ্ছে, হুমকি দেওয়া হচ্ছে৷’
ছাত্ররাজনীতিমুক্ত বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রগতিশীল রাজনীতিতে বিশ্বাসীদের
দমিয়ে রেখে অন্ধকার রাজনীতি শিক্ষার্থীদের মাথায় ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন
আশিক৷ তিনি বলেন, ‘আমরা সুষ্ঠুভাবে ক্যাম্পাসে পড়াশোনা করতে চাই, পরীক্ষা দিতে চাই৷
সবাই নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী মতাদর্শে বিশ্বাস করুক। তবে স্বাধীনতাবিরোধী কোনো চেতনাকে
আমরা কখনোই বুয়েটে ঠাঁই পেতে দেব না।’
বুধবার মধ্যরাতে বুয়েটে ছাত্রলীগের প্রবেশের বিষয়ে আশিক আলমের ভাষ্য, ‘আমরা শুনেছি, সেখানে একটি ছাত্রসংগঠনের সভাপতি এসেছিলেন। তিনি আসতেই পারেন। তিনি তো কোনো রাজনৈতিক কার্যক্রম চালাননি৷’
মন্তব্য করুন
ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ক্যাম্পাসে গত বুধবার মধ্যরাতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের প্রবেশের প্রতিক্রিয়ায় চলমান আন্দোলনে একটি ‘অন্ধকার সংগঠনের’ ইন্ধন দেখছেন প্রতিষ্ঠানটির পাঁচ ছাত্র। এই ছাত্ররা বলছেন, শিক্ষার্থীদের আবেগকে ব্যবহার করে একটি অন্ধকার সংগঠনের ইন্ধনে বুয়েটে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বুয়েটে কার্যক্রম চালাচ্ছে ইসলামী ছাত্রশিবির ও নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীর। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির হয়ে যিনিই কথা বলছেন, তাঁকেই ‘ছাত্রলীগ’ ট্যাগ দিয়ে বারবার অত্যাচার করা হচ্ছে৷