নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:১৬ পিএম, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭
মুঘল বাদশাহ আলমগীর তাঁর পুত্রকে একজন শিক্ষকের কাছে পড়াতে দিয়েছিলেন। একদিন তিনি খোঁজ নিতে গিয়ে দেখেন তাঁর পুত্র শাহজাদা পাত্র থেকে পানি ঢালছেন আর শিক্ষক নিজ হাত দিয়ে পা ধুয়ে নিচ্ছেন। এই দৃশ্য দেখে বাদশাহ ওই শিক্ষককে ডেকে পাঠান। বাদশাহ’র আদেশ পেয়ে শিক্ষকতো ভয়ে মুষড়ে গেলেন। তিনি ভাবলেন বাদশাহ’র সন্তানকে দিয়ে পায়ে পানি ঢালিয়ে তিনি বড় স্পর্ধার কাজ করে ফেলেছেন।
পরদিন বাদশাহর সামনে হাজির হলেন শিক্ষক। বাদশাহ তাকে বললেন আমার ছেলেকে কেমন শিক্ষা দিলেন যে আপনার পায়ে পানি ঢেলে দেবে আর আপনি নিজের হাত দিয়েই পা পরিষ্কার করবেন? আপনি তাকে এমন শিক্ষা দিলেন না কেন সে নিজেই নিজের হাত দিয়ে আপনার পা ধুয়ে দেয়? এটি কাদের নেওয়াজের কবিতা থেকে নেওয়া হলেও ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক এমনই হওয়া উচিত। কিন্তু বর্তমানে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক এর পুরোপুরি বিপরীত।
কিছুদিন আগেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র প্রতিনিধির অংশগ্রহণ ছাড়া উপাচার্য প্যানেল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় শিক্ষকদের আক্রমণাত্মক ও মারমুখী অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন মহলে সমালোচনাও হয়। এই ঘটনায় দুইপক্ষের অবস্থান না দেখে কল্পনা করা যাবে না ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক কতোটা খারাপ অবস্থানে চলে যাচ্ছে। শুধুমাত্র এই একটি ঘটনাই নয়, দিনের পর দিন ছাত্র-শিক্ষকদের বিভিন্ন দ্বন্দ্বের কথা উঠে আসছে পত্রিকা, টেলিভিশনসহ সব গণমাধ্যমে।
বর্তমানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, সংগ্রামের কথা শোনা যায়। এই আন্দোলন সংগ্রামের অধিকাংশই ঘটে কোনো শিক্ষকের বিরুদ্ধে। কোনো শিক্ষককে নিয়ে কিছু পেলেই শুরু হয়ে যায় আন্দোলন।
অন্যদিকে শিক্ষকদের কুকীর্তিও বেড়ে গেছে। শিক্ষক শব্দটি শুনলেই আমাদের মনে আসে অনেক মান্য গন্য ব্যক্তি, তাকে সবসময় সম্মান করতে হবে। কিন্তু বর্তমানে অনেক শিক্ষকই নিজেদের মান নিজেরাই রাখছেন না। তাঁরা খবরের শিরোনাম হচ্ছেন নারী নির্যাতন, কোচিং বাণিজ্যের মতো খারাপ কাজের মাধ্যমে।
শিক্ষাক্ষেত্রে এত অসঙ্গতি হচ্ছে শুধুমাত্র ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্ক আগের মতো নেই বলে। কারণ ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্ক ভালো থাকলে কোচিং করার জন্য শিক্ষার্থীদের বাইরে যেতে হতো না। ক্লাসেই তাঁরা সব শিখতে পারতো। ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক ভালো থাকলে শিক্ষার্থীদের মানও এতো নিম্ন হতো না যে তাঁদের পাস করার জন্য পরীক্ষার আগের রাতে নোট খুঁজতে হবে।
সাধারণত শিক্ষার্থীরা, শিক্ষকদের ছেলে-মেয়ের বয়সী হয়ে থাকে। তাই নিজেদের সন্তানের মতই ছাত্র-ছাত্রীদের আদর ও স্নেহ করার কথা শিক্ষকদের। সেই রীতিই এতদিন ছিল কিন্তু বর্তমানে তা নেই। কারণ সেই রীতি থাকলে কোনো শিক্ষক কোনো শিক্ষার্থীর ওপর শারীরীক নির্যাতন করতে পারে না।
অতীতে শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের সুসম্পর্ক, দায়িত্বশীলতা, ন্যায়পরায়ণতা ও রাষ্ট্রের বৃহৎ কল্যাণে যে কোনো ধরনের ত্যাগ স্বীকারের মানসিকতা এখন অনেকটাই ইতিহাস। দলীয় ক্যাডারবাজি, চাটুকারিতা আর নোংরা রাজনীতির প্রভাব এতটাই প্রকট আকার ধারণ করেছে যে, পিতৃসমতুল্য শিক্ষকদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সম্পর্ক এখন তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। এমনিভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কি শিখবে?
বাংলা ইনসাইডার/এসএম/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
২০২৪ সালের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট
(এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফরম পূরণের সময়সীমা ঘোষণা করেছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড। অনলাইনে
ফরম পূরণ কার্যক্রম শুরু হবে আগামী ১৬ এপ্রিল। জরিমানা ছাড়া ফরম পূরণ চলবে ২৫ এপ্রিল
পর্যন্ত।
বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) আন্তঃশিক্ষা
বোর্ড থেকে ফরম পূরণ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা
নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মো. আবুল বাশার স্বাক্ষরিত ওই নির্দেশনায় বলা হয়, বিলম্ব ফিসহ ফরম
পূরণ করা যাবে ২৯ এপ্রিল থেকে ২ মে পর্যন্ত। পরীক্ষা শুরুর সম্ভাব্য তারিখ ৩০ জুন।
ফরম পূরণের ক্ষেত্রে বিজ্ঞান শাখার
পরীক্ষার্থীদের জন্য ২৬৮০ টাকা, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ২১২০ টাকা করে ফি নির্ধারণ
করা হয়েছে।
শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনায় বলা হয়,
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আগামী ৩১ মার্চের নির্বাচনী পরীক্ষার ফল প্রকাশ করতে হবে।
মন্তব্য করুন
তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত প্রথম ও দ্বিতীয় সাময়িকের মতো আর কোনো পরীক্ষা হবে না। তবে নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে ধারাবাহিক মূল্যায়ন চলবে।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এই তথ্য জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ।
গত বছর প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। প্রথম বছর প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন এই শিক্ষাক্রম শুরু হয়। আর গত জানুয়ারি শুরু হওয়া নতুন শিক্ষাবর্ষে ওই তিন শ্রেণি ছাড়াও নতুন করে দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে চালু হয়েছে এই শিক্ষাক্রম। পর্যায়ক্রমে ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণিতে (উচ্চমাধ্যমিক) বাস্তবায়িত হবে নতুন শিক্ষাক্রম। নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের বড় অংশ হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধারাবাহিকভাবে (শিখনকালীন)।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো বছরে তিনটি পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হতো।
যেহেতু এ বছর প্রাথমিকের তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত নতুন শিক্ষাক্রম চালু হয়েছে আর তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত প্রথম সাময়িক, দ্বিতীয় সাময়িক-এটি আর থাকবে না। মূল্যায়ন হবে, কিন্তু আগের মতো গতানুগতিক না। ধারাবাহিক মূল্যায়ন থাকবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষাক্রম
মন্তব্য করুন
আগামী জুনের শেষ সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হতে পারে চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা। শীঘ্রই রুটিনসংক্রান্ত প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। বুধবার (২০ মার্চ) এসব তথ্য জানান আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক ও ঢাকা বোর্ডের অধ্যাপক তপন কুমার সরকার।
সাধারণত করোনার আগে ফেব্রুয়ারিতে শুরু হতো এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা আর এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হতো এপ্রিলে। কিন্তু করোনার ধাক্কায় এলোমেলো হয়ে যায় পরীক্ষার সূচি।
২০২০ সালে করোনা মহামারির কারণে এসএসসি পরীক্ষা হলেও এইচএসসি পরীক্ষা না নিয়ে সাবজেক্ট ম্যাপিং করে শিক্ষার্থীদের সনদ দেওয়া হয়। ২০২১ সালে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা শুধু গ্রুপভিত্তিক ৩টি নৈর্বাচনিক বিষয়ে পরীক্ষার সময় ও পরীক্ষার নম্বর হ্রাস করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নেওয়া হয়। সে সিলেবাস কিছুটা বাড়িয়ে ২০২২ সালে নেওয়া হয় এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা। ওই বছর পরীক্ষার সময় কিছুটা কম ছিল।
আর ২০২৩ সালের এসএসসি ও এইচএসসি সমমানের পরীক্ষা হয়েছে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে। তবে এসএসসির আইসিটি ছাড়া এ দুই পাবলিক পরীক্ষা অন্যান্য বিষয়ে পূর্ণ সময় ও নম্বরে নেওয়া হয়েছিল।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বুয়েট ভর্তি পরীক্ষা
মন্তব্য করুন