নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১২ জুন, ২০২১
বাংলাদেশের শিক্ষাখাত এখন হুমকির মুখে। আজ আবারও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। মহামারি করোনাভাইরাসে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্তের তালিকায়ও নেই বাংলাদেশ। তবুও টানা প্রায় দীর্ঘ ১৪ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ফলে শিক্ষাখাতে বড় ধরণের বিপর্যয়ের আশংকা করছেন বিশেষজ্ঞরা। যে পাঁচটি কারণে মূলত শিক্ষাখাত ধ্বংস হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে সেগুলো হল:
১. অনলাইন ক্লাসের কার্যকারিতা নেই: করোনাকালে সারাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অনলাইন কার্যক্রম চালু হলেও সেটি তেমন কার্যকর নয়। শিক্ষক-শিক্ষার্থী কেউই এই প্রযুক্তিতে অভ্যস্ত নয়। অনলাইন ক্লাসে শিক্ষক-শিক্ষার্থী উভয়ের কাছেই গুরুত্বহীন হিসেব পরিলক্ষিত হয়। ক্লাসে অংশগ্রহণ করে শিক্ষার্থীর অন্যকাজে ব্যস্ত থাকে। ফলে এই অনলাইন ক্লাসের কার্যকারিতা নেই বললেই চলে। আবার, দেশের সিংহভাগ শিক্ষার্থী বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে যারা থাকে তাদের অনেকের কাছেই এখনও পৌঁছেনি প্রযুক্তির সুবিধাও।
২. ইন্টারনেটে আসক্তি: শিক্ষার্থীরা বিশেষ করে রাজধানী সহ সারাদেশের জেলা শহরে যারা বাস করে এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করছে প্রতিনিয়ত তারা অনলাইন ক্লাসের কথা বলে ইন্টারনেট ব্যবহারে আসক্ত হয়ে পড়েছে। পড়ালেখা বাদ দিয়ে তারা সারাদিনই ফেসবুক, টিকটক, লাইকি, পাবজি, ফ্রি-ফায়ার ইত্যাদি মোবাইল এপসে আসক্ত হচ্ছে এবং সেই সাথে অপরাধের পথেই ধাবিত হচ্ছে। অনেকে আবারও এই আসক্তির চাহিদা পূরণ করতে না পারায় করছে আত্মহত্যাও।
৩. অবকাঠামোগত সঙ্কট: দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকার ফলে সেগুলোর কোন অবকাঠামোগত উন্নয়ন হচ্ছে না। ফলে সেখানে এক ধরণের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। আবার অনেক বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধও হয়ে যাচ্ছে। কারণ, দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকার ফলে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে লোকসান হচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়ে কর্তৃপক্ষ বিলুপ্ত করে দিচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
৪. বেসরকারি শিক্ষকদের দুরবস্থা: বর্তমানে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষকদের অবস্থা খুবই খারাপ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষকরা ঠিকমত বেতন পাচ্ছেন না। ফলে তাদের জীবন-জীবিকা নির্বাহ করা অনেকটা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। উপায়ন্তর না দেখে অনেকেই বেঁছে নিচ্ছে ভিন্ন কর্মসংস্থান।
৫. চাকরি ক্ষেত্রে সঙ্কট: করোনাকালে চাকরির পরীক্ষা এবং নিয়োগ, সবকিছুই থমকে গেছে। হাতেগোনা কয়েকটি নিয়োগ পরীক্ষা হলেও বিসিএস সহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক পরীক্ষাই এখন হচ্ছে না। ফলে চাকরি প্রত্যাশিদের মাঝে দেখা দিচ্ছে চরম হতাশা, ভবিষ্যৎ হয়ে পড়েছে অনিশ্চিত। কর্মক্ষেত্রে নতুনদের যে একটি প্রবাহ থাকে সেটিও থমকে গেছে।
এই সবকিছু মিলিয়েই দেশের শিক্ষাখাত চরম বিপর্যয়ের মুখে রয়েছে। শিক্ষাখাতের চরম বিপর্যয় দেখে কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছে যে, শিক্ষাখাত কি ধ্বংস হয়ে যাবে?
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয় বুয়েট ঢাবি
মন্তব্য করুন
এসএসসি ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড
মন্তব্য করুন
আগামী ৩০ জুন থেকে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা। শেষ হবে ১১ আগস্ট। আর ব্যবহারিক পরীক্ষা ১২ আগস্ট থেকে ২১ আগস্টের মধ্যে শেষ করতে হবে। মঙ্গলবার আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর আবুল বাশার স্বাক্ষরিত রুটিন প্রকাশ করা হয়েছে।
রুটিন অনুযায়ী, ৩০ জুন থেকে শুরু হচ্ছে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। প্রথম দিন বাংলা প্রথমপত্রের পরীক্ষা হবে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে পরীক্ষা চলবে দুপুর ১টা পর্যন্ত।
এর আগে চলতি বছর ২০২৪ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা জুন মাসের শেষ সপ্তাহে শুরু করার প্রস্তাব পাঠায় আন্তঃশিক্ষা বোর্ড। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর আজ ৩০ জুন পরীক্ষার তারিখ ঠিক করে রুটিন প্রকাশ করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন
ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)
ক্যাম্পাসে গত বুধবার মধ্যরাতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের প্রবেশের প্রতিক্রিয়ায় চলমান
আন্দোলনে একটি ‘অন্ধকার সংগঠনের’ ইন্ধন দেখছেন প্রতিষ্ঠানটির পাঁচ ছাত্র। এই ছাত্ররা
বলছেন, শিক্ষার্থীদের আবেগকে ব্যবহার করে একটি অন্ধকার সংগঠনের ইন্ধনে বুয়েটে বিশৃঙ্খলা
সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বুয়েটে কার্যক্রম চালাচ্ছে ইসলামী ছাত্রশিবির ও নিষিদ্ধ
সংগঠন হিযবুত তাহরীর। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির হয়ে যিনিই কথা বলছেন, তাঁকেই ‘ছাত্রলীগ’
ট্যাগ দিয়ে বারবার অত্যাচার করা হচ্ছে৷
শনিবার (৩০ মার্চ) বেলা তিনটার পর বুয়েট শহীদ মিনারে সংবাদ সম্মেলন
করে এসব কথা বলা হয়। এতে অংশ নেওয়া পাঁচ বুয়েট ছাত্র নিজেদের ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়
বিশ্বাসী ছেলে’ হিসেবে দাবি করেছেন।
মধ্যরাতে বুয়েটে ছাত্রলীগের প্রবেশের ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ
হোসেন বুয়েট থেকে স্থায়ী বহিষ্কার ও ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালকের (ডিএসডব্লিউ)
পদত্যাগসহ পাঁচ দফা দাবিতে টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা বর্জন করে আজ দ্বিতীয় দিনের মতো ক্যাম্পাসে
সকাল ৭টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন কয়েক শ শিক্ষার্থী৷
এমন প্রেক্ষাপটে বেলা তিনটার পর ওই পাঁচ ছাত্র বুয়েট শহীদ মিনারের
সামনে সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান তানভীর মাহমুদ। তিনি দাবি
করেন, তারা পাঁচজন কোনো ছাত্রসংগঠনের পদধারী নন। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘২০২৩ সালের
জুলাইয়ে সুনামগঞ্জের হাওরে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র ও নাশকতার অভিযোগে বুয়েটের প্রাক্তন
এবং বর্তমান ৩৪ জন শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার হন। তাদের নামে এখনো আদালতে মামলা চলমান এবং
সবাই জামিনে আছেন৷ এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা কয়েকজন সাধারণ শিক্ষার্থী মৌলবাদের বিরুদ্ধে
মানববন্ধন করি৷ এই মানববন্ধন করার পর আমাদের চিহ্নিত করে ব্যক্তিগত আক্রমণ এবং জবাবদিহি
চাওয়া হয়। বিভিন্ন হলের কক্ষে কক্ষে রাত ১১টা থেকে ৪টা পর্যন্ত ডেকে জবাবদিহি চাওয়া
হয়। এমনকি মানববন্ধনকে একটি অপরাধের সঙ্গে তুলনা করে আমাদের হল থেকে বের করে দেওয়ারও
হুমকি দেওয়া হয়।’
তানভীর মাহমুদ বলেন, ‘বুয়েটের অভ্যন্তরীণ ফেসবুক গ্রুপগুলোতে আমাদের
পক্ষে কেউ নিজের কোনো মতামত রাখতে গেলে তাঁকে বুলিং এবং নানা ধরনের হুমকির শিকার হতে
হয়৷ আমাদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক কিংবা পরিচয় থাকায় অনেককেই কটাক্ষের স্বীকার হতে হয়৷
যে কারোরই পারিবারিকভাবে বা ব্যক্তিগতভাবে কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তির সঙ্গে, বিশেষ করে
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের শক্তি বা আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত হলেই বা পরিচয় থাকলে
তাঁকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা হয়; পরিবার নিয়েও অশালীন মন্তব্য করা হয় অনলাইন ও অফলাইনে।’ তিনি
আরও বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী আমাদের মতো গুটিকয়েক ছেলের বিরুদ্ধে কারা
এবং কাদের ইন্ধনে এসব হচ্ছে, তা একটু ভেবে দেখার সময় হয়েছে৷ মিথ্যাচার করে আমাদের দোষী
করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করার চেষ্টা করছে একটি মৌলবাদী গোষ্ঠী।’
সংবাদ সম্মেলনে ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ সংগঠনের কার্যক্রমের বিষয়ে কয়েকটি
ঘটনা তুলে ধরেন আরেক বুয়েট ছাত্র আশিক আলম৷ তিনি বলেন, ‘ক্যাম্পাসের কিছু ঘটনা এবং
আমাদের ওপর একের পর এক আক্রমণ প্রমাণ করে দেয় যে ছাত্ররাজনীতিবিহীন বুয়েট ক্যাম্পাসে
এখন প্রকাশ্যেই হিযবুত তাহরীর তাদের কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে৷ এই নিষিদ্ধ সংগঠন তাদের স্বার্থ
হাসিল করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটি আবেগ নিয়ে৷ বুয়েটে আবরার ফাহাদ ভাইয়ের সঙ্গে খুব
খারাপ একটি ঘটনা ঘটেছে৷ আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই৷ কিন্তু হিযবুত তাহরীর ও
শিবির সাধারণ শিক্ষার্থীদের এই আবেগকে পুঁজি করে প্রকাশ্যেই নিজেদের প্রচার-প্রচারণা
চালাচ্ছে৷’ তিনি আরও বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির হয়ে যিনিই কথা বলবেন, তাঁকেই
ছাত্রলীগ ট্যাগ দিয়ে বারবার অত্যাচার করা হচ্ছে৷ আমাদের সঙ্গে উপস্থিত হওয়ার জন্য অনেক
শিক্ষার্থী থাকলেও ভয়ে ও হুমকিতে আসতে পারছেন না৷ আরও ২০-২৫ জন এখানে আসতে চাইলেও তাঁদের
ভয় দেখানো হচ্ছে, হুমকি দেওয়া হচ্ছে৷’
ছাত্ররাজনীতিমুক্ত বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রগতিশীল রাজনীতিতে বিশ্বাসীদের
দমিয়ে রেখে অন্ধকার রাজনীতি শিক্ষার্থীদের মাথায় ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন
আশিক৷ তিনি বলেন, ‘আমরা সুষ্ঠুভাবে ক্যাম্পাসে পড়াশোনা করতে চাই, পরীক্ষা দিতে চাই৷
সবাই নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী মতাদর্শে বিশ্বাস করুক। তবে স্বাধীনতাবিরোধী কোনো চেতনাকে
আমরা কখনোই বুয়েটে ঠাঁই পেতে দেব না।’
বুধবার মধ্যরাতে বুয়েটে ছাত্রলীগের প্রবেশের বিষয়ে আশিক আলমের ভাষ্য, ‘আমরা শুনেছি, সেখানে একটি ছাত্রসংগঠনের সভাপতি এসেছিলেন। তিনি আসতেই পারেন। তিনি তো কোনো রাজনৈতিক কার্যক্রম চালাননি৷’
মন্তব্য করুন
ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ক্যাম্পাসে গত বুধবার মধ্যরাতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের প্রবেশের প্রতিক্রিয়ায় চলমান আন্দোলনে একটি ‘অন্ধকার সংগঠনের’ ইন্ধন দেখছেন প্রতিষ্ঠানটির পাঁচ ছাত্র। এই ছাত্ররা বলছেন, শিক্ষার্থীদের আবেগকে ব্যবহার করে একটি অন্ধকার সংগঠনের ইন্ধনে বুয়েটে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বুয়েটে কার্যক্রম চালাচ্ছে ইসলামী ছাত্রশিবির ও নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীর। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির হয়ে যিনিই কথা বলছেন, তাঁকেই ‘ছাত্রলীগ’ ট্যাগ দিয়ে বারবার অত্যাচার করা হচ্ছে৷