নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ এএম, ০৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮
ফেব্রুয়ারি মাস এলে ভাষা নিয়ে আমাদের চিন্তাভাবনা বিকশিত হয়। মাতৃভাষা, বাংলা ভাষা ও সাধারণভাবে ভাষা নিয়ে প্রবন্ধ-নিবন্ধ লেখা হয়, মিডিয়াতে ঢেউ ওঠে, কিন্তু ফেব্রুয়ারি শেষ হলে এই মনোযোগও ফুরিয়ে যায়। আমার এই লেখটিও ফেব্রুয়ারির ভাবনা থেকে তৈরি, কিন্তু আমি চেষ্টা করি ভাষা নিয়ে আমার চিন্তাভাবনা সারা বছর সক্রিয় রাখতে। আমার সুবিধা এই যে, একজন শিক্ষক হিসেবে সারা বছর আমি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সময় কাটাই- শ্রেণীকক্ষে, শ্রেণীকক্ষের বাইরে ভাষা নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলতে পারি, ভাষার প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা অথবা এর অভাব সম্পর্কে জানতে পারি। এবং মাঝে মধ্যেই এসব বিষয় নিয়ে লিখতে পারি। তবে আমিও মনে করি ফেব্রুয়ারি এক বিশেষ অনুভূতি সৃষ্টি করে। ভাষা নিয়ে ভাবতে অনুপ্রাণিত করে। ফলে ফেব্রুয়ারিতে ভাষা বিষয়ে কিছু না কিছু লিখতে উৎসাহ জাগে।
আজ আমার লেখার বিষয় তরুণদের ভাষা। প্রথমেই বলে নেওয়া ভাল, একজন ভাষা ব্যবহারকারী তার ভাষা শেখে পরিবারে, সমাজে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। মা এবং বাবা,ভাইবোন ও অন্যান্যরা যেভাবে তাকে ভাষা শেখায়, সেভাবেই শেখে। সেই ভাষা আরও সমৃদ্ধ হয় যখন সে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যায়, সমাজের সদস্য হয়।
পরিবারে ভাষার যে চর্চা হয়, সেই ভাষাই তার অধিকারের বিষয় হয়। আমি দেখেছি, আমেরিকা বা কানাডাতে অনেক বাঙ্গালি পরিবারের সন্তানেরা বাংলায় কথা বলতে পারে না, লিখতে বা পড়তে পারা তো দূরের কথা। এইসব পরিবারের বাবা মা রা তাদের সঙ্গে ইংরেজিতে কথা বলেন, যেহেতু সন্তানদের ওই ভাষাতেই কাজ কর্ম করতে হবে। অথচ কোরিয়া থেকে যাওয়া অভিবাসীরা তাদের সন্তানদের তাদের ভাষায় দক্ষ করে তোলে। বাঙ্গালি সন্তানদের ক্ষেত্রে বাংলা না শেখার দায়টা তাই সন্তানদের নয়, দায় বাবা মার।তারা যদি বাংলার প্রতি দায়বদ্ধ না হন, বাংলার প্রতি তাদের ভালবাসা না থাকে, তাহলে কি আর করার থাকে।
আজকের তরুণরা যে বাংলাভাষা ব্যবহার করে তা কতটা বাংলা তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। আমি নিজেও কষ্ট পাই, যখন তাদের বাংলা চৌরাস্তা থেকে উঠে আসে। খিস্তি-খেউড়ের শব্দপদ অকাতরে তাদের ভাষায় চলে আসে। তাদের বাংলায় ইংরেজি নানা শব্দ থাকে অনেক অংশ জুড়ে, এবং বাংলা বিশেষণ ও ক্রিয়াপদও চলে যায় ইংরেজির দখলে।কিন্তু এ নিয়ে তরুণদের ওপর দোষারোপের কোন কারণ নেই, কারণ তারা যে ভাষা-বাস্তবতায় বড় হচ্ছে, তার চরিত্র জুড়ে আছে এইসব সমস্যা। এই সমস্যা, এইখানে বলে নেওয়া ভাল, বাংলা ভাষায় (এবং হিন্দি ও অন্যান্য ভারতীয় ভাষায়) যতটা, ততটা কোন পশ্চিমা ভাষায় মোটেও দেখা যায় না। ডাচ, ফরাসি, ইংরেজি বা জার্মান ভাষা একে অপরের থেকে এবং অন্যান্য ভাষা থেকে অনেক শব্দ গ্রহণ করেছে, কিন্তু সেগুলি আত্মীকরণ করে নিয়েছে। ঘা ওঠা আঙুলের মতো সেগুলো ভাষায় শরীরে জেগে থাকেনা।একজন ওলন্দাজ বা ফরাসী তরুণ তাদের ভাষাটাকে জগাখিচুড়ি ভাষায় পরিণত করেনি বরং খুবই সুললিত ভাবে সুন্দর ভাবে, আস্থার সঙ্গে ব্যবহার করে। আমাদের তরুণদের ভাষা খুবই জগাখিচুড়ি। খুবই ‘ফিউশন এবং কনফিউশনের’ ভাষা।
প্রত্যেক ভাষারই অনেকগুলো রূপ থাকে, যেমন, আঞ্চলিক ও কথ্য ভাষা, ইয়ার দোস্তির ও খিস্তিখেউড়ের ভাষা, চৌরাস্তার ও মাস্তানির ভাষা। একই সঙ্গে সেই ভাষার ব্যবহারকারীরা একটি মানভাষা ব্যবহার করে যে ভাষাটি সাহিত্যের মূলভাষা, বিজ্ঞান, দর্শন চিন্তা ও প্রাতিষ্ঠানিক ও আনুষ্ঠানিক কথাবার্তার ভাষা। এই প্রতিটি রূপই গুরুত্বপূর্ণ এবং কোনটি না থাকলে ভাষার বৈচিত্র্য কমে যায়। ওলন্দাজ বা ফরাসী ভাষাভাষী তরুণরা বিষয়টি জানে। শ্রেণীকক্ষে তারা সবচেয়ে সুন্দর বা মানভাষাটির চর্চা করে;বন্ধুবান্ধবের সাথে আড্ডায় তাদের ভাষাটির একটু বদলে যায়। কিন্তু সবগুলি মিলিয়ে একটা জগাখিচুড়ি তারা তৈরি করে না। এসব ভাষা গৃহীত নানা শব্দপদকে নিজের মতো করে নিয়েছে। সেগুলো আর কানে লাগে না। তারা কখনো ‘সেন্ড করো’ বা ’লাইক করো’ বলবে না। এ দায় শুধু আমাদের তরুণদের।
আমাদের তরুণদের সমস্যাটা তৈরি হয় পরিবার থেকে। এখন বেশিরভাগ পরিবারে পড়ার সংস্কৃতি অনুপস্থিত। আছে দেখার সংস্কৃতি। পড়ার সংস্কৃতি ভাষার শ্রেষ্ঠ রূপগুলির সঙ্গে একজন পড়ুয়াকে পরিচিত করায়। বই না পড়লে ভাষার নানান প্রকাশ সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের কৌতূহল জাগেনা। আর দেখার সংস্কৃতি নির্ভর করে দৃশ্যের ওপর। দৃশ্য হচ্ছে সিনেমা, টেলিভিশন বা কম্পিউটার পর্দায় দেখা ছবি। ছবি বা দৃশ্যের স্থায়িত্ব বেশিক্ষণ নয়, এর গভীরতাও ( যদি না দক্ষ নির্মাতার হাতে সেগুলি তৈরি না হয়) থাকে না।সেজন্য দৃশ্য চোখকে তৃপ্তি দেয়। কিন্তু কমক্ষেত্রেই গভীর চিন্তা জাগায় না, বা একটি বইয়ের পাতা যে রকম যোগাযোগ ঘটায়, তা ঘটায় না। এজন্য ভাষা ব্যবহারে শৃঙ্খলার অভাব দেখা দেয়।
শ্রেণীকক্ষে একজন শিক্ষার্থী তাঁর শিক্ষকের ভাষায় প্রভাবিত হয়, ভাষা ব্যবহারে তাঁকে অনুসরণ করে। যদি শিক্ষক জগাখিচুড়ি ভাষায় কথা বলেন, তাহলে শিক্ষার্থীও তাই করবে। আমি দেখেছি, এখন একজন শিক্ষার্থীকে এত পরীক্ষা দিতে হয়, এত মুখস্ত করতে হয়, এত কোচিং এ যেতে হয় যে, ভাষা নিয়ে চিন্তা করার তাঁর সময়ই থাকে না।
তরুণরা দেখে শেখে। তাছাড়া, তারা সহজে প্রভাবিতও হয়। তরুণরা অনুকরণীয় ব্যক্তিদের, রোল মডেলদের অনুসরণ করে। যদি তারা দেখে অনুসরণীয় ব্যক্তিরাও জগাখিচুড়ি ভাষায় কথা বলছেন, তখন তারাও বলে। টেলিভিশন এক সময় অনেক তারকা তৈরি করত, এখন ইউটিউব করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও অনেক তারকা তৈরি হচ্ছেন, যাদের কথা শোনা যায়। তাদেরও তরুণরা নকল করে। এখন দেখা যায় অনেকেই ভাষা নিয়ে ভাবেন না, যেনতেন ভাবে বলে যান, উচ্চারণে শুদ্ধতার প্রয়োজন বোধ করেন না। অনেকে ইংরেজি শব্দের বহুল মিশ্রণে বাংলাকে ‘বাংলিশ’ করে তোলেন। তরুণরা এদের অনুসরণ করে। আবার কিছু ব্যক্তি আছেন, যারা মনে করেন এসব কোনো ব্যাপার না। তরুণরা যা বলে তাই সই। তাই ‘অস্যাম’।
অবশ্যই নয়। যার ভাষা পরিষ্কার নয়, তাঁর চিন্তাও পরিষ্কার নয়। গ্রামের একজন কৃষক তাঁর ভাষায় (আঞ্চলিক) কথা বলেন, ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করেন না, কিন্তু তিনি তো সুন্দর ভাবে তাঁর মনের ভাব প্রকাশ করতে পারেন।
আমাদের তরুণদের মাতৃভাষা নিয়ে অহংকার করতে হবে, তাদের আত্মবিশ্বাস জাগাতে হবে, তাদেরকে ভাষার সর্বোৎকৃষ্ট প্রকাশের উদাহরণ দিতে হবে।
তবে যে বিষয়টি প্রথমেই নিশ্চিত করতে হবে, তা হচ্ছে এই যে প্রত্যেক ভাষার সবগুলি রূপই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলারও। আমরা আমাদের আঞ্চলিক ভাষার চর্চা করব, যেখানে প্রয়োজন কথ্যভাষা ব্যবহার করব, আবার শিক্ষার জন্য আমাদের সৃজনশীল ও মননশীল চিন্তা প্রকাশের জন্য একটি মানভাষাও ব্যবহার করব। তরুণরা যদি এ বিষয়টি বুঝতে পারে তাহলে বাংলা ভাষার আরো সমৃদ্ধি ঘটবে।
বাংলা ইনসাইডার/ডিজি/ডিকে
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
দেশে একটি সুষ্ঠু
নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে
রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং
সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা
সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ
ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি
সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।
আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা
রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত
অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের
গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান
ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে
দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে
এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক
করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি
একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি
পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার
করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের
সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন
পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন
শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী
লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের
প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন
করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে
সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।
গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে,
তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো
দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের
অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা
পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে
প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ
এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে
নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও
একই ভাবে থেকেছেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি
হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে
যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু
এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার
পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে
তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:২৬ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।
দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই।