নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮
বেগম জিয়া দণ্ডিত হয়ে কারাগারে আছেন। কারাগারে তাঁর দিন কাটছে কষ্টে। ৭৩ বছর বয়সী দুবারের প্রধানমন্ত্রী নির্জন কারা প্রকোষ্ঠে দিন কাটাচ্ছেন। অনেকেই মনে করছেন, সরকার তার প্রতি ‘নিষ্ঠুর’ আচরণ করছেন। কেউ কেউ আগ বাড়িয়ে এমনটাও বলছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী একজন নারী। দু:স্থ, অসহায়দের প্রতি তাঁর সীমাহীন দয়ামায়া। সাম্প্রতিক রোহিঙ্গা ইস্যুতে তিনি মানবিকতার এক নতুন উচ্চতায় পৌছেছেন। বিশ্বব্যাপী তাঁকে বলা হয় ‘মাদার অব হিউম্যানিটি।’ সেই তিনি কীভাবে বেগম জিয়ার প্রতি এত ‘নিষ্ঠুর’ হলেন?’ অনেকে বলছেন ‘শেখ হাসিনার আচরণের সঙ্গে এই ঘটনা যায় না। পুরনো কারাগারে না রেখে বেগম জিয়াকে তো তার বাড়িতেও আটকে রাখা যেত। কিংবা কোনো বাড়ি ভাড়া করে রাখা যেত।’ এই ভাবনায় যারা আপ্লুত তাদের জন্য প্রথমেই প্রয়াত ড. ওয়াজেদ মিয়ার বই ‘বঙ্গবন্ধুকে ঘিরে কিছু স্মৃতি’ বইটার দিকে দৃষ্টি ফেরাতে চাই। বইয়ে আমরা পাই, মুক্তিযুদ্ধের পর জাতির পিতার কাছে আসেন তৎকালীন উপ সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমান। তিনি (জিয়া) জানান যে, খালেদা জিয়ার সঙ্গে তাঁর বনিবনা হচ্ছে না। বঙ্গবন্ধু তাঁকে ধমক দেন এবং জিয়াউর রহমানকে স্ব স্ত্রীক বাড়িতে দাওয়াত দেন। জাতির পিতার এ উপলক্ষ্যে তিনটি শাড়ি কেনেন। একটি দেন পুতুলকে (বেগম খালেদা জিয়ার ডাক নাম), অন্য দুটি দেন শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানাকে। বঙ্গবন্ধু বেগম জিয়াকে তাঁর আরেকটি মেয়ে বলে সম্বোধন করেন এবং তাঁদের (জিয়া দম্পতিকে) সুখে শান্তিতে বসবাসের নির্দেশ দেন।’
যাকে জাতির পিতা সন্তান হিসেবে আপ্যায়ন করেছিলেন, জিয়াই ৭৫ এর বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের অন্যতম পরিকল্পনাকারী। তিনি ১৫ আগস্টের ক্যু পরিকল্পনার কথা জেনেও খুনিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেননি বরং তাঁদের কর্মসিদ্ধিতে সহায়তা করেছেন। আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব নিয়ে শেখ হাসিনা দেশে ফেরার কিছুদিনের মধ্যেই জিয়াউর রহমান এক সামরিক অভ্যুত্থানে নিহত হন। ক্ষমতায় আসেন এরশাদ। অবৈধ, অগণতান্ত্রিক, সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ। ঘটনার দূর্বিপাকে বেগম জিয়াও বিএপির নেতৃত্ব নেন। এরপর শুরু হয় স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই। দুই নেত্রী এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। শেখ হাসিনা জানতেন বেগম জিয়ার স্বামী তার পিতার খুনি, তারপরও শেখ হাসিনা গণতন্ত্রের স্বার্থে, জনগণের অধিকার আদায়ের স্বার্থে খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেন দুদফা। এমনকি ৯১ এর ‘সুক্ষ কারচুপির’ নির্বাচনও মেনে নিয়ে শেখ হাসিনা সংসদীয় গণতন্ত্রের স্বার্থে বেগম জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেন।
কিন্তু ৯১ এ ক্ষমতায় এসেই বেগম জিয়া ৭৫ এর ১৫ আগস্টের খুনিদের রক্ষায় তাঁর স্বামীর পথই অনুসরণ করলেন। আত্মস্বীকৃত খুনিদের কূটনৈতিক চাকরিতে পদোন্নতি দিলেন। কুখ্যাত ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ, যা ৭৫ এর আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিচারের পথ রুদ্ধ করেছিল-তা বাতিল করতে অস্বীকৃতি জানালেন।
৯৬ এ ২১ বছর পর দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেলো আওয়ামী লীগ। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল হলো। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার শুরু হলো। এসময়ই বেগম জিয়া এক বিভৎস কাণ্ড করে বসলেন। ৯৬ এর ১৫ আগস্ট হঠাৎ ঘটা করে তাঁর জন্মদিন উৎসব পালন শুরু করলেন। ১৫ আগস্ট শুধু এক শোকের দিন নয়, জাতীয় কলঙ্কের দিন। বেগম জিয়া ১৯৯১ থেকে ৯৬ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তখন তিনি ১৫ আগস্ট জন্মদিন করেননি। তাছাড়া তার বিয়ের কাবিন, পাসপোর্ট এমনকি স্কুলের সার্টিফিকেট কোথাও ১৫ আগস্ট জন্ম তারিখ নয়। বেগম জিয়া ওই জন্মদিন করেছিলেন স্রেফ আত্মস্বীকৃত খুনিদের প্রতি একাত্মতায়। তীব্র জনমতের চাপে গত দুই বছর এই বিভৎসতা বন্ধ করেছেন বেগম জিয়া। কিন্তু তাঁর হিংস্র রূপতো জাতি দেখেছে। শেখ হাসিনাও তো একজন রক্ত মাংসের মানুষ। এরকম একজন যে আপনার পিতার মৃত্যুদিবসে কুৎসিত উৎসব করে তাকে আপনি কি চোখে দেখবেন? তার প্রতি আপনার কতটুক সহানুভ‚তি জাগবে?
১৫ আগস্টের পর এলো ২১ আগস্ট। বেগম জিয়া ক্ষমতায়। তার ছেলে তারেক জিয়া ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে শেখ হাসিনাকে হত্যার নীল নকশা প্রণয়ন করল। ২০০৪ এর ২১ আগস্টে বঙ্গবন্ধু অ্যভিন্যুতে কি নারকীয় তান্ডব ঘটানো হয়েছিল, তা নতুন করে না বললেও চলে। শেখ হাসিনা সেদিন বেঁচেছিলেন অলৌকিক ভাবেই। প্রিয় পাঠক, আপনার ঘাতকের প্রতি আপনি কি আচরণ করবেন? তারপরও, শেখ হাসিনার অনেক সহ্য ক্ষমতা। তিনি বিষ হজম করেন, তিনি নীলকন্ঠ। সেজন্যই তো বেগম জিয়া ন্যায় বিচার পেয়েছে। সেজন্যই বিচার দীর্ঘ নয় বছর গড়িয়েছে। হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট ঘুরে নিন্ম আদালত রায় দিয়েছে। শেখ হাসিনা যদি প্রতিহিংসা পরায়ন হতেন, তাহলে তো ২০১৪ তেই বেগম জিয়াকে গ্রেপ্তার করতে পারতেন, কিংবা ২০১৫ তে। কিন্তু তিনি তা করেননি। এই রায় দিয়েছে কোর্ট। এটা তাই শেখ হাসিনার নিষ্ঠুরতা নয় প্রতিহিংসাও নয়। এটা হলো বেগম জিয়ার প্রাপ্য প্রায়শ্চিত। তিনি যে সাজানো জন্মদিন করে খুনিদের জন্য উৎসব করেছিলেন, এই কারাভোগ তারই পরিণতি। তিনি যে ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে হত্যার দুরভিসন্ধি করেছিলেন, এ সেই পাপেরই ফল। জিয়া অরফানেজ মামলা তো কেবল উপলক্ষ্য মাত্র। প্রতিহিংসা এবং নিষ্ঠুরতার যে আগুন বেগম জিয়া জ্বালিয়েছিলেন সে আগুনে আজ তিনি দগ্ধ হচ্ছেন।
Read In English: http://bit.ly/2BVkSDX
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
দেশে একটি সুষ্ঠু
নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে
রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং
সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা
সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ
ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি
সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।
আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা
রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত
অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের
গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান
ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে
দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে
এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক
করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি
একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি
পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার
করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের
সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন
পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন
শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী
লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের
প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন
করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে
সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।
গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে,
তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো
দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের
অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা
পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে
প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ
এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে
নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও
একই ভাবে থেকেছেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি
হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে
যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু
এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার
পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে
তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:২৬ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।
দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই।