নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ০৬ অগাস্ট, ২০১৮
আমরা হরিণ শিকার করি তার সুস্বাদু মাংসের লোভে, যদিও হরিণ একটা নিরীহ প্রাণী। হরিণ কারও ক্ষেত খায় না। তাদের বন্ধু বানর জঙ্গলের বিভিন্ন গাছ থেকে যে পাতা ছিঁড়ে মাটিতে ফেলে মূলত সেটা আর বন জঙ্গলের ঘাস খেয়ে জীবন ধারণ করে তারা। তবুও শিকার লোভীদের শিকারের লক্ষ্য হরিণ, তাদের প্রাণ দিতে হয় বিনা অপরাধে। আর তাই ‘আপনা মাংসে হরিণা বৈরী’।
সম্পদে ভরা এই বাংলাদেশে সাগরে জেগে ওঠা নিঝুমদ্বীপ, নলেরচর, কেয়ারিংচর, জাহাজেরচরসহ বেশ কয়েকটি নতুন দ্বীপ যেন আরেক বাংলাদেশের জানান দিচ্ছে। এর মধ্যে নিঝুমদ্বীপে গড়ে উঠেছে ৫০ হাজার লোকের নতুন বসতি ও বনায়ন। এ ছাড়া দ্বীপ হাতিয়ার পশ্চিমে ঢালচর, মৌলভীরচর, তমরুদ্দিরচর,জাগলারচর, ইসলামচর, নঙ্গলিয়ারচর, সাহেব আলীরচর; দক্ষিণে কালামচর, রাস্তারচরসহ অন্তত ১৫টি দ্বীপ ১৫-২০ বছর আগ থেকে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় জেগে উঠেছে। যে মুহূর্তে জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশের সিংহভাগ ভূখণ্ড সমুদ্রে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় বিশ্বজুড়ে তোলপাড় চলছে, ঠিক সে মুহূর্তেই দেশের এই অভাবনীয় সম্ভাবনা সীমাহীন আশা জাগিয়েছে জনমনে। এ ছাড়া ঢালচর, নলেরচর, কেয়ারিংচর, মৌলভীরচরসহ কয়েকটি দ্বীপে জনবসতি জেগে উঠেছে। এসব দ্বীপে বন বিভাগ সবুজ বনায়ন করেছে। তবে জলদস্যু-বনদস্যুদের ভয়ে বাকি দ্বীপগুলোতে এখনো বসবাস শুরু হয়নি। এখনো অন্তত ৪০-৫০টি ডুবোদ্বীপ রয়েছে, যা আগামী পাঁচ-সাত বছরের মধ্যে জেগে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে বলে বিভিন্ন মিডিয়া সূত্রে জানা যায়।
নেদারল্যান্ডস সরকারের আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত অ্যাকচুয়ারি ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের (ইডিপি) এক জরিপ সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সাল পর্যন্ত শুধু নোয়াখালী উপকূলেই সাড়ে ৯০০ বর্গকিলোমিটার ভূমি জেগে ওঠে। নিঝুম দ্বীপ থেকে ৩৫-৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে ভাটার সময় বড় বড় চরভূমির অস্তিত্ব থাকার তথ্য জানতে পেরেছেন বিশেষজ্ঞরা। এসব চর জাগলে সেখানে গড়ে উঠবে জনবসতি তখন বিদেশে জনশক্তি রপ্তানি কিছুটা হলেও কমবে।
ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে দশটি অর্থনৈতিক অঞ্চলের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সারা দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হবে। এ কাজে স্থানীয় জনসাধারণসহ সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। একই সঙ্গে এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে স্থানীয়দের কর্মসংস্থানের সুযোগ দেওয়ার জন্য উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। এই অর্থনৈতিক অঞ্চলের অধিকাংশই হবে চাষ অযোগ্য বা নদী আর সাগর বক্ষে জেগে ওঠা বালিয়াড়িতে হবে যাতে চাষযোগ্য জমি নষ্ট না হয়। সস্তা বিপুল আধা দক্ষ ও দক্ষ শ্রমশক্তির কাজে লাগিয়ে লাভবান হতে পারে বিভিন্ন শিল্পোন্নত দেশ এখানে বিনিয়োগ করে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় যে, বাংলাদেশে প্রতি বছর ২ মিলিয়ন মানে ২০ লাখ মানুষ কর্মক্ষেত্রে আসার যোগ্য হচ্ছে। সে কারণেই ‘দ্য চেঞ্জিং ওয়েলথ অব ন্যশন-২০১৮’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের মানব সম্পদকে অন্যতম সম্পদ হিসেবে উল্লেখ করেছে। যদিও ঐ প্রতিবেদনে আমাদের দেশের অনেক সম্পদের কথা উল্লেখ করতে ভুলে গেছে অথবা এড়িয়ে গেছে, না হয় তাঁরা সম্পদ চিহ্নিত করতে পারেনি। যা হোক, বাংলাদেশের এই মানব সম্পদ ব্যবহারের উপায় খুঁজে বের করা খুব জরুরি। বেসরকারি খাতের বিকাশের যে গতি, সেই গতি এই বিপুল কর্মোপযোগী বাংলাদেশের মানুষকে কাজ দিতে এখনো সক্ষম হচ্ছে না। কারণ সেইমত শিল্পের বিকাশ হয় নি। কিংবা এফ ডি আই বা ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট এর মাধ্যমে প্রস্তাবিত স্পেশাল ইকনমিক জোন (এসইজেড) এখনো সেই অবস্থায় আসেনি। যদিও কাজ চলছে খুব দ্রুত। এসইজেড চালু করা গেলে লাখ লাখ মানুষের কাজের সুযোগ সৃষ্টি হবে এই বাংলাদেশেই।
নদীর দেশ বাংলাদেশ। একাদশ শতাব্দীতে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে নদীর সংখ্যা ছিল প্রায় দেড় হাজার। নদীগুলো ছিল প্রশস্ত গভীর ও পানিতে টইটম্বুর। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বাংলাদেশ পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন নামক সংগঠনের দেওয়া তথ্যমতে দেশে শীতকালে ও গ্রীষ্মকালে পানি থাকে এমন নদীর সংখ্যা ২৩০টি এবং সরকারি হিসাবে শুধু গ্রীষ্মকালে পানি থাকে এমন নদীর সংখ্যা ৩২০টি। অথচ দুঃখের বিষয় এই নদীগুলোর মধ্যে বর্তমানে ১৭টি নদী তার চরিত্র সম্পূর্ণ হারিয়ে মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে গিয়ে ঠেকেছে। ধারণা করা হচ্ছে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আরও ২৫টি নদী দেশের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে।সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, ষাটের দশকে সাড়ে ৭০০’ নদী ছিল বাংলাদেশে। বর্তমানে এ সংখ্যা কমে মাত্র ২৩০টিতে দাঁড়িয়েছে। ৫০ বছরে ধ্বংস হয়ে গেছে ৫২০টি নদী। এইসব নদীর অনেকগুলোই আবার বেঁচে ওঠার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সরকার আবাদযোগ্য জমি রক্ষায় হাইজ বিল্ডিং রিসার্চ ইন্সটিটিউটের (এইচবিআরআই) নদীর বাল থেকে ইট তৈরির একটি গবেষণা প্রকল্প হাতে নিয়েছে, যাতে মাটির পরিবর্তে বালি দিয়ে ইট তৈরি করা যায়। ইউরোপের প্রায় সব দেশেই এমনকি এশিয়ার কোন কোন দেশেই মাটির ইট তৈরি নিষিদ্ধ। কারণ আবাদযোগ্য মাটি তৈরি হতে সময় লাগে হাজার হাজার বছর। এই গবেষণা প্রকল্প শেষে প্রাপ্ত ফরমুলায় জ্বালানি ছাড়াই ইট তৈরি হবে। সারা দেশের বিভিন্ন নদীর চরে ইটের কারখানা গড়ে উঠবে বলে আশা করা যায়। যে সব ইট গার্মেন্টস শিল্পের মতো তাদের পণ্য বিদেশে রপ্তানি করবে।হবে অনেক কর্মসংস্থান, আসবে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা।
অন্য দিকে আমাদের বঙ্গোপসাগরের সীমানা বেড়েছে বিনা যুদ্ধে, যেটা ওয়ার্ম ওয়াটার অঞ্চল। এসব অঞ্চলে সিংগাপুরের মতো গভীর সমুদ্র বন্দর করা যাবে প্রায় হাফ ডজন। ফলে ভারত, মিয়ানমার, চীনসহ আশে পাশের অনেক দেশ এটা ব্যবহার করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারে। কারণ এই সমুদ্রবন্দর বছরের ৩৬৫ দিন ২৪ ঘণ্টা চালু থাকতে পারবে আমাদের সমুদ্র উপকূল ওয়ার্ম ওয়াটারে হওয়ার কারণে। এখানেও কর্ম সংস্থান হবে দেশের বহু মানুষের। একটা গভীর সমুদ্র বন্দর অপারেশন করে সিঙ্গাপুর পৃথিবী অন্যতম ধনয় দেশে রূপান্তরিত হয়েছে সেখানে বাংলাদেশের সম্ভাবনা কত তা বুঝতে বিশেষজ্ঞ হবার প্রয়োজন আছে কি? গ্রাম বাংলায় একটা কথা প্রচলিত আছে যে, ‘গরীবের সুন্দরী মেয়ের দিকে কুনজর থাকে ঘরে বাইরে সবার ‘।
যুদ্ধাপরাধী সাকা চৌধুরীর আত্মীয় নওশাবা, কিংবা সবুর খানের নাতি বা বাংলাদেশ বিরোধীরা নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিশুদের এই অভূতপূর্ব আন্দোলনের সুযোগে নিজের স্বার্থ হাসিলে এমন অপতৎপরতায় কেউ কেউ গোষ্ঠী ধরে পথে আকাশে সক্রিয় হওয়ায় অবাক হওয়ার কিছু আছে কি? শিশুদের একটা পবিত্র আন্দোলন যেভাবে ছিনতাই হয়েছে তার বর্তমান রূপ দেখে বঙ্গবন্ধুর একটা কথা মনে পড়ে যায়। বঙ্গবন্ধুর একটা কথা দিয়ে লেখা শেষ করতে চাই। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, যখন তুমি ভদ্রলোকের সাথে লড়াই করবে, তখন তোমার লড়াই হবে নিপাট ভদ্রলোকের মতোই। কিন্তু যখন কোন বেজন্মার সাথে লড়াই করবে তখন তোমাকে লড়তে হবে বেজন্মার থেকেও বেশি খারাপ হয়ে। তা না হলে তুমি হেরে যাবে।
লেখক: উন্নয়ন কর্মী ও কলামিস্ট
তথ্যঋণঃ বিভিন্ন অনলাইন মিডিয়া, ফেসবুক ও অন্যান্য।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
দেশে একটি সুষ্ঠু
নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে
রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং
সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা
সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ
ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি
সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।
আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা
রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত
অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের
গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান
ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে
দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে
এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক
করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি
একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি
পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার
করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের
সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন
পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন
শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী
লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের
প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন
করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে
সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।
গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে,
তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো
দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের
অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা
পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে
প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ
এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে
নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও
একই ভাবে থেকেছেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি
হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে
যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু
এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার
পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে
তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:২৬ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।
দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই।