নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৫৯ এএম, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
নানা দুর্যোগের দেশ আমাদের এই বাংলাদেশ। আমাদের নানাবিধ দুর্যোগের সাথে বন্যাজনিত দুর্যোগের মোকাবিলাও করতে হয় প্রায় প্রতি বছর। তখন বন্যা কবলিত এলাকায় বন্যার সময় আর বন্যা পরবর্তী সময়ে শুরু হয় নিরাপদ পানির অভাব। নিরাপদ পানি না পাওয়া গেলে, নানা রোগ জীবাণু ছড়ায় অনিরাপদ পানির মাধ্যমে। তাই নিরাপদ পানির জন্য দুনিয়াজুড়ে চলছে আন্দোলন, সংগ্রাম। নিরাপদ পানি ছাড়া সুস্থ জীবন কল্পনা করা অসম্ভব। এটা শুধু গ্রামে নয় শহরেও অনিরাপদ পানির মরণ ছোবল ইদানিং এমন রূপ ধারণ করেছে যে বড় বড় নগরবাসীগণ যেন সাংবাৎসরিক বন্যা কবলিত হয়ে আছেন। নগরীর কোথাও নূন্যতম নিরাপদ পানি আছে আবার কোথাও নেই, মানে আছে আবার নেই।
অনিরাপদ পানির কারণে বাংলাদেশে প্রতি বছর ৭ কোটি মানুষ পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেসি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। গতবছর ২২ মার্চ ২০১৭ তারিখ সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এ তথ্য জানানো হয়।
পানিবাহিত রোগের মধ্যে আছে আর্সেনিক দুষন জনিত রোগ। পানিতে মিশে থাকা অতিমাত্রায় আর্সেনিকের কারণে এই রোগ দেখা দেয়। ত্বকের, হৃদপিন্ডের, লিভার এবং কিডনির সমস্যা এই আর্সেনিক দুষন বা আর্সেনিকোসিস থেকে হতে পারে। কৃমির আক্রমণ একটি প্রধান পানিবাহিত রোগ। ডায়ারিয়া আর কলেরা একটি পানিবাহিত মারাত্মক রোগ। অনিরাপদ পানিতে মিশে থাকা জীবাণু (ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, প্রোটেজোয়া) কারনে ডায়রিয়া হয়ে থাকে।
জন্ডিসও পানিবাহিত রোগ। এটি লিভারকে নষ্ট করে ফেলতে পারে। জন্ডিসের ফলে রোগীর মৃত্যু হতে পারে। এছাড়া পলিও, টাইফয়েড পানিবাহিত রোগ। সলমনেলা টাইফি এবং প্যারাটাইফি নামক পানিবাহিত জীবাণু দিয়ে এই রোগটি হয়ে থাকে। ত্বকের খোস পাচড়া পানিবাহিত রোগ। দুষিত পানির সংস্পর্শে খোস পাচড়া, চুলকানিসহ নানান ত্বকের রোগ হয়। এগুলি ছাড়াও পরোক্ষ ভাবে আরো কিছু রোগের জন্য পানি দায়ী যেমন ডেংগু, ম্যালেরিয়া ইত্যাদি।
সরকারের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল দপ্তর যাকে আমরা ডিপিএইচই বলি তারা আদতে গ্রামের মানুষের জনস্বাস্থ্যের প্রধান উপাদান পানি নিয়ে বেশি কাজ করেন। বড় বড় নগরীতে আছে ওয়াসা। যেমন ঢাকা ওয়াসা, চট্টগ্রাম ওয়াসা, খুলনা ওয়াসা, ইত্যাদি।
পত্রিকায় গত জুলাই মাসে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বরাতে বলা হয়েছে যে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত সোয়া তিন লাখ মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হন। রোগীদের মধ্যে একটা উল্লেখযোগ্য অংশ হচ্ছে শিশু। তাদের মধ্যে ৯০ হাজারের বেশি ডায়রিয়ার রোগী ঢাকার আইসিডিডিআর’বি হাসপাতালে ভর্তি হয়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা মনে করেন, অনেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলেও ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায় কলেরা। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে, এমন অন্তত ২০ শতাংশ রোগী কলেরায় আক্রান্ত হয়ে থাকেন। অন্যদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দুই বছর আগে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন মতে, বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৬৯টি দেশে প্রতিবছর ২৯ মিলিয়ন মানুষ কলেরার কবলে পড়ে। তাদের মধ্যে বছরে অন্তত এক লাখ রোগী মারা যায়। কলেরাও পানিবাহিত রোগ।
অন্যদিকে ঢাকার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে টাইফয়েডে আক্রান্তরা ভিড় করছেন। বিশেষজ্ঞরা বলেন, খাবারের মাধ্যমে জীবাণু সংক্রমিত হয়ে মানুষের শরীরে প্রবেশ করায় রোগটিতে আক্রান্ত হচ্ছে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও বিশুদ্ধ পানির অভাব রয়েছে— এমন এলাকায় টাইফয়েডের প্রাদুর্ভাব বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব মতে, প্রতিবছর দুই কোটি ২০ লাখ লোক টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে মারা যায় দুই লাখ ২০ হাজার।
২০১৭ সালের এক জরীপে বলা হছে ঢাকা শহরে দিনে ২ দশমিক ৩ বিলিয়ন লিটার পানির দরকার। এর বিপরীতে সরবরাহ করা হচ্ছে ১ দশমিক ৯ মিলিয়ন থেকে ২ বিলিয়ন পানি। এর মধ্যে প্রায় ৭৪ শতাংশ পানি তোলা হয় গভীর নলকূপ থেকে আর বাকীটা সরবরাহ করা হয় বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যা থেকে, যা ঢাকা ওয়াসার পাঁচটি শোধনাগারের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়। শহরের বিভিন্ন এলাকায় পানির ঘাটতি একটা খুব স্বাভাবিক ঘটনা। কেউ কেউ এটাকে পাতানো খেলা নামে অভিহিত করেন। পানির ঘাটতি থাকলে গাড়ি বোঝাই পানি বিক্রি হবে অলিখিত বেশি দামে, সঙ্গে আছে বকসিসের নামে জবরদস্তি চাঁদাবাজি। এলাকাবসী চাঁদা তুলে বা অন্য কোনো উপায়ে জমি দেবে আর সেখানে বসবে পাম্প, নতুন পাম্প,সেখানেই ওয়াসার আগ্রহ অনেক বেশি।
নতুন পাম্প বসানো এলাকায় কিছুদিন পানির দূষণ মাত্রা সহনীয় থাকলেও দিন বাড়ার সাথে সাথে পানিদূষণ মাত্রা বাড়তে থাকে। এর কারণ হিসেবে অভিযোগ করা হয় যে, রক্ষানাবেক্ষনের টাকায় শুধু ভিআইপি এলাকায় কাজ হয় বাস্তবে, বাকী সব এলাকায় হয় কাগজ কলমে। তা না হলে পানির ওভারহেড ট্যাংক পরিষ্কার থাকার পরেও প্রায় লাল রঙয়ের পানি আসে বাসায় পানির কল খুললে। যাতে আছে চরম দুর্গন্ধ, কোনো মানুষ সেই পানি কোনো কাজে ব্যবহার করতে পারবেন না। আবার আপাতঃ দৃষ্টিতে পরিষ্কার মনে হলেও সেই সব পানি যে দূষিত তা নানাভাবেই নানাজনে প্রমাণ করেছেন। ঢাকা শহরের ডায়রিয়া, আমাশয়, টাইফয়েডে আক্রান্ত রোগীর যে হিসেব উপরে দিয়েছি তাতেই বুঝা যাবে ঢাকা ওয়াসার পানির কোয়ালিটি নিয়ে।
ঢাকা ওয়াসার একটি সূত্র মতে প্রধানতঃ দুইভাবে ওয়াসার কোয়ালিটি নষ্ট বা দূষিত হয়। এক শোধনের সময় শোধনকারী উপাদানে ফাঁকি দেওয়া বা চুরি করা, আর দ্বিতীয়ত পানি সরবরাহ লাইনের ত্রুটির কারণে। এই ত্রুটি আবার দুইভাবে হয়। এক লাইন বসানোর সময় বাজে কোয়ালিটির পাইপ দিয়ে লাইন বসানোয় ফলে দ্রুত তা নষ্ট হয়ে যায়, যার মেরামতের বরাদ্দ থাকে না। কারণ লাইন বসানোর সময় বলা থাকে যে এই লাইন এত বছর রক্ষণাবেক্ষন ছাড়াই চলবে। কিন্তু বাস্তবে তা চলে না বলেই পাশ দিয়ে বয়ে চলা স্যুয়েরেজের ময়লা দূষিত পদার্থ এসে পানিকে অনিরাপদ আর ব্যবহার অযোগ্য করে তোলে। দ্বিতীয়তঃ বস্তিগুলোতে অবৈধ পানির লাইন দেয় ওয়াসার কিছু অসৎ কর্মী। ৫/১০ টা অবৈধ লাইন দেয় ওয়াসার কর্মীরা মোটা অঙ্কের টাকা খেয়ে। তা দেখে বস্তির তথাকথিত অশিক্ষিতরা লাইন দেওয়ার কৌশলটা শিখে যায়। তারা রাতের অন্ধকারে শত শত লাইন নিয়ে নেয় হয়তো ১০০ মিটার মেইন পাইপ থেকে। এতে মূল পানি সরবরাহ পাইপও ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পানি দূষণের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তবে হ্যাঁ, বস্তির অবৈধ লাইন থেকে মাসে মাসে মাসোহারা পেতে ওয়াসার কর্মীরা কষ্ট পান না। তাই তো সিস্টেম লস কমে না বাড়ে, যদি সুযোগ পায়।
মোহাম্মদপুরে বৌ বাচ্চা নিয়ে বাস করেন আমার এক সদ্য পুরাতন সহকর্মী। তিনি বা তার দপ্তর ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ওয়াসাকে নিরাপদ পানি সরবরাহে অনেক সাহায্য সহযোগিতা করছে বা করছেন। ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ওয়াসার অনেক মজার মজার রিপোর্ট জমা আছে যা দেখলে মনে হবে স্বর্গ থেকে দেবদূত এসেছেন নগরীর জনগণকে পানির পরিসেবা দিতে। ২/৩ দিন আগে তিনি তার বাচ্চাকে গোসল করাতে গিয়ে হতবাক। লাল আয়রনযুক্ত দুর্গন্ধ পানি। উনি খুব আপসেট হলেও মাথা ঠান্ডা করেই খোঁজ নিলেন যে বাসার ওভারহেড ট্যাংক পরিষ্কার আছে কী না। দেখলেন বাসার ওভারহেড ট্যাংক পরিষ্কার, আর তখনই উনার মাথা খারাপ হবার যোগাড়। উনি ফেসবুকে পানির ভিডিও সহ ছবি পোস্ট দিয়ে আক্ষেপ করে অনেক কথাই বললেন। বলার কারণ আছে উনার। উনি বছরে বহু টাকা আয়কর দেন, দেশের জন্য, উন্নয়নের জন্য। তাই তার আক্ষেপের সূত্র ধরে অনেকেই অনেক কথা বলার সুযোগ পেলেন। তাই ধান ভানতে শীবের গীত গেতে দোষের কী! একটা ছড়ার লাইন মনে পড়ে গেলো। এটা ওয়াসার লোকদের জন্য। কারণ সরকারি আমলাদের বিরুদ্ধে কারও কিছুই বলার নেই এক প্রধানমন্ত্রী ছাড়া। কারণ ‘সচিবালয় নির্দেশমালা ২০১৪ আর ‘Rules of Business 1996 (Revised up to July 2012) page 3 (v)’ একটু চোখ বুলালে রাজনীতিবিদদের ক্ষমতা বুঝতে পারবো আমরা। তখন আর তাঁদের গালি না দিয়ে গালিটা যাবে অন্য দিকে। দূষিত পানি নিয়ে তখন হয়তো আমাদের একটা ভরসা হতে পারে আদালত। তাই ওয়াসার তুঘলকি ধরে যদি এমন হয়:
‘চুরি ধরা পড়লে পরে
কোর্টে দিলো অর্ডার করে,
তোমার পোলা তোমার নাতি
এটাই খাবে দিবা রাতি।
তখন বেটা বুঝবে মজা
মিথ্যা টাকার জন্য বাঁচা।
লেখক: উন্নয়ন কর্মী ও কলামিস্ট
তথ্যঋণ: বিভিন্ন অনলাইন পোর্টাল, আনিসুজ্জামান চৌধুরী
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১১:৫৯ এএম, ২৬ মার্চ, ২০২৪
যার গন্তব্য স্থান কোথায় সেটা ঠিক নাই, তিনি রাস্তায় গাড়ি বা রিক্সা যেভাবেই যান না কেন সে শুধু উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘুরে বেড়াবেন। কারণ তার তো গন্তব্য ঠিক নাই। সে গুলশান যাবে, না নিউ মার্কেট যাবে কোথায় যাবে জানে না। বিএনপির অবস্থা এখন ঠিক তাই। তারা জানেই না তাদের আন্দোলনের গন্তব্য কোথায়। জানে না বলেই তারা একের পর এক ভুল করে রাজনীতির কানাগলিতে ঢুকে যাচ্ছে। এর একটি উৎকৃষ্ট প্রমাণ হলো হঠাৎ করে তারা ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েছে। কিন্তু আমাদের বাস্তবতা বুঝতে হবে যে, ভারতীয় পণ্য বর্জন সম্ভব কিনা? এখানে একটা কথা উল্লেখ্য করতে চাই যে, এদেশের জনগণ কার কথায় বিশ্বাস করেন? জনগণ বিশ্বাস করেন একমাত্র দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার কথা। কারণ তিনি যেটা বলেন সেটা করেন। তিনি যদি কোন প্রশ্নবোধক ডাকও দেন তাহলেও বহু লোক সেটাকে গ্রহণ করবে। কারণ তার প্রতি তাদের বিশ্বাস আছে। আর যে দলের নেতারা প্রায় সবাই হয় সাজাপ্রাপ্ত অথবা জামিনে আছে তাদের কথায় কোন লোক কানে দিবে না।
দ্বিতীয়ত হচ্ছে যারা ভারতীয় পণ্য বর্জনের কথা বলছেন তারা তো ভোরে উঠেই আগে ভারতীয় টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করেন। দৈনন্দিন জীবনে যা ব্যবহার করি সবই তো ভারতীয় পণ্য। আমাদের বাজারে কোন জিনিস কিনতে গেলে তো ভারতীয় পণ্যটিই বেশি খুঁজি। তাহলে এখন কি আপনারা পেস্ট দিয়ে ব্রাশ না করে কয়লা ব্যবহার করতে চান? সেটা আপনারা করতে পারেন। কয়লার আজকাল দামও অনেক। আবার ঝামেলা হলো সহজে যাওয়া যায় না। সুতরাং সেটাও আপনাদের জন্য অসুবিধা।
কথায় আছে পাগলে কি না বলে ছাগলে কিনা খায়। সে ধরনের একটা রাজনৈতিক কর্মসূচি আপনারা দিয়ে দিলেন কোন কিছু না ভেবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো এর মধ্য দিয়ে আপনারা আরও রাজনৈতিক গহ্বরে ঢুকে গেলেন। এখন ভাবে ঢুকছেন সেখান থেকে আর কোন দিন বের হতে পারবেন কিনা সেটা একটা প্রশ্ন।
আমরা এখন বিশ্বায়নের যুগে বাস করি। এখন বিশ্বের কোন দেশেরই নিজস্ব পণ্য বলে কিছু নেই। আমাদের সবাইকে সবার ওপর নির্ভর করতে হয়। সেখানে আপনারা ভারতকে বর্জন করবেন কি করে। ভারত তো সবচেয়ে নিকটতম প্রতিবেশি দেশ। তার আগে আমাদের মনে রাখতে হবে ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা যুদ্ধ করেছি। সে সময় আমাদের ৩০ লাখ সহযোদ্ধা শহীদ হয়েছেন। এর সাথে আরও ১০ থেকে ১৫ হাজজার ভারতীয় সৈন্য বাংলাদেশের জন্য বাংলাদেশের মাটিতে তাদের রক্ত ঝড়িয়েছেন। আামরা না হয় আমাদের দেশের জন্য রক্ত দিয়েছি। কিন্তু ভারতীয়রা তো জীবন দিয়েছে প্রতিবেশির জন্য। সুতরাং ভারতের সাথে আমাদের কন্ধনটা হলো রক্তের। রক্ত দিয়ে ভারতের জনগণের সাথে বাংলাদেশের জনগণের বন্ধুত্ব। সেই বন্ধুত্ব আপনি পণ্য বর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ করবেন কি করে? বাসায় আপনার বউ থেকে শুরু করে বাসার কাজের মেয়ে সবাই ভারতের শাড়ি ব্যবহার করেন। তাহলে আগে তাকে বলবেন যে, আপনারা ভারতীয় পণ্য বর্জন করুন।
রিজভী সাহেব বঙ্গবাজার থেকে একটি চাদর কিনে এনে আগুনে পুড়িয়ে দিয়ে একটা নাটক করেছেন মাত্র। বঙ্গবাজারে আরও অনেক কিছু পাওয়া যায় যেগুলো ভারতের নামে চলে। এটা আমরা জানি। রমজান মাসে ইফতারে আপনি পিয়াজু রাখছেন। এটা বাঙালিদের ইফতারের একটা ঐতিহ্য বলতে পারেন। এটা আমরা খাবই। কিন্তু পেঁয়াজ তো আসে ভারত থেকে। তাহলে এখন তো আপনাকে ইফতারে পিয়াজুও বাদ দিতে হবে। এভাবে আপনি কত বাদ দিবেন। অনেক সময় ভারত থেকে ঝড় আসে। সে সময় তাহলে বাতাসও আপনি নিবেন না। এটা বর্জন করবেন। এটা কি সম্ভব? যদি সম্ভবই না হয় তাহলে পাগলের প্রলাপ বলে কি আর আন্দোলন হয়। পাগল তো তার নিজের ভালোটা বুঝে। আপনাদের ভারতীয় পণ্য বর্জনের আহ্বান দিন শেষে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগকেই লাভবান করবে। কারণ আপনাদের আন্দোলনের কোন গন্তব্যই নেই। কোন রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে আন্দোলন করলে জনগণের কাছে যেতে পারবেন সেটাও আপনারা বুঝেন না। আপনারা পড়ে আছেন ভারতরে পণ্য বর্জনের ডাক নিয়ে। ফলে জনগণের আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু এদিকে চাপা পড়ে যাবে। আর সরকারও মহা আরাশ আয়েশে চলবে। আমি জানি না, কোন উৎস থেকে টাকা পয়সা পেয়ে আপনারা নতুন করে এই স্লোগান শুরু করেছেন। কিন্তু আপনাদের এই ডাকে বেনিফিশিয়ারি আওয়ামী লীগই। কারণ আপনারা এবার বিএনপিকে দলগতভাবে কবরে নামানোর জন্য প্রচেষ্টায় নেমেছেন।
মন্তব্য করুন
একাত্তরের ২৫ মার্চের ভয়ালরাত্রি মর্মদাহিক চেতনা প্রবাহের কালখণ্ড।
২০১৭ সালের ১১ মার্চ জাতীয় সংসদে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালোরাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর
বর্বরোচিত ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডকে ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে পালনের এবং আন্তর্জাতিকভাবে
এ দিবসের স্বীকৃতি আদায়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত
হয়েছে। এর আগে ২৫ মার্চকে ‘আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস’ হিসেবে পালনের দাবি ওঠে বাংলাদেশের
সর্বস্তরের মানুষের কাছ থেকে।
এ কথা সকলের কাছে পরিষ্কার যে, নয়মাসে ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হওয়া নিয়ে
কোনো বিতর্ক চলতে পারে না। কারণ রবার্ট পেইন তার Massacre, The Tragedy of
Bangladesh গ্রন্থে ইয়াহিয়া খানের উদ্ধৃতি দিয়েছেন এভাবে- Kill three million of
them and the rest will eat out of our hands. পাকিস্তানি শাসকদের এই সিদ্ধান্তের কারণে
দৈনিক গড়ে ছয় হাজারের বেশি মানুষ খুন হয় সারা বাংলাদেশে। এজন্য ১৯৭১ সালে মার্কিন সিনেটর
এডওয়ার্ড কেনেডি ভারতের শরণার্থী শিবিরগুলো পরিদর্শন করে পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে
সরাসরি গণহত্যা চালানোর অভিযোগ আনেন। ‘গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস’-এ বাংলাদেশের
হত্যাযজ্ঞকে বিশ শতকের ৫টি ভয়ঙ্কর গণহত্যার অন্যতম বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ২০০২ সালে
যুক্তরাষ্ট্রের জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘নিরাপত্তা বিষয়ক আর্কাইভ’ তাদের অবমুক্তকৃত
দলিল প্রকাশ করে। সেখানে বাংলাদেশের নারকীয় হত্যালীলাকে ‘জেনোসাইড’ হিসেবে চিহ্নিত
করা হয়। ঢাকায় অবস্থিত মার্কিন কূটনৈতিকরা সেসময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ব্যাপক গণহত্যার
বর্ণনা দিয়ে ওয়াশিংটনে বার্তা প্রেরণ করেছিল। মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিকরা
একাধিক লেখায় এবং বিশ্বখ্যাত পত্রিকা টাইম, নিউইয়র্ক টাইমস প্রভৃতির সম্পাদকীয়তে পাকিস্তানিদের
গণহত্যা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়। উপরন্তু ১৯৭২ সালে পাকিস্তানে গঠিত
‘হামাদুর রহমান কমিশন’ তাদের পরাজয় অনুসন্ধান করতে গিয়ে প্রমাণ পায় বাংলাদেশে পাকিস্তানি
সেনাদের ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ ও নারী নির্যাতনে ঘটনার। আর এই ভয়ঙ্কর গণহত্যায় কেঁপে উঠেছিল
বিশ্ববিবেক। জর্জ হ্যারিসন ও পণ্ডিত রবিশংকর ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ আয়োজন করেন। দার্শনিক
আঁদ্রে মালরোর নেতৃত্বে গঠিত হয় ‘আন্তর্জাতিক ব্রিগেড’। প্যারিস ও লন্ডনে সরব হয়ে ওঠেন
মানবতাবাদী নেতৃবৃন্দ। বাংলাদেশে পাকিস্তানিদের দ্বারা সংঘটিত গণহত্যা ব্যাপক এবং নিষ্ঠুরতার
দলিল হিসেবে আজও বিশ্বকে নাড়া দেয়।
আসলে বিংশ শতাব্দীতেই ঘটেছে কোটি মানুষের প্রাণসংহার। বিশ্বযুদ্ধ
ও জাতিনিধনের সেই পরিকল্পিত ও ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ ‘জেনোসাইড’ অভিধা পেয়েছে। হিটলারের কনসেনট্রেশন
ক্যাম্প থেকে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানিদের বন্দিশিবির সেই জেনোসাইডের নির্মম ইতিহাসের কথা
বলে। অ্যান্থনী মাসকারেনহাস তাঁর ‘দ্যা রেপ অব বাংলাদেশ’ গ্রন্থের ‘গণহত্যা’ অধ্যায়ে
লিখেছেন ‘সারা প্রদেশ জুড়ে হত্যাকাণ্ডের সুব্যবস্থার নমুনার সঙ্গে জেনোসাইড বা গণহত্যা
শব্দটির আভিধানিক সংজ্ঞার হুবহু মিল রয়েছে।’ তিনি প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা এবং পাকিস্তানি
সেনা কর্মকর্তার মুখ থেকে জেনেছিলেন গণহত্যার লক্ষবস্তু ছিল- ক) বাঙালি সৈনিক, পুলিশ,
আনসার প্রভৃতি খ) হিন্দু সম্প্রদায় গ) আওয়ামী লীগের লোক ঘ) কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী
ঙ) অধ্যাপক ও শিক্ষক যাঁরা বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত। তবে তিনি এটাও লক্ষ
করেছিলেন যে সেনাবাহিনীর নৃশংসতা ছিল নির্বিচার। নিরপরাধ, সাধারণ মানুষকেও শত্রু হিসেবে
গণ্য করেছিল তারা। তাছাড়া তাদের গণহত্যা ছিল ‘শোধন প্রক্রিয়া’ যাকে শাসকগোষ্ঠী রাজনৈতিক
সমস্যার সমাধান বলে মনে করত। সেই সঙ্গে এই বর্বরোচিত উপায়ে প্রদেশটিকে উপনিবেশে পরিণত
করাও ছিল এর অন্যতম উদ্দেশ্য। পাকিস্তানিদের ভাষ্য ছিল- ‘বিচ্ছিন্নতার হুমকি থেকে রক্ষা
করার উদ্দেশ্যে পূর্ব পাকিস্তানকে চিরদিনের জন্য পবিত্র করতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। সেজন্য
যদি বিশ লাখ লোককে হত্যা করতে হয় এবং প্রদেশটিকে তিরিশ বছরের জন্য উপনিবেশ হিসেবে শাসন
করতে হয়, তবুও।’ শাসকদের এ ধরনের মানসিকতার সঙ্গে পশ্চিমাংশের মানুষের ঐক্য ছিল। আর
এজন্যই ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ বলেছিলেন, ‘পশ্চিম পাকিস্তানের
জনগণ হলেন গণহত্যার নীরব দর্শক।’
বাংলাদেশে ১৯৭১-এ পাকিস্তানি শাসক ও তাদের দোসর আলবদর, আলশামস ও রাজাকার বাহিনী পরিকল্পিতভাবে হত্যাযজ্ঞ, ব্যাপক ধ্বংসলীলা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, হিন্দু জনগোষ্ঠী নিধন ও বিতাড়ন, রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বীদের নির্যাতন, মুক্তিযোদ্ধাদের নির্বিচারে হত্যা করেছিল। বাঙালি জাতির প্রতি বিদ্বেষ ও ঘৃণা থেকে তাদের ২৫ মার্চের ‘অপারেশন সার্চলাইট’ শুরু হয়েছিল। সুপরিকল্পিত গণহত্যা ও জাতিগত নিধনযজ্ঞ জেনোসাইড হিসেবে গণ্য হয়েছে। হিটলারের নাজি বাহিনী ইহুদি ও রাশিয়ার যুদ্ধবন্দিদের সঙ্গে যে বর্বরতা দেখিয়েছিল ঠিক একইরকম আচরণ ছিল পাকিস্তানিদের। নিষ্ঠুরতা, পাশবিকতা এবং সাম্প্রদায়িক দৃষ্টি ছিল ঠিক ইহুদিদের প্রতি নাজিদের মতো। নাজিরা ইহুদিদের নিচুজাতের মানুষ হিসেবে বিবেচনা করত এবং তাদের নিধনযজ্ঞের মধ্য দিয়ে ইউরোপের সমস্যা সমাধান করতে চেয়েছিল। অনুরূপভাবে পাকিস্তানি সেনা অফিসারদের মনোভাব ছিল Bengalees have been cleansed and selected properly for at least one generation. নাজিরা প্রথমে তরুণ, যুবক এবং সমর্থ পুরুষদের হত্যা দিয়ে নিধনযজ্ঞ শুরু করলেও শিশু, বৃদ্ধ, নারীদের নির্বিচারে নিধন করতে থাকে ১৯৪১ সালে বলকান অঞ্চল থেকে। যুদ্ধবন্দি হত্যাসহ অন্যান্য নিষ্ঠুরতায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছায় তারা। তাদের অত্যাচারের সঙ্গে পাকিস্তানের সেনাদের আরো মিল রয়েছে হিন্দু নিধনের ঘটনায়। একাত্তরে হিন্দুদের প্রতি শাসকদের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল সুচিন্তিত ও নির্মম।
কারণ তারা ধর্মভিত্তিক হত্যাকাণ্ডকে বৈধ করে তুলেছিল। তারা মনে করত পাকিস্তানের জন্ম হয়েছে এই উপমহাদেশের হিন্দু আধিপত্যের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র আবাসভূমির জন্য মুসলমানদের বিদ্রোহের কারণে। এই হিন্দু বিদ্বেষ মনোভাব বছরের পর বছর লালিত হয়ে এসেছে। এজন্য জেনোসাইডে হিন্দু নিশ্চিহ্ন অনিবার্য হয়ে উঠেছিল। জনৈক গবেষকের ভাষায়- ‘পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আক্রমণের পর গোটা দেশে কেবল একটি উদীয়মান ও অস্তগামী রাষ্ট্রের মধ্যে যুদ্ধ হয়নি একাধিক জাতিগত দ্বন্দ্বও শুরু হয়ে যায়। এতে উভয়পক্ষের নির্যাতন শুরু হয় তবে এর সূত্রপাত ঘটে ২৫শে মার্চের আক্রমণের পর। পাকিস্তানি সরকারের পরিকল্পনার শিকার হয় দুই জনগোষ্ঠী সবচেয়ে বেশি। এর প্রথম শিকার হয় হিন্দু সম্প্রদায়, যাদের কেবল নির্যাতন করা হয়নি বরং তাকে সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও পারিবারিক ভিত্তি ক্ষতিগ্রস্ত এমনকি ধ্বংসও করা হয়। হিন্দুরা তাদের হৃত অবস্থান কোনদিন উদ্ধার করতে পারেনি বাংলাদেশেও। সম্প্রদায়গতভাবে তারাই ১৯৭১ সালের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠী।’ এমনকি ধর্ষণকেও তারা বৈধ বলে মনে করত। চীনের নানকিং-এ জাপানি সেনা কর্তৃক ধর্ষণ, রাশিয়াতে নাৎসিদের বলাৎকার এবং আর্মেনিয়া ও বসনিয়ার নারী নির্যাতনের সাযুজ্য রয়েছে বাঙালি নারী ধর্ষণের ঘটনায়। পাকিস্তানিদের বাঙালি নারী ধর্ষণের লক্ষ ছিল পরিবার, সম্প্রদায় ও জাতিকে মানসিকভাবে আহত ও পঙ্গু করা। মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে গেরিলা যুদ্ধে পরাজিত ও বাঙালি জাতিকে বশীভূত করতে না পারার যাতনা তারা মিটাত নারী ধর্ষণ করে। এটা ছিল ভয়ঙ্কর মনোবিকারজাত। সার্বরা মুসলিম নারীদের ধর্ষণ করেছিল ইথনিক ক্লিনজিং-এর উপায় হিসেবে। দেশ-বিদেশী গবেষক ও সাংবাদিকদের রচনায় যুদ্ধকালীন এসব নির্মম বাস্তবতাই উন্মোচিত হয়েছে।
বিশ শতকের জেনোসাইডের তালিকায় পাকিস্তান একটি অপরাধী রাষ্ট্রের
নাম। কারণ লাখো বাঙালির প্রাণের বিনিময়ে তারা সেদিন তাদের ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে
চেয়েছিল। অথচ বাঙালি জাতিগোষ্ঠী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের আগে পশ্চিম পাকিস্তানের ওপর
কোনোরূপ অন্যায় পীড়ন করেনি। তবু বাঙালির প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকদের বর্বর ও
নৃশংস আচরণ বিশ্বের কাছে তাদের ঘৃণ্য মানসিকতাকে প্রকাশ করে দিয়েছিল। পাকিস্তানিদের
আক্রমণ ও হত্যাকাণ্ড ছিল ফ্যাসিস্টদের মতো। তাই তারা পোষণ করেছিল জাতি বা ধর্ম সম্প্রদায়
বিদ্বেষ; হত্যা করেছিল নিরীহ নিরপরাধ জনসাধারণকে। সেই পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড আমাদের
২৫ মার্চের দাবিকে আরো বেশি তাৎপর্যবহ করে তুলেছে। ২৫ মার্চ ‘আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস’
হবে পৃথিবীর মানব জনগোষ্ঠীকে নির্মম নিধনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য উচ্চকণ্ঠ এবং
হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের একমাত্র ভরসার দিন। আশা করা যায় এই
দিবসের চেতনা গণহত্যার বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ করবে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
যার গন্তব্য স্থান কোথায় সেটা ঠিক নাই, তিনি রাস্তায় গাড়ি বা রিক্সা যেভাবেই যান না কেন সে শুধু উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘুরে বেড়াবেন। কারণ তার তো গন্তব্য ঠিক নাই। সে গুলশান যাবে, না নিউ মার্কেট যাবে কোথায় যাবে জানে না। বিএনপির অবস্থা এখন ঠিক তাই। তারা জানেই না তাদের আন্দোলনের গন্তব্য কোথায়। জানে না বলেই তারা একের পর এক ভুল করে রাজনীতির কানাগলিতে ঢুকে যাচ্ছে। এর একটি উৎকৃষ্ট প্রমাণ হলো হঠাৎ করে তারা ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েছে। কিন্তু আমাদের বাস্তবতা বুঝতে হবে যে, ভারতীয় পণ্য বর্জন সম্ভব কিনা? এখানে একটা কথা উল্লেখ্য করতে চাই যে, এদেশের জনগণ কার কথায় বিশ্বাস করেন? জনগণ বিশ্বাস করেন একমাত্র দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার কথা। কারণ তিনি যেটা বলেন সেটা করেন। তিনি যদি কোন প্রশ্নবোধক ডাকও দেন তাহলেও বহু লোক সেটাকে গ্রহণ করবে। কারণ তার প্রতি তাদের বিশ্বাস আছে। আর যে দলের নেতারা প্রায় সবাই হয় সাজাপ্রাপ্ত অথবা জামিনে আছে তাদের কথায় কোন লোক কানে দিবে না।
একাত্তরের ২৫ মার্চের ভয়ালরাত্রি মর্মদাহিক চেতনা প্রবাহের কালখণ্ড। ২০১৭ সালের ১১ মার্চ জাতীয় সংসদে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালোরাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বর্বরোচিত ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডকে ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে পালনের এবং আন্তর্জাতিকভাবে এ দিবসের স্বীকৃতি আদায়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। এর আগে ২৫ মার্চকে ‘আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস’ হিসেবে পালনের দাবি ওঠে বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষের কাছ থেকে।
বঙ্গবন্ধু উপলব্ধি করেছিলেন যে, দেশের উন্নয়নের জন্য চিকিৎসা এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতি সবচেয়ে জরুরি। চিকিৎসার যদি উন্নতি না হয়, চিকিৎসা ব্যবস্থার যদি উন্নতি না হয়, মানুষ যদি সুস্বাস্থ্যের অধিকারী না হন তাহলে দেশ গড়া সম্ভব নয়। সেজন্য বঙ্গবন্ধু একটা সুন্দর নীতিমালা পরিকল্পনা গড়ে তোলেন। ওই সময়ই সেটা ছিল আধুনিক যুগোপযোগী এবং বিজ্ঞানসম্মত। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল বঙ্গবন্ধু যে নীতিমালা তখন চালু করে গিয়েছেন সেই পদ্ধতিতে আজকের দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা একে এক করে বাস্তবায়ন করে চলেছেন। যার মূল ভিত্তি বঙ্গবন্ধু স্থাপন করেছেন।
সাম্প্রতি ‘স্বাধীনতা সুফল পেতে চাই চিকিৎসা বিজ্ঞান গবেষণা জাতির পিতার হাতে সূচনা, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা দিলেন দিক নির্দেশনা’ শীর্ষক এক গোল টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিপ্রেক্ষিতের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ বোরহান কবীর। বৈঠকে আলোচক হিসেবে অধ্যাপক ডা. শাহ মনির হোসেন যে আলোচনা করেছেন তার চুম্বক অংশ প্রকাশ করা হলো।