নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
এবছর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বছর। আর আগামী ২৯ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদের ৫ বছরের মেয়াদ পূর্ণ হবে। কিন্তু বলতেই হচ্ছে যে, যখন আমরা আগামী সংসদ নির্বাচনের জন্য নানারকম তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করবো, তখন আমাদের কাছে চলতি দশম সংসদ নির্বাচনের ফলাফল খুব বেশি বিবেচ্য হচ্ছে না। কারণ, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নবম জাতীয় নির্বাচনে দেশের বড় একটি দল বিএনপি অংশ নেয়নি। যদিও এখনো নিশ্চিত করে বলা যাবে না যে এ বছরের শেষার্ধে অনুষ্ঠেয় ভোটে দেশের সব বড় দল অংশ নিবে কিনা? আসলে জাতীয় সংসদের গুণগত মান নিয়ে আলোচনা করতে চাইলে দরকার নির্বাচন নিয়ে কথা বলা। দেশের রাজনৈতিক দলগুলো সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেছে। সর্বশেষ আমরা দেখলাম খুলনার একটি উপনির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাংসদ নির্বাচিত হলেন বর্তমান ব্যবসায়ী ও সাবেক তারকা ফুটবলার সালাম মুর্শেদী।
জাতীয় সংসদ সকল রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু হবে এটা আলোচনার জন্য যত ভালো, তার বাস্তবতা ততটাই সুদূরপরাহত। এটা হতাশার কথা নয়। কারণ ১৯৯১ সালে সংসদীয় গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের পর জাতীয় সংসদ সব কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে গড়ে উঠবে এমনটা আশা করা হলেও ২০১৮ সালে এসে নিশ্চয় সবাই একমত হবেন যে তেমনটি হয়নি। বরং সংসদ বর্জন এবং সর্বশেষ নির্বাচন বর্জনের মধ্য দিয়ে দেশর রাজনীতিতে যে অস্বস্তিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, তা আগামী নির্বাচনে কতটা কাটবে, তা এখন এক বড় প্রশ্ন।
সংসদ যে গুণগত মান হারিয়েছে, তার মূল তিনটি কারণ হিসেবে বলা যায় যে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা সংসদের ভেতরে আইন প্রণয়ন ও এলাকার জনগণের নানা স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় যেমন তুলে ধরা হচ্ছে না, তেমন গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় বিষয় আলোচিত হচ্ছে না আবার, সংসদে পাশ হওয়া আইন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হচ্ছে খুবই কম। ২০১১ সালে টিআইবির দুটি গবেষণা থেকে বলা যায় যে, সংসদ তার কাছে দেশবাসীর প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছে না, মোটাদাগের তিনটি কারণে। এই তিনটি কারণ হচ্ছে ১. বেশিরভাগ সদস্য নিয়মিত সংসদে উপস্থিত থাকেন না। ২. আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় সাংসদদের অংশগ্রহণ খুবই কম, এ ব্যাপারে তারা আগ্রহ পান না। সংসদ যে সরকারের কর্মকাণ্ডের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে, সে সম্পর্কে ধারনা যেমন কম, তেমনি সুযোগও সীমিত। ২০১২ সালের এক গবেষণায় বলা হয়েছে সংসদ সদস্যদের বিভিন্ন আইন বহির্ভূত কর্মকাণ্ড, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়ম এবং এসব ব্যাপারে ব্যবস্থা না নেওয়ায় আইন প্রণেতাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত হচ্ছে না। ফলে সংসদ সদস্যদের সম্পর্কে এক ধরনের নেতিবাচক মনোভাব দ্রুত শক্ত ভিত পাচ্ছে। আর এর অন্যতম কারণ যে স্থানীয়ভাবে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় যারা নেতা হয়েছেন, তাদের চেয়ে মনোনয়ন দেওয়ার সময় দেশের বড় রাজনৈতিক দলগুলোতে প্রাধান্য পাচ্ছেন ব্যবসায়ী এবং সাবেক আমলারা।
নবম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত সদস্যদের পেশাগত অবস্থান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় বেশিরভাগ নির্বাচিত সাংসদ তাদের পেশা হিসেবে ব্যবসাকেই উল্লেখ করেছেন। তথ্য বলছে নবম সংসদে আওয়ামী লীগের ২৩৫ জন সাংসদের মধ্যে ১২১ জন ব্যবসায়ী, ৬১ জন পেশাজীবী, ২২ জন কৃষিজীবী, দুজন গৃহিনী এবং ২৯ জন অন্যান্য পেশায় নিয়োজিত। আর ঐ সংসদের বিরোধীদল বিএনপির ৩০ জন সাংসদের মধ্যে ১৮ জন ব্যবসায়ী ৭জন বিভিন্ন পেশায় এবং ৫জন কৃষিজীবী আছেন। নবম সংসদে জাতীয় পার্টির সাংসদ ছিলেন ২৫ জন। এদের মধ্যে ১৪ জন ব্যবসায়ী,৬ জন পেশাজীবী ২ জন কৃষিজীবী এবং ৩জন বিভিন্ন পেশাজীবী ছিলেন। অন্যান্য দলের ১০ জনের মধ্যে ব্যবসায়ী ৩ আর বিভিন্ন পেশার ৭জন ছিলেন। দেখা যাচ্ছে ৩০০ জন নির্বাচিত সাংসদের মধ্যে ১৫৬ জনই ব্যবসায়ী।
প্রশ্ন হলো রাজনীতিবিদরা ব্যবসা করলে অসুবিধা কি? বা ব্যবসায়ীরা রাজনীতিতে আসলে কেন আপত্তি উঠবে? এসব প্রশ্নের জুতসই জবাব পেতে অনেক আলোচনা বা গবেষণার দরকার। আমি শুধু দুটি উদাহরণ দিতে চাই। দেশের একজন বড় ব্যবসায়ী সাবের হোসেন চৌধুরী ১৯৯৬ সালে মাত্র কয়েকদিন রাজনীতি করে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে। এরপর উপমন্ত্রীও হয়েছিলেন প্রথমবার সাংসদ হয়েই। এরপর তিনি আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক সচিবের পদও পেয়েছিলেন। সর্বশেষ তিনি দ্বিতীয়বারের মত সাংসদ হয়ে সারাবিশ্বের সাংসদদের সংগঠন আইপিইউ-এর মত ঐতিহ্যবাহী মর্যাদাবান প্রতিষ্ঠানের সভাপতির পদ অলংকৃত করেছেন। আবার মহিউদ্দীন খান আলমগীর প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের ডাকসাইটে আমলা ছিলেন। কিন্তু সিভিল সার্ভিস থেকে বিদায় নিয়ে তিনি প্রথমে প্রতিমন্ত্রী হন। এরপর আওয়ামী লীগের মনোনয়নে প্রথমে সাংসদ এবং পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর পদ পান। দেশের প্রাচীন দল আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্যও হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আমলা থেকে রাজনীতিক এবং সর্বশেষ ব্যবসায়ী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন মহিউদ্দীন খান আলমগীর। তিনি ফারমার্স ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হিসেবে ব্যাংক ব্যবসায়ী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু ফারমার্স ব্যাংকের নানা অব্যবস্থাপনার কারণে তিনি নিজে থেকেই পদত্যাগ করেন। সংসদে তার সম্পদের হিসাব নিয়ে বিজেপির সাংসদ আন্দালিব রহমান পার্থ প্রশ্ন তুলেছিলেন কীভাবে মহিউদ্দিন খান আলমগীর ব্যাংকের পরিচালক হলেন?
দুটি উদাহরণ এজন্য দিলাম যে একজন মানুষ তার পেশা বদলাতে পারেন বা যে কোনো পেশায় থেকে রাজনীতিতে যোগ দিতেই পারেন। আসলে দেখতে হবে জনপ্রতিনিধি হিসেবে সাংসদের কর্মকাণ্ড। কারণ ইয়াবা ব্যবসায়ের সঙ্গে জড়িত থাকার পরও কেউ যদি সাংসদ নির্বাচিত হন, বা কোনো একজন সাংসদ এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করার পরও যদি দলের মনোনয়ন পেয়ে যান তাহলে নিরুপায় ভোটারের কি করার আছে? আমাদের তো ‘রিকল’ পদ্ধতি নাই। অথবা দল যখন কাউকে মনোনয়ন দেন তখন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিবেচনায় কি থাকে? কিন্তু একথা বলাই যায় যে এখন যখন আমরা আমরা আগামী নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থিতার ওপর নানারকম জরিপ বা প্রতিবেদন তৈরি করছি তখন কিন্তু সাধারণ মানুষতো বটেই, বড় দলগুলোর তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা কিন্তু স্থানীয় রাজনীতিক বা গণমানুষের সঙ্গে সম্পর্ক আছে, এমন রাজনীতিকদেরই মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান। ‘উড়ে এসে জুড়ে বসা’ প্রার্থী নিয়ে তাদের জোরালো আপত্তি আছে। আর পোঁড় খাওয়া পেশাদার রাজনীতিবিদের সংখ্যা সংসদে কমে যাওয়াই কিন্তু সংসদের গুণগত মান কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ। নবম সংসদ নির্বাচনের আগে দেওয়া নিজ নিজ নির্বাচনী ইশতেহারে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুই প্রধান দলই জাতীয় সংসদকে কার্যকর করার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। দেশের ভোটার, যারা মাত্র একদিনের জন্য ক্ষমতা পান তাদের কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রাজনীতিবিদরা যথার্থভাবে পালন করবেন এটাই আমজনতার চাওয়া।
লেখক: সাংবাদিক
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
দেশে একটি সুষ্ঠু
নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে
রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং
সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা
সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ
ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি
সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।
আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা
রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত
অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের
গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান
ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে
দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে
এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক
করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি
একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি
পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার
করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের
সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন
পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন
শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী
লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের
প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন
করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে
সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।
গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে,
তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো
দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের
অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা
পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে
প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ
এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে
নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও
একই ভাবে থেকেছেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি
হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে
যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু
এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার
পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে
তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:২৬ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।
দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই।