নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:১৪ এএম, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকে গুজব নামের চিলটি আমাদের পিছু নিয়েছে। বঙ্গবন্ধুর সময়ে নোট ছাপানোকে কেন্দ্র করে গুজব ছড়ানো, বাসন্তীকে ইচ্ছাকৃত ভাবে জাল পরিয়ে ছবি তুলে গুজব সৃষ্টি, মিথ্যা ব্যাংক ডাকাতির ধোঁয়া তুলে গুজব সৃষ্টিসহ নানা গুজব ছড়ানো হয়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এখন গুজবের ধরন বদল হয়েছে। কখনো সাম্প্রদায়িক গুজব ছড়ানো হয়েছে এই বলে যে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে মসজিদে উলু ধ্বনি শোনা যাবে। আবার কখনো গুজব ছড়ানো হয়েছে যে, বাংলাদেশ ভারতের অঙ্গ রাজ্য হয়ে যাবে । পরে সবই গুজবই থেকে গেছে।
এবারও জাতীয় সংসদ নির্বাচন যখন দরজায় কড়া নাড়ছে তখন কিন্তু আবার গুজবের যন্ত্র চালু হয়ে গেছে। এখন গুজব পর্বের প্রস্তুতি চলছে ১০ অক্টোবর নিয়ে। ওই দিন ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে।
আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর দেশকে ডিজিটাল করার কাজ যখন দ্রুত এগিয়ে চলছে তখন গুজব ছড়ানোর কাজে ব্যবহৃত হয় ডিজিটাল মাধ্যম। ফেসবুকে ‘বাঁশের কেল্লা’ নামক গ্রুপ খুলে সেখানে ফটোশপের মাধ্যমে মিথ্যা ছবি বানিয়ে বড় ধরনের দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা অনেকবার হয়েছে। চাঁদে সাঈদীকে দেখা গেছে, হেফাজতের লাখ লাখ কর্মী মারা গিয়েছে, রামুতে মিথ্যা ছবি বানিয়ে বৌদ্ধ বিহার আক্রমণ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে রসরাজের উপর ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার গুজব, এ সবই ছড়ানো হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যাবহার করে।
সর্বশেষ কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ভয়ানক ভাবে মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে উস্কে দেয়া হয়েছে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ। অনেকেই না বুঝে আবেগের বশবর্তী হয়ে ফাঁদে পা দিয়ে নিজের জন্য ডেকে এনেছেন বিপদ।
এই মহলটির ‘চিলে কান নিয়ে গেছে’ টাইপ গুজবের মূল টার্গেট তরুণ সম্প্রদায়। কুচক্রী মহল জানে বাংলাদেশের সমস্ত আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে এই তরুণরাই। বাংলাদেশের বেশিরভাগ বড় বড় অর্জন এসেছে এই তরুণদের হাত ধরে। ষড়যন্ত্রকারীরা ভালো করে জানে তরুণ সম্প্রদায়কে যদি বিপথে নেওয়া যায় তাহলে সহজেই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎকে অন্ধকার করা সম্ভব। বাংলাদেশের সমস্ত অর্জনের পথকে রুদ্ধ করা সম্ভব।
একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনেই । তাই এই নির্বাচনকে সামনে রেখে কুচক্রী মহল আরও তৎপর হয়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। তারা চেষ্টা করবে আরও কিছু গুজব সমাজে ছড়িয়ে দিয়ে সমাজকে অস্থিতিশীল করতে। তাই সময় থাকতে এদের ব্যাপারে সাবধান হতে হবে।
বাংলাদেশে যারা রাতের আঁধারে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গোপন বৈঠক করে, কারণে-অকারণে আল জাজিরাতে সত্য মিথ্যা বানিয়ে গুজবের চিল উড়ানোর চেষ্টা করে- জানতে হবে এরা কারা? এরা হচ্ছে সেই প্রজাতির লোক যারা বলবে ‘আমরা গণতন্ত্রের কথা বলি, জনগণের কথা বলি।’ অথচ এরা কখনো গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় নির্বাচিত হবার যোগ্যতা রাখে না। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হওয়ার সাহস এদের নেই। এরা সবসময় ক্ষমতায় যাবার জন্য অন্ধকারের চোরাগলি খোঁজে। পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যাবার শখ তাদের সারাজীবনের।
এখন বাংলাদেশের তরুণ সম্প্রদায়কে এই দুষ্ট চক্রের বিষয়ে সাবধান হতে হবে। মনে রাখতে হবে যেহেতু সামনে নির্বাচন, তাই গুজবের চিল উড়িয়ে দিয়ে এই মহল বাংলাদেশের তরুণ সম্প্রদায়কে অন্ধকারের চোরাবালিতে নিমজ্জিত করে পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করবে। বাংলাদেশের তরুণ সম্প্রদায়কে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে, নিজেদের মেধা কাজে লাগিয়ে এই মহলের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর। নইলে নির্বাচন এলেই যে গুজবের ডামাডোল শুরু হয়, তা থেকে নিস্তার পাওয়া যাবে না।
লেখক: সাংবাদিক
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:২৬ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি
প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর
রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা
করবেন।
প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে
আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা
নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর। আমার ধারণা যারাই প্রথম আলো কিনেন না
কেন তারা প্রথম দিকে মতিউর রহমান সাহেবকে রাখলেও পরবর্তীতে ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে
সম্পাদক পরিবর্তন করবে। আর প্রথম আলো যদি কোন যুক্তিপূর্ণ লোকের কাছে দেয় তাহলে আমার
মতে এখানে সম্ভবত আনিসুল হক সাহেব সম্পাদক হবেন। কারণ তার প্রতি লোকের অনেক শ্রদ্ধাবোধ
আছে এবং তিনি সবসময় একটা রেড লাইন রক্ষা করে চলেন। এটা আমরা সকলেই জানি। তার সাথে
অনেকেরই ভালো সম্পর্ক এবং তিনি খুবই জ্ঞানী
লোক।
এর আগে মতিউর রহমান যখন একতা থেকে আজকের কাগজে যান, তখন তার উদ্দেশ্যই
ছিল যে, একটি পত্রিকা কীভাবে চলে সেটা শেখা এবং এখান থেকে একসাথে সাংবাদিক নিয়ে বেরিয়ে
যাওয়া। তিনি সেটা করেছিলেন। তারপর ভোরের কাগজ থেকে একই কাজ করেছেন। সুতরাং তার সত্যিকারের
নীতিবোধ বলতে যেটা বোঝায় সেটা দুর্ভাগ্যবশত তিনি প্রমাণ করতে পারেননি।
তিনি এক সময় কমিউনিস্টদের সাথে থাকলেও এখন তার চেয়ে বড় দক্ষিণপন্থী
পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়াই কঠিন। এ কারণে প্রথম আলো যে বিক্রি হবে এই ব্যাপারে সাধারণ লোকের
ভিতরে এখন আর কোন সন্দেহ নেই।
এখন প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টারের কী হবে এই নিয়ে আলাপ আলোচনা হচ্ছে
এবং এই আলাপ আলোচনা খুব দীর্ঘদিন যে চলবে তা না। আমার মনে হয় জুন-জুলাই মাসের ভিতরেই
এর একটা ফয়সালা হয়ে যাবে। কারণ স্বাভাবিক ভাবেই বুঝি যে, একটি পত্রিকা পাঠকপ্রিয়তা
পেতে বেশ সময় লাগে। এটা একদিন দুইদিনের ব্যাপার না। আবার ঠিক তেমনিভাবে যখন পাঠকপ্রিয়তা
কমতে থাকে সেটাও একদিন দুইদিনে হয় না। ধীরে ধীরে হয়। এই মিডিয়া জগতের নিয়মই তাই।
আমি ১৯৬১ সালে পত্রিকা বলতে শুধুমাত্র ইত্তেফাক এর কথাই জানতাম।
সেই ধারণা থেকে বলতে পারি এখন প্রথম আলোর যদি কিছু কর্মী এর চেয়ে ভালো কোন সুযোগ সুবিধা
দেখেন তাহলে তারা বিক্রি হওয়ার আগেই চলে যাবেন। কারণ স্বাভাবিকভাবেই একজন সাংবাদিকের
একটা ক্যারিয়ার আছে এবং প্রথম আলোর মতো পত্রিকাতে কাজ করে তিনি তো যে কোন পত্রিকায়
যেতেও পারবেন না। তার কারণ গেলে তার ওই লেখার যে মান সেটা মূল্যায়ন নাও হতে পারে। তবে
আমার ধারণা প্রথম আলোতে কাজ করেছেন এমন যে কাউকে টেকনিক্যাল গ্রাউন্ডে অনেক গুরুত্ব
দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে আমি অবাক হব না যদি দু এক মাসের ভিতরে দেখা যায় যে আস্তে আস্তে
প্রথম আলো বিভিন্ন কর্মী অন্য পত্রিকায় যাওয়া শুরু করে দিয়েছেন।
ব্যাংক মার্জারের যেমন একটি ঘটনা বর্তমানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ঠিক
তেমনি পত্রিকা জগতেও শিল্প গোষ্ঠীর যে গন্ডগোলের ঘটনা ঘটেছে এটিও ব্যাংক মার্জারের
ঘটনার পর্যায়ে চলে যাবে। ব্যাংকিং ক্ষেত্রে দেখা যায়, দুটি ব্যাংক একীভূত হচ্ছে। আর
এদিকে দেখা যাবে, সংবাদকর্মীরা অন্য পত্রিকায় চলে যাচ্ছে।
তবে আমার মনে হয় না, এখন যে অবস্থা চলছে এতে প্রথম আলো আর আগের
মতো প্রথম আলো থাকতে পারবে। এটা কিছুতেই সম্ভব না এটি মোটামুটিভাবে নিশ্চিত। তাই আমার
মনে হয় প্রথম আলো সেই ব্যাংক মার্জারের পর্যায়ে চলে এসেছে। এখন অন্য পত্রিকা যাদের
আছে, তারাও প্রথম আলো কিনে নিতে পারেন। এটি সম্ভব। এরকম শিল্পগোষ্ঠীর কোন কমতি বর্তমানে
বাংলাদেশে নেই। যে কোন শিল্প গোষ্ঠীই এটা কিনবে।
তবে আমি আশা রাখব, যারাই প্রথম আলো কিনবে, তারা যেন অন্তত পক্ষে
এটা খেয়াল রাখে যাতে সাংবাদিকদের কোন ক্ষতি না হয়। সুতরাং এদেশের একজন সাধারণ নাগরিক
হিসেবে আমার দাবী হচ্ছে সাংবাদিকরা যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:০৬ পিএম, ১৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।
দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই।
বারো বছর আগের কথা। ডেভিড ক্যামেরুন তখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। সে সময় একদিন তিনি একটি হাসপাতালের ওয়ার্ডে ঢুকে পড়লেন। রোগীর অনুমতি সাপেক্ষে রোগীর সাথে ছবি তুলতে গেলেন। বাঁধ সাধলেন ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা একজন চিকিৎসক। জীবাণু প্রতিরোধের কোন পদক্ষেপ না নিয়ে এবং চিকিৎসকের অনুমতি ব্যতিরেকে তিনি ওই কাজটি করছিলেন। ডেভিড ক্যামেরুন তাঁর ভুল বুঝতে পেরেছিলেন সাথে সাথে। ক্ষমা চাইলেন এবং ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে গেলেন।
এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা করবেন। প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর