নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ০৪ নভেম্বর, ২০১৮
শক্তিশালী সোশ্যাল মিডিয়ার আর অনলাইন নিউজ পোর্টালের কল্যাণে তথ্য সন্ত্রাস, ষড়যন্ত্র ও মিথ্যা কথা আর গোপন থাকে না, তাই সত্যের জয় হয়, মিথ্যা কোণঠাসা হয়ে পড়ে, এটি বাংলাদেশের সংলাপ রাজনীতিতেও প্রমাণিত হলো; প্রমাণিত হলো শেখ হাসিনা এক ভিন্ন মাত্রার সফল কূটনীতিক এবং সৎ, দেশ অন্ত:প্রাণ প্রাজ্ঞ রাজনীতিক। প্রমাণিত হলো যে, অন্ধকার যত কালোই হউক না কেন আলোর কাছে তা টিকে থাকতে পারে না, স্বরূপ উন্মোচিত হয়।
প্রথমেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কূটনৈতিক সাফল্যের কিছু বিবরণ তুলে ধরি বিশ্ব মিডিয়া থেকে। বাংলাদেশে২০০৭-২০০৯ সালে ভারতের হাইকমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী। হাইকমিশনার থাকাকালীন সময়ে পিনাক রঞ্জন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে যথেষ্ট আগ্রহী ছিলেন। কিছুদিন আগে বাংলাদেশের চলমান রাজনীতি ও আসন্ন নির্বাচন নিয়ে ভারতের প্রভাবশালী মিডিয়া ‘সাউথ এশিয়ান মনিটর’ একটি দীর্ঘ প্রবন্ধে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে তীব্র বিষোদগার করেছিলেন পিনাক রঞ্জন। একই পত্রিকায় গত শনিবার তিনি বলছেন, ‘হাসিনা সম্প্রতি সৌদি আরবে সরকারি সফর থেকে ফিরেছেন। সেখানে তিনি সৌদি নেতাদের সাথে বৈঠক করেছেন এবং কয়েকটি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেছেন – যার মধ্যে সামরিক সহযোগিতার বিষয়টিও রয়েছে। হাসিনা ২৩টি দেশের সামরিক কন্টিনজেন্টের যৌথ প্যারেডেও উপস্থিত ছিলেন, যেখানে মুসলিম দেশগুলোর সামরিক জোটের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়, যেটার উদ্যোক্তা হলো সৌদি আরব। সৌদি আরবে সরকারি সফরে দ্বিপাক্ষিক এজেন্ডা ছাড়াও সাধারণত মক্কায় ওমরাহ পালনের বিষয় যুক্ত থাকে। সৌদি আরবে সরকারি সফর এবং বাদশাহ ও ক্রাউন প্রিন্সের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়গুলো সাধারণত ভোটারদের কাছে বিশেষ করে ধর্মপ্রাণ মানুষের জন্য ইতিবাচক ইঙ্গিত বহন করে। কিছু বাংলাদেশি ভোটার এ ধরনের সফরকে হাসিনা এবং তার নিজের ধার্মিকতার প্রতি সৌদি সমর্থন হিসেবে দেখে থাকে, যদিও অধিকাংশ ভোটারের কাছে এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর’। ‘হাসিনা সরকার এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) থেকেও স্বীকৃতি পেয়েছে। তার সরকার বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধির হারকে ভারতের চেয়েও উপরে নিয়ে গেছে, বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ভারতের চেয়ে তিনগুণ গতিতে বাড়ছে। বাংলাদেশ তাদের এই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ধরে রাখতে পারলে তাদের মাথাপিছু আয় আগামী দুই দশকে ভারতকে ছাপিয়ে যাবে। ... সামাজিক সূচকে, বাংলাদেশ ভারতসহ বহু দেশের চেয়ে ভালো করছে। বিশ্ব ব্যাংকের প্রকাশনায় দেওয়া আন্তর্জাতিক সূচক অনুযায়ী এই অর্জন হয়েছে বাংলাদেশের’ বলে তিনি তাঁর লেখায় উল্লেখ করেন। তিনি আরও বলেন, ‘গত এক দশকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক দারুণ শক্তিশালী হয়েছে এবং অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ সত্বেও হাসিনা দক্ষতার সঙ্গে দেশের নীতি নিয়ন্ত্রণ করেছেন। ভারত নিশ্চিতভাবেই আরও পাঁচ বছর শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রীত্বে স্বাচ্ছন্দ্য অনুভব করবে’।
‘হাসিনা সরকার এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) থেকেও স্বীকৃতি পেয়েছে’। এডিবি নিয়ন্ত্রণ করে জাপান সরকার, তাই পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তীর এই কথা অর্থ বুঝতে কারও বাকী থাকার কথা নয় যে, জাপান সরকার শেখ হাসিনার সরকারকে পছন্দ করে।
ডি ডব্লিউ এর খবরে বলা হয়েছে যে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও ঐক্যজোটের মধ্যে সংলাপকে স্বাগত জানিয়েছে জার্মানি৷ গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে নবনিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত পেটার ফাহরেনহোলজ দেখা করে জানান, ‘‘সংলাপ একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ৷`` তিনি আশা করেন, ‘‘নির্বাচন অত্যন্ত ভালো হবে এবং সবাই সামনের দিকে এগিয়ে যাবে৷``
একটি জনপ্রিয় পোর্টালে খবর বেরিয়েছে যে, বিএনপিকে নির্বাচনে আনার জন্য এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে ড. কামাল হোসেনকে দায়িত্ব দিলেন কূটনীতিকরা। শুক্রবার সন্ধ্যায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া বার্নিকাট যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগের আগে ড. কামাল হোসেনকে বলেন, ‘সংবিধানের আলোকে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে রেখেই একটা নির্বাচন করা যেতে পারে। নির্বাচন কমিশন যেন শক্তিশালী হয়, নির্বাচন কমিশনের কর্তৃত্বে যেন নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব প্রশাসন চলে আসে। সরকার যে অঙ্গীকার করেছে, সে অঙ্গীকারের ওপর আস্থা রেখেই সব বিরোধী দলের উচিত নির্বাচনে যাওয়া।’
শনিবার ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে ভারতীয় বিদায়ী হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলার সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয়েছে সময় গণফোরামের অন্যতম নেতা অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরীও ড. কামালের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন। ভারতীয় হাইকমিশনার ভারতের পক্ষ থেকে ড. কামাল হোসেনকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানানো হয়। শ্রিংলা মনে করেন, ‘নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করলে একটি অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিযোগিতামূলক হবে, কারচুপি করা সহজসাধ্য হবে না এবং গণতন্ত্র এগিয়ে যাবে।
বার্নিকাট ও শ্রিংলা দুজনকেই ৪টি ব্যাপারে ড. কামাল হোসেন আশ্বস্ত করেছেন। এগুলো হলো:
১. তিনি নেতৃত্বে থাকা অবস্থায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট কখনোই সহিংস আন্দোলনের কোনো কর্মসূচি দেবে না। ২. সরকারের সঙ্গে সংলাপের বিষয়টি কখনোই শেষ হবে না। বরং তিনি একটি ‘মিনি টিম’ গঠন করে সরকারের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত সংলাপ চালিয়ে যাবেন। ৩. কাউকে হটানো বা কারও অধীনে নির্বাচন যাওয়া এমন মনোভাব তিনি কখনোই পোষণ করেননি। ঐক্যফ্রন্ট থেকেও এমন মনোভাব পোষণ করতে দেওয়া হবে না। ৪. গণতান্ত্রিক ধারা যেন অব্যাহত থাকে, সেজন্য জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট চেষ্টা করবে।
ড. কামাল হোসেন দুই বিদায়ী কূটনীতিককেই আশ্বস্ত করেছেন, ‘বিএনপির একটি বড় অংশ নির্বাচনে যেতে আগ্রহী। তাঁরা বলেছে, তাঁরা যা কিছু করেছে, সব কিছু নির্বাচনের জন্যই করছে।’
কয়েকদিন আগে জাতিসংঘ সফরকালে প্রায় সব দেশের সরকার ও রাষ্ট্র প্রধানগণ প্রায় সোজা সাপটা শেখ হাসিনার প্রতি তাঁদের সমর্থন জানিয়ে দেন।
এবার আসি সংলাপের প্রসঙ্গে। সংলাপ চলছে, চলবে হয়তো আরও কয়েকদিন। এ নিয়ে নানামুখী ও বিস্তর চুলচেরা বিশ্লেষণ হচ্ছে। যিনি যা বুঝেছেন বা বুঝতে চেয়েছেন সেভাবেই তিনি বা তাঁরা তাঁদের মতামত দিচ্ছেন বিভিন্ন মিডিয়ায়। মনে হচ্ছে যে, সত্যের জয় হয়েছে কারণ অসত্য, আংশিক সত্য বা সিকি সত্য আসল সত্যকে ছাপিয়ে যেতে পারে না। বিরোধীরা যে যে দাবী নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়েছিলেন। সে সব কথা তাঁরা বা তাঁদের দলের নেতা কর্মীগণ ইতোমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজে তাঁর পক্ষের বা বিপক্ষের প্রায় সব নিউজ নিয়মিত পড়েন, প্রয়োজনে নিজেকে শুধরে নেন, না হলে জবাব রেডি রাখেন অন্তরের গভীরে। তাই সংলাপ উপলক্ষ্যে উনার কোন হোম ওয়ার্ক করা লাগেনি। কিন্তু যারা সিকি সত্য, অর্ধ সত্য আর অসত্যের মিশেল দিয়ে দাবিনামা তৈরি করে সংলাপে গেছেন, উত্থাপনের পরে দাবিনামায় থাকা অসত্য পুরো সত্যের কাছে ম্লান হয়ে গেছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর পাল্টা প্রশ্নের কোন জবাব তাঁরা দিতে পারেন নি। তাই বাইরে এসে তাঁরা কেউ কেউ বলছেন সন্তুষ্ট নন, কেউ মোটামুটি খুশি, কেউ হতাশ হয়ে ‘আশার মুকুল ঝরে যাবার’ শঙ্কা করছেন, কেউবা সরকারকে “ছোটলোক” আখ্যা দিচ্ছে। এসব যে সংলাপে নিজেদের অদক্ষতা বা অক্ষমতা ঢাকার অপকৌশল তা দেশের অধিকাংশ মানুষই জানেন, হয়তো অভদ্র নন তাই মুখের উপর কিছু বলেন না, মনে মনে ঠিকই তা বলছেন। তাই জনগণের আই ওয়াশ করতে বা ভুল শুধরে নিতে ছোট্ট পরিসরে আবার সংলাপ চাচ্ছেন। আবার ঐক্যফ্রন্টের বড় দল বিএনপি’র একটা বড় অংশ বলছে তাঁরা নির্বাচনে নমিনেশন পেপার জমা দেবেন আন্দোলনের অংশ হিসেবে। এছাড়া তাঁদের উপায় নেই কারণ অনেক ছোট দলের বড় নেতা, যারা আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত, বি. চৌধুরী সাহেব ছোট ছোট দল নিয়ে জোট করে নির্বাচনে আসছেন। নির্বাচনে আসছেন জেনারেল এরশাদের নেতৃত্বে কিছু ছোট ছোট দল।
অন্যদিকে ‘ভাইবার মান্না’ যিনি ছাত্রলীগ হয়ে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রাজাকারদের পক্ষে চট্টগ্রাম রেডিওতে নিয়মিত দালালি করতেন, দেশ স্বাধীন হবার পরে জাসদ, বাসদ, মীর্জা সুলতান রাজার দল হয়ে আবার আওয়ামী লীগ হয়ে এখন নাগরিক ঐক্য হয়ে জামায়াত হওয়ার আশায় ছিলেন। আদালত তাঁর আশার গুলে বালি দিয়েছে। তাই আদালত অবমাননার ভয়ে মান্না সাহেব সরকারকে গালাগালি করে মনের ঝাল মিটাচ্ছেন। ‘বহুগামী’ মান্না বলেছেন সরকার ‘ছোটলোক’, সংলাপে খাওয়ানোর পরে তার ছবি মিডিয়ায় ছেড়ে দিয়েছে। বেজায় ক্ষ্যাপা মান্না সাহেবদের ইচ্ছা ছিল, ‘ডুব সাঁতারে গোছল করবেন কিন্তু ভেজা চুল কাউকে দেখাবেন না’। তাঁর কথা শুনে তাই একটা গল্প মনে পড়ে যায়। সেটি এমন- নিজে টাকা খরচ করে না গ্রামের এমন একজন ‘বড়ই উদার’ লোকের হঠাৎ করেই আখ খাওয়ার সখ হলো। গ্রামের রাস্তার পাশে সারি সারি আখের ক্ষেত, কিন্তু সে সেদিকে যেতে চায় না। কারণ এর আগে চুরি করে আখ খেয়েছে যত, ধরা পড়ে মাইর খেয়েছেন তার চেয়ে অনেক বেশি। তাই রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাবার সময় রাস্তায় পড়ে থাকা আখের ছিবড়া কুড়িয়ে কুড়িয়ে চিবিয়ে অনেক কষ্টে রস বের করে খাচ্ছিল। এক সময় তার চোয়াল ব্যথা হয়ে গেলো। পাশ দিয়ে একজন কৃষক হেঁটে যাচ্ছিলেন, ‘বড়ই উদার’ লোক তাঁকে বললেন, গ্রামের যে লোক রাস্তা দিয়ে আখ খেতে খেতে গেছে সে বড়ই ‘ছোটলোক’ একটুও রস রাখেনি আখের ছোবড়ায়, পুরোটা চেটেপুটে খেয়েছে! কৃষক ঘুরে তাকিয়ে বললেন, ‘কে ছোটলোক’, বুঝলাম না তো!
লেখক: উন্নয়নকর্মী
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
দেশে একটি সুষ্ঠু
নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে
রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং
সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা
সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ
ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি
সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।
আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা
রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত
অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের
গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান
ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে
দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে
এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক
করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি
একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি
পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার
করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের
সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন
পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন
শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী
লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের
প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন
করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে
সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।
গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে,
তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো
দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের
অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা
পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে
প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ
এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে
নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও
একই ভাবে থেকেছেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি
হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে
যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু
এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার
পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে
তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:২৬ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।
দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই।