নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০৭ এএম, ১৪ নভেম্বর, ২০১৮
সাপের মতো এঁকে-বেঁকে পুরো বাংলাদেশ জুড়ে ছড়িয়ে থাকা নদীর মতোই এর গণতন্ত্র ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে অবয়বেরও পরিবর্তন করছে। ১৯৭১ এ স্বাধীনতার পর থেকে দেশটির জনগণ ১০ বার ভোট দিয়েছে, কিন্তু প্রতিবারই রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ছিল অনেকটাই ভিন্নরকম। একদলীয় প্রভাব বলয়ের মধ্যে ভোট হয়েছে, ভোট হয়েছে সামরিক শাসন, বর্জন ও তীব্র প্রতিবাদ বিক্ষোভের মধ্যে। আবার এমন ভোটও হয়েছে যেখানে শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোটাররা ভোট দিয়েছে এবং শান্তিপূর্ণ ক্ষমতায় পরিবর্তন এসেছে।
১৯৯০ সাল থেকে ধারাবাহিক ভাবেই বাংলাদেশের ক্ষমতাধর দুই নারীর মধ্যেকার বিরোধ স্পষ্ট। এদের একজন হলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদ। আর অপরজন দু’বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রধান খালেদা জিয়া, যিনি বর্তমানে কারাগারে। আরেকটি বিষয় ধারাবাহিক, যখনই ভোট স্বচ্ছ হয়েছে বলে মনে করা হয়েছে, তখনই ভোটার উপস্থিতি ছিল বেশি। আর নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ দেখা গেলে, ভোটাররাও থেকে গেছেন বাড়িতেই।
গ্রহণযোগ্যতার অভাবে কয়েক সপ্তাহ আগেও মনে করা হয়েছিল, আগামী তিন মাসের মধ্যে হতে চলা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি হবে খুবই কম। ২০০৮ সালে সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটে জয়ী আওয়ামী লীগ দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থেকে কর্তৃত্বপরায়ণ হয়ে উঠেছে। ওই সময় মনে করা হচ্ছিলো, তৃতীয় বারের জন্য পাঁচ বছর মেয়াদে যেকোনো উপায়ে থাকতে চায় আওয়ামী লীগ। তবে হঠাৎ হঠাৎ করেই এই অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। ১৬ কোটি জনসংখ্যার দেশে মানুষ অবশ্যই একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন পাচ্ছে, তবে তা স্বচ্ছ বলা যাবে না।
স্রোত পরিবর্তন
একটি নয়, দুটি বড় বিস্ময় এসেছে গত মাস অক্টোবরে। মাসের মাঝামাঝি সময়ে দীর্ঘদিনের ডানপন্থী ইসলামিক দলের সঙ্গ ছেড়ে ছোট পরিসরের ধর্ম নিরপেক্ষ দলের এক জোটে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বিএনপি। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে পরিচিত জোটটির শীর্ষ নেতা হিসেবে আছেন ৮২ বছর বয়সী ড. কামাল হোসেন, যিনি একজন সংবিধান বিশেষজ্ঞ আইনজীবী হিসেবেই পরিচিত। আরও বিস্ময়কর ব্যাপার হলো বিএনপির প্রতি চরম বিরূপ বলে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ হঠাৎ করেই সুর নরম করেছে। আর পুলিশ (দেশের সেনা ও আদালত হিসেবেই যারা পরিচিত এবং সরকারকে টিকে থাকার অন্যতম ভিত্তি) হঠাৎ করেই বিএনপি কর্মীদের ধরপাকড় বন্ধ করে। বরং, রাজধানীসহ দেশজুড়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সমাবেশের সুযোগ পায়। শেখ হাসিনা নিজেই ফ্রন্টের নেতাদের আমন্ত্রণ জানান। স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য তাঁদের প্রস্তাব বিবেচনার কথা দেন প্রধানমন্ত্রী।
দুটি বড় দলের সঙ্গেই ছোট দলগুলোর আস্ফালন এবং সদা পরিবর্তনশীল জোট নিয়ে শঙ্কার মধ্যেই দুই দলের মধ্যেকার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যার মধ্যে সর্বশেষটি অনুষ্ঠিত হয়েছে গত ৭ নভেম্বর। ঐক্যের দাবির প্রতি নমনীয় মনোভাব দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ঐক্যফ্রন্টের দাবিগুলো মধ্যে আছে প্রধান বিরোধী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সকল রাজনৈতিক বন্দীর মুক্তি। পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং নির্বাচন স্বচ্ছের বিষয়টি নিশ্চিত করাসহ আরও কিছু বিষয়।
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি দেওয়া হতে পারে, কিন্তু নির্বাচনের সময়কার কাঠামোতে থাকবে তাদের সরকার। আওয়ামী লীগের দাবি তারা কোনোভাবেই অনির্বাচিত সরকার আসতে দেবে না। উল্লেখ্য, ১৯৯৬ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত থাকা তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলোপ করেছে আওয়ামী লীগই।
ঐক্যফ্রন্ট এমন প্রেক্ষাপটে আন্দোলনের হুমকি দেয়। তবে নির্বাচন বর্জনের ব্যাপারে তাদের মধ্যে স্পষ্ট মতপার্থক্য দেখা দেখা গেছে। এখনো তৃণমূলে শক্তিশালী বিএনপি সম্প্রতি কিছু ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জনগণের সহানুভূতির পাত্র। এর আগে ২০১৪ সালে নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি সড়কে অবস্থান নিয়েছিল। পার্লামেন্টের বাইরে চলে যাওয়ার অভিজ্ঞতা বেগম জিয়া ও তার অনুসারীদের জন্য মোটেও সুখের হয়নি। এর ফলে সরকারের সব প্রতিষ্ঠানে আওয়ামী লীগের প্রভাবই শুধু বাড়েনি, হুমকির মুখে পড়েছে সম্পদশালী বিএনপি সমর্থকরা। বিএনপির ভাষ্য অনুযায়ী, দলটির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৯০ হাজার মামলা হয়েছে, যেখানে আসামি আড়াই লাখের বেশি নেতাকর্মী। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধেই আছে ৩৪ মামলা এবং লন্ডনে থাকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকেও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে।
শেখ হাসিনার সংলাপ সত্ত্বেও, আওয়ামী লীগ হয়তো বিএনপির সঙ্গে সমঝোতার ব্যাপারে যথেষ্ট উদ্যোগী না। বিএনপির প্রধান যেমন তাঁর স্বামীকে একটি ক্যুতে হারিয়েছেন। তেমনি আওয়ামী লীগ প্রধানকেও ট্রাজেডির মধ্যে দিয়ে আসতে হয়েছে। ১৯৭৫ সালে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যের সঙ্গে নিহত হন প্রধানমন্ত্রীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এখন শেখ হাসিনা তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের প্রতি দিন দিন কঠোর হচ্ছেন বলেই মনে করা হয়। আর এমন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বুদ্ধিজীবীরা বলছেন, ‘বিবেকের দিক দর্শনের’গুণটি হারিয়ে ফেলছেন প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার চার দশক পর আওয়ামী লীগ সংবিধান সংশোধন করে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার নিশ্চিত করেছে। চলতি বছরের মে থেকে পুলিশ মাদক ব্যবসায়ীদের দেখামাত্রই গুলির নীতিতে চলছে। বিচার-বহির্ভূত এই হত্যার সংখ্যা ২৬৪ বলে মনে করা হয়। ঢাকায় রাস্তায় যখন বেআইনি গাড়ি চালনার জন্য আন্দোলন করেছে, তখন ছাত্রদের দমাতে তাদের উপর চড়াও হয়েছিল দলীয় ক্যাডাররা। বাংলাদেশের বিখ্যাত একজন ফটোগ্রাফারকে নেওয়া হয়েছে কারাগারে। এই ব্যক্তি এক সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনাকে বলেছিলেন ‘মানসিক ভাবে অসুস্থ’ বলে দাবি করেন। আর শেখ হাসিনা স্মরণ করেছেন, ওই ব্যক্তির চাচা ছিলেন পাকিস্তানের মন্ত্রী। রক্তই কথা বলে, মন্তব্য শেখ হাসিনার।
কিন্তু আওয়ামী লীগের তো কঠোর হওয়ার উপর নির্ভরের প্রয়োজন নেই। এর শাসনকালে বাংলাদেশের অর্থনীতির উন্নয়ন হয়েছে অকল্পনীয়। সর্বশেষ বছরে জিডিপি বেড়েছে ৭ দশমিক ৩ শতাংশ, যা ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে বেশি। জরিপও বলছে বর্তমান সরকার উপর জনগণ সন্তুষ্ট। এক দশকের প্রশ্রয়ে পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তাদের বিশ্বস্ততা পাওয়া গেছে, যাতে বন্ধ হয়েছে ক্যু-এর সব পথ। দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিবেশী ভারতও আওয়ামী লীগের সমর্থনে। এছাড়া ৭১ বছর বয়সী শেখ হাসিনা পরিস্কার ভাবেই দেখিয়েছেন, তিনি পরিবর্তনও আনতে জানেন। দলের ধর্ম নিরপেক্ষ ভাবমূর্তি সত্ত্বেও রক্ষণশীল মাওলানাদের সংগঠন হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে সম্পর্কের মধ্যে দিয়ে বিএনপিকে পেছনে ফেলেছেন শেখ হাসিনা।। এতসব সুবিধাই কি গণতন্ত্রকে তার নিজ পথে রাখতে বিশ্বস্ত রাখবে শেখ হাসিনাকে। নাকি স্রোতপ্রবাহ হবে তাঁরই নিয়ন্ত্রিত?
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
দেশে একটি সুষ্ঠু
নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে
রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং
সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা
সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ
ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি
সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।
আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা
রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত
অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের
গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান
ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে
দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে
এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক
করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি
একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি
পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার
করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের
সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন
পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন
শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী
লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের
প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন
করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে
সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।
গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে,
তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো
দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের
অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা
পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে
প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ
এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে
নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও
একই ভাবে থেকেছেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি
হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে
যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু
এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার
পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে
তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:২৬ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।
দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই।
বারো বছর আগের কথা। ডেভিড ক্যামেরুন তখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। সে সময় একদিন তিনি একটি হাসপাতালের ওয়ার্ডে ঢুকে পড়লেন। রোগীর অনুমতি সাপেক্ষে রোগীর সাথে ছবি তুলতে গেলেন। বাঁধ সাধলেন ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা একজন চিকিৎসক। জীবাণু প্রতিরোধের কোন পদক্ষেপ না নিয়ে এবং চিকিৎসকের অনুমতি ব্যতিরেকে তিনি ওই কাজটি করছিলেন। ডেভিড ক্যামেরুন তাঁর ভুল বুঝতে পেরেছিলেন সাথে সাথে। ক্ষমা চাইলেন এবং ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে গেলেন।