নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ এএম, ১৬ নভেম্বর, ২০১৮
‘রসুলপুরের আসমানি’র মতোই জীর্ণ কুটিরে থাকে যশোরের নওয়াপাড়ার পাঁচকবর এলাকার মরিয়ম। সাথে তার অসুস্থ বাবা আর আর মতিচ্ছন্ন মা। একজন সোমত্ত ছেলের মত করেই সংসারের ঘানি টানে মরিয়ম। মাথার ব্যামো থাকায় বাঁধা বা ঠিকা ঝি এর কাজ পায় না মরিয়মের মা। মাথা ঠিক থাকলে কাজের চেষ্টা করে। কোনো কাজ না পেলে ভিক্ষা করতেও দেখা যায় তাঁকে, মাকে। শরীর ভালো থাকলে তাই যখন যা পায় তাই করে, তা দিয়েই কিছু আয় রোজগার হয়, কাজে লাগে সংসার খরচে, কিংবা ওষুধ কেনাতে, খাবার কিছু কিনতে। পেটে তো কিছু দিতেই হয়, না হলে কি চলে! তার উপর ঘরে থাকে একটা পঙ্গু আর একটা মতিচ্ছন্ন অসহায় মানুষ! উপোষে জঠরের কী জ্বালা তারা তা জানে, কারণ মাঝে মাঝেই এর মুখোমুখি হতে হয় তাদের। এমন হাভাতে সংসারেই জন্ম আর ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠে মরিয়ম। ছোট থেকেই এসব দেখে দেখে ক্ষীণ আশায় বুক বাঁধে আর পণ করে মরিয়ম। মাকে আর বাবাকে বাঁচাতে হবে, চিকিৎসা দিতে হবে ঠিকমত। তাতে যত কষ্টই হউক না কেন তার। তাই স্কুল পাশ করার পর থেকেই মরিয়ম ২/৪টা ছেলে-মেয়েকে পড়ায়, কিছু টাকার জন্য, পরিবারের খাওয়া আর নিজের পড়ার খরচ চালানোর জন্য। পড়াতে গিয়ে নিজেকেও পড়তে হয় মরিয়মের, তা না হলে ছাত্রছাত্রীদের অনেক জিজ্ঞাসার জবাব সে দিতে পারে না। আর ছাত্রছাত্রীদের জিজ্ঞাসার জবাব আর তাদের জ্ঞানের চাহিদা পূরণ করতে না পারলে কেন আসবে তারা মরিয়মের কাছে পড়তে! ছাত্রছাত্রীদের বাবা-মায়েরাই বা কেন সময় নষ্ট করবে, যদি মরিয়ম ভালোমতো পড়াতেই না পারে!
বাবা-মায়ের সেবা, টিউশনি, নিজের পড়া, সংসার চালানো সব এক সাথেই চালায় মরিয়ম। কষ্টের পরেও একটা সুন্দর সকালের, একটা সুন্দর দিনের সতর্ক স্বপ্ন দেখে মরিয়ম! আলো বাতাস খেলা করা একটা ছোট্ট ঘর, যাতে অসুস্থ বাবা-মাকে নিয়ে দুইবেলা পেট ভরে খাওয়া যায়, একটু শান্তিতে ঘুমানো যায়, সেই স্বপ্ন। তার চাহিদা খুব বেশী আকাশ ছোঁয়া না, কারণ সে জানে আকাশ কুসুম কল্পনায় জীবন এগোয় না, তা অধরাই থেকে যায়। ছাত্রছাত্রীদের পড়াতে গিয়ে মরিয়মের অনেক লাভ হয়েছে, বোঝে সে এখন। পড়াতে গিয়ে সব বিষয়েই তাকে ভালো করেই জানতে হয়েছে, শিখতে হয়েছে প্রায় নিখুঁত ভাবেই। তাই তার নিজের পড়ার সময় তা কাজে লেগেছে অনেক বেশী।
খুলনার বি এল কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ভর্তি হয়েছিল মরিয়ম। যাতে মাঝে মাঝে ক্লাস না করলেও লেখাপড়ায় বেশী ক্ষতি না হয়। খুব নীরবে লেখাপড়া চালিয়ে গেছে হাজারো কষ্টের মাঝেও, ফল তার পেয়েছে সে। খুলনার বি এল কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান শাখায় অনার্স এবং মাস্টার্সে প্রথম শ্রেণী অর্জন করেছে। কোন মধ্যবিত্ত বা বড়লোকের মেয়ে হলে এই ফল নিয়ে হয়তো কাড়া নাকাড়া বাজাতো। বাবা-মা, আত্মীয় স্বজনেরা মিষ্টি-মন্ডা বিলানোর ছড়াছড়ি করতো। কিন্তু মরিয়মদের জন্য তো সে ভাগ্য নেই। তবে এই ফল পাবার পরে মরিয়ম আরও বেশী আত্মবিশ্বাসী হয়েছে। এখন তাকে একটা চাকরি পেতে হবে, যোগ্যতা অনুসারে মোটামুটি বেতনের একটা সন্মানজনক চাকরি। যাতে সে অসুস্থ বাবা-মাকে নিয়ে দুই বেলা খেয়ে পরে আটপৌরে জীবন নিয়ে বাঁচতে পারে।
মরিয়ম তার যোগ্যতা দিয়েই চাকরি পেতে চায়। দেখাতে চায় মেয়েরা ফেলনা নয়, তারাও বাবা মায়ের সেবা করতে পারে সমাজের আর দশটা ছেলেদের মতো। যে দেশের প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, বিরোধী দলের নেত্রী মহিলা, যে দেশ নারীর ক্ষমতায়নে সারা দুনিয়ার কাছে একটা মডেল, সেই দেশে মরিয়ম চাকরি পাবেই পাবে, সেই ভরসা মরিয়মের আছে একশ ভাগ। কারণ এই সেই দেশ যে দেশের প্রধানমন্ত্রী নিজে মহিলাদের ক্ষমতায়নের জন্য বিশ্বখ্যাত, সৎ ও তুখোড় এক রাষ্ট্রনায়ক, যার ধমনীতে বঙ্গবন্ধুর রক্ত প্রবাহিত।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:২৬ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি
প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর
রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা
করবেন।
প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে
আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা
নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর। আমার ধারণা যারাই প্রথম আলো কিনেন না
কেন তারা প্রথম দিকে মতিউর রহমান সাহেবকে রাখলেও পরবর্তীতে ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে
সম্পাদক পরিবর্তন করবে। আর প্রথম আলো যদি কোন যুক্তিপূর্ণ লোকের কাছে দেয় তাহলে আমার
মতে এখানে সম্ভবত আনিসুল হক সাহেব সম্পাদক হবেন। কারণ তার প্রতি লোকের অনেক শ্রদ্ধাবোধ
আছে এবং তিনি সবসময় একটা রেড লাইন রক্ষা করে চলেন। এটা আমরা সকলেই জানি। তার সাথে
অনেকেরই ভালো সম্পর্ক এবং তিনি খুবই জ্ঞানী
লোক।
এর আগে মতিউর রহমান যখন একতা থেকে আজকের কাগজে যান, তখন তার উদ্দেশ্যই
ছিল যে, একটি পত্রিকা কীভাবে চলে সেটা শেখা এবং এখান থেকে একসাথে সাংবাদিক নিয়ে বেরিয়ে
যাওয়া। তিনি সেটা করেছিলেন। তারপর ভোরের কাগজ থেকে একই কাজ করেছেন। সুতরাং তার সত্যিকারের
নীতিবোধ বলতে যেটা বোঝায় সেটা দুর্ভাগ্যবশত তিনি প্রমাণ করতে পারেননি।
তিনি এক সময় কমিউনিস্টদের সাথে থাকলেও এখন তার চেয়ে বড় দক্ষিণপন্থী
পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়াই কঠিন। এ কারণে প্রথম আলো যে বিক্রি হবে এই ব্যাপারে সাধারণ লোকের
ভিতরে এখন আর কোন সন্দেহ নেই।
এখন প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টারের কী হবে এই নিয়ে আলাপ আলোচনা হচ্ছে
এবং এই আলাপ আলোচনা খুব দীর্ঘদিন যে চলবে তা না। আমার মনে হয় জুন-জুলাই মাসের ভিতরেই
এর একটা ফয়সালা হয়ে যাবে। কারণ স্বাভাবিক ভাবেই বুঝি যে, একটি পত্রিকা পাঠকপ্রিয়তা
পেতে বেশ সময় লাগে। এটা একদিন দুইদিনের ব্যাপার না। আবার ঠিক তেমনিভাবে যখন পাঠকপ্রিয়তা
কমতে থাকে সেটাও একদিন দুইদিনে হয় না। ধীরে ধীরে হয়। এই মিডিয়া জগতের নিয়মই তাই।
আমি ১৯৬১ সালে পত্রিকা বলতে শুধুমাত্র ইত্তেফাক এর কথাই জানতাম।
সেই ধারণা থেকে বলতে পারি এখন প্রথম আলোর যদি কিছু কর্মী এর চেয়ে ভালো কোন সুযোগ সুবিধা
দেখেন তাহলে তারা বিক্রি হওয়ার আগেই চলে যাবেন। কারণ স্বাভাবিকভাবেই একজন সাংবাদিকের
একটা ক্যারিয়ার আছে এবং প্রথম আলোর মতো পত্রিকাতে কাজ করে তিনি তো যে কোন পত্রিকায়
যেতেও পারবেন না। তার কারণ গেলে তার ওই লেখার যে মান সেটা মূল্যায়ন নাও হতে পারে। তবে
আমার ধারণা প্রথম আলোতে কাজ করেছেন এমন যে কাউকে টেকনিক্যাল গ্রাউন্ডে অনেক গুরুত্ব
দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে আমি অবাক হব না যদি দু এক মাসের ভিতরে দেখা যায় যে আস্তে আস্তে
প্রথম আলো বিভিন্ন কর্মী অন্য পত্রিকায় যাওয়া শুরু করে দিয়েছেন।
ব্যাংক মার্জারের যেমন একটি ঘটনা বর্তমানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ঠিক
তেমনি পত্রিকা জগতেও শিল্প গোষ্ঠীর যে গন্ডগোলের ঘটনা ঘটেছে এটিও ব্যাংক মার্জারের
ঘটনার পর্যায়ে চলে যাবে। ব্যাংকিং ক্ষেত্রে দেখা যায়, দুটি ব্যাংক একীভূত হচ্ছে। আর
এদিকে দেখা যাবে, সংবাদকর্মীরা অন্য পত্রিকায় চলে যাচ্ছে।
তবে আমার মনে হয় না, এখন যে অবস্থা চলছে এতে প্রথম আলো আর আগের
মতো প্রথম আলো থাকতে পারবে। এটা কিছুতেই সম্ভব না এটি মোটামুটিভাবে নিশ্চিত। তাই আমার
মনে হয় প্রথম আলো সেই ব্যাংক মার্জারের পর্যায়ে চলে এসেছে। এখন অন্য পত্রিকা যাদের
আছে, তারাও প্রথম আলো কিনে নিতে পারেন। এটি সম্ভব। এরকম শিল্পগোষ্ঠীর কোন কমতি বর্তমানে
বাংলাদেশে নেই। যে কোন শিল্প গোষ্ঠীই এটা কিনবে।
তবে আমি আশা রাখব, যারাই প্রথম আলো কিনবে, তারা যেন অন্তত পক্ষে
এটা খেয়াল রাখে যাতে সাংবাদিকদের কোন ক্ষতি না হয়। সুতরাং এদেশের একজন সাধারণ নাগরিক
হিসেবে আমার দাবী হচ্ছে সাংবাদিকরা যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:০৬ পিএম, ১৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।
দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই।
বারো বছর আগের কথা। ডেভিড ক্যামেরুন তখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। সে সময় একদিন তিনি একটি হাসপাতালের ওয়ার্ডে ঢুকে পড়লেন। রোগীর অনুমতি সাপেক্ষে রোগীর সাথে ছবি তুলতে গেলেন। বাঁধ সাধলেন ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা একজন চিকিৎসক। জীবাণু প্রতিরোধের কোন পদক্ষেপ না নিয়ে এবং চিকিৎসকের অনুমতি ব্যতিরেকে তিনি ওই কাজটি করছিলেন। ডেভিড ক্যামেরুন তাঁর ভুল বুঝতে পেরেছিলেন সাথে সাথে। ক্ষমা চাইলেন এবং ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে গেলেন।
এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা করবেন। প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর