নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০১ এএম, ২২ নভেম্বর, ২০১৮
নির্বাচন কমিশন বলেছে, বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে অনুষ্ঠিত হবে। তার জন্য তারা নিরপেক্ষভাবে কাজ করে যাচ্ছে। কতটুকু নিরপেক্ষভাবে তারা কাজ করছে, তা মনে হয় বাংলাদেশের অনেকের কাছেই পরিষ্কার না। ধোঁয়াশায় আছে অনেক ভোটার, সচেতন দেশ প্রেমিক অনেক মানুষ, যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করেন। বামাতীরা যাদের অনেককে ব্যঙ্গ করে চেতনা ব্যবসায়ী বলে!
নির্বাচন সংশ্লিষ্ট দুটি বড় ঘটনা ঘটে গেছে এ মাসেই। একটিতে আদালত অবমাননা করা হয়েছে, আর তাতে বিএনপি’র একদল সিনিয়র নেতা সহযোগিতা করেছেন আদালতের আদেশকে উপেক্ষা করে, আদালত অবমাননায়। আইনের দৃষ্টিতে পলাতক থাকা অবস্থায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কোনো ধরনের বক্তব্য-বিবৃতি সব ধরনের গণমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশ নিষিদ্ধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে ৭ জানুয়ারি ২০১৫ সালে এ আদেশ দেন। আদালতের এই আদেশ অবমাননা করা হয়েছে আর এতে স্কাইপিতে বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ইন্টারভিউ নিয়ে। এতে যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের কয়েকজন আবার বিএনপি দলীয় বড় বড় আইনজীবী। ফলে বাংলাদেশে বিদ্যমান আইনেই আদালত অবমাননার দায়ে এদের সবার শাস্তি হবার কথা। বাংলাদেশের পেনাল কোডে বা সাক্ষ্য আইনে বা বাংলাদেশের অন্য কোন আইনে কিছু লেখা না থাকলেও, নতুন কোন অপরাধের ব্যাপারে সুস্পষ্ট কোন আইন না থাকলেও অনুরূপ কোন ঘটনায় বিচার বিভাগের আগের সিদ্ধান্তকে আইন ধরে আদালত তা আমলে নিয়ে রায় দিতে পারেন, সেটা কিন্তু বাংলাদেশের আইনে বলা আছে। অপরাধের সহযোগী সম্পর্কে আদালতের একটি খুব আলোচিত মালার রায়ের উদাহরণ এখানে দেওয়া যায়। সবাই জানেন যে, গণহত্যায় সহযোগিতার দায়ে নিজামীর ফাঁসির রায় হলে তা রিভিউয়ের আবেদন করা হয়। মতিউর রহমান নিজামীর সাজার রিভিউ আবেদনের প্রসঙ্গে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি মতিউর রহমান নিজামীর পক্ষের উকিল খন্দকার মাহবুব হোসেনকে বলেছিলেন- ‘আপনারা রিভিউর আবেদনে যে লিখিত জবাব দিয়েছেন, তাতে বলা হয়েছে নিজামী সাহেব পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সহযোগী ছিলেন। এট্রোসিটির সঙ্গে ছিলেন। তাকে শাস্তি দেওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট।’ কিন্তু এর প্রয়োগ সংশ্লিষ্ট পক্ষের কারো আচরণ পরিষ্কার না।
দ্বিতীয় ঘটনাটি হচ্ছে, বিএনপির সংশোধিত গঠনতন্ত্র গ্রহণ না করার জন্য আদালতের আদেশ। গত ৩ নভেম্বর ২০১৮ রাতে নির্বাচন কমিশনের ৩৮তম কমিশন সভা শেষে ইসি সচিব বলেন, ‘বিএনপির সংশোধিত গঠনতন্ত্রে কিংবা নির্বাচন কমিশনের আইন-কানুনে যাই থাকুক না কেন আদালত যে নির্দেশনা দেবে সেটা মানা আমাদের জন্য একেবারেই বাধ্যতামূলক।’ কিন্তু বাস্তবে তাঁর কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
গঠনতন্ত্রের ৭ নং বাদ দিয়ে বিএনপি তাদের সংশোধিত গঠনতন্ত্র ২৮ জানুয়ারি ২০১৮ রোববার নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়। কিন্তু এখনো বিএনপি’র ওয়েব সাইটে তাদের গঠনতন্ত্রের ৭ (ঘ) ধারাটি বহাল দেখা যাচ্ছে, হয়তো নির্বাচন কমিশনের মতামতের অপেক্ষায় আছে।
বিএনপির গঠনতন্ত্রে ৭ নম্বর ধারায় ‘কমিটির সদস্যপদের অযোগ্যতা’ শিরোনামে বলা আছে, ‘নিম্নোক্ত ব্যক্তিগণ জাতীয় কাউন্সিল, জাতীয় নির্বাহী কমিটি, জাতীয় স্থায়ী কমিটি বা যেকোনো পর্যায়ের যেকোনো নির্বাহী কমিটির সদস্যপদের কিংবা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের প্রার্থী পদের অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।’ তাঁরা হলেন: (ক) ১৯৭২ সালের রাষ্ট্রপতির আদেশ নম্বর ৮-এর বলে দণ্ডিত ব্যক্তি। (খ) দেউলিয়া, (গ) উন্মাদ বলে প্রমাণিত ব্যক্তি, (ঘ) সমাজে দুর্নীতিপরায়ণ বা কুখ্যাত বলে পরিচিত ব্যক্তি।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির গঠনতন্ত্রের ১ নং ধারায় বলা হয়েছে যে, ...... এবং অফিসের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের পদবী, দায়-দায়িত্ব ও ক্ষমতা চেয়ারম্যান নিজে নিরূপণ করবেন।
গঠনতন্ত্রের ৪ নং শব্দার্থ ধারার (ঘ) চেয়ারম্যান শব্দটি ক্ষেত্র বিশেষে চেয়ারপার্সনকেও বোঝাবে বলা হয়েছে।
বিএনপি’র গঠনতন্ত্রের ৫ ধারায় দলের সদস্য হবার যোগ্যতা, অযোগ্যতা, সদস্যের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে।
ধারা ৬ এর (১৩)তে পার্লামেন্টারি বোর্ড সম্পর্কে কী বলা হয়েছে, ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য কিংবা অন্য যে কোন নির্বাচনের জন্য দলের প্রার্থী মনোনয়নের জন্য দলের একটি পার্লামেন্টারি বোর্ড থাকবে। দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটিই হবে দলের পার্লামেন্টারি বোর্ড। তবে যে জেলার প্রার্থী মনোনয়নের জন্য পার্লামেন্টারি বোর্ডের সভা আহুত হবে সেই জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উক্ত সভায় পার্লামেন্টারি বোর্ডের সদস্য বলে গণ্য করা হবে। তবে কোন সদস্য যদি নির্বাচন প্রার্থী হন তাঁর নির্বাচনী এলাকার প্রার্থী বিবেচনাকালে বোর্ডের সভায় তিনি অংশ গ্রহণ করতে পারবেন না। দলের চেয়ারম্যান হবেন পার্লামেন্টারি বোর্ডের সভাপতি। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিংবা যে কোন নির্বাচনে দলের প্রার্থী মনোনয়নের দায়িত্ব পার্লামেন্টারি বোর্ড পালন করবেন এবং এ ব্যাপারে বোর্ডের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে’।
যে দলের তার চেয়ারপার্সন আর কো-চেয়ারপার্সন দুজনকেই আদালত অযোগ্য ঘোষণা করেছেন সেই দল কীভাবে পার্লামেন্টারি বোর্ডের সভা করলো একজন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামির নেতৃত্বে! কীভাবে তারা মনোনীত ব্যক্তিকে ক্ষমতা দিয়ে দলের প্রতীক বরাদ্দের জন্য নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দেবেন? বিএনপি’র গঠনতন্ত্রের গঠনতন্ত্রের ১ নং ধারায় বলা হয়েছে যে, ...... এবং অফিসের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের পদবী, দায়-দায়িত্ব ও ক্ষমতা চেয়ারম্যান নিজে নিরূপণ করবেন। তাহলে কে কাকে দায়িত্ব দেবেন? কারণ প্রায় সব ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে, কোন দেশ বা দলের বা কোন সংগঠনের গঠনতন্ত্রের এক ধারার সাথে অন্য ধারার/ উপধারার সম্পর্ক থাকে। তাই এককভাবে কোন ধারার ব্যাখ্যা বা প্রয়োগে ওই গঠনতন্ত্রের সংশ্লিষ্ট ধারা/ উপধারাকে উপেক্ষা করা যায় না, আইনসংগতও নয়।
বিএনপির সংশোধিত গঠনতন্ত্র প্রশ্নে আদালতের বাধ্যতামূলক নির্দেশনা মানতে বা প্রয়োগে নির্বাচন কমিশন কাল ক্ষেপণ করছেন কেন? সেই সিদ্ধান্ত বিএনপি’র পক্ষে যাবার সম্ভাবনা নেই তাই ভেবেই কি নির্বাচন কমিশন এটা করছে? তাই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে, নিজেদের ভাবমূর্তি রক্ষা আর সরকারকে বিব্রত করা তথা দেশকে একটা অস্থিরতায় না নেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন বিএনপিকে তাদের সিদ্ধান্ত জানাতে গড়িমসির আসল রহস্য কী? বিএনপি বহুদিন ধরেই বলছে এই নির্বাচন কমিশন সরকারের আজ্ঞাবাহক, যোগ্যতাহীন, অক্ষম ইত্যাদি। সামনে নির্বাচন তাই বিএনপি’র সংশোধিত গঠনতন্ত্র প্রশ্নে আদালতের আদেশ মেনে নির্বাচন কমিশন তাদের সিদ্ধান্ত দেশবাসীকে জানায় না কেন? এত কিছু ঘটনার পরেও বাঁধা কোথায় তাদের? ‘তারেক জিয়া নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন করেন নি, আমাদের আইনে তার সুস্পষ্ট কিছু বলা না থাকায় কিছু করতে পারি না আমরা। তারেক বিদেশ থেকে এটা করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ার সহায়তায়। এ সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনে সুস্পষ্ট আইন নেই, ইত্যাদি, ইত্যাদি...’ বলতে তো সময় লাগলো না নির্বাচন কমিশনের? তাহলে কি করছে নির্বাচন কমিশন, কার পক্ষে কাজ করছে নিরপেক্ষ ভাব নিয়ে? নির্বাচন কমিশন কি বিএনপি’র পক্ষে কাজ করছে! প্রশ্নটি আসে অনেকের মনে।
তথ্যঋণ: বিএনপি’র গঠনতন্ত্র, অনলাইন পোর্টাল, ইত্যাদি।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
দেশে একটি সুষ্ঠু
নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে
রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং
সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা
সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ
ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি
সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।
আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা
রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত
অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের
গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান
ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে
দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে
এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক
করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি
একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি
পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার
করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের
সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন
পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন
শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী
লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের
প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন
করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে
সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।
গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে,
তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো
দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের
অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা
পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে
প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ
এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে
নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও
একই ভাবে থেকেছেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি
হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে
যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু
এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার
পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে
তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:২৬ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি
প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর
রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা
করবেন।
প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে
আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা
নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর। আমার ধারণা যারাই প্রথম আলো কিনেন না
কেন তারা প্রথম দিকে মতিউর রহমান সাহেবকে রাখলেও পরবর্তীতে ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে
সম্পাদক পরিবর্তন করবে। আর প্রথম আলো যদি কোন যুক্তিপূর্ণ লোকের কাছে দেয় তাহলে আমার
মতে এখানে সম্ভবত আনিসুল হক সাহেব সম্পাদক হবেন। কারণ তার প্রতি লোকের অনেক শ্রদ্ধাবোধ
আছে এবং তিনি সবসময় একটা রেড লাইন রক্ষা করে চলেন। এটা আমরা সকলেই জানি। তার সাথে
অনেকেরই ভালো সম্পর্ক এবং তিনি খুবই জ্ঞানী
লোক।
এর আগে মতিউর রহমান যখন একতা থেকে আজকের কাগজে যান, তখন তার উদ্দেশ্যই
ছিল যে, একটি পত্রিকা কীভাবে চলে সেটা শেখা এবং এখান থেকে একসাথে সাংবাদিক নিয়ে বেরিয়ে
যাওয়া। তিনি সেটা করেছিলেন। তারপর ভোরের কাগজ থেকে একই কাজ করেছেন। সুতরাং তার সত্যিকারের
নীতিবোধ বলতে যেটা বোঝায় সেটা দুর্ভাগ্যবশত তিনি প্রমাণ করতে পারেননি।
তিনি এক সময় কমিউনিস্টদের সাথে থাকলেও এখন তার চেয়ে বড় দক্ষিণপন্থী
পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়াই কঠিন। এ কারণে প্রথম আলো যে বিক্রি হবে এই ব্যাপারে সাধারণ লোকের
ভিতরে এখন আর কোন সন্দেহ নেই।
এখন প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টারের কী হবে এই নিয়ে আলাপ আলোচনা হচ্ছে
এবং এই আলাপ আলোচনা খুব দীর্ঘদিন যে চলবে তা না। আমার মনে হয় জুন-জুলাই মাসের ভিতরেই
এর একটা ফয়সালা হয়ে যাবে। কারণ স্বাভাবিক ভাবেই বুঝি যে, একটি পত্রিকা পাঠকপ্রিয়তা
পেতে বেশ সময় লাগে। এটা একদিন দুইদিনের ব্যাপার না। আবার ঠিক তেমনিভাবে যখন পাঠকপ্রিয়তা
কমতে থাকে সেটাও একদিন দুইদিনে হয় না। ধীরে ধীরে হয়। এই মিডিয়া জগতের নিয়মই তাই।
আমি ১৯৬১ সালে পত্রিকা বলতে শুধুমাত্র ইত্তেফাক এর কথাই জানতাম।
সেই ধারণা থেকে বলতে পারি এখন প্রথম আলোর যদি কিছু কর্মী এর চেয়ে ভালো কোন সুযোগ সুবিধা
দেখেন তাহলে তারা বিক্রি হওয়ার আগেই চলে যাবেন। কারণ স্বাভাবিকভাবেই একজন সাংবাদিকের
একটা ক্যারিয়ার আছে এবং প্রথম আলোর মতো পত্রিকাতে কাজ করে তিনি তো যে কোন পত্রিকায়
যেতেও পারবেন না। তার কারণ গেলে তার ওই লেখার যে মান সেটা মূল্যায়ন নাও হতে পারে। তবে
আমার ধারণা প্রথম আলোতে কাজ করেছেন এমন যে কাউকে টেকনিক্যাল গ্রাউন্ডে অনেক গুরুত্ব
দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে আমি অবাক হব না যদি দু এক মাসের ভিতরে দেখা যায় যে আস্তে আস্তে
প্রথম আলো বিভিন্ন কর্মী অন্য পত্রিকায় যাওয়া শুরু করে দিয়েছেন।
ব্যাংক মার্জারের যেমন একটি ঘটনা বর্তমানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ঠিক
তেমনি পত্রিকা জগতেও শিল্প গোষ্ঠীর যে গন্ডগোলের ঘটনা ঘটেছে এটিও ব্যাংক মার্জারের
ঘটনার পর্যায়ে চলে যাবে। ব্যাংকিং ক্ষেত্রে দেখা যায়, দুটি ব্যাংক একীভূত হচ্ছে। আর
এদিকে দেখা যাবে, সংবাদকর্মীরা অন্য পত্রিকায় চলে যাচ্ছে।
তবে আমার মনে হয় না, এখন যে অবস্থা চলছে এতে প্রথম আলো আর আগের
মতো প্রথম আলো থাকতে পারবে। এটা কিছুতেই সম্ভব না এটি মোটামুটিভাবে নিশ্চিত। তাই আমার
মনে হয় প্রথম আলো সেই ব্যাংক মার্জারের পর্যায়ে চলে এসেছে। এখন অন্য পত্রিকা যাদের
আছে, তারাও প্রথম আলো কিনে নিতে পারেন। এটি সম্ভব। এরকম শিল্পগোষ্ঠীর কোন কমতি বর্তমানে
বাংলাদেশে নেই। যে কোন শিল্প গোষ্ঠীই এটা কিনবে।
তবে আমি আশা রাখব, যারাই প্রথম আলো কিনবে, তারা যেন অন্তত পক্ষে
এটা খেয়াল রাখে যাতে সাংবাদিকদের কোন ক্ষতি না হয়। সুতরাং এদেশের একজন সাধারণ নাগরিক
হিসেবে আমার দাবী হচ্ছে সাংবাদিকরা যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।
মন্তব্য করুন
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।
দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই।
বারো বছর আগের কথা। ডেভিড ক্যামেরুন তখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। সে সময় একদিন তিনি একটি হাসপাতালের ওয়ার্ডে ঢুকে পড়লেন। রোগীর অনুমতি সাপেক্ষে রোগীর সাথে ছবি তুলতে গেলেন। বাঁধ সাধলেন ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা একজন চিকিৎসক। জীবাণু প্রতিরোধের কোন পদক্ষেপ না নিয়ে এবং চিকিৎসকের অনুমতি ব্যতিরেকে তিনি ওই কাজটি করছিলেন। ডেভিড ক্যামেরুন তাঁর ভুল বুঝতে পেরেছিলেন সাথে সাথে। ক্ষমা চাইলেন এবং ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে গেলেন।
এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা করবেন। প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর