নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০৩ এএম, ২৭ নভেম্বর, ২০১৮
বলা হয়, রাজনীতি হলো আদর্শের বিষয়। এই আদর্শকে বুকে ধারণ করেই একজন জনকল্যাণে এগিয়ে আসেন। এটিই হলো রাজনীতির মূল বিষয়। কিন্তু প্রায়ই দেখা যায়, পদ-পদবির লোভে, কিছু পাওয়ার আশায় কিছু রাজনীতিবিদরা বিসর্জন দেন আদর্শকে। এই আদর্শ বিসর্জনের বিষয়টিও একটি মাত্রা আছে। ধরা যাক, একটি প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল থেকে কেউ আরেকটি একই রকম প্রগতিশীল রাজনৈতিক দলে চলে গেলেন। যেমন বাম রাজনৈতিক দল থেকে আরেকটি বাম দলে গেলেন কেউ। এমন বদল দৃষ্টিকটু হলেও মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু অনেকের আদর্শের বদল হয় সম্পূর্ণ বিপরীত। রাজনৈতিক আদর্শে অনেকে ‘ইউটার্ন’ নেন। বিষয়টি অনেকটা এক মেরু থেকে আরেক মেরুতে যাওয়ার মতোই। মুক্তিযুদ্ধের কথা বলা রাজনীতি থেকে ক্ষমতা, পদের লোভে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তিতে যাওয়া এমনই এক ইউটার্ন। আর এমন রাজনৈতিক আদর্শের বিচ্যুতিকে ভ্রষ্ট রাজনীতি বলাই সবচেয়ে উপযুক্ত। বাংলাদেশের এমন ভ্রষ্ট রাজনীতিবিদের সংখ্যাই দীর্ঘ হচ্ছে।
সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, যিনি বঙ্গবন্ধুর উপর গবেষণা করে লাভ করেছেন পিএইচডি ডিগ্রি। তিনিই বাংলাদেশে প্রথম ‘ফ্যাক্টস অ্যান্ড ডকুমেন্ট’ বই প্রকাশ করেছিলেন। যেখানে বলা হয়েছিল, জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জড়িত। সেই অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, হলেন ভ্রষ্ট রাজনীতির সাম্প্রতিক সংযোজন। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন আবু সাইয়িদ। মনোনয়ন না পেয়ে আজ যোগ দিয়েছেন গণফোরামে। নিশ্চিত ভাবেই গণফোরামের ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন এই সাবেক ভ্রষ্ট গবেষক রাজনীতিবিদ।
তাহলে রাজনীতি শুধু একটা সংসদ সদস্যের পদলাভ, রাজনীতি মানেই কী শুধু প্রাপ্তির আশা। এখানে আদর্শ, নীতি, নৈতিকতা সবই কী তবে মুখোশ, লেবাস।
ভ্রষ্ট রাজনীতির সাম্প্রতিক সংযোজন অধ্যাপক আবু সাইয়িদ হলেও, বাংলাদেশে এর সূচনা যিনি করেছিলেন, তিনি ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ।
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ ছিলেন আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কৌসুলি। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠন ব্যারিস্টার মওদুদকে বঙ্গবন্ধু ক্ষমতায় থাকাকালে পোস্টমাস্টার জেনারেল করা হয়েছিল। কিন্তু ৭৫’র ১৫ আগস্টের পর সবচেয়ে বড় বঙ্গবন্ধু বিদ্বেষী হন ব্যারিস্টার মওদুদ। এখন তিনি যে রাজনীতি করেন, তারা সরাসরি বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জড়িত। ৭৫’র ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের সুবিধাভোগী যে দল, সেই দলের রাজনীতিকে ধারণ করে চলেছেন ব্যারিস্টার মওদুদ। তবে এটিই যে তাঁর শেষ গন্তব্য, তাও কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারবেন না। বহুবার গন্তব্য বদলেছেন ব্যারিস্টার মওদুদ। তিনি কখনো জাতীয় পার্টি, কখনো বিএনপির মধ্যে পিং পং বলের মতো এপাশ ওপাশ করেছেন।
আর বর্তমান জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দিকে তাকালে দেখা যাবে, ভ্রষ্ট রাজনীতির যেন এক মেলা বসেছে। এ কে খন্দকার ছিলেন মুক্তিযুদ্ধকালে বিমান বাহিনীর প্রধান। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যখন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আত্মসমর্পণ করে, সেখানে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের নেতৃত্ব দিয়েছেন এ কে খন্দকর। সেই তিনিই শুধুমাত্র লোভে পড়ে ধানের শীষ প্রতীক নিতে যাচ্ছেন বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
রেজা কিবরিয়া, যাঁর পিতাকে হত্যা করেছিল বিএনপি জামাত জোট সরকার। ওই মামলায় এখনো বিচারাধীন, আসামিরা হলেন আরিফুল হক চৌধুরীসহ সিলেট অঞ্চলের বিএনপির নেতৃবৃন্দ। কিন্তু রেজা কিবরিয়া শুধুমাত্র মনোনয়নের জন্যই ধানের শীষ প্রতীক বেছে নিয়েছেন। এমন আদর্শিক স্থলনে, গা ঘিন ঘিন হওয়াই কী স্বাভাবিক নয়।
গোলাম মাওলা রনি, ভ্রষ্ট রাজনীতিদের সর্বশেষ সংযোজন। দুদিন আগেও তিনি টকশোতে, বিএনপিকে ধোলাই দিয়েছেন। এখন তিনি বিএনপিতে যোগ দিয়ে ধানের শীষে নির্বাচন করছেন। অথচ এই গোলাম মাওলা রনিকেই ২০০৮ সালে একরকম রাস্তা থেকে তুলে এনে সাংসদ বানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এখন ক্ষুদ্র স্বার্থেই সম্পূর্ণ আদর্শ উল্টে ফেললেন তিনি! এই রনিরাই যখন আদর্শ, নীতির কথা বললে, মানুষই লজ্জিত হয়।
ঐক্যফ্রন্টের তালিকার দিকে একবার তাকালেই বোঝা যায়, যাঁরা সেখানে এখন যোগ দিচ্ছেন, তাঁরা সবাই যাচ্ছেন একটা পদের আশায়, কোনো মোহে নীতি নৈতিকতার কাপড় খুলে, মোটামুটি দিগম্বর হয়েই রাজনীতির করছেন। আদর্শের এমন স্থলন দেখে লজ্জায় মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে মানুষ।
এমন আদর্শের স্থলনের রাজনীতি শুধু ঐক্যফ্রন্টেই না, আছে অন্যান্য জোট-দলেও। শমসের মবিন চৌধুরী, কদিন আগেও প্রশ্রয় দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের, তাঁর হাত দিয়েই পদোন্নতি পেয়েছেন ৭৫ এর খুনিরা। এখন তিনি বঙ্গবন্ধুর নাম কপচাচ্ছেন। তিনি হৃদয় থেকে বঙ্গবন্ধু নাম নেন, নাকি নৌকাকে ধারণ করতে বঙ্গবন্ধুর নাম কপচান?
আবার যুক্তফ্রন্টের নেতা ও বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট বদরুদ্দোজা চৌধুরী, এক হাতে গীতা, আরেক হাতে কোরআন শরীফ রেখে বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে হিন্দু রাষ্ট্র হবে। তাঁর সেই সাবাস বাংলাদেশ দিয়ে তিনি মিথ্যার বেসাতি গড়ে বিভ্রান্ত করেছিলেন দেশবাসীকে। তিনিও এখন হয়ে গেছেন বঙ্গবন্ধুর সৈনিক। নৌকা মার্কার লোভে তিনি ও তাঁর সন্তান সকাল-বিকেল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে বৈঠক করছে।
বাংলাদেশে রাজনীতির এই নোংরামিপনা, যে কোনো নোংরা ছবিকেও হার মানিয়ে দেয়। এক সময় অশ্লীল চলচ্চিত্রের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সেন্সর বোর্ড সোচ্চার হয়েছিল। এখন মনে হচ্ছে, অশ্লীল রাজনীতির বিরুদ্ধেও একটি সেন্সর বোর্ড গঠন করা দরকার হয়ে পড়েছে।
এবারের নির্বাচনে ডিগবাজি, এক মেরু থেকে আরেক মেরুতে যাওয়ার যে প্রতিযোগিতা, সেখানে বাংলাদেশের ভ্রষ্ট রাজনীতিবিদদের তালিকা আরও দীর্ঘ হচ্ছে।
একটি কথা বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য, ভ্রষ্ট রাজনীতি কখনোই মানুষ গ্রহণ করে না। যাঁরা এই ভ্রষ্ট রাজনীতি করে, তাঁদের মানুষ পতিত রাজনীতিবিদ হিসেবেই গণ্য করে। আদর্শ ভুল বা শুদ্ধ হতে পারে, কিন্তু একই আদর্শে যাঁরা থাকেন, তারাই জায়গা করে নেয় মানুষের হৃদয়ে।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
দেশে একটি সুষ্ঠু
নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে
রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং
সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা
সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ
ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি
সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।
আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা
রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত
অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের
গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান
ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে
দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে
এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক
করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি
একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি
পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার
করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের
সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন
পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন
শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী
লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের
প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন
করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে
সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।
গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে,
তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো
দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের
অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা
পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে
প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ
এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে
নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও
একই ভাবে থেকেছেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি
হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে
যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু
এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার
পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে
তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:২৬ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।
দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই।