নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৪৫ পিএম, ০৪ ডিসেম্বর, ২০১৮
বাংলাদেশে ব্যাঙ্গের ছাতার মতো দলের আত্মপ্রকাশ হয়েছে। নির্বাচন সামনে রেখেও রাজনৈতিক দল গঠনে হিড়িক পড়ে; ভোটের আশায় জোট করে, যদি এমপি হওয়া যায়, ইত্যাদি প্রত্যাশায়। কিন্তু এবছর নির্বাচনের আগে অন্যরকম একটা মেরুকরণ বিপ্লব হয়েছে বলা যায়। সবাই সুবধাবাদিদের প্লাটফর্ম মানে বিএনপি’র সাথে গাঁটছড়া বেঁধেছে। এই মেরুকরণ বিপ্লব পরেই বসন্তের পাতা ঝরার মত করে আস্তে আস্তে বিভিন্ন দলের নেতাদের নেকাব খুলে পড়তে শুরু হয়েছে। স্পষ্ট হচ্ছে তাঁদের আসল চেহারা আর নৈতিক, রাজনৈতিক অবস্থান। তাই মনে হতে পারে যে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলের সংখ্যা কমে যাচ্ছে! কারণ এখন রাজনৈতিক দল স্পষ্টত দুইটা হয়ে গেছে। একটা দল হচ্ছে কিছু মিত্রসহ আওয়ামী লীগ আরেকটা হচ্ছে দল হচ্ছে আওয়ামী লীগ বিরোধী, শেখ হাসিনা বিরোধী।
সুবিধাবাদীরা বা আওয়ামীলীগ বিরোধীরা আওয়ামীলীগের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা নষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে একাট্টা হয়ে শেখ হাসিনা বধ মিশনে নেমেছে। এরা একা না, তাঁদের সাথে আছে তাঁদের পছন্দের মিডিয়া, সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য অডিও, ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করে তা প্রচার করা, বিদেশে বসে অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে মিথ্যাচার, লবিস্ট নিয়োগ করে বিশেষ বিশেষ ব্যক্তিকে হিরো বানানোর মিশন নিয়ে নেমেছে। এর পিছনে আছে পাকিস্তান আর ১৯৭১ সালে পাকিদের পক্ষে থাকা দুই একটা দেশ, যারা দিচ্ছেন কাড়ি কাড়ি অর্থের যোগান।
তাই সুবধাবাদীদের প্লাটফর্মে যোগদান করা রাজনীতিকরা উল্টা সুরে গান গাচ্ছেন, সব লজ্জা-শরম ভুলে। মুখে মুক্তিযুদ্ধ আর বঙ্গবন্ধু বঙ্গবন্ধু বলে ফেনা তুললেও মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী আর বঙ্গবন্ধুর প্রত্যক্ষ, পরোক্ষ খুনিদের সাথে হাত মিলিয়ে দেশ বিদেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করে চলেছে। আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে রাজনৈতিক দল করেছেন যাদের দলের গঠনতন্ত্রে লেখা উদ্দেশ্য আর লক্ষ্য হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাস্তবায়ন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণ। কিন্তু তাঁরা নির্বাচনী জোট করেন জামায়াতের সাথে, সেই দল যার নেতারা ১৯৭১ সালে খুন, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগসহ মানবতা বিরোধী অপরাধের দায়ে সাজা পেয়েছে, তাদের দলও নিষিদ্ধ হয়েছে। সেই জামায়াতের সাথে যেয়ে ড. কামাল হোসেন, কাদের সিদ্দিকী, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, রেজা কিবরিয়ারা মুক্তিযুদ্ধ আর বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলবেন! ‘পাগল বিজ্ঞানীর ছেলে পাগল আইটি এক্সপার্ট’ সিজিব ওয়াজেদ জয়ের কল্যাণে তথ্য আর চাঁপা থাকে না, সবার কাছে পৌঁছে যায় ভালো মন্দ সব খবরই। সবাই জেনে গেছেন যে হয় পাক প্রীতি বা আর্থিক দুর্নীতির সুবিধা নিতেই জোটের বাহানায় এই নতুন মেরুকরণ। এখন অনেকেই জানেন যে, ড. কামালের শিকড় পাকিস্তানে। রেজা কিবরিয়ার মামা যাদু মিয়া কুখ্যাত রাজাকার (হয়তো মায়ের রক্তের প্রভাব), কাদের সিদ্দিকী দুর্নীতিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত একটা মানুষ, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ কামিনী না কাঞ্চনের লোভে গেছেন তা জানা যাবে শিগগিরই। গোলাম মাওলা রনিরা আওয়ামী লীগে ঘাপটি মেরে বসে থাকা পাকি ছিল তা এখন সবার কাছে সুস্পষ্ট, এমন আরও আছে, পড়ে নেকাব খুলবে তারা।
মিডিয়ায় আবার এদের অনেককেই প্রমোট করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাস্তবায়নের জন্য প্রতিষ্ঠিত পরিচালিত প্রিন্ট বা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় এদের দিয়ে টক শো করায়। কি অবাক! যে দেশে বাদর নাচ দেখতে এক বা দুই শ লোক জড়ো হয় সেই দেশে যে সব নেতারা তাঁদের সমাবেশে ১০০ লোকের জমায়েত করতে পারেন না, আবার রাস্তার মাঝখান দিয়ে হেঁটে মিছিল করে নগরীতে যানজট তৈরি করেন। তাঁদের সরিয়ে দিলে বলে সমাবেশের মত সাংবিধানিক অধিকার হরণ করা হয়েছে। কিন্তু ২১শে আগস্ট শেখ হাসিনার সমাবেশ গ্রেনেড হামলা করে যখন প্রায় সিকি শত লোকের প্রাণ কেড়ে নেওয়া হয়, তখন আর তাঁরা সমাবেশের সাংবিধানিক অধিকারে কথা মুখে আনেন না। এত কিছুর পরেও তাঁদের নিয়ে মিডিয়ায় বড় বড় নিউজ হয়। কি কারণে জানা যায় না। কিছু বাম, কিছু ধর্মাশ্রয়ী গোষ্ঠী আর কিছু মিডিয়া কোন এক অদৃশ্য বাঁধনে লেপাটা লেপ্টি করে আছে। একটা নমুনা দিই-
৩০শে নভেম্বর ২০১৮ তারিখে প্রথম আলো ভুয়া ছবিসহ ‘হাউস অব কমন্সের প্রতিবেদন: দাবি পূরণ ছাড়া বিএনপির ভোটে আসা ছিল অপ্রত্যাশিত’ শিরোনামে একটা মিথ্যা খবর প্রকাশ করে। খবরে যুক্তরাজ্যের ‘হাউস অব কমন্স’এর বরাতে যা বলা হয়ে তা পুরোপুরি মিথ্যা। কথাগুলো বলেছেন জন লান, যিনি ‘হাউস অব কমন্স লাইব্রেরি’র একজন সিনিয়র রিসার্চ অ্যানালিস্ট। প্রথম আলোকে ব্যবহার করে তার একদার ‘একতা’ সম্পাদকের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এই খবর প্রকাশ করেছে যা চরম অসৎ সাংবাদিকতা। যতদিন যাচ্ছে উন্মোচিত হচ্ছে তথাকথিত প্রগতিশীলতার মুখোশে প্রতিক্রিয়াশীলতার মুখোশ খুলে যাচ্ছে। এই সম্পাদক নিজের কর্মীকে বিপদে ফেলে নিজে মাফ চেয়েছিল বায়তুল মোকাররমে গিয়ে, যার সম্পাদক ইচ্ছাকৃত ভাবে ছবি বিকৃত করার নির্দেশ দিয়ে জটিল পরিস্থিতি তৈরি করতে চেয়েছিলো গত নির্বাচনের আগে ২০০৭ সালে এক এগারোর সময়। সে সময় এই সম্পাদকের ভূমিকা সর্বজনবিদিত। তিনি এবারেও নতুন খেলায় মেতেছেন। কয়েকদিন আগেও এই পত্রিকা জাপান টোব্যাকোর বাংলাদেশে বিনিয়োগ নিয়ে মিথ্যাচার করেছে, যাতে বিদেশী বিনিয়োগকারীগণ ভয় পেয়ে বাংলাদেশে না আসেন। মানবতাবিরোধী অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে জাগরণ মঞ্চের আন্দোলন যখন তুঙ্গে তখন এই পত্রিকা মঞ্চের অন্যতম নেতা লাকীকে ‘বেশ্যা’ বানানোর চেষ্টায় তাদের পত্রিকায় নিবন্ধ ছাপেন। সাম্প্রতিক কালে সিনহা মিশনেও এই পত্রিকার সম্পৃক্ততার গুরুতর অভিযোগ আছে।এমন অনেক ভুয়া আর টুইটিং খবরের জন্মদাতা এই পত্রিকা আর তাদের সহযোগী কিছু মিডিয়া।
এসব দেখে ১৯৭৩ সালের একটা ঘটনার কথা মনে পড়ে। ঘটনাটি আমি জেনেছি বঙ্গবন্ধুর এক ঘনিষ্ঠজনের কাছে। মাওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে১৯৭৩ সালে খাদ্যের দাবিতে ঢাকায় ১৫-২২ মে অনশন ধর্মঘট হয়। বঙ্গবন্ধু নিজে এসে মাওলানা ভাসানীর অনশন ভাঙ্গাতে চাইলে মাওলানা ভাসানী সাথীদের অপেক্ষায় রেখে নিজেই নিজেই চলে যান বঙ্গবন্ধুর কাছে। পেপের জুস খাইয়ে বঙ্গবন্ধু নিজে মাওলানা ভাসানীর অনশন ভাঙ্গান। এর পর বঙ্গবন্ধুকে মাওলানা ভাসানী একান্তে বলেন যে, বঙ্গবন্ধু যেন নিজে যান বা ক্যামেরাম্যান পাঠিয়ে অনশনকারীদের ছবি তুলে নিয়ে রেখে দেন, যাতে কারা কারা তাঁর বিরোধী তাঁদের সবাইকে পরে ঠিকমত চিনে নিতে পারেন। বঙ্গবন্ধু বিরোধীদের প্রায় সবাইকে একটা প্লাটফর্মে আনার জন্য মাওলানা ভাসানী এই অনশনের আয়োজন করেছিলেন বলে দাবী করেন।
মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী বর্তমান রাজনৈতিক জোটের কে কে শেখ হাসিনা বধের মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছেন, তাঁদের চিনে রাখার এটাই উপযুক্ত সময়। সমস্যা বঙ্গবন্ধু কন্যাকে নিয়ে, এরা এসে কান্নাকাটি করলেই উনি ভুলে যান সব, ক্ষমা করে দেন, মনে কিছুই রাখেন না; কিন্তু ইতিহাস বলছে ক্ষমা করলেও কিছু কিছু কথা মনে রাখতেই হবে বঙ্গবন্ধু কন্যাকে, নিজের জন্য না হলেও তাঁর পরবর্তী প্রজন্ম, আর বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য।
লেখক: উন্নয়নকর্মী
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
দেশে একটি সুষ্ঠু
নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে
রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং
সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা
সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ
ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি
সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।
আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা
রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত
অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের
গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান
ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে
দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে
এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক
করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি
একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি
পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার
করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের
সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন
পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন
শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী
লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের
প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন
করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে
সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।
গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে,
তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো
দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের
অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা
পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে
প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ
এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে
নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও
একই ভাবে থেকেছেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি
হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে
যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু
এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার
পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে
তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:২৬ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।
দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই।