নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ০৪ এপ্রিল, ২০১৯
আমরা অনেকেই হ্যাকার কথাটা শুনেছি কিন্তু অনেকে ক্র্যাকার কী তা কি আমরা সবাই জানি? আমরা শুনে হতবাক হতে পারি যে আমাদের দেশেও অনেক হ্যাকার তো আছেই, আছে ক্র্যাকাররাও। ক্র্যাকাররাও হ্যাকার আবার অন্য ভাষায় বলা যায় এরা হ্যাকারদের গুরু। আমি ১২ বছর বয়সী বাংলাদেশী এক ক্র্যাকারের গল্প বলতে চাই। তার সবার আগে হ্যাকার আর ক্র্যাকারের পার্থক্যটা আমাদের জেনে নিতে হবে।
হ্যাকার শব্দটি আমাদের কাছে খুব পরিচিত কারণ সোশ্যাল মিডিয়ায় বন্ধুদের প্রায়ই কারো না কারো ফেসবুক একাউন্ট হ্যাক হবার দৌলতে। কিছুদিন আগেও আমরা দেখেছি যে ‘পাক-ভারত যুদ্ধ যুদ্ধ খেলায়’ দুই দেশে অনেক অয়েব সাইট হ্যাক হয়েছে। যা হোক মিডিয়ার বিভিন্ন তথ্য ঘেটে দেখা যায় যে, হ্যাকার হচ্ছে কিছু প্রতিভাবান মানুষ, যারা সব সময় আমাদের তৈরি বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও ওয়েবে থাকা তথ্য নষ্ট করার পাঁয়তারা করে। তবে ভালো হ্যাকারের কথাও জানা যায়। তাই বলা যায়, ‘হ্যাকার হচ্ছে এমন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী, যারা কম্পিউটারের ব্যবস্থার ব্যাপারে সাধারণের চেয়ে বেশি আগ্রহী এবং তারা একটি কম্পিউটার ব্যবস্থার খুঁটিনাটি সব জানতে চায়। তারা সাধারণ মানুষের চেয়ে একটু ভিন্নভাবে একটি কম্পিউটার ব্যবস্থাকে চিন্তা করে। মূলত তারা কম্পিউটার প্রোগ্রামার। তারা অপারেটিং সিস্টেম বা প্রোগ্রামিং ভাষার ব্যাপারে অন্যদের চেয়ে অনেক বেশি জানে। একটি কম্পিউটার ব্যবস্থা বা নেটওয়ার্কের কোথাও কোনো ফাঁক আছে কি না তারা তার খোঁজ করে। সিস্টেম বা নেটওয়ার্কটির ব্যাপারে বিস্তারিত জানে এবং সংশ্লিষ্টদের সেই সিস্টেমের ত্রুটির ব্যাপারে জানায় এবং এ ত্রুটি কেন হয়, কীভাবে তা বন্ধ করা যায় তাও বের করে। তারা তাদের সংগৃহীত জ্ঞান সবার জন্য মুক্ত করে দেয়। হ্যাকাররা এসব কাজ কোনো অর্থনৈতিক লাভের আশায় করে না’। নিউ হ্যাকারস ডিকশনারি (এমআইটি প্রেস ১৯৯৬) বইয়ে এরিক এস রাইমন্ড হ্যাকারদের সংজ্ঞা দেন এভাবে− ‘হ্যাকার হচ্ছে এমন জ্ঞানপিপাসু ব্যক্তি, যে বিভিন্ন প্রোগ্রামেবল সিস্টেমে ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করে।’ হ্যাকাররা যে শুধু কম্পিউটার সিস্টেমেই ঘুরে বেড়ায় তা নয়, তারা বিভিন্ন সফটওয়্যারের ত্রুটি বের করে সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানকে জানায়। হ্যাকারদের অনেক সময় একালের রবিনহুডও বলা হয়ে থাকে। কারণ, তারা তাদের জ্ঞানের পিপাসা মেটানোর জন্য একটি কম্পিউটার ব্যবস্থায় অনুপ্রবেশকরে এবং এর দুর্বলতা ঠিক করতে সাহায্য করে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রীয় সংস্থাও হ্যাকারদের কাজে লাগায় তাদের অনলাইন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ, এফবিআই, কিংবা এপল, গুগল, ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব হ্যাকার আছে, যারা তাদের সিস্টেমকে বাইরের আঘাত থেকে রক্ষা করে।
হ্যাকারদের সাধারণত তিন ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। যেমনঃ সাদা টুপি হ্যাকার-এরা কম্পিউটার তথা সাইবার ওয়ার্ল্ডের নিরাপত্তা প্রদান করে। এরা কখনও অপরের ক্ষতি সাধন করে না। এদেরকে ইথিকাল হ্যাকারও বলা হয়ে থাকে। ধূসর টুপি হ্যাকার- এরা এমন একধরনের হ্যাকার যারা সাদা টুপি ও কালো টুপিদের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থান করে। এরা ইচ্ছে করলে কারও ক্ষতি সাধনও করতে পারে আবার উপকারও করতে পারে। কালো টুপি হ্যাকার- হ্যাকার বলতে সাধারনত কালো টুপি হ্যাকারদেরই বুঝায়। এরা সবসময়ই কোন না কোন ভাবে অপরের ক্ষতি সাধন করে। সাইবার ওয়ার্ল্ডে এরা সবসময়ই ঘৃনিত হয়ে থাকে।
এবার আসি ক্র্যাকারের কথায়। ক্র্যাকাররাও একধরনের হ্যাকার। এরা বিভিন্ন সিস্টেমে ঢুকে সেটির অনেক কিছু পরিবর্তন করে কম্পিউটার ভাইরাস দিয়ে সব তথ্য মুছে দেয়। অনেক সময় বিভিন্ন ওয়েবসাইট হ্যাক করে তার বিনিময়ে টাকা দাবি করে। এ ধরনের হ্যাকারকে ক্র্যাকার বলা হয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যেসব সাইবার আইন করা হয়েছে, তা মূলত এসব ক্র্যাকারের জন্যই করা হয়েছে। ক্র্যাকাররা বিভিন্নভাবে কাজ করে। তারা অনেক সময় একটি সিস্টেমে ঢুকে তার সব তথ্য চুরি করে বেরিয়ে আসে, আবার অনেক সময় পুরো সিস্টেমটি ধ্বংস করে দেয়। বিভিন্ন ব্যাংক বা ই-কমার্স সাইট থেকে ক্রেডিট কার্ড চুরি করে তা চোরাই বাজারে এরাই বিক্রি করে। ক্র্যাকারদের দুই শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। একশ্রেণীর ক্র্যাকার আছে, যারা বিভিন্ন প্রোগ্রাম লিখে বা বিভিন্ন কৌশলে একটি সাইট বা সিস্টেমকে আক্রমণ করে অপর দিকে অন্য আরেক দল ক্র্যাকার আছে, যারা বিভিন্ন সফটওয়্যার বা টুলের মাধ্যমে একটি সিস্টেমে অবৈধভাবে প্রবেশ করে। এদের ধরার জন্য বিভিন্ন দেশে সাইবার পুলিশ রয়েছে।
এবার আসি বাংলাদেশি হ্যাকার-ক্র্যাকারদের কথায়। একজন বাবা নিত্য দিনের মতোই বাসায় ফিরে খাবার শেষে তার ছেলের সাথে কিছু কথা শেষ করে নেয়। পড়াশুনায় কোন সাহায্য লাগবে কি না তাও জেনে নেয়। তখন দেখে ছেলে খুব মনোযোগ দিয়ে অংক করছে। এই ফাঁকে সেই বাবা তার মেয়ের সাথে ফোনে কথা বলতে বলতে থাকে। বাবা বলছিলেন যে, ‘তোমার ভাই কম্পিউটারে খুব ভালো, তবে তার এক বন্ধু কম্পিটারে এতো ভালো যে, তাকে হ্যাকার বলে অনেকে’। ছেলেটি তার বাবার মুখের কথা কেড়ে নিয়ে ইংরেজী বাংলা মিশিয়ে যা বলল তা এমনঃ ইংরেজী মাধ্যমে পড়া তার বন্ধু ১৩ বছর বয়সী ‘ক’ (নাম বলতে চাই না) ১২ বছর বয়স থেকেই ইউরোপ অ্যামেরিকার সব বড় বড় সেলিব্রেটিদের ভেরিফাইড ফেসবুকে ঢুঁকে পড়তে পারে। সেখানে গিয়ে সে এমন বিতর্কিত কথা লিখে পোষ্ট দেয় যে তা নিয়ে শুরু হতে পারে তুমুল বিতর্ক যদি ঐ সেলিব্রেটি তা না ডিলিট করেন। এমন দুই চারটি ঘটনা ঘটেনি তা নয়। এটা তার নেশা। এছাড়া একই সার্ভিস প্রভাইডারের মধ্যে থাকলে সে বন্ধুদের কম্পিউটারে ঢুঁকে তাদের হোম ওয়ার্ক চুরি করে, করে। নিজের মোডিফাই করা সফটওয়্যার দিয়ে দূরে বসেই বন্ধুদের কম্পিউটারের কী বোর্ড নিজের দখলে নিয়ে নিতে পারে। ফলে তার বন্ধু কম্পিউটারে কি করছে তা সে জানতে পারে। তার আরেক বন্ধু আছে যে কম্পিউটার গেমের সাইটগুলোতে ঢুঁকে বিনা পয়সায় গেম ডাউনলোড করে নেয়, বাজার থেকে সে গেম কেনে না। এটাই তার নেশা। কম্পিউটার গেমের সাইটগুলোর পাস ওয়ার্ড ভাঙ্গতে নাকি কয়েক মিলিয়ন টাইম তাকে হিট করতে হয়। বাবা হতবাক হয়ে শোনে সাথে শোনে ছেলেটির বোন। ছেলেটি তার বাবাকে জানায় যে, বাংলাদেশের ঢাকা শহরেই আছে এমন অনেক ট্যালেন্টেড শিশু যারা বিভিন্ন সময় এমন অনেক অবাক করার মত ঘটনা ঘটানর ক্ষমতা রাখে। তাই আমরা বাংলাদেশেও বিভিন্ন সফটওয়্যারের ক্র্যাক ভার্সন বাজারে দেখতে পাই। বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানেও এদের মত অনেককে নিয়োগ দেয় নিজেদের সাইবার নিরাপত্তার জন্য।
জর্জ হটজ হলেন প্রথম ব্যক্তি, যিনি আইফোন অপারেটিং সিস্টেমের নিরাপত্তা বলয় ভাঙতে পেরেছিলেন। ২০০৭ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে আইফোন অপারেটিং সিস্টেম আনলক করে চমকে দিয়েছিলেন তিনি। মাত্র ২৬ বছর বয়সেই আন্তর্জাতিক তারকা স্টেটাস অর্জন করে ফেলেছেন জর্জ হটজ। হ্যাকার হিসেবে শুরু করে শেষ পর্যন্ত চালকবিহীন গাড়ি তৈরির প্রযুক্তি আবিষ্কার করে সাড়া ফেলে দিয়েছেন এই তরুণ।
ছোটবেলা থেকেই প্রযুক্তির প্রতি অদ্ভুত আকর্ষণ জর্জের। ১৪ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ইন্টেল সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং মেলায় আশ্চর্য রোবট তৈরি করে তিনি প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত রাউন্ডে পৌঁছেছিলেন। একটি ঘর স্ক্যান করে তার যথাযথ পরিমাপ কষে ফেলতে সক্ষম হয়েছিল সেই রোবট। বিভিন্ন সংবাদ চ্যানেলের অনুষ্ঠানে তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। পাশাপাশি তার আনলক করা দ্বিতীয় ৮ জিবি আইফোনটির বদলে সার্টিসেল সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা টেরি ডাইডোনের থেকে পান একটি নিশান ৩৫০ জেড স্পোর্টসকার ও ৩টি ৮ জিবি আইফোন। ২০০৯ সালে জর্জ বাজারে আনেন জেলব্রেক টুল।
হ্যাকিং জগতের রবিনহুড খ্যাত হ্যাকার হামজা বেনডেল্লাজ হ্যাকিং বিশ্বে "BX1" নামে পরিচিত। হামজা বেনডেল্লাজ কি একজন হ্যাকিং জগতের নায়ক নাকি শুধুই একজন সাইবার অপরাধী তা নিয়ে মতভেদ আছে।
হামজা বেনডেল্লাজ এবং রাশিয়ান কোডফেন্ডেট কে SpyEye কম্পিউটার ভাইরাস ব্যবহার এবং অমেরিকান ব্যাংক হতে মিলিয়ন ডলার চুরি করার জন্য দণ্ডিত করা হয়। তাকে ২০১৩ সালে থাইল্যান্ডে একটি এয়ারপোর্ট থেকে গ্রেফতার হয়।
২৭ বছর বয়সী আলজেরিয়ার কম্পিউটার বিজ্ঞানে এ স্নাতকের বিরুদ্ধে ২১৭ টির বেশী আমেরিকান ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা চুরি করার অভিযোগ করা হয়। ব্যাংক জালিয়াতি, এবং অন্যান্য অভিযোগের জন্য তিনি ১৭ বছরের কারাদণ্ড এবং এবং ২৪ মিলিয়ন ডলার জরিমানার সম্মুখীন হয়েছিলেন। তাঁর হ্যাক কৃত অর্থের পরিমাণ টাকার অংকে হিসাব করলে ১০০ মিলিয়ন ডলার বলে অনুমান করা হয়। হ্যাক কৃত সব অর্থ তিনি নাকি অসহায় দরিদ্র ফিলিস্তিনদের বিলিয়ে দেন। দুনিয়া জুড়ে বেশিরভাগ হ্যাকার বা ক্র্যাকারই শিশু বা কিশোর কিশোরী।
তথ্যঋণঃ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিশু, সোশ্যাল মিডিয়া, অন্যান্য
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:২৬ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি
প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর
রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা
করবেন।
প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে
আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা
নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর। আমার ধারণা যারাই প্রথম আলো কিনেন না
কেন তারা প্রথম দিকে মতিউর রহমান সাহেবকে রাখলেও পরবর্তীতে ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে
সম্পাদক পরিবর্তন করবে। আর প্রথম আলো যদি কোন যুক্তিপূর্ণ লোকের কাছে দেয় তাহলে আমার
মতে এখানে সম্ভবত আনিসুল হক সাহেব সম্পাদক হবেন। কারণ তার প্রতি লোকের অনেক শ্রদ্ধাবোধ
আছে এবং তিনি সবসময় একটা রেড লাইন রক্ষা করে চলেন। এটা আমরা সকলেই জানি। তার সাথে
অনেকেরই ভালো সম্পর্ক এবং তিনি খুবই জ্ঞানী
লোক।
এর আগে মতিউর রহমান যখন একতা থেকে আজকের কাগজে যান, তখন তার উদ্দেশ্যই
ছিল যে, একটি পত্রিকা কীভাবে চলে সেটা শেখা এবং এখান থেকে একসাথে সাংবাদিক নিয়ে বেরিয়ে
যাওয়া। তিনি সেটা করেছিলেন। তারপর ভোরের কাগজ থেকে একই কাজ করেছেন। সুতরাং তার সত্যিকারের
নীতিবোধ বলতে যেটা বোঝায় সেটা দুর্ভাগ্যবশত তিনি প্রমাণ করতে পারেননি।
তিনি এক সময় কমিউনিস্টদের সাথে থাকলেও এখন তার চেয়ে বড় দক্ষিণপন্থী
পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়াই কঠিন। এ কারণে প্রথম আলো যে বিক্রি হবে এই ব্যাপারে সাধারণ লোকের
ভিতরে এখন আর কোন সন্দেহ নেই।
এখন প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টারের কী হবে এই নিয়ে আলাপ আলোচনা হচ্ছে
এবং এই আলাপ আলোচনা খুব দীর্ঘদিন যে চলবে তা না। আমার মনে হয় জুন-জুলাই মাসের ভিতরেই
এর একটা ফয়সালা হয়ে যাবে। কারণ স্বাভাবিক ভাবেই বুঝি যে, একটি পত্রিকা পাঠকপ্রিয়তা
পেতে বেশ সময় লাগে। এটা একদিন দুইদিনের ব্যাপার না। আবার ঠিক তেমনিভাবে যখন পাঠকপ্রিয়তা
কমতে থাকে সেটাও একদিন দুইদিনে হয় না। ধীরে ধীরে হয়। এই মিডিয়া জগতের নিয়মই তাই।
আমি ১৯৬১ সালে পত্রিকা বলতে শুধুমাত্র ইত্তেফাক এর কথাই জানতাম।
সেই ধারণা থেকে বলতে পারি এখন প্রথম আলোর যদি কিছু কর্মী এর চেয়ে ভালো কোন সুযোগ সুবিধা
দেখেন তাহলে তারা বিক্রি হওয়ার আগেই চলে যাবেন। কারণ স্বাভাবিকভাবেই একজন সাংবাদিকের
একটা ক্যারিয়ার আছে এবং প্রথম আলোর মতো পত্রিকাতে কাজ করে তিনি তো যে কোন পত্রিকায়
যেতেও পারবেন না। তার কারণ গেলে তার ওই লেখার যে মান সেটা মূল্যায়ন নাও হতে পারে। তবে
আমার ধারণা প্রথম আলোতে কাজ করেছেন এমন যে কাউকে টেকনিক্যাল গ্রাউন্ডে অনেক গুরুত্ব
দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে আমি অবাক হব না যদি দু এক মাসের ভিতরে দেখা যায় যে আস্তে আস্তে
প্রথম আলো বিভিন্ন কর্মী অন্য পত্রিকায় যাওয়া শুরু করে দিয়েছেন।
ব্যাংক মার্জারের যেমন একটি ঘটনা বর্তমানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ঠিক
তেমনি পত্রিকা জগতেও শিল্প গোষ্ঠীর যে গন্ডগোলের ঘটনা ঘটেছে এটিও ব্যাংক মার্জারের
ঘটনার পর্যায়ে চলে যাবে। ব্যাংকিং ক্ষেত্রে দেখা যায়, দুটি ব্যাংক একীভূত হচ্ছে। আর
এদিকে দেখা যাবে, সংবাদকর্মীরা অন্য পত্রিকায় চলে যাচ্ছে।
তবে আমার মনে হয় না, এখন যে অবস্থা চলছে এতে প্রথম আলো আর আগের
মতো প্রথম আলো থাকতে পারবে। এটা কিছুতেই সম্ভব না এটি মোটামুটিভাবে নিশ্চিত। তাই আমার
মনে হয় প্রথম আলো সেই ব্যাংক মার্জারের পর্যায়ে চলে এসেছে। এখন অন্য পত্রিকা যাদের
আছে, তারাও প্রথম আলো কিনে নিতে পারেন। এটি সম্ভব। এরকম শিল্পগোষ্ঠীর কোন কমতি বর্তমানে
বাংলাদেশে নেই। যে কোন শিল্প গোষ্ঠীই এটা কিনবে।
তবে আমি আশা রাখব, যারাই প্রথম আলো কিনবে, তারা যেন অন্তত পক্ষে
এটা খেয়াল রাখে যাতে সাংবাদিকদের কোন ক্ষতি না হয়। সুতরাং এদেশের একজন সাধারণ নাগরিক
হিসেবে আমার দাবী হচ্ছে সাংবাদিকরা যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:০৬ পিএম, ১৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই।
বারো বছর আগের কথা। ডেভিড ক্যামেরুন তখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। সে সময় একদিন তিনি একটি হাসপাতালের ওয়ার্ডে ঢুকে পড়লেন। রোগীর অনুমতি সাপেক্ষে রোগীর সাথে ছবি তুলতে গেলেন। বাঁধ সাধলেন ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা একজন চিকিৎসক। জীবাণু প্রতিরোধের কোন পদক্ষেপ না নিয়ে এবং চিকিৎসকের অনুমতি ব্যতিরেকে তিনি ওই কাজটি করছিলেন। ডেভিড ক্যামেরুন তাঁর ভুল বুঝতে পেরেছিলেন সাথে সাথে। ক্ষমা চাইলেন এবং ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে গেলেন।
এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা করবেন। প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর
‘এসো, এসো, এসো হে বৈশাখ।/তাপসনিশ্বাসবায়ে মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়ে/ বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক/যাক পুরাতন স্মৃতি, যাক ভুলে-যাওয়া গীতি/ অশ্রুবাষ্প সুদূরে মিলাক/ মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা,/ অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা।’ অর্থাৎ ১৪৩১ বঙ্গাব্দে পুরাতন স্মৃতি মুছে যাক, দূরে চলে যাক ভুলে যাওয়া স্মৃতি, অশ্রুঝরার দিনও সুদূরে মিলাক। আমাদের জীবন থেকে বিগত বছরের ব্যর্থতার গ্লানি ও জরা মুছে যাক, ঘুচে যাক; নববর্ষে পুরাতন বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক। রমজান ও ঈদের পর দেশের মানুষের জীবনে আরো একটি উৎসবের ব্যস্ততা নতুন বছরে মঙ্গল শোভাযাত্রায় উদ্ভাসিত।ফিলিস্তিনবাসীর উপর হামলা আর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে এর মধ্যে মারা গেছেন অসংখ্য মানুষ।তবু মৃত্যুর মিছিলে জীবনের গান ফুল হয়ে ফুটেছে। যুদ্ধের সংকট আমাদের পরাস্ত করতে পারেনি কারণ পৃথিবীর মৃত্যু উপত্যকা পেরিয়ে এদেশে বৈশাখ এসেছে নতুন সাজে।