নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:০০ এএম, ০৬ মে, ২০১৯
আমার আব্বা কবি আবু বকর সিদ্দিক এর লিখা বিখ্যাত গানের প্রথম দুই লাইন । ‘শাব মেহের’ আমাদের উত্তরবঙ্গের একজন অবহেলিত নারীর জীবনের বাস্তব ঘটনা। আমাদের সমাজের দুর্বিষহ কিছু যন্ত্রণায় তার মৃত্যু হয়। শাব মেহেরের মৃত্যুর পর তার লাশ নিয়ে আবার অনেকে সিনেমা তৈরি করেছে, রাজনীতিবিদরা রাজনীতি করেছে, কবি তাঁর গানের মাধ্যমে এই কথাটি ফুটিয়ে তুলেছেন।
আমাদের সমাজে এই ধরনের ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে যদিও এই ঘটনাগুলোকে আমরা সামাজিক ব্যাধি হিসেবে মনে করি। অতি সম্প্রতি রাজনীতির উপরের মহলে একজন ব্যক্তির জীবিত অবস্থায় কিছু ঘটনা দেশের মানুষের বিবেককে কিছুটা নাড়া দিয়েছে। আমি সাবেক রাষ্ট্রপতি হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদ-এর কথা বলছি। একজন সাবেক প্রেসিডেন্ট কতটা অসহায় হলে থানায় ডায়েরি করতে যেতে হয়, তার সম্পদের উত্তরাধিকার ঠিক করতে হয়, স্বাক্ষর জাল করে ব্যাংক থেকে টাকা আত্মসাৎ হয়, জীবনের নিরাপত্তার ভয়ে থানায় মামলা করতে হয়। অনেককিছু থেকেও কিছুই নেই আজ। মৃত্যুশয্যায় আজ পাশে আপন কেউ নেই , কিছু কিছু ভুল সিদ্ধান্ত তাকে আজকে এই পর্যায়ে একা পরিবারবিহীন করেছে। আমার ছোট শিশু এরিকই উনার শেষ ভরসা। এরিক কতটুকুই বা বুঝে, বয়সই বা কত, তাছাড়া এরিক কিছুটা শারীরিকভাবে স্পেশাল চাইল্ড। ভালোভাবে হাঁটতে ওর কষ্ট। এই অবস্থায় প্রতিদিন ওর ড্যাডি ঘুমিয়ে গেলে সবথেকে বেশি টেনশন হয় ওর। ছোট্ট হাত দিয়ে ড্যাডির নাকের কাছে শ্বাস-প্রশ্বাস চেক করে দেখে। হাত পায়ের আঙুল টেনে ধরে জিজ্ঞেস করে ড্যাডি ঠিক আছো তো ? তোমার শরীরের অবস্থা কি? হসপিটাল যাবে? সারাক্ষণ ড্যাডির মৃত্যু ভয় ওকে তাড়া করে বেড়ায়। জাতীয় পার্টি মামা, আংকেল এমপিরা ও আর ঘন ঘন বাসায় আসেন না। কেউ আর আগের মতো ডিনার পাঠায় ও না। কত যন্ত্রণা নিয়ে সময় কাটে আমার এরিকের। আজকাল স্কুলে গেলে ও তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে আসে ও। আমি এরিক এর মা, একজন মা হিসাবে এই কষ্ট আমাকে কতটুকু নাড়া দেয় শুধু মা জাতি বুঝতে পারবে। এই অবস্থায় বাপ-বেটার জন্য অনুশোচনা বোধ থাকলেও আমারই কিইবা করার আছে ?
আগে দেখতাম অনেকে এরশাদ সাহেব এর কাছে পদ-পদবীর জন্য আসতো বা ভিড় জমাতো এখন শুনি পত্রপত্রিকায় দেখি ব্যতিক্রম কিছু মানুষ ছাড়া সম্পদের ভাগ-বাটোয়ারা, দলীয় ক্ষমতা কিভাবে কাকে ডিঙিয়ে কে নিবে তা নিয়ে সবাই ব্যস্ত। উনাকে মানসিকভাবে এত দুর্বল করা হয়েছে যে মরার আগেই উনি মৃত! বিষয়টি এখন এমন পর্যায়ে গেছে, উনার কোনো দূর্ঘটনা হলে মনে হয় অনেকে হাঁপ ছেড়ে বাঁচে, ক্ষুধার্ত শকুনেরা যেন খাদ্যের জন্য অপেক্ষায় আছে। বাড়ি, গাড়ি, ট্রাস্ট কোনকিছুই দরকার নেই এরিক এর। প্রয়োজন পিতামাতার দুইজনের আদর যত্ন। ষড়যন্ত্রকারীদের কারণে এরিক আজ মায়ের আদর থেকেও বঞ্চিত।
এখনই যদি এই অবস্থা হয় তাহলে এরশাদ সাহেব এর অবর্তমানে এরিক এর অবস্থা নিয়ে আমি শংকিত।
অবস্থাদৃষ্টে এখন মনে হল সেই বিখ্যাত উক্তি , `শাব মেহের এর শবের উপর কোন মহাজন নাচতেছে।
বিদিশা সিদ্দিক, চেয়ারম্যান , বিদিশা ফাউন্ডেশন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:২৬ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি
প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর
রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা
করবেন।
প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে
আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা
নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর। আমার ধারণা যারাই প্রথম আলো কিনেন না
কেন তারা প্রথম দিকে মতিউর রহমান সাহেবকে রাখলেও পরবর্তীতে ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে
সম্পাদক পরিবর্তন করবে। আর প্রথম আলো যদি কোন যুক্তিপূর্ণ লোকের কাছে দেয় তাহলে আমার
মতে এখানে সম্ভবত আনিসুল হক সাহেব সম্পাদক হবেন। কারণ তার প্রতি লোকের অনেক শ্রদ্ধাবোধ
আছে এবং তিনি সবসময় একটা রেড লাইন রক্ষা করে চলেন। এটা আমরা সকলেই জানি। তার সাথে
অনেকেরই ভালো সম্পর্ক এবং তিনি খুবই জ্ঞানী
লোক।
এর আগে মতিউর রহমান যখন একতা থেকে আজকের কাগজে যান, তখন তার উদ্দেশ্যই
ছিল যে, একটি পত্রিকা কীভাবে চলে সেটা শেখা এবং এখান থেকে একসাথে সাংবাদিক নিয়ে বেরিয়ে
যাওয়া। তিনি সেটা করেছিলেন। তারপর ভোরের কাগজ থেকে একই কাজ করেছেন। সুতরাং তার সত্যিকারের
নীতিবোধ বলতে যেটা বোঝায় সেটা দুর্ভাগ্যবশত তিনি প্রমাণ করতে পারেননি।
তিনি এক সময় কমিউনিস্টদের সাথে থাকলেও এখন তার চেয়ে বড় দক্ষিণপন্থী
পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়াই কঠিন। এ কারণে প্রথম আলো যে বিক্রি হবে এই ব্যাপারে সাধারণ লোকের
ভিতরে এখন আর কোন সন্দেহ নেই।
এখন প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টারের কী হবে এই নিয়ে আলাপ আলোচনা হচ্ছে
এবং এই আলাপ আলোচনা খুব দীর্ঘদিন যে চলবে তা না। আমার মনে হয় জুন-জুলাই মাসের ভিতরেই
এর একটা ফয়সালা হয়ে যাবে। কারণ স্বাভাবিক ভাবেই বুঝি যে, একটি পত্রিকা পাঠকপ্রিয়তা
পেতে বেশ সময় লাগে। এটা একদিন দুইদিনের ব্যাপার না। আবার ঠিক তেমনিভাবে যখন পাঠকপ্রিয়তা
কমতে থাকে সেটাও একদিন দুইদিনে হয় না। ধীরে ধীরে হয়। এই মিডিয়া জগতের নিয়মই তাই।
আমি ১৯৬১ সালে পত্রিকা বলতে শুধুমাত্র ইত্তেফাক এর কথাই জানতাম।
সেই ধারণা থেকে বলতে পারি এখন প্রথম আলোর যদি কিছু কর্মী এর চেয়ে ভালো কোন সুযোগ সুবিধা
দেখেন তাহলে তারা বিক্রি হওয়ার আগেই চলে যাবেন। কারণ স্বাভাবিকভাবেই একজন সাংবাদিকের
একটা ক্যারিয়ার আছে এবং প্রথম আলোর মতো পত্রিকাতে কাজ করে তিনি তো যে কোন পত্রিকায়
যেতেও পারবেন না। তার কারণ গেলে তার ওই লেখার যে মান সেটা মূল্যায়ন নাও হতে পারে। তবে
আমার ধারণা প্রথম আলোতে কাজ করেছেন এমন যে কাউকে টেকনিক্যাল গ্রাউন্ডে অনেক গুরুত্ব
দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে আমি অবাক হব না যদি দু এক মাসের ভিতরে দেখা যায় যে আস্তে আস্তে
প্রথম আলো বিভিন্ন কর্মী অন্য পত্রিকায় যাওয়া শুরু করে দিয়েছেন।
ব্যাংক মার্জারের যেমন একটি ঘটনা বর্তমানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ঠিক
তেমনি পত্রিকা জগতেও শিল্প গোষ্ঠীর যে গন্ডগোলের ঘটনা ঘটেছে এটিও ব্যাংক মার্জারের
ঘটনার পর্যায়ে চলে যাবে। ব্যাংকিং ক্ষেত্রে দেখা যায়, দুটি ব্যাংক একীভূত হচ্ছে। আর
এদিকে দেখা যাবে, সংবাদকর্মীরা অন্য পত্রিকায় চলে যাচ্ছে।
তবে আমার মনে হয় না, এখন যে অবস্থা চলছে এতে প্রথম আলো আর আগের
মতো প্রথম আলো থাকতে পারবে। এটা কিছুতেই সম্ভব না এটি মোটামুটিভাবে নিশ্চিত। তাই আমার
মনে হয় প্রথম আলো সেই ব্যাংক মার্জারের পর্যায়ে চলে এসেছে। এখন অন্য পত্রিকা যাদের
আছে, তারাও প্রথম আলো কিনে নিতে পারেন। এটি সম্ভব। এরকম শিল্পগোষ্ঠীর কোন কমতি বর্তমানে
বাংলাদেশে নেই। যে কোন শিল্প গোষ্ঠীই এটা কিনবে।
তবে আমি আশা রাখব, যারাই প্রথম আলো কিনবে, তারা যেন অন্তত পক্ষে
এটা খেয়াল রাখে যাতে সাংবাদিকদের কোন ক্ষতি না হয়। সুতরাং এদেশের একজন সাধারণ নাগরিক
হিসেবে আমার দাবী হচ্ছে সাংবাদিকরা যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:০৬ পিএম, ১৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।
দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই।
বারো বছর আগের কথা। ডেভিড ক্যামেরুন তখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। সে সময় একদিন তিনি একটি হাসপাতালের ওয়ার্ডে ঢুকে পড়লেন। রোগীর অনুমতি সাপেক্ষে রোগীর সাথে ছবি তুলতে গেলেন। বাঁধ সাধলেন ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা একজন চিকিৎসক। জীবাণু প্রতিরোধের কোন পদক্ষেপ না নিয়ে এবং চিকিৎসকের অনুমতি ব্যতিরেকে তিনি ওই কাজটি করছিলেন। ডেভিড ক্যামেরুন তাঁর ভুল বুঝতে পেরেছিলেন সাথে সাথে। ক্ষমা চাইলেন এবং ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে গেলেন।
এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা করবেন। প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর