নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ২০ মে, ২০১৯
ধানের দাম নিয়ে কিছু ‘আবাল রাজনিতিক’ খুব উচ্চ স্বরে চিৎকারের চেষ্টা করছে ইদানিং। এরা কিন্তু তাঁরা যারা গণপরিবহনে চাঁদাবাজি করে জীবিকা নির্বাহ করে। এরা তাঁরা যারা শ্রমঘন শিল্পের শ্রমিকদের বিভিন্ন সুবিধা আদায় করে দেবে বলে তোলাবাজি করে জীবিকা চালান। এরা তাঁরা যারা নিজেরা দামী ব্র্যান্ডের গাড়ি চড়ে, দামি সিগারেট খান, দামি পোশাক পরেন, বিদেশে পাঠিয়ে ছেলে মেয়ের উচ্চ শিক্ষা সব চলে তাদের গরীবের রক্ত চোষা টাকায়। নিজেরা পেশাজীবী নন কিন্তু উনারা বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতা। হাল চাষ করতে বা জমিতে নিড়ানী দিতে পারেন না, কিন্তু বড় কৃষক নেতা।
দেশের কৃষির উন্নয়ন এবং কৃষকের স্বার্থ রক্ষার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ১৯ এপ্রিল বাংলাদেশ কৃষক লীগ প্রতিষ্ঠা করেন। সে সময় বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর বৃহত্তর কুষ্টিয়ার ব্যরিস্টার বাদল রশিদ কৃষক লীগ করার আগ্রহ দেখান। তখন বঙ্গবন্ধু তাকে বলেন যে, কৃষক লীগ করতে হলে গ্রামে গিয়ে থাকতে হবে, কৃষকদের সমস্যা জেনে সংসদে তা জানাতে হবে। কৃষক লীগ করতে গিয়ে ব্যরিস্টার বাদল রশিদ তাঁর বাকী জীবন বর্তমান চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাংগা এলাকায় কাটিয়ে দেন। তিনি তাঁর আইন পেশা জলাঞ্জলি দিয়ে কৃষকের সেবায় আত্মনিয়োগ করেন বাকী জীবন। কিন্তু এখন কৃষকদের নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা কি গ্রামে ষকদের সাথে থাকেন! এমন কী বঙ্গবন্ধুর গড়া কৃষক লীগ যারা করেন তাদের সাথে কী কৃষকদের কোন আত্মিক যোগাযোগ আছে! সন্দেহ আছে অনেক বড়।
তাই যদি থাকতো তাহলে বাংলাদেশ সরকার চলতি মৌসুমে প্রতিমন বোরো ধানের দাম ১০৪০ টাকা নির্ধারণ করার পরেও ৪৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা মন দরে ধান বিক্রি হতো না। সেচ দিয়ে যারা বোরো মৌশুমে ধান চাষ করেন তাদের ধান উৎপাদন খরচ ওঠে না। এর নানা কারণ আছে। টাকার অভাবে অনেক সময় তাঁরা সঠিক সময়ে জমিতে সেচ, সার দিতে পারেন না। পারেন না সঠিক সময়ে সঠিক পরিচর্চা করতে। কোন কোন সময়ে যে বীজ তাঁরা কেনেন, তাতে বা সারে এ থাকে ভেজাল, সঠিক উৎপাদন হয় না ভালো পরিচর্চার পরেও। যা হোক ধরে নিলাম চাষির লোকসান হয় নি কিছু লাভ হয়েছে। সেই কিছুটা কত ভাগ? হিসাব রাখেন কোন কৃষক নেতা? এক বিঘা জমিতে ধান উৎপাদনে খরচ এলাকা ও জমির প্রকৃতি ভেদে ১৫-১৬ হাজার টাকা। আর যে ধান পাওয়া যাচ্ছে, তার বর্তমান বাজার মূল্য ১০ হাজার টাকাও নয়। তাহলে লাভ হয় কার? যাদের টাকা আছে তাঁরা এখন ধান কিনে মজুত করে ১/২ মাস পরেই ১০০০ টাকা মন দরে বিক্রি করবেন। সেখানে লাভ প্রায় ১০০%। আবার যদি ধান না বেঁচে মিল মালিকগণ তা চাউল করে বেচেন, তাহলে তো কোন কথাই নেই। প্রতি কেজি ৩২ থেকে ৩৪ টাকা দরে পাইকারী চা’ল বিক্রি করেন। লাভের কি কোন শেষ আছে?
এক মণ বা ৪০ কেজি ভালো মানের ধানে (বি আর ২৮) প্রায় ২৭-২৮ কেজি চাল হয়। বর্তমানে উন্নত মেশিন দিয়ে ভাঙা হয় বলে তুষ প্রায় হয়ই না। এখন এক মণ ধানে ১২-১৩ কেজি কুড়া বা খূদ হয়, যার দামও কম না। বাজারে কৃষক উৎপাদিত ধানের দাম আর ভোক্তা পর্যায়ে চালের দামে বিস্তর পার্থক্য। দু’ক্ষেত্রেই চালের দাম বিবেচনা করা হলে পার্থক্য কমপক্ষে ২২ থেকে ২৪ টাকা। এর সিংহভাগই চলে যায় মধ্যসত্ত্বভোগীদের পকেটে।
রাজধানীর কয়েকটি চালের বাজার ঘুরে দেখা যায়, সাধারণ গরিব ও মধ্যবিত্ত মানুষের কাছে বেশি চাহিদা বিআর ২৮ চালের। খুচরা বাজারে এই চালের সর্বনিম্ন দাম ৪২ টাকা কেজি। খুচরা বাজারের সাথে পাইকারি বাজারের এই চালে দামের পার্থক্য ৫ থেকে ৬ টাকা। পাইকাররা আড়ৎদার বা মিল মালিকদের কাছ থেকে এ চাল কেনেন ৩২ থেকে ৩৪ টাকা দরে। অর্থাৎ কৃষকের বিক্রি করা ধান চালে পরিণত করার প্রক্রিয়ায় দামে পার্থক্য দাঁড়ায় ১৪ থেকে ১৬ টাকা।
খুচরা বিক্রেতা, পাইকার এবং মিল মালিকদের বক্তব্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বিআর ২৮ ধান কৃষক বিক্রি করছেন সাড়ে চারশ থেকে ৫শ টাকা মণ। অর্থাৎ কেজি প্রতি চালের দাম হিসেবে পাচ্ছেন ১৮ টাকার মত। এভাবে বাজার মূল্যের চেয়ে প্রতি কেজি চালে ২২ থেকে ২৪ টাকা কম পাচ্ছেন কৃষক। ধানের মান ভেদে এই পার্থক্য আরো বেশি। বাজারে ধান ও চালের দামের এমন তারতম্যকে কি বলবেন শিক্ষিতজনেরা!
সব সরকারের আমলেই কৃষিতে ভর্তুকি দেওয়া হয়। আসলে সেই ভর্তুকির টাকার কতভাগ কৃষক পান তা সবার জানা। এখানেও ‘রুপুরের বালিশ কেনা আর ওঠানো’র ঘটনা যে ঘটে তা ১০০ ভাগ নিশ্চিত।
কোন দেশের অর্থনীতি ২য় স্তরে পৌঁছালেই মানে শিল্পের বিকাশের সাথে সাথেই গ্রামের কৃষি শমিক চলে আসে শহরে, শিল্পে কাজের জন্য। আমাদের দেশেও তাই হয়েছে তাই কৃষি শ্রমিকের দৈনিক হাজিরা দাঁড়িয়েছে ৮০০ থেকে ১০০ টাকায়। তাই উন্নত দেশে এমন ভাবেই কৃষিতে ভর্তুকি দেওয়া হয় যাতে কৃষকরা শহরে মাইগ্রেট না করে। ইউরোপ আমেরিকায় এমন কি এশিয়ার জাপানেও তাই দেখা যায়। এতে দুটি লাভ হয়। এক- বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করে খাদ্য আমদানী করা লাগে না। দুই- শহর জনারণ্য হয়ে ওঠে না। খাদ্য আমদানী নিয়ে ১৯৭৪ সালের মত রাজনীতি করার সুযোগ থাকে না কারো।
এখন প্রশ্ন হল তবুও কেন কৃষকরা ধান বা অন্যান্য চাষ করেন? এক কথায় জবাব হচ্ছে উপায় নেই। কৃষক তাঁর জমির বার্ষিক ইজারা মূল্য ধরেন না। ধরেন না তাঁর ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের শ্রমের মূল্য। এভাবেই তাঁরা টিকে থাকেন। পরে একটু সুযোগ পেলে ছেলে মেয়েদের শহরে, বিদেশে পাঠান চাকরি করতে। খুব প্রান্তিক চাষি হলে রাজধানীতে আসেন তাদের ছেলেরা রিক্সা চালাতে। কারণ একজন প্রান্তিক চাষির গড় মাসিক আয় ঢাকার একজন রিক্সা চালকের ১০ ভাগের এক ভাগ বলে জানা যায়। তাই শহর হয় জনারণ্য। যান জোটে নাকাল নগরী। হাজার হাজার শ্রম ঘন্টা হয় নষ্ট। দূষিত হয় নগর, প্রান্তর।
একটা গল্প দিয়ে লেখা শেষ করতে চাই। একবার এক চোর তার পকেটমার বন্ধুকে বলছে, ‘তুই খুব ধৈর্যশীল, অনেক পিটুনি হজম করতে পারিস। আমি হলে পারতাম না’। পকেটমার বন্ধু বলছে, ‘ঠিক বলেছে দোস্ত, তবে আমার মত হাত পা বেঁধে তোমাকে পিটালে তুমিও আমার মত পিটুনি খেতে পারবে, সে বিশ্বাস আমার আছে’। আমাদের দেশের গরীব আর প্রান্তিক কৃষকদের অবস্থা সেই পকেটমারের মত। ফসলের দামে মাইর খাওয়া ছাড়া তাদের আর কোন বিকল্প নেই বলেই এখনো তাঁরা গ্রামে পড়ে আছেন। তাঁরা ততদিন থাকবেন যতদিন না বড় বড় ব্যবসায়ীরা তাদের জমি কিনে নিয়ে আধুনিক খামার গড়ে তোলেন।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
দেশে একটি সুষ্ঠু
নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে
রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং
সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা
সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ
ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি
সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।
আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা
রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত
অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের
গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান
ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে
দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে
এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক
করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি
একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি
পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার
করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের
সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন
পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন
শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী
লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের
প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন
করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে
সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।
গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে,
তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো
দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের
অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা
পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে
প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ
এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে
নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও
একই ভাবে থেকেছেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি
হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে
যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু
এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার
পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে
তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:২৬ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।
দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই।