নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:১৫ এএম, ০৮ জুন, ২০১৯
যে লক্ষ্য নিয়ে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয় সেই লক্ষ্য থেকে সরে আসেনি বঙ্গবন্ধুর খুনী ও তাঁর উপকারভোগীরা। তাই তো একই লক্ষ্যে আমাদের দেশে ঘটানো হয় ১৯৮৩ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারী ঘটনা, আওয়ামী লীগ ভেঙ্গে বাকশাল করা, ১৯৮৬ সালে ১৫ দল ও ৭ দলের যৌথ নির্বাচনে শেখ হাসিনার সাথে বেইমানী করা, ২১শে আগস্টের গ্রেনেড হামলা, ওয়ান এলেভেনে মাইনাস ফর্মুলা প্রনয়ন, ইত্যাদি অনেক আয়োজন। সাম্প্রতিক কালে জোটের অন্যতম শরিক জাসদের উল্টাপাল্টা কথা বলা, রাশেদ খান মেননের সরকারের বিরুদ্ধে হুংকার, দলত্যাগী আওয়ামী লীগারদের দলে ফেরার জোর তদ্বির সবই এক সুত্রে গাঁথা।
৭ জুন ঐতিহাসিক ছয়দফা দিবস উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে ৭ই জুনের শহিদদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘ইনশাআল্লাহ্, ২০২১ সালের আগেই বাংলাদেশ হবে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে হবে উন্নত, সমৃদ্ধ দেশ।’
বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৭৫ পরবর্তী সময় থেকে আজ অবধি কঠিন চ্যলেঞ্জের মধ্যে দিয়ে খুব সুচিন্তিত কৌশলে তাঁর দল ও দেশকে রক্ষার প্রানান্ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৭ মে বৃহস্পতিবার ১৯৮১ সালের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন। দীর্ঘ নির্বাসন থেকে দেশে ফেরেন তিনি। বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশে ফেরা মোটেই সবার কাছে প্রত্যাশিত ছিল না। তৎকালীন সরকার বাদেও নিজ দলের অনেক নেতাই চাননি বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশে ফিরে আসুক। ব্যাপারটি পরিষ্কার করতে একটু পিছনে ফেরা দরকার। দেখা যাক কারা কী কী করতে চেয়েছেন, আর কতটুকু সফল হয়েছেন।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে তৎকালীন অবৈধ রাষ্ট্রপতি সংসদ সদস্যদের সমর্থন আদায় করে তার ক্ষমতা দখলকে বৈধতা দান করার উদ্দেশে ১৯৭৫ সালের ১৬ অক্টোবর জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগ পার্লামেন্টারি পার্টির সভা আহ্বান করে। বঙ্গভবনে আহূত এই সভায় যোগদান নিয়ে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যদের মধ্যে দ্বিমত দেখা দেয়। সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, ডা. এসএ মালেক ও শামসুদ্দিন মোল্লাসহ মাত্র জনাদশেক সংসদ সদস্য মোশতাক আহূত বৈঠকে যোগদান থেকে বিরত থাকেন। সে সময় প্রবীণ নেতাদের মধ্যে ইউসুফ আলী, সোহরাবউদ্দিন, প্রতিমন্ত্রী ওবায়দুর রহমান, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, নূরুল ইসলাম মঞ্জুর, চিপ হুইপ আবদুর রৌফ ও হুইপ রাফিয়া আকতার ডলি প্রমুখ বংগবন্ধুর রক্তের সাথে বেঈমানী করে মোশতাকের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেয়।
বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দেশে ফেরার সময় মাত্র ৬ জন বড় ও মাঝারী সারির নেতা তাঁকে দেশে আসতে চরম সাহস যোগান, সর্বাত্মক সহযোগিতা করেন। কিন্তু দলের অভ্যন্তরের যড়যন্ত্রকারীরা একই সঙ্গে শেখ হাসিনার সাথে আবার সেই সময়েই ক্ষমতাসীর সরকারের এজেন্ট হয়ে কাজ করতে থাকে। এর আগে ১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী অপরাধী আর সদ্য স্বাধীন দেশের বিভিন্ন অপরাধে যাদের বঙ্গবন্ধু জেলে নিয়েছিলেন তাদের জিয়া সরকারের আমলে জেল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় আওয়ামী লীগকে রুখে দেবার জন্য। এখানেই শেষ নয়, মফঃস্বলে সফরকালে শেখ হাসিনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হতো না সরকারের সাথে দলীয় কুচক্রীদের যোগসাজশে। তাই অনেক এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতাদের ঠিক করা ছাত্রলীগ, যুবলীগের করমীরা তাঁর নিরাপত্তা কাজে থাকতেন। ফুড পয়জনিং করে শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনাও তারা নিয়েছিলো। তাই ১৯৮১ পরবর্তী সময়ে মফঃস্বলে সফরকালে, বেশ কয়েক বছর মফঃস্বলের কয়েকটি জেলার নির্দিষ্ট কয়েকটি বাড়ি থেকে তাঁর খাবার আনা হতো, একাধিক জেলা পেরিয়ে। যারা ১৯৮১ পরবর্তী সময়ে শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী থাকতেন তাঁরা এই কথার প্রমান জানেন।
এরশাদ সরকার তখন ক্ষমতায়। সারা দেশে তখন সামরিক শাসন। সারা দেশ শাসনে বিভিন্ন অঞ্চলে ভাগ করা হয়। ঢাকা অর্থাৎ ‘ক’ অঞ্চলের সামরিক শাসক ছিলেন মেজর জেনেরেল আব্দুর রহমান। ১৯৮৩ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারী তৎকালীন বিএনপি, আওয়ামী লীগ, জাসদ, বাসদ, তুখোড় বামপন্থী কিছু দলের নেতা ‘ক’ অঞ্চলের সামরিক শাসক ছিলেন মেজর জেনেরেল আব্দুর রহমান সাহেবের সাথে মিলে একটা ক্যু করার পরিকল্পনা করেন। ডাকসু তখন আখতার বাবলুর দখলে। বাবলুর কাজ ছিল কিছু লাশ ফেলে দেওয়া শিক্ষা ভবনের সামনে, আর সেই উছিলায় হয়ে যাবে ক্ষমতার পালা বদল। খবরটি বভিন্ন গোয়েন্দা সুত্রে আগেভাগের এরশাদ সাহেব জেনে যান তাই নিরীহ ছাত্রদের লাশ পড়লেও ক্ষমতার পালাবদল হয়না। ১৯৮৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের বিক্ষোভ কর্মসূচিকে সমর্থন দিয়ে ওই দিন হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী ঢাকার রাস্তায় নেমে পড়ে। বিশাল এক মিছিল সচিবালয়ের অভিমুখী যাত্রা করে স্মারকলিপি পেশ করার উদ্দেশ্য নিয়ে। মিছিলটি পুলিশের দ্বারা বাধা-প্রাপ্ত হয় হাইকোর্ট-মোড়ে। পুলিশের বসানো কাঁটাতারের উপর উঠে পড়ে অনেকে। জ্বালাময়ী সব স্লোগানে ঢাকা কেঁপে ওঠে। হঠাৎ করেই মিছিলে লাঠিচার্জ করে পুলিশ, নিরস্ত্র ছাত্র-ছাত্রীদের লক্ষ্য করে টিয়ার গ্যাস আর ফাঁকা গুলি ছোড়ে পুলিশ। ভিতরে ভিতরে নিজেদের গুলির আঘাতে প্রাণ হারায় জয়নাল। আহত হয় জাফর, আইয়ুব, কাঞ্চনসহ আরো অনেকে। শিশু একাডেমীতে ছড়িয়ে পড়া সংঘর্ষে জীবন হারায় শিশু দীপালি সাহা।
এই ঘটনার পরে শাহাবাগে পুলিশ কন্ট্রোল রুমসহ আরো কিছু স্থানে আসতে হয় কিছু বড় বড় রাজনৈতিক নেতাকে। মুচলেকায় প্রাণ ভিক্ষা পান অনেক নেতা তার ফলশ্রুতিতেই ১৯৮৪ সালে গঠিত হয় বাকশাল, আপাত দৃষ্টিতে কোন কারণ ছাড়াই ভাঙ্গে জাসদ, বিএনপি ভেঙ্গে শাহ আজীজ-মাঈদুল ইসলাম মুকুল-মিনহাজুর রহমান আলোর নেতৃত্বে হয় নতুন বিএনপি, বাবলুর সাহেব দায়িত্ব নিতে বাধ্য হন জাতীয় ছাত্র সমাজ গঠনের, রাতারাতি অফিস নেওয়া ধানমণ্ডি২ নং রোড আর আর এলিফেন্ট রোডের মড়ে পুলিশ বক্সের পিছনের ভবনে। তুখোড় বামপন্থী নেতা তার দল এতো ছোট যে, তিনি মুচলেকায় লেখেন যে, পরবর্তী নির্বাচনে তিনি বিরোধী দলে থেকে বিরোধী দলের সরকার বিরোধী আন্দোলনকে এরশাদের পক্ষে এনে দেবেন।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৫ দল আর বিএনপি’র নেতৃত্বে ৭ দলের আন্দোলনেরর ফলে যখন এরশাদ সাহেব নির্বাচন দিতে বাধ্য হলেন তখন ১৫ দল ও ৭ দল জোটবদ্ধ হয়ে ১৮০ -১২০ আসনে নির্বাচনে যেতে সম্মত হয়। যখন আসন বন্টনের সবকিছু চূড়ান্ত তখন ছোট দলের তুখোড় বামপন্থী নেতা তার বোন যিনি খালেদা জিয়ার খুব ঘনিষ্ঠ তাঁকে দিয়ে খালেদা জিয়াকে ম্যানেজ করেন। আবার ধান্মন্ডি ৩২ নং এসে ছোট দলের বাম নেতা, জাসদ নেতা আর বাকশাল নেতা নির্বাচনে যাবার বিরোধিতা করে বসেন আচমকা। এটা আর কিছুই না সব ছিল ১৯৮৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি মুচলেকার বাস্তবায়ন। পরে মেজর জেনেরেল আব্দুর রহমান সাহেবের বিতর্কিত মৃত্যু হয়। এরশাদ সাহেব এখনো জীবিত, তাই তাঁর কাছে এই ঘটনার সত্যতা যাচাই করা যাতে পারে।
২০০৭ সালের জানুয়ারী মাসের ১১ তারিখে শেখ হাসিনাকে মানাস করার ক্ষেত্রে সেই একই মুখ ঘুরে ফিরে আসে, সাথে কিছু নতুন মুখের যোগ হয়েছে মাত্র যারা আগেও ছিলেন গোপনে। তার আগের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় কারা ইন্ধন দিয়েছে, শেখ হাসিনা তাদের চিনে রেখেছেন। আস্তে আস্তে তিনি তার পরিকল্পনা মতোই এগুচ্ছেন। তিনি জানেন যে, তাড়াহুড়োতে তাঁর নিজের এবং দলের ক্ষতি হবে। তাই তাঁর এই ধীরে চলা নীতির কারণেই দলত্যাগী আওয়ামী লীগাররা এতো সহজেই আর দলে যোগ দিতে পারছেন না। যারা বিভিন্ন সময়ে শেখ হাসিনার বিরোধিতা করেছেন তাদের পারিবারিক সংস্কৃতি ভিন্ন। তাঁরা শেখ হাসিনার ক্ষতি হবে জেনেই মাঝে মধ্যে এমন সব বেফাঁস কথা বলেন বা কাজ করেন যার দায় এসে পড়ে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘাড়ে বা তার উন্নয়ন পরিকল্পনা হয় বাধাগ্রস্থ। মাশারাফির হাসপাতাল ইস্যু, আড়ংগে অভিযান পরিচালনাকারীকে স্ট্যান্ড রিলিজ, ঈদের চাঁদ দেখা নিয়ে তেলেসমাতি অনেকের মধ্যে কিছু উদাহরণ। ইদানিং তাই বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বিদেশ গেলেই বা যাবার প্রাক্কালে নানা ষড়যন্ত্রের জাল বোনা হয়, ‘যদি লাইগা যায়’, এই আশায়। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা তার পিতার লক্ষ্যে ইস্পাত দৃঢ় অবিচল, তাই কোন বাঁধাই তাঁর কাছে আর বাঁধা থাকে না। পিতার অঙ্গীকার তাঁর কাছে এবাদত হয়ে যায়। এই কথায় একটা সত্য ঘটনা মনে পড়ে যায়।
নাম তাঁর দশরথ মাঝি। বিহারের কয়লা খনিতে কাজ করতেন তিনি। একদিন গ্রামের পাশের পাহাড় পার হতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে মারাত্মক আহত হয় তার স্ত্রী ফাল্গুনী। হাস্পাতালে যেতে পাহাড় ঘুরে পথ হতো ৪০ মাইল। তাই এতো পথ ঘুরে গিয়ে আর ফাল্গুনীকে বাঁচানো যায়নি। প্রাণ হারায় দশরথের স্ত্রী ফাল্গুনী। তখন তাঁর সম্বল মাত্র ৩টি ছাগল। দশরথ তা বিক্রি করে কিনলেন গাইতি, শাবল, ইত্যাদি। পণ করলেন পাহাড় কেটে রাস্তা বানবেন। অনেকেই তাঁকে পাগল বলতো, তখন। কিন্তু দশরথের ২২ বছরের একক শ্রমে, বিহারের গেহলর পর্বতের মাঝ দিয়ে নির্মিত হয় ৩৬০ ফুট লম্বা, ৩০ ফুট উঁচু ও ২৫ ফুট চওড়া রাস্তা! ৪০ মাইল রাস্তা কমে হয়ে যায় ১ মাইলে। কতখানি ভালোবাসা থাকলে এটা করা যায়, ভেবে কূল কিনারা পাওয়া যায় কি?
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:২৬ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি
প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর
রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা
করবেন।
প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে
আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা
নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর। আমার ধারণা যারাই প্রথম আলো কিনেন না
কেন তারা প্রথম দিকে মতিউর রহমান সাহেবকে রাখলেও পরবর্তীতে ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে
সম্পাদক পরিবর্তন করবে। আর প্রথম আলো যদি কোন যুক্তিপূর্ণ লোকের কাছে দেয় তাহলে আমার
মতে এখানে সম্ভবত আনিসুল হক সাহেব সম্পাদক হবেন। কারণ তার প্রতি লোকের অনেক শ্রদ্ধাবোধ
আছে এবং তিনি সবসময় একটা রেড লাইন রক্ষা করে চলেন। এটা আমরা সকলেই জানি। তার সাথে
অনেকেরই ভালো সম্পর্ক এবং তিনি খুবই জ্ঞানী
লোক।
এর আগে মতিউর রহমান যখন একতা থেকে আজকের কাগজে যান, তখন তার উদ্দেশ্যই
ছিল যে, একটি পত্রিকা কীভাবে চলে সেটা শেখা এবং এখান থেকে একসাথে সাংবাদিক নিয়ে বেরিয়ে
যাওয়া। তিনি সেটা করেছিলেন। তারপর ভোরের কাগজ থেকে একই কাজ করেছেন। সুতরাং তার সত্যিকারের
নীতিবোধ বলতে যেটা বোঝায় সেটা দুর্ভাগ্যবশত তিনি প্রমাণ করতে পারেননি।
তিনি এক সময় কমিউনিস্টদের সাথে থাকলেও এখন তার চেয়ে বড় দক্ষিণপন্থী
পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়াই কঠিন। এ কারণে প্রথম আলো যে বিক্রি হবে এই ব্যাপারে সাধারণ লোকের
ভিতরে এখন আর কোন সন্দেহ নেই।
এখন প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টারের কী হবে এই নিয়ে আলাপ আলোচনা হচ্ছে
এবং এই আলাপ আলোচনা খুব দীর্ঘদিন যে চলবে তা না। আমার মনে হয় জুন-জুলাই মাসের ভিতরেই
এর একটা ফয়সালা হয়ে যাবে। কারণ স্বাভাবিক ভাবেই বুঝি যে, একটি পত্রিকা পাঠকপ্রিয়তা
পেতে বেশ সময় লাগে। এটা একদিন দুইদিনের ব্যাপার না। আবার ঠিক তেমনিভাবে যখন পাঠকপ্রিয়তা
কমতে থাকে সেটাও একদিন দুইদিনে হয় না। ধীরে ধীরে হয়। এই মিডিয়া জগতের নিয়মই তাই।
আমি ১৯৬১ সালে পত্রিকা বলতে শুধুমাত্র ইত্তেফাক এর কথাই জানতাম।
সেই ধারণা থেকে বলতে পারি এখন প্রথম আলোর যদি কিছু কর্মী এর চেয়ে ভালো কোন সুযোগ সুবিধা
দেখেন তাহলে তারা বিক্রি হওয়ার আগেই চলে যাবেন। কারণ স্বাভাবিকভাবেই একজন সাংবাদিকের
একটা ক্যারিয়ার আছে এবং প্রথম আলোর মতো পত্রিকাতে কাজ করে তিনি তো যে কোন পত্রিকায়
যেতেও পারবেন না। তার কারণ গেলে তার ওই লেখার যে মান সেটা মূল্যায়ন নাও হতে পারে। তবে
আমার ধারণা প্রথম আলোতে কাজ করেছেন এমন যে কাউকে টেকনিক্যাল গ্রাউন্ডে অনেক গুরুত্ব
দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে আমি অবাক হব না যদি দু এক মাসের ভিতরে দেখা যায় যে আস্তে আস্তে
প্রথম আলো বিভিন্ন কর্মী অন্য পত্রিকায় যাওয়া শুরু করে দিয়েছেন।
ব্যাংক মার্জারের যেমন একটি ঘটনা বর্তমানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ঠিক
তেমনি পত্রিকা জগতেও শিল্প গোষ্ঠীর যে গন্ডগোলের ঘটনা ঘটেছে এটিও ব্যাংক মার্জারের
ঘটনার পর্যায়ে চলে যাবে। ব্যাংকিং ক্ষেত্রে দেখা যায়, দুটি ব্যাংক একীভূত হচ্ছে। আর
এদিকে দেখা যাবে, সংবাদকর্মীরা অন্য পত্রিকায় চলে যাচ্ছে।
তবে আমার মনে হয় না, এখন যে অবস্থা চলছে এতে প্রথম আলো আর আগের
মতো প্রথম আলো থাকতে পারবে। এটা কিছুতেই সম্ভব না এটি মোটামুটিভাবে নিশ্চিত। তাই আমার
মনে হয় প্রথম আলো সেই ব্যাংক মার্জারের পর্যায়ে চলে এসেছে। এখন অন্য পত্রিকা যাদের
আছে, তারাও প্রথম আলো কিনে নিতে পারেন। এটি সম্ভব। এরকম শিল্পগোষ্ঠীর কোন কমতি বর্তমানে
বাংলাদেশে নেই। যে কোন শিল্প গোষ্ঠীই এটা কিনবে।
তবে আমি আশা রাখব, যারাই প্রথম আলো কিনবে, তারা যেন অন্তত পক্ষে
এটা খেয়াল রাখে যাতে সাংবাদিকদের কোন ক্ষতি না হয়। সুতরাং এদেশের একজন সাধারণ নাগরিক
হিসেবে আমার দাবী হচ্ছে সাংবাদিকরা যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:০৬ পিএম, ১৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই।
বারো বছর আগের কথা। ডেভিড ক্যামেরুন তখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। সে সময় একদিন তিনি একটি হাসপাতালের ওয়ার্ডে ঢুকে পড়লেন। রোগীর অনুমতি সাপেক্ষে রোগীর সাথে ছবি তুলতে গেলেন। বাঁধ সাধলেন ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা একজন চিকিৎসক। জীবাণু প্রতিরোধের কোন পদক্ষেপ না নিয়ে এবং চিকিৎসকের অনুমতি ব্যতিরেকে তিনি ওই কাজটি করছিলেন। ডেভিড ক্যামেরুন তাঁর ভুল বুঝতে পেরেছিলেন সাথে সাথে। ক্ষমা চাইলেন এবং ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে গেলেন।
এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা করবেন। প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর
‘এসো, এসো, এসো হে বৈশাখ।/তাপসনিশ্বাসবায়ে মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়ে/ বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক/যাক পুরাতন স্মৃতি, যাক ভুলে-যাওয়া গীতি/ অশ্রুবাষ্প সুদূরে মিলাক/ মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা,/ অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা।’ অর্থাৎ ১৪৩১ বঙ্গাব্দে পুরাতন স্মৃতি মুছে যাক, দূরে চলে যাক ভুলে যাওয়া স্মৃতি, অশ্রুঝরার দিনও সুদূরে মিলাক। আমাদের জীবন থেকে বিগত বছরের ব্যর্থতার গ্লানি ও জরা মুছে যাক, ঘুচে যাক; নববর্ষে পুরাতন বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক। রমজান ও ঈদের পর দেশের মানুষের জীবনে আরো একটি উৎসবের ব্যস্ততা নতুন বছরে মঙ্গল শোভাযাত্রায় উদ্ভাসিত।ফিলিস্তিনবাসীর উপর হামলা আর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে এর মধ্যে মারা গেছেন অসংখ্য মানুষ।তবু মৃত্যুর মিছিলে জীবনের গান ফুল হয়ে ফুটেছে। যুদ্ধের সংকট আমাদের পরাস্ত করতে পারেনি কারণ পৃথিবীর মৃত্যু উপত্যকা পেরিয়ে এদেশে বৈশাখ এসেছে নতুন সাজে।