নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:০০ এএম, ১১ অগাস্ট, ২০১৯
এশিয়া তথা সারা বিশ্বের মিডিয়ার অন্যতম খবর হচ্ছে কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের মোদী সরকারের ৫ ই আগস্টের সিদ্ধান্ত আর তৎপরবর্তী নানা ঘটনার চুল চেরা বিশ্লেষণের চেষ্টা। বাংলাদেশে ক্রিকেট টীম কোন খেলায় হেরে গেলে যেমন নানামুখী সমালোচনায় চায়ের দোকানদারও যোগ দিতে ভুল করে না। কারণ সেটা জাতির সবাইকে ছুঁয়ে যায়। ঠিক তেমনি কাশ্মীর ইস্যু ভারতের গণ্ডি পেরিয়ে সারা বিশ্বের হয়ে গেছে এখন। ভারত সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে ভারতের অভ্যন্তরের ৯টি রাজ্যে ছাইচাপা আগুনের উপস্থিতি টের পাওয়া যাচ্ছে। যার উত্তাপ শুধু ভারতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই তা সঞ্চারিত হয়েছে আশে পাশের দেশের এক শ্রেণির মানুষের মধ্যে। ফলে ভারতে ভাঙনের সুর জোরদার করে নিজেদের ফায়দা লুটতে ইতোমধ্যে তৎপর অনেকেই। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে সাংবিধানিক সুবিধাপ্রাপ্ত ভারতে রাজ্যগুলোর সাধারণ নাগরিকরা।
ব্যক্তি স্বার্থ, পদ-পদবির জন্য দ্বন্দ্ব, ক্ষমতার লিপ্সা এবং মস্কো পন্থী ও চীনপন্থি আদর্শের লড়াইয়ের কারণে বাংলাদেশের বাম দলগুলো ভেঙ্গে অনেক ভাগে বিভক্ত হয়েছে তা বাংলাদেশে আমরা দেখেছি। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের বাম দলগুলো সমাজতন্ত্র কায়েমের মধ্যদিয়ে দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর মঙ্গলের জন্য ভাল উদ্দেশ্য নিয়ে দল গঠন করলেও এক পর্যায়ে এসে তাঁরা চরম ইমেজ সংকটে পড়ে। অনেকেই বলতেন যে, রাশিয়া বা চীনে বৃষ্টি হলে বাংলাদেশের বামরা মাথায় ছাতা ধরে। অন্য দিকে জামায়াতে ইসলামীর মত উগ্র ইসলামপন্থী দল ও গ্রুপগুলোও ব্যক্তি স্বার্থ, পদ-পদবির জন্য দ্বন্দ্ব, ক্ষমতার লিপ্সা অনেক ভাগে বিভক্ত হতে দেখেছি আমরা। বিশ্বের কোন দেশে কিছু হলেই ইসলাম রক্ষার ওজুহাতে দেশের অভ্যন্তরে তহবিল সংগ্রহের নামে ব্যক্তি বা গোষ্ঠী স্বার্থে চাঁদাবাজি চলে আসছে এই বাংলাদেশেও। শুধু উগ্র মুসলিম কিছু মানুষই নয়, উগ্র কিছু সুবিধাবাদী ক্ষুদ্র উপজাতিও স্বাধিকারের নামে আমাদের মত দেশে চাঁদাবাজির মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে, উন্নত জীবন যাপন করতে দেখেছি আমরা।
এক শ্রেণির ‘উছিলাবাদি’ আছে সব দেশেই। ওরা নানা উপলক্ষ্য বা উছিলার অপেক্ষায় থাকে। উছিলা পেলেই ঝাঁপিয়ে পড়ে জান বাজি রেখে। নিজ দেশের মধ্যে ধান্দা করার জন্য পাশের দেশে আশ্রয় নেয়, পয়সা ও বিশেষ সুখের আশায় বিদেশে যায় যুদ্ধ করতে। মিজোরামের লাল ডেংগার কথা অনেকের মনে থাকার কথা তাঁরা ভারতের শত্রুদের অর্থে পাকিস্তান পন্থী সরকারের আমলে বাংলাদেশে ঘাঁটি গেড়েছিল। একইভাবে ঘাঁটি গেড়েছিল নকশালবাড়ি আন্দোলনের নেতারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে। উলফার টাকা তাঁদের কিছু আত্মীয় বাংলাদেশে বিশাল শিল্পপতি বনে গেছেন, হয়েছেন অনেক মিডিয়ার মালিক। একইভাবে কাশ্মীরি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা কাশ্মীরের পাকিস্তান অংশে আশ্রয় নিয়ে ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু কাশ্মীরের বিরুদ্ধে লড়ছে। এই লড়াই জোরদার হবে ভারতের শত্রুদের টাকায় আর আইএস স্টাইলে সেবাদাসী ভোগের লালসায়।
অন্যদিকে কাশ্মীর ‘আজাদ’ করতে বাংলা থেকে মুজাহিদদের যোগ দেওয়ার ডাক দিয়েছে আল কায়দা। শুক্রবার দুপুরে আল কায়দার নিজস্ব প্রচার মাধ্যম— আল ফিরদাউস মিডিয়ায় প্রকাশ্যে এসেছে কাশ্মীরে জিহাদের ডাক। ওই প্রচার সাইটে বলা হচ্ছে, ‘কাশ্মীরে চলছে মুক্তির লড়াই। সেই লড়াইয়ের বার্তা ছড়িয়ে দিন এবং যোগ দিন সেই লড়াইয়ে।‘
আল কায়দার এই প্রচার নজরে এসেছে ভারতীয় গোয়েন্দাদেরও। তাঁরা বিষয়টি খুব হালকা ভাবে নিতে পারছেন না। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশের এক শীর্ষ গোয়েন্দা কর্তা বলেন, ‘‘আল কায়দা দীর্ঘ দিন ধরেই এ রাজ্যে এবং বাংলাদেশে জমি তৈরি করার চেষ্টা করছে। কাশ্মীরের সাম্প্রতিক অবস্থাকে সামনে রেখে তারা এখান থেকে সদস্য সংগ্রহ করে সংগঠন জোরদার করার চেষ্টা চালাচ্ছে।”
গোয়েন্দা সুত্র দাবি করেছে যে, ‘আল কায়েদা’ বাংলাদেশ পাকিস্তান, মিয়ানমার সহ আশেপাশের বিভিন্ন দেশ থেকে তাদের দলের জন্য যোদ্ধা সদস্য সংগ্রহের জন্য এবার কাশ্মীর ইস্যুকে কাজে লাগাতে শুরু করেছে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের টার্গেট করে ইতোমধ্যেই তাঁরা মাঠে নেমেছে।
এদিকে ভারতের সংবিধানের ৩৬৮ ধারার ভিত্তিতে ৩৭১ নম্বর ধারায় নয়টি রাজ্যকে বেশ কিছু বিশেষ সুবিধা ও অধিকার দেয়া হয়েছে। ওই রাজ্যগুলো হলো; কাশ্মীর, মহারাষ্ট্র, গুজরাট, আসাম, মিজোরাম, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, অরুণাচল ও অন্ধ্রপ্রদেশও রয়েছে।
এদিকে কাশ্মীরিদের জন্য রক্ষাকবচ সংবিধানের ৩৭০ ও ৩৫এ ধারা বাতিল করায় এখন বাকি রাজ্যগুলোতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ওইসব রাজ্যেও ভিতরে ভিতরে চরম অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। এসব রাজ্যের কিছু সুবিধাবাদী গোষ্ঠী তাঁদের স্বাধিকার আন্দোলনের নামে বেশুমার চাঁদাবাজি করে নিজেদের আয়েশি জীবনযাপন করবে। এ ব্যাপারে মিজোরামের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা লালথানহাওলা বলেন, ‘এ ঘটনা মিজোরাম, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, অরুণাচল প্রদেশের মতো রাজ্যের পক্ষে আতঙ্কের।’ এই আতঙ্ক সঞ্চারিত হলে কাশ্মীরের পাশাপাশি হিন্দু সংখ্যালঘু ভারতীয় রাজ্যগুলোতে সামরিক ব্যয় বাড়বে। এসব রাজ্যগুলো থেকে মেধা পাচার হয়ে যাবে, বিদেশে, উন্নত দেশে যাদের অনেকেরই এখন দক্ষ জনসংখ্যা সমস্যায় ভুগছে। পাকিস্তানের সাথে বাণিজ্য ঘাটতির পাশাপাশি অন্য দেশকেও বাড়তি বাণিজ্য সুবিধা দিতে হবে ভারতকে তাঁদের কূটনৈতিক সাফল্যের নামে।
ভোগ্যপণ্যের জন্য ভারত বিশ্বের অন্যতম একটি বিশাল বাজার। যা দখলের লোভ অনেকে দেশেরই আছে, আছে প্রতিযোগিতাও। শক্তিধর দেশগুলো বাণিজ্য সুবিধার বিনিময়ে ভারতের পক্ষ নেবে কাশ্মীর ইস্যুতে। কারণ ‘খালি হাতে তো আর চিড়ে ভেজে না’। তাই যে গতিতে ভারতের অর্থনীতি এগুনোর কথা সেই গতিতে আর এগুতে না পারারই কথা, সরল অংক তাই বলে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর জাতিসংঘ ইতোমধ্যে কাশ্মীর ইস্যু ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে ঘোষণা দেওয়ার মাধ্যমে ভারত পাকিস্তানের মুখে ‘ঝামা ঘসে’ দিয়েছে। আশে পাশের যে সব দেশ হালকা নড়া চড়া করছিল তাঁদের জন্য নতুন বার্তা দিয়েছে, তা কী খালি হাতে হয়েছে! মনে হয় না। কাশ্মীর ইস্যুতে আশেপাশের দেশ হয়তো থামবে কিন্তু কাশ্মীরের সাধারণ জনগণের মাঝে মতলব্বাজ ও ধর্মীয় উগ্রবাদীদের জনপ্রিয়তা বাড়বে। একইভাবে ভারত বিরোধী মনোভাব চাঙ্গা হবে মিজোরাম, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, অরুণাচল প্রদেশের মতো হিন্দু সংখ্যা লঘূ রাজ্যের সাধারণ মানুষের মাঝে, যা খুব বিপজ্জনক। যা ভারতকে ‘তাসের ঘর’এর মত আরেক সোভিয়েত ইউনিয়ন বানাতে পারে।
ভূস্বর্গ খ্যাত পর্যটন রাজ্য মুসলিম সংখ্যাগুরু কাশ্মীরী সুন্দরী মেয়েদের দেহ সম্ভোগের লোভে উগ্র হিন্দুরা লালসায় বুক বেঁধে মোদী সরকারকে সাময়িক সমর্থন দিলেও প্রত্যাশার সাথে প্রাপ্তির যোগ এক না হলে হিতে বিপরীত হতে পারে। কারণ মৌলবাদীরা কখনোই মানুষ হয় না। বিষয়টি পরিষ্কার হতে হয়তো আরও সময় নেবে। তাই সময়ের জন্য অপেক্ষা করতেই হবে। মানুষের মন বলে কথা, তাঁকে নিয়ে ভবিষ্যৎবাণী করার মত দুরূহ কাজ আর পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি নেই।
বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
দেশে একটি সুষ্ঠু
নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে
রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং
সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা
সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ
ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি
সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।
আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা
রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত
অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের
গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান
ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে
দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে
এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক
করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি
একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি
পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার
করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের
সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন
পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন
শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী
লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের
প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন
করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে
সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।
গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে,
তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো
দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের
অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা
পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে
প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ
এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে
নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও
একই ভাবে থেকেছেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি
হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে
যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু
এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার
পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে
তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:২৬ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি
প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর
রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা
করবেন।
প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে
আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা
নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর। আমার ধারণা যারাই প্রথম আলো কিনেন না
কেন তারা প্রথম দিকে মতিউর রহমান সাহেবকে রাখলেও পরবর্তীতে ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে
সম্পাদক পরিবর্তন করবে। আর প্রথম আলো যদি কোন যুক্তিপূর্ণ লোকের কাছে দেয় তাহলে আমার
মতে এখানে সম্ভবত আনিসুল হক সাহেব সম্পাদক হবেন। কারণ তার প্রতি লোকের অনেক শ্রদ্ধাবোধ
আছে এবং তিনি সবসময় একটা রেড লাইন রক্ষা করে চলেন। এটা আমরা সকলেই জানি। তার সাথে
অনেকেরই ভালো সম্পর্ক এবং তিনি খুবই জ্ঞানী
লোক।
এর আগে মতিউর রহমান যখন একতা থেকে আজকের কাগজে যান, তখন তার উদ্দেশ্যই
ছিল যে, একটি পত্রিকা কীভাবে চলে সেটা শেখা এবং এখান থেকে একসাথে সাংবাদিক নিয়ে বেরিয়ে
যাওয়া। তিনি সেটা করেছিলেন। তারপর ভোরের কাগজ থেকে একই কাজ করেছেন। সুতরাং তার সত্যিকারের
নীতিবোধ বলতে যেটা বোঝায় সেটা দুর্ভাগ্যবশত তিনি প্রমাণ করতে পারেননি।
তিনি এক সময় কমিউনিস্টদের সাথে থাকলেও এখন তার চেয়ে বড় দক্ষিণপন্থী
পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়াই কঠিন। এ কারণে প্রথম আলো যে বিক্রি হবে এই ব্যাপারে সাধারণ লোকের
ভিতরে এখন আর কোন সন্দেহ নেই।
এখন প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টারের কী হবে এই নিয়ে আলাপ আলোচনা হচ্ছে
এবং এই আলাপ আলোচনা খুব দীর্ঘদিন যে চলবে তা না। আমার মনে হয় জুন-জুলাই মাসের ভিতরেই
এর একটা ফয়সালা হয়ে যাবে। কারণ স্বাভাবিক ভাবেই বুঝি যে, একটি পত্রিকা পাঠকপ্রিয়তা
পেতে বেশ সময় লাগে। এটা একদিন দুইদিনের ব্যাপার না। আবার ঠিক তেমনিভাবে যখন পাঠকপ্রিয়তা
কমতে থাকে সেটাও একদিন দুইদিনে হয় না। ধীরে ধীরে হয়। এই মিডিয়া জগতের নিয়মই তাই।
আমি ১৯৬১ সালে পত্রিকা বলতে শুধুমাত্র ইত্তেফাক এর কথাই জানতাম।
সেই ধারণা থেকে বলতে পারি এখন প্রথম আলোর যদি কিছু কর্মী এর চেয়ে ভালো কোন সুযোগ সুবিধা
দেখেন তাহলে তারা বিক্রি হওয়ার আগেই চলে যাবেন। কারণ স্বাভাবিকভাবেই একজন সাংবাদিকের
একটা ক্যারিয়ার আছে এবং প্রথম আলোর মতো পত্রিকাতে কাজ করে তিনি তো যে কোন পত্রিকায়
যেতেও পারবেন না। তার কারণ গেলে তার ওই লেখার যে মান সেটা মূল্যায়ন নাও হতে পারে। তবে
আমার ধারণা প্রথম আলোতে কাজ করেছেন এমন যে কাউকে টেকনিক্যাল গ্রাউন্ডে অনেক গুরুত্ব
দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে আমি অবাক হব না যদি দু এক মাসের ভিতরে দেখা যায় যে আস্তে আস্তে
প্রথম আলো বিভিন্ন কর্মী অন্য পত্রিকায় যাওয়া শুরু করে দিয়েছেন।
ব্যাংক মার্জারের যেমন একটি ঘটনা বর্তমানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ঠিক
তেমনি পত্রিকা জগতেও শিল্প গোষ্ঠীর যে গন্ডগোলের ঘটনা ঘটেছে এটিও ব্যাংক মার্জারের
ঘটনার পর্যায়ে চলে যাবে। ব্যাংকিং ক্ষেত্রে দেখা যায়, দুটি ব্যাংক একীভূত হচ্ছে। আর
এদিকে দেখা যাবে, সংবাদকর্মীরা অন্য পত্রিকায় চলে যাচ্ছে।
তবে আমার মনে হয় না, এখন যে অবস্থা চলছে এতে প্রথম আলো আর আগের
মতো প্রথম আলো থাকতে পারবে। এটা কিছুতেই সম্ভব না এটি মোটামুটিভাবে নিশ্চিত। তাই আমার
মনে হয় প্রথম আলো সেই ব্যাংক মার্জারের পর্যায়ে চলে এসেছে। এখন অন্য পত্রিকা যাদের
আছে, তারাও প্রথম আলো কিনে নিতে পারেন। এটি সম্ভব। এরকম শিল্পগোষ্ঠীর কোন কমতি বর্তমানে
বাংলাদেশে নেই। যে কোন শিল্প গোষ্ঠীই এটা কিনবে।
তবে আমি আশা রাখব, যারাই প্রথম আলো কিনবে, তারা যেন অন্তত পক্ষে
এটা খেয়াল রাখে যাতে সাংবাদিকদের কোন ক্ষতি না হয়। সুতরাং এদেশের একজন সাধারণ নাগরিক
হিসেবে আমার দাবী হচ্ছে সাংবাদিকরা যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।
মন্তব্য করুন
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।
দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই।
বারো বছর আগের কথা। ডেভিড ক্যামেরুন তখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। সে সময় একদিন তিনি একটি হাসপাতালের ওয়ার্ডে ঢুকে পড়লেন। রোগীর অনুমতি সাপেক্ষে রোগীর সাথে ছবি তুলতে গেলেন। বাঁধ সাধলেন ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা একজন চিকিৎসক। জীবাণু প্রতিরোধের কোন পদক্ষেপ না নিয়ে এবং চিকিৎসকের অনুমতি ব্যতিরেকে তিনি ওই কাজটি করছিলেন। ডেভিড ক্যামেরুন তাঁর ভুল বুঝতে পেরেছিলেন সাথে সাথে। ক্ষমা চাইলেন এবং ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে গেলেন।
এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা করবেন। প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর