নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১৯ নভেম্বর, ২০১৯
২০১৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বরে সংসদে আইন পাস করা নতুন পরিবহন আইনের বিধিমালা প্রণয়ন ছাড়াই তা বাস্তবায়ন বা প্রয়োগে ঝাঁপিয়ে পড়েছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। যদিও আইনের অস্পষ্ট বিষয়গুলো স্পষ্ট করার জন্য বিধিমালা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জানা গেছে যে, নতুন সড়ক পরিবহন আইনের ৪ নম্বর ধারাটি ড্রাইভিং লাইসেন্স সংশ্লিষ্ট। এ ধারার ৩ নম্বর উপধারায় বলা হয়েছে, ‘মোটরযানের শ্রেণি বা ক্যাটাগরি ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।’ ঠিক একইভাবে মোটরযানের নিবন্ধন, ফিটনেস সনদের মেয়াদ, গণ-পরিবহনের চলাচলের অনুমতি (রুট পারমিট)সহ আরও বেশ কিছু ধারায়ও বিধির কথা বলা আছে। তাই বিধিমালা প্রণয়ন ছাড়া এই আইন পুরোপুরি কার্যকর করতে যারা পরামর্শ সরকারকে দিয়েছেন তাঁরা আসলে কী চান তা নিয়ে অনেকের সন্দেহ আছে।
মালিকদের রাতারাতি বড় লোক হবার মানসিকতা: পরিবহন ব্যবসায় খুব দ্রুত টাকা কামানো যায় এটা এই খাতে বিনিয়োগ ইচ্ছুকদের দৃঢ় বিশ্বাস। এমন অনেকেই আছে যারা একটা দুইটা মিনিবাস দিতে ব্যবসা শুরু করেন ১০/১৫ বছরে বিশাল পরিবহন বহরের মালিক। সদ্য বহিষ্কৃত এক আওয়ামী লীগের এক নেতা ২০০৯ সালে ঢাকায় ২/৩ টা গাড়ি নিয়ে ‘বিহঙ্গ’ নামে পরিচালিত তাঁর পরিবহন একটি রুট নিয়ে শুরু করে ব্যবসা। গত বছর পর্যন্ত পাঁচটি রুটে ২৪০টি বাস চলছে তাঁর কোম্পানির। এমন হলে কে না এই ব্যবসায় আসতে চাইবেন! এটা তো সোনার খনি!
গাড়ির সংখ্যা হঠাৎ বাড়ার গোপন রহস্য পরিবহন মালিক সমিতির চাঁদাবাজি বলে অনেকেই মনে করেন। সাথে তাঁরা পরিবহন শ্রমিকদের দিয়ে করেন বেশুমার চাঁদাবাজি, যার মাশুল গোনেন সাধারণ মানুষ, গরীব বা মধ্যবিত্ত মানুষ। এই খাতে প্রতিদিন কোটি টাকা চাঁদা উঠে বলে বিভিন্ন সময় মিডিয়ায় খবর এসেছে।
গাড়ি প্রতি দৈনিক আয়ের বা সীমা বেঁধে দেওয়া মালিকদের আরেকটি কৌশল। এতে পরিবহন শ্রমিকরা দৈনিক জমার টাকা উঠাতে বেপরোয়া গাড়ি চালাতে উৎসাহিত হন। কারণ তা না হলে তাঁদের না খেয়ে থাকতে হয়। নিয়ম মেনে গাড়ি চালাতে গেলে সব দিন দৈনিক জমার টাকা উঠাতে পারা যায় না। এতে করেই অনেক সময় দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান সাধারণ পথচারী। অবশ্য নাগরিকদের সচেতনতাও অনেক ক্ষেত্রে এসব দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। শিক্ষিতজনদের অনেকেই আছেন যারা জেব্রা ক্রসিং বা ফুট ওভার ব্যবহারে আগ্রহী নন, যা সড়ক দুর্ঘটনার আরেকটি কারণ। এমন আরও অনেক কারণ আছে সব বলতে গেলে অনেক কথা বলা দরকার। যেমন ফিটনেস-বিহীন গাড়ি আর রাস্তার বেহাল দশাতেও অনেক সময় দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান রাস্তার পাশে নিরাপদ ও নির্ধারিত স্থানে থাকা পথচারী, কিংবা ঘুমন্ত মানুষ। এমন খবর আমরা অনেকেই জানি।
দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন আর অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে তাল মিলিয়ে যেভাবে পরিবহণের বা যানবাহনের সংখ্যা বাড়ে যেই গতিতে কিন্তু দক্ষ চালকের সংখ্যা বাড়ে না। তাই ‘প্রয়োজন কোন আইন মানেন না’ ধরে নিয়ে জেনেশুনে পরিবহন মালিকগন অপেশাদার বা অদক্ষ বা আধা-দক্ষ চালক নিয়োগ দেন। অনেক সময় বাঁচার প্রয়োজনে চালকেরাও ভুয়া অভিজ্ঞতা দেখিয়ে ভুয়া লাইসেন্সে চাকরী নেন। আবার এমন ঘটনাও আছে যে, দক্ষ চালকেরা তাড়াতাড়ি লাইসেন্স পাওয়ার জন্য লাইসেন্স প্রাপ্তির বিআরটিএ’র দীর্ঘ প্রক্রিয়া সংক্ষিপ্ত করতে দালালের মাধ্যমে বিআরটিএ’র কর্তাদের ঘুষ দিয়ে লাইসেন্স নেন। কিন্তু লাইসেন্সে সই স্বাক্ষর সব ঠিক থাকলেই তা বিআরটিএ’র নথিতে বা সার্ভারে থাকে না।, ফলে তা অবৈধ হয়ে যায়। ‘যত ভালো গাড়ি চালাতে পারেন না কেন টাকা না দিলে শতকরা ১০ ভাগের বেশী আবেদনকারী কখনোই লাইসেন্স পান না’ বলে অভিযোগ আছে। বিআরটিএ’র কর্তাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগও একেবারে কম না। বিআরটিএ’র কর্তাদের একটা বিরাট অংশের মানুষের আছে উপনিবেশিক মানসিকতার। তাঁদের দাপ্তরিক সংস্কৃতিই ভিন্ন সেখানে আম জনতা থেকে ব্যবসায়ী সবাই তাঁদের গোলাম, তাঁরা ব্রিটিশ সাহেব। একই অবস্থা পুলিশ বাহিনীর ট্রাফিক বা হাইওয়ে শাখায়। তাঁদের বাহিনীর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সদস্য অনেক সময়ই পরিবহণ শ্রমিকদের লঘু পাপে গুরু দণ্ড দিয়ে থাকেন। যারা নিজেদের গাড়ি ব্যবহার করেন তাঁরা নিজেরাই এই ঘটনার শিকার হননি, তা নয়। আমাদের দেশে পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা আনতে আইনের কঠোর প্রয়োগের পাশাপাশি মানবিক পুলিশ বাহিনী বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মানুষ দরকার। অনেক চালক অভিযোগ করেন যে, সকালে গাড়ি নিয়ে বের হলে বিশেষ বাহিনীর কিছু মানুষকে নাস্তার টাকার যোগান দিতে না পারলে মামলা হয় বায়বীয় অভিযোগে।
গণপরিবহন বা বাণিজ্যিক পরিবহণের শ্রমিকগন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দৈনিক হাজিরায় কাজ করেন। পরিবহন শ্রমিকদের চাকরীর অনিশ্চয়তা এই সেক্টরে অস্থিরতার অন্যতম একটি কারণ। তাঁদের দাবি হচ্ছে অসচেতন মানুষ হঠাৎ রাস্তায় দ্রুতগামী গাড়ির সামনে এসে পড়লে দুর্ঘটনা এড়ানো যায় না। কিন্তু নতুন আইনে তাঁর কোন প্রতিকার নেই। ফিটনেস-বিহীন গাড়ি চালাতে বাধ্য করা হায়, যার দায় মালিকদের, শাস্তি পান শ্রমিকরা। দৈনিক জমার পরিমাণ এমন করেই নির্ধারণ করেন মালিকগন যাতে ট্রাফিক আইন ভেঙ্গে গাড়ি চালানো ছাড়া অনেক সময় উপায় থাকে না। যন্ত্রচালিত দ্রুতযান চলার লেনে যন্ত্র-হীন যানবাহন ঢুকে পড়ে কিংবা স্বেচ্ছাচারী লেন পরিবর্তনকারী চালকের কারণেও অনেক দুর্ঘটনা হয়। পরিবহন মালিক সমিতির গাড়ির চালকদের এই আচরণ বেশী দেখা যায়। মালিকের চাকরী তাই যখন ইচ্ছা তখন মালিক তাঁদের ছাটাই করতে পারেন, তাঁদের চাকরীর কোন নিশ্চয়তা নেই। সরকারীভাবে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর কোন ব্যবস্থা নেই যাতে তাঁরা অবসরকালীন সময়ে পরিবার তো দুরের কথা স্বামী-স্ত্রী দুবেলা খাবার পাবেন এমন নিশ্চয়তা নেই।
অনেক পরিবহন ব্যবসায়ি আছেন যাদের অন্য অনেক ব্যবসা আছে। সেই সব ব্যবসায় অধিক মুনাফার জন্য পরিবহন শ্রমিক নেতাদের ম্যানেজ করে যৌক্তিক কারণ ছাড়াই সব ধরণের পরিবহন সেবা/ চলাচল বন্ধ করে রাখা হয়। সেখানে সুবিধাভোগী শ্রমিক নেতা আর কিছু মাস্তানদের ব্যবহার করা হয়। তাতে গণপরিবহন বা বাণিজ্যিক পরিবহণের নিরীহ শ্রমিকগন তাঁদের দৈনিক হাজিরা থেকে বঞ্চিত হয়ে না খেয়ে মরার দশায় পড়েন, এটা দেখার বা মনিটরিং করার জন্য সরকারী কোন ব্যবস্থা নেই। আর্থিক ছাড়াও রাজনৈতিক মুনাফার প্রত্যাশা থেকেও পরিবহণ শ্রমিকদের ব্যবহার করা হয়, ‘এটা ওপেন সিক্রেট’।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
দেশে একটি সুষ্ঠু
নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে
রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং
সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা
সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ
ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি
সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।
আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা
রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত
অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের
গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান
ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে
দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে
এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক
করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি
একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি
পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার
করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের
সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন
পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন
শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী
লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের
প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন
করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে
সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।
গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে,
তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো
দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের
অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা
পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে
প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ
এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে
নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও
একই ভাবে থেকেছেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি
হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে
যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু
এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার
পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে
তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:২৬ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি
প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর
রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা
করবেন।
প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে
আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা
নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর। আমার ধারণা যারাই প্রথম আলো কিনেন না
কেন তারা প্রথম দিকে মতিউর রহমান সাহেবকে রাখলেও পরবর্তীতে ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে
সম্পাদক পরিবর্তন করবে। আর প্রথম আলো যদি কোন যুক্তিপূর্ণ লোকের কাছে দেয় তাহলে আমার
মতে এখানে সম্ভবত আনিসুল হক সাহেব সম্পাদক হবেন। কারণ তার প্রতি লোকের অনেক শ্রদ্ধাবোধ
আছে এবং তিনি সবসময় একটা রেড লাইন রক্ষা করে চলেন। এটা আমরা সকলেই জানি। তার সাথে
অনেকেরই ভালো সম্পর্ক এবং তিনি খুবই জ্ঞানী
লোক।
এর আগে মতিউর রহমান যখন একতা থেকে আজকের কাগজে যান, তখন তার উদ্দেশ্যই
ছিল যে, একটি পত্রিকা কীভাবে চলে সেটা শেখা এবং এখান থেকে একসাথে সাংবাদিক নিয়ে বেরিয়ে
যাওয়া। তিনি সেটা করেছিলেন। তারপর ভোরের কাগজ থেকে একই কাজ করেছেন। সুতরাং তার সত্যিকারের
নীতিবোধ বলতে যেটা বোঝায় সেটা দুর্ভাগ্যবশত তিনি প্রমাণ করতে পারেননি।
তিনি এক সময় কমিউনিস্টদের সাথে থাকলেও এখন তার চেয়ে বড় দক্ষিণপন্থী
পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়াই কঠিন। এ কারণে প্রথম আলো যে বিক্রি হবে এই ব্যাপারে সাধারণ লোকের
ভিতরে এখন আর কোন সন্দেহ নেই।
এখন প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টারের কী হবে এই নিয়ে আলাপ আলোচনা হচ্ছে
এবং এই আলাপ আলোচনা খুব দীর্ঘদিন যে চলবে তা না। আমার মনে হয় জুন-জুলাই মাসের ভিতরেই
এর একটা ফয়সালা হয়ে যাবে। কারণ স্বাভাবিক ভাবেই বুঝি যে, একটি পত্রিকা পাঠকপ্রিয়তা
পেতে বেশ সময় লাগে। এটা একদিন দুইদিনের ব্যাপার না। আবার ঠিক তেমনিভাবে যখন পাঠকপ্রিয়তা
কমতে থাকে সেটাও একদিন দুইদিনে হয় না। ধীরে ধীরে হয়। এই মিডিয়া জগতের নিয়মই তাই।
আমি ১৯৬১ সালে পত্রিকা বলতে শুধুমাত্র ইত্তেফাক এর কথাই জানতাম।
সেই ধারণা থেকে বলতে পারি এখন প্রথম আলোর যদি কিছু কর্মী এর চেয়ে ভালো কোন সুযোগ সুবিধা
দেখেন তাহলে তারা বিক্রি হওয়ার আগেই চলে যাবেন। কারণ স্বাভাবিকভাবেই একজন সাংবাদিকের
একটা ক্যারিয়ার আছে এবং প্রথম আলোর মতো পত্রিকাতে কাজ করে তিনি তো যে কোন পত্রিকায়
যেতেও পারবেন না। তার কারণ গেলে তার ওই লেখার যে মান সেটা মূল্যায়ন নাও হতে পারে। তবে
আমার ধারণা প্রথম আলোতে কাজ করেছেন এমন যে কাউকে টেকনিক্যাল গ্রাউন্ডে অনেক গুরুত্ব
দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে আমি অবাক হব না যদি দু এক মাসের ভিতরে দেখা যায় যে আস্তে আস্তে
প্রথম আলো বিভিন্ন কর্মী অন্য পত্রিকায় যাওয়া শুরু করে দিয়েছেন।
ব্যাংক মার্জারের যেমন একটি ঘটনা বর্তমানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ঠিক
তেমনি পত্রিকা জগতেও শিল্প গোষ্ঠীর যে গন্ডগোলের ঘটনা ঘটেছে এটিও ব্যাংক মার্জারের
ঘটনার পর্যায়ে চলে যাবে। ব্যাংকিং ক্ষেত্রে দেখা যায়, দুটি ব্যাংক একীভূত হচ্ছে। আর
এদিকে দেখা যাবে, সংবাদকর্মীরা অন্য পত্রিকায় চলে যাচ্ছে।
তবে আমার মনে হয় না, এখন যে অবস্থা চলছে এতে প্রথম আলো আর আগের
মতো প্রথম আলো থাকতে পারবে। এটা কিছুতেই সম্ভব না এটি মোটামুটিভাবে নিশ্চিত। তাই আমার
মনে হয় প্রথম আলো সেই ব্যাংক মার্জারের পর্যায়ে চলে এসেছে। এখন অন্য পত্রিকা যাদের
আছে, তারাও প্রথম আলো কিনে নিতে পারেন। এটি সম্ভব। এরকম শিল্পগোষ্ঠীর কোন কমতি বর্তমানে
বাংলাদেশে নেই। যে কোন শিল্প গোষ্ঠীই এটা কিনবে।
তবে আমি আশা রাখব, যারাই প্রথম আলো কিনবে, তারা যেন অন্তত পক্ষে
এটা খেয়াল রাখে যাতে সাংবাদিকদের কোন ক্ষতি না হয়। সুতরাং এদেশের একজন সাধারণ নাগরিক
হিসেবে আমার দাবী হচ্ছে সাংবাদিকরা যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।
মন্তব্য করুন
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।
দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই।
বারো বছর আগের কথা। ডেভিড ক্যামেরুন তখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। সে সময় একদিন তিনি একটি হাসপাতালের ওয়ার্ডে ঢুকে পড়লেন। রোগীর অনুমতি সাপেক্ষে রোগীর সাথে ছবি তুলতে গেলেন। বাঁধ সাধলেন ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা একজন চিকিৎসক। জীবাণু প্রতিরোধের কোন পদক্ষেপ না নিয়ে এবং চিকিৎসকের অনুমতি ব্যতিরেকে তিনি ওই কাজটি করছিলেন। ডেভিড ক্যামেরুন তাঁর ভুল বুঝতে পেরেছিলেন সাথে সাথে। ক্ষমা চাইলেন এবং ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে গেলেন।
এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা করবেন। প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর