নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০৪ এএম, ০৬ ডিসেম্বর, ২০১৯
১৯৯০ থেকে ২০১৯, উনত্রিশ বছর কি বড় বেশি সময়? নাকি বাঙালি সব দ্রুত ভুলে যায়, সেই অপবাদ আমরা মেনে নিচ্ছি সব সময়? কথাগুলো আসলো আজ ৬ ডিসেম্বর, ক্যালেন্ডারের এই দিনটিকে স্মরণ করে। বাংলাদেশের জন্য ডিসেম্বর মাস বিজয়ের মাস। ১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে লাল-সবুজের পতাকা, বাংলার ভূখণ্ড শত্রুমুক্ত হয়েছিল। আর আজকের এই দিনে একাত্তরে বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছিল ভূটান ও ভারত।
৬ ডিসেম্বর আরও একটি কারণে স্মরণীয়। কারণ ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ প্রায় ২১ বছরের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সামরিক শাসন থেকে মুক্ত হয়ে নতুন করে গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরু করেছিল। সামরিক স্বৈরাচার লে. জেনারেল (অব.) এইচ এম এরশাদ গণঅভ্যুত্থানে নথি স্বীকার করে গদি ছেড়েছিলেন। এমনকি সাংবিধানিক বিধান না থাকা সত্ত্বেও তখনকার প্রধান বিচারগতি শাহাবুদ্দিনকে প্রথমে উপ-রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দিয়ে তার কাছেই ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিলেন। তখন জনতার চাওয়াই ছিল ‘আইন-সংবিধান’। কিন্তু জনগণের নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে তখনকার আটদল, বিএনপির নেতৃত্বে সাতদল ও বামপন্থীদের পাচদল এখন আর তেমন করে ‘স্বৈরাচারের পতন দিবস’ পালন করে না। উল্টো সবার আগে এইচ এম এরশাদের তৈরী করা জাতীয় পার্টি প্রেস রিলিজ দিয়ে জানিয়েছে যে তারা আজ ৬ ডিসেম্বর সংবিধান সংরক্ষণ দিবস পালন করবে।
১৯৯০ সালে পতন হলেও, একজন সামরিক স্বৈরশাসক হয়েও মৃত্যুর আগে এইচ এম এরশাদ তার গা থেকে দুঃশাসনের গন্ধ দুর করতে পেরেছিলেন, দেশের সাধারণ মানুষের কাছে না হলেও অন্তত কিছু রাজনৈতিক, এবং দেশের বড় রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে। তাই তারা ভুলে গেছেন নব্বইয়ের ‘তিনজোটের রূপরেখা’। এমনকি নিজের কারিশমায় ‘সফল রাজনীতিক’ এরশাদ বুকে জাতীয় পতাকা, সংসদ ভবনে সব্বোর্চ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান নিয়ে বিদায় নিতে সক্ষম হয়েছেন। হয়তো সেই কারণেই জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা শহীদ নূর হোসেনকে অপমান করতে দ্বিধা করেন নাই। তবে শেষ পর্যন্ত জাতীয় সংসদে দাড়িয়ে তাকে ক্ষমা চাইতে হয়েছে।
দেশের ইতিহাস রাজনীতি আর রাষ্ট্র পরিচালনায় এইচ এম এরশাদের অবদানের মূল্যায়ন করবে। কিন্তু এটাতো ঠিক যে পচাত্তরের ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর পরোক্ষ সামরিক শাসনকে দ্বিতীয় ধাপে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত টেনে নিয়েছিলেন এইচ এম এরশাদই। এখন দেশে শুদ্ধি অভিযান চলছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নিজের ঘরে। কিন্তু রাজনীতিবিদের দলে টানার জন্য ‘মন্ত্রীত্বের লোভসহ’ আরো অনেক কিছুর মাধ্যমেই রাজনীতিকে কালিমামুক্ত করেছিলেন গণ-আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত এইচ এম এরশাদ। আজ সেই ৬ ডিসেম্বর।
এটা গণতন্ত্রের সৌন্দর্য হতে পারে, আবার এলাকাপ্রীতির নেতিবাচক প্রভাব হতে পারে কিন্তু বাস্তবতা ছিল যে ১৯৯০ সালে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থেকেও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ১৯৯১ সালে রংপুরের ৫টি আসনে বিজয়ী হয়েছিলেন। আর বর্তমান সংসদেরওতো বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবেই বিদায় নিয়েছেন। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, রাজনৈতিক বিশ্লেষক বা সমাজবিজ্ঞানীরা রাজনীতিতে এইচ এম এরশাদের পুর্নবাসন নিয়ে গবেষণা করবেন। কিন্তু শহীদ ডা. শামসুল আলম মিলন, নূর হোসেন, রাউফুন বসুনিয়া এবং তাজুল ইসলামসহ স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের অন্যান্য শহীদদের পরিবারের কাছে আমাদের কৈফিয়ত কি? কেন নূর হোসেনের মা-ভাইদেরকেই প্রেসক্লাবের সামনে ছুটে যেতে হলো? জাফর-জয়নাল-দিপালী সাহার মত গুচ্ছ গুচ্ছ শহীদদের আত্মারা কি আমাদের ধিক্কার দেয় না, যখন দেখে স্বৈরাচারের পতন দিবসে রাজনীতিকরা এমনকি নব্বইয়ের ছাত্র আন্দোলনের রাজপথের যোদ্ধারা লজ্জায় মুখ ঢাকেন।
নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানের সময় জাসদ-ছাত্রলীগের শীর্ষনেতা এবং এখন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত শফি আহমেদ ফেসবুকে একটি ছবি দিয়েছেন। এরশাদের পতনের পর পল্টন মোড়ে স্থাপিত হয়েছিল ‘জনতার জয় সম্প্রচার কেন্দ্র’। সেই গণমঞ্চের যে ছবিটি শফি আহমেদ ফেসবুকে দিয়েছেন সেখানে দেখা যাচ্ছে এখনকার বিএনপির নেতা আমান উল্লা আমান, তখনকার ছাত্র ইউনিয়নের নেতা মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, ছাত্রলীগের হাবিবুর রহমান হাবিব (দুজনই এখন বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত), ডা. মুশতাক আহমেদ, নূর আহমেদ বকুলসহ আরো অনেককেই। এই সব রাজনীতিকরা কি নিশ্চুপ থাকবেন ৬ ডিসেম্বরে? রাজনৈতিক স্বার্থে আমরা অতীতের সবকিছু ভুলে যাবো? নির্বাচনে ‘জয়ের রসায়ন’ বা প্রতিপক্ষকে যেকোনো মূল্যে ঘায়েলের আদর্শহীন রাজনীতিই কি আমাদেরকে বাধ্য করছে গড্ডালিকায় গা ভাসাতে? জানিনা সে কারণেই কি দশ বছর একটানা ক্ষমতায় থাকার পর ক্ষমতাসীন দলের ভেতর থেকো শুদ্ধি অভিযান শুরু করতে হলো। হয়তো জাতীয় পার্টির নেতারা ৬ ডিসেম্বরের এমন লেখাকে অহেতুক পুরনো কাসুন্দি বলে নাক সিটকাতে পারেন বা মশিউর রহমান রাঙ্গার মত কেউ দুটো গালিও দিতে পারেন, কিন্তু তাদেরও মনে রাখতে হবে যে তাদের নেতা যাকে দেশের মানুষ বুলেট-বেয়নেট আর কাঁদানে গ্যাসের ধোয়ার সাথে জেল-জুলুম মোকাবেলা করেই গণআন্দোলনকে সফল করেছিল। আর হত্যা ও দুর্নীতি মামলার আসামি হিসেবেই এইচ এম এরশাদের মৃত্যু হয়েছে।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
দেশে একটি সুষ্ঠু
নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে
রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং
সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা
সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ
ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি
সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।
আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা
রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত
অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের
গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান
ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে
দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে
এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক
করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি
একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি
পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার
করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের
সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন
পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন
শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী
লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের
প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন
করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে
সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।
গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে,
তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো
দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের
অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা
পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে
প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ
এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে
নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও
একই ভাবে থেকেছেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি
হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে
যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু
এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার
পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে
তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:২৬ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।
দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই।