নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ এএম, ২৯ জানুয়ারী, ২০২০
দুইটি খবর অনেকের চোখে পড়তে পারে। এর একটি হচ্ছে- মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন টাইমস ইসরায়েলের সামরিক গোয়েন্দা বাহিনীর একজন সাবেক কর্মকর্তা ড্যানি শোহাম বরাত দিয়ে বলেছে যে, জৈব রাসায়নিক অস্ত্র তৈরির গোপন কর্মসূচি চলা একটি ইন্সটিটিউট থেকে প্রাণীবাহী করোনা ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছে।
চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে নতুন করোনা ভাইরাসটি ইতোমধ্যেই সে দেশের রাজধানী বেইজিংসহ ২৯টি প্রদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এছাড়া জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম, তাইওয়ান, নেপাল, ফ্রান্স, সৌদি আরব, কানাডাসহ অন্তত ১২টি দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মিলেছে।
অন্যটি হচ্ছে, তারা করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কারে সফল হয়েছে বলে চীন দাবি করেছে। চীনের দাবি , ভাইরাসটির নির্মূলে যে নতুন ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছেন তাতে তারা সফল হয়েছেন। চীনের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন শিনহুয়া নিউজ এজেন্সির এক প্রতিবেদনে বিজ্ঞানীদের এ দাবি প্রকাশিত হয়েছে। সংবাদমাধ্যমটিতে বলা হয়েছে, দুটি হাসপাতালের সাতজন মেডিকেল স্টাফের ওপর এ নতুন ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে। প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এসব রোগীর দেহে সংক্রামিত ভাইরাসের লক্ষণগুলো নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। তারা বর্তমানে সুস্থ আছেন।
ইতিহাস থেকে জানা যায় যে, নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব তুলে ধরে অর্থনৈতিক শোষণের লক্ষ্যে সেই প্রাচীন কাল থেকেই গোষ্ঠী গোষ্ঠী, জাতি জাতি বা দেশের সাথে দেশের যুদ্ধ চলে আসছে। আর শ্রেষ্ঠত্বের মাপকাঠি হিসেবে সে বেছে নেয় শক্তি আর ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে। ক্ষমতা প্রয়োগে যুগে যুগে নানান কৌশল আর অস্ত্র ব্যবহার করেছে যুদ্ধবাজ মানুষেরা। এরই সূত্র ধরে বা ধারাবাহিকতায় এসেছে বায়োলজিক্যাল উইপন বা জীবাণু অস্ত্র। শুরুতে তারা এটাকে এই নামে না ডাকলেও পরে এই অস্ত্রের নামকরণ এভাবে হয়েছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় যে, প্রায় সাড়ে তিন হাজার বছর আগে মধ্য প্রাচ্যের একদল যোদ্ধার হাত ধরেই এই জীবাণু অস্ত্র প্রথম পরিচিতি পায়। সে সময় হিত্তিত নামে পরিচিত এই জাতির যোদ্ধারা তাদের শত্রু শহরের কাছে পূর্ব-পরিকল্পনা অনুযায়ী ছয়টি ভেড়া ছেড়ে দিয়ে আসতো। স্থানীয় অধিবাসীরা যখন এগুলোকে কোনো ধরনের সন্দেহ না করেই তাদের শহরে নিয়ে অন্য গবাদিপশুর মতো করে পালতে শুরু করতো তখনই ভেড়ার গায়ে আগে থেকে প্রবেশ করানো র্যাবিট ফিভার এর জীবাণু শহরের অধিবাসীদের মধ্যে সংক্রমিত হতো। আর এই রোগের কারণে অল্প কিছুদিনের মাঝেই মারা যেত শহরের অর্ধেকেরও বেশি অধিবাসী যা হিত্তিতদের জন্য শহরের দখল নেওয়াটাও সহজ করে দিত।
হিত্তিতদের পর বহু শতাব্দীর ইতিহাসে জীবাণু অস্ত্র ব্যবহারের কোনো সরাসরি প্রমাণ না পাওয়া গেলেও জীবাণু-যুদ্ধের প্রথম ব্যবহার লক্ষ করা যায় ১৩৪৬ সালে। তৎকালীন তাতার বাহিনী প্লেগ রোগে মৃত সৈন্যদের কাফা শহরের মধ্যে ফেলে দিয়ে সব প্রবেশপথ বাইরে থেকে বন্ধ করে দিয়েছিল। ১৭৬৭ সালে সংঘটিত ফরাসি ও ভারতীয়দের মধ্যকার যুদ্ধে ফরাসি সৈন্যরা গুটিবসন্তের জীবাণুতে ভরা কম্বল তৎকালীন স্থানীয়দের মাঝে বিতরণ করেছিল। যার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল সাধারণ জনগণের মাঝে গুটি বসন্ত ছড়িয়ে দেয়া। ১৯০০ সালে এসে যখন মাইক্রোবায়োলজি বা অণুজীব-ভিত্তিক সংক্রামক রোগের উদ্ভব হলো, তখন থেকেই আধুনিক জীবাণু অস্ত্রের ধারণার শুরু। ১৯২৫ সালের জেনেভা প্রটোকলে জীবাণু অস্ত্র গবেষণা ও ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলেও উন্নত দেশগুলোতে এর ব্যবহার থেমে থাকেনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে চীনের ওপর জাপানের জীবাণু অস্ত্র ব্যবহার করে। সে সময় ব্রিটিশ সরকারের পক্ষ থেকে স্কটল্যান্ডের গ্রুইনার্ড দ্বীপে ভয়ংকর অ্যানথ্রাক্স জীবাণুকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের পরীক্ষা চালানো হয়। এই জীবাণু সংক্রমণের পরীক্ষাটি এতোটাই ভয়াবহ ছিল যে পরবর্তী ৪৮ বছর ধরে দ্বীপটিকে কোয়ারেন্টাইন করে রাখতে হয়। একই রকম ভাবে ১৯৩০ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের পরিচালিত এক পরীক্ষার কারণে এরাল সাগরের একটি দ্বীপ চিরতরে মানুষ বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ে যেখানে র্যাবিট ফিভার, প্লেগ, টাইফাস এবং ভেনিজুয়েলান ইকুইন এনসেফালাইটিস এর মতো একাধিক জীবাণু ছড়ানো হয়েছিল। এ ছাড়া ১৯৭১ সালে রাশিয়ায় অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য তৈরি গুটিবসন্তের জীবাণু দূর্ঘটনাক্রমে ছড়িয়ে পড়লে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশগুলোর পরীক্ষাগারে এ ধরনের জীবাণু মজুদ থাকার বিষয়টি আলোচনায় আসে। জানা যায় যে, ১৯৬০ সালে ব্রিটেন, ১৯৬৯ সালের ২৫ নভেম্বর এক বিবৃতিতে আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন এর ঘোষণার পরে অবশেষে ১৯৯২ সালে রাশিয়া জীবাণু অস্ত্রের গবেষণা ও ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞার দাবি মেনে নেয়।
প্রাণঘাতী রোগের প্রতিরোধ আর চিকিৎসার পদ্ধতি ও ওষুধ দুটোই আবিষ্কার হয়ে যায় কিছুদিনের মধ্যেই। তাই যারা জীবাণু যুদ্ধের পরিকল্পনা করেন তারা পরিচিত জীবাণুকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে জীবাণুগুলোকে জেনেটিক্যালি বদলে ফেলে তাদের আরো ভয়ঙ্কর রূপ দেয়। ফলে বিদ্যমান ওষুধে আর কোন কাজ হয় না। তাই যারা আইনত নিষিদ্ধ এই জীবাণু যুদ্ধের পরিকল্পনায় প্রাণঘাতী জীবাণুগুলোকে জেনেটিক্যালি বদলে ফেলার গবেষণা করে তারা একই সাথে তার প্রতিরোধের ব্যবস্থাও করে রাখে।
২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে রুশ সীমান্তে যুক্তরাষ্ট্রের জীবাণু অস্ত্রের পরীক্ষায় ৭৩ জন নিহত হয় বলে দাবি করে রাশিয়া। রাশিয়া দাবি, পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র জর্জিয়াতে জীবাণু অস্ত্রের পরীক্ষাগারে নিহতের এ ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ দাবি করে। এর পরে এ নিয়ে আর কোন খবর পাওয়া যায়নি। রাশিয়ার দাবি তাঁদের হুশিয়ারির পরে যুক্তরাষ্ট্র এটা নিয়ন্ত্রণে এনেছিল।
বাংলার অন্যতম প্রসিদ্ধ নগরী নদীয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র (১৭১০-৮৩) এর সভাসদগনের মধ্যে গোপাল ভাঁড়ের সাথে একজন বিজ্ঞানীও ছিলেন। কৃষ্ণচন্দ্র একবার তার বিশেষ প্রয়োজনে বিজ্ঞানীকে এমন একটা তরল কেমিক্যাল আবিষ্কার করতে বললেন যে তা দিয়ে যা ধরা যাবে তাই সোনা হয়ে যাবে। এটা শুনে গোপাল ভাঁড় বিজ্ঞানীকে বললেন সোনা তৈরির তরল ক্যামিক্যাল বানানোর পাশাপাশি কেমিক্যালের স্পর্শে যা সোনা হবে তা পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য যেন আরেকটি তরল কেমিক্যাল তৈরি করেন। তা না হলে রাজা এক সময় সোনা তৈরি করতে করতে এমন অবস্থায় চলে যাবেন যা ভয়ংকর বিপদে রূপ নেবে। বিজ্ঞানী গোপালের কথা মত তাই করে রাখলেন। এর পরে কৃষ্ণচন্দ্র বিজ্ঞানীর কাছে কেমিক্যাল পেয়ে হাতের কাছে যা পান তাই সোনায় রূপান্তরিত করতে থাকেন। এক পর্যায়ে তার খাবারও সোনায় পরিণত হয়। রাণীকে ছুঁয়ে দেবার ফলে রাণীর শরীরের একটা অংশ সোনায় পরিণত হয়ে অসাড় হয়ে গেলে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র চরম হতাশ হয়ে এর প্রতিষেধক চান বিজ্ঞানীর কাছে। পরে প্রতিষেধক দিয়ে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র আবার সব কিছু পূর্বের অবস্থায় এনে মুক্তি পান।
চীন কী তাহলে রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের দশায় পড়েছিল, আর একইভাবে তার মুক্তি হল! নাকি জীবাণু ছড়িয়ে প্রতিষেধক বিক্রি করে অঢেল টাকা কামানোর চেষ্টা তা স্পষ্ট হতে সময় লাগবে।
সায়েদুল আরেফিন
কলামিস্ট, উন্নয়নকর্মী
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
দেশে একটি সুষ্ঠু
নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে
রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং
সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা
সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ
ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি
সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।
আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা
রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত
অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের
গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান
ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে
দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে
এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক
করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি
একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি
পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার
করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের
সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন
পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন
শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী
লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের
প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন
করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে
সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।
গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে,
তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো
দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের
অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা
পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে
প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ
এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে
নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও
একই ভাবে থেকেছেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি
হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে
যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু
এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার
পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে
তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:২৬ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।
দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই।