ইনসাইড থট

বিজ্ঞান, বাস্তবতা এবং ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫:০১ পিএম, ৩০ জুন, ২০২০


Thumbnail

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে আমি বহু বছর ধরে চিনি। আমরা ডব্লিউএইচও সভা এবং আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বহুবার একসাথে অংশ নিয়েছি। সাভারে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র আয়োজিত একটি সম্মেলনে আমাকে আমন্ত্রণও জানিয়েছিলেন তিনি। এরপর পারিবারিক অনুষ্ঠানে আমি তাঁর মেয়েকে জানতে পারি। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে আমি সবসময়ই খুব শ্রদ্ধা করি। তাঁর কাজ, উত্সর্গ এবং কৃতিত্বের জন্য তাকে নিয়ে আমি গর্বিতও বটে। বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় কোনো সম্মেলন বা অনুষ্ঠানে বা যেকোনো উপলক্ষে দর্শকদের কাছে তাঁর এবং তাঁর অর্জন সম্পর্কে কথা বলে আমি সম্মানিত বোধ করি। আমি তাকে শ্রদ্ধা করি, এর প্রথম কারণ হলো তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবা দিয়েছিলেন তিনি। ড্রাগ প্রোগ্রামে তার  অবদানের জন্যেও তাকে আমি শ্রদ্ধা করি। তাছাড়া ১৯৮০ এর দশকের গোড়ার দিকে দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য তাঁর সামাজিক স্বাস্থ্য বীমা সবচেয়ে উদ্ভাবনী কর্মসূচির একটি। এক্ষেত্রে তিনি বিশ্বের প্রথম কয়েক জনের একজনও বটে। এই বীমার ফলে তার সেন্টারে মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া সম্ভব হয়েছিল।  তিনি অনেক পুরষ্কার এবং আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছেন। যাই হোক, আমরা অনেক সময় শ্রদ্ধার সাথে তাঁর কিছু দৃষ্টিভঙ্গি এবং কৌশল সম্পর্কে অসম্মতি জানাতেও সম্মত হয়েছি। যথাযোগ্য সম্মানের সাথে এবং অনেকটা আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধেই বলছি যে, গত কয়েক বছরে তার কার্যক্রমগুলো বিশেষ করে, টিভি টকশো, মিডিয়া ব্রিফিং এবং সদ্যই কোভিড-১৯ ডায়াগনস্টিক কিট নিয়ে মিডিয়ায় যা চলছে তাতে করে একজন জনস্বাস্থ্য নেতা এবং একজন বিজ্ঞানী হিসাবে ডা. জাফরুল্লাহর নিষ্ঠার বিষয়ে আমার সন্দেহ জাগছে। এর কারণগুলো আমি একটু ব্যাখ্যা করছি-

বিজ্ঞান এবং বাস্তবতা

১. কভিড -১৯ অত্যন্ত সংক্রামক। প্রতিরোধের যথাযথ ব্যবস্থা ছাড়া যেমন- বাড়িতে থাকা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা বা বাইরে গেলে মাস্ক ব্যবহার না করলে একজন সংক্রমিত ব্যক্তি গড়ে আরও দুই থেকে তিন জন সুস্থ ব্যক্তিকে আক্রান্ত করতে পারে। এটি সাধারণ ফ্লুর চেয়ে দ্বিগুণ সংক্রামক।

২. ভাইরাসটি ছড়ানোর সময়কাল হলো ১৪ দিন পর্যন্ত। এই সময়কালে কোনও লক্ষণ ছাড়াই ভাইরাসটি খুব সহজে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এটি সংক্রামিত লোকদের অন্যকে সংক্রামিত করার ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি করে। করোনার বাহক কোন উপসর্গ দেখা দেওয়ার ৪৮ ঘণ্টা আগেই ভয়ানকভাবে এটি ছড়িয়ে দিতে পারে। অতএব, যাদের হালকা সর্দি-কাছি ছে কেবল তারাই এই ভাইরাস ছড়াতে পারে, এমনটা নয়।

৩. আমি যদি সঠিক হই, তবে বাংলাদেশে যাদের লক্ষণ রয়েছে বা যাদের কনট্যাক্টে এসেছেন তাদের সবারই পরীক্ষা হয়। পরীক্ষার সুবিধা এবং ক্ষমতা বাংলাদেশে সীমিত। তাই এমন অনেকেই থাকতে পারেন যারা সংক্রমিত, কিন্তু পরীক্ষা হচ্ছে না। অতএব এমন অনেকেই থাকতে পারেন যারা লক্ষণ উপসর্গ ছাড়াই আমাদের মাঝে ঘুরছেন। তারা অবচেতনভাবেই এই রোগটি ছড়িয়ে দিচ্ছেন।

৪. সংক্রমণের হার (যারা পরীক্ষায় পজিটিভ হয়েছেন) ২০-২৩% এর মধ্যে থাকাটা এটাই ইঙ্গিত করে যে, বাংলাদেশে বিস্তৃত আকারে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে।  অনুমান করা হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ করোনার বাহক আছেন, যারা পরীক্ষার আওতায় আসছেন না। করোনা প্রতিরোধের জন্য যে নির্দেশনাগুলো রয়েছে, তা দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণই মানছে না বা তাদের মানতে বাধ্য করা যাচ্ছে না, বা কোনো কারণে তা মানাতা সম্ভব হচ্ছে না। এই বাস্তবতাগুলো সমক্রমণ নিয়ন্ত্রণকে আরও কঠিন করে তোলে।

৫. বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কৌশল হলো পরীক্ষা, ট্রেস এবং বিচ্ছিন্নতা। ডব্লিউএইচও দেশগুলোকে সর্বাধিক নির্ভুল ডায়াগনস্টিক কিট দিয়ে পরীক্ষার ক্ষমতা বাড়াতে পরামর্শ দিচ্ছে। ডায়াগনস্টিকস কিটের করোনা শনাক্তকরণের সক্ষমতার কমতির ফলে বহু মিথ্যা নেগেটিভ কেস দেখা দেবে। এটা উপসর্গ সহ এবং উপসর্গ ছাড়া সব ধরনের মানুষের জন্যই কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং, আইসোলেশনে নেওয়া এবং বিচ্ছিন্নতাকরণকে আরও কঠিন করে তুলবে। এর ফলে সংক্রমণ আরও ছড়িয়ে পড়বে। বহু মিথ্যা পজিটিভ কেসের পাশাপাশি বহু মিথ্যা নেগেটিভ কেসও দেখা দেবে। ভুলভাবে যাদের পজিটিভ বলা হবে, তাদের সেবা দিতে গিয়ে দেখা যাবে সত্যিকারের পজিটিভ কেসের চিকিৎসা সেবা দেওয়া আরও কঠিন হয়ে পড়বে।    এই পুরো বিষয়টিই স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বোঝা আরও বাড়িয়ে তুলবে। রাষ্ট্রের এবং ব্যক্তিপর্যায়ে আর্থিক বোঝা বৃদ্ধির পাশাপাশি এটা অনেকের মানসিক চাপও বাড়াবে।

উপরের এই বাস্তবতা বিবেচনা করে, পরীক্ষার কিটের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং নির্বাচনের ক্ষেত্রে দেশকে অবশ্যই যত্নবান হতে হবে। কোভিড-১৯ ডায়াগনস্টিক কিটগুলোর অবশ্যই সঠিকভাবে কেস সনাক্তকরণে উচ্চ সংবেদনশীলতা এবং সুনির্দিষ্টতা থাকা উচিত। যাতে করে এটা স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক বোঝার পাশাপাশি কোভিড-১৯ সংক্রমণকে নিয়ন্ত্রণ করতেও সহায়তা করে। অন্যদিকে নিম্নমানের পরীক্ষার কিটগুলো ভ্রান্ত সুরক্ষা দেবে। সেই সঙ্গে জনসাধারণের আস্থা এবং সরকারের প্রচেষ্টাকেও ক্ষুণ্ন করবে। যার আর্থ-সামাজিক পরিণতি হবে ভয়াবহ।

আমি সেই প্রক্রিয়া সম্পর্কে কিছু কথা বলি যেটা কোনও চিকিত্সা ডিভাইস বা ডায়াগনস্টিক টেস্ট কিট বাছাই এবং নিবন্ধনের জন্য ডব্লিউএইচও, আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান এবং বহু দেশ সুপারিশ করেছে-

১. পরীক্ষা কিটের সংজ্ঞা

পরীক্ষা কিটের বিবেচিত বিষয়গুলোর মধ্যে থাকতে হবে- কী রোগ বা কন্ডিশন শনাক্ত করবে, একক পরীক্ষা বা একটি অ্যালগরিদম প্রয়োজন কিনা; এবং পরীক্ষাগুলো একটি গুণগত বা পরিমাণগত ফলাফল প্রদান করতে পারে কিনা। এছাড়াও সর্বোত্তম ক্লিনিকাল ইউটিলিটির জন্য, অবশ্যই পরীক্ষার স্থানটি বিবেচনা করতে হবে (বৃহৎ পরীক্ষাগার নাকি ছোট স্বাস্থ্য কেন্দ্র); এবং এন্ড ইউজার (ভাল প্রশিক্ষিত ম্যাবরেটরি টেকনিশয়ান নাকি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা সরবরাহকারী দরকার হবে)।

২. মার্কেট রিভিউ

প্রস্তাবিত পরীক্ষার কিট স্পেসিফিকেশনে প্রয়োজনীয় নমুনার ধরণের বিবরণ অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে; পরীক্ষার অপারেটিং শর্তসমূহ; অতিরিক্ত কী কী সরঞ্জাম প্রয়োজন; এবং কিটটি কতদিন ব্যবহার করা যাবে।

৩. নিয়ন্ত্রক অনুমোদন

কিটের প্রি কোয়ালিফিকেশন নিম্নলিখিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করা উচিত-

- পণ্য অ্যাপ্লিকেশন পর্যালোচনা; পণ্য পরীক্ষাগার মূল্যায়ন; উত্পাদন সাইট পরিদর্শন।

পরীক্ষার পারফরম্যান্স এবং উত্পাদন মানের দুটোই মূল্যায়ন করতে এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়।

৪. অপটিমাল ডায়গনস্টিক আক্যুরেসি

 আদর্শগতভাবে একটি পরীক্ষার পারফরম্যান্স সর্বোত্তম কার্যকারিতা নির্দেশ করে। এই ধরনের মূল্যায়ন কেবলমাত্র পরীক্ষার ডায়াগনস্টিক নির্ভুলতার জন্যই নয় তবে এর রিপিট্যাবিলিটি, পুনঃউৎপাদন এবং ব্যাপক হারে পণ্য ব্যবহার করা যাবে কিনা সেটা সম্পর্কেও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করতে পারে। এসব তথ্য ব্যবহারকারীদের বাস্তব জীবনে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে পরীক্ষা কিট নির্বাচন করতে সক্ষম হবে কিনা তা বুঝতে সহায়তা করে।

৫. প্র্যাকটিসে ডায়াগনস্টিক নির্ভুলতা

ভিট্রো ডায়াগনস্টিক পরীক্ষার প্রকৃত কর্মক্ষমতা এবং তাদের ব্যবহারের সহজতা উভয়ই নির্বাচন প্রক্রিয়া চলাকালীন বিবেচনা করা উচিত। সর্বশেষ ব্যবহারকারী স্তরের মূল্যায়ন বাস্তব জীবনের পরীক্ষার কার্যকারিতা এবং গুরুত্ব প্রকাশ করতে পারে।

৬. মনিটরিং পারফর্মেন্স

গুণমান নিয়ন্ত্রণ, দক্ষতা পরীক্ষা এবং শেষ ব্যবহারকারীদের তদারকি নিয়মিত হওয়া উচিৎ এবং নথিভুক্ত করা উচিত। দীর্ঘমেয়াদী গুণগত নিশ্চয়তার আরেকটি উপাদান বিপণন পরবর্তী নজরদারি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) এর টেস্ট কিট মূল্যায়ন কমিটি গণস্বাস্থ্যের কিট সুপারিশ করেনি এবং কম সেন্সিটিভিটি (১১-৪০%) পেয়েছে শুনে শয্যাশায়ী ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছিলেন, ‘কী লজ্জা!’

বিএসএমএমইউ এর মূল্যায়নের ফলাফলের ভিত্তিতে কিটের ব্যাপারে সরকারের সিদ্ধান্তটি কি সত্যিই লজ্জাজনক ছিল? ডা.  চৌধুরী যদি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার করোনা পরীক্ষার কীটের বাছাই ও নির্বাচন প্রক্রিয়ার সাথে একমত হন তবে আমি তাকে শ্রদ্ধার সাথে নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলো করতে পারি-

১. গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কিটটি উপরের প্রাথমিক পাঁচটি ধাপ কি পেরিয়েছিল? যদি তা হয় তবে সেই তথ্য প্রকাশ্যে পাওয়া যাচ্ছে কি?

২. অ্যান্টিজেন বা অ্যান্টিবডি টেস্টিং বা উভয়ই সেটা সংজ্ঞায়িত করার ব্যাপারে কেন মিক্স আপ ছিল?

৩. আমি প্রিন্ট মিডিয়া থেকে জেনেছি যে কোনও সরকারী কর্মকর্তার উপস্থিতি ছাড়াই ডঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রাথমিকভাবে আমেরিকার সিডিসিতে পরীক্ষার কিট সরবরাহ করেছিলেন। আমরা কি সিডিসি, মার্কিন মূল্যায়ন রিপোর্ট পেয়েছি?

৪. তিনি মিডিয়াকে বলেছিলেন যে তিনি নিজের কিটস রেজিস্ট্রেশন করতে কাউকে কোনও টাকা দেবেন না! একটি টিভি টকশোতে তিনি তার অর্থ কী তা বোঝাতে ব্যর্থ হন এবং বার বার ইতস্তত করতে থাকেন যে, নিবন্ধন প্রক্রিয়া বিলম্বিত হবে বা ব্যয় খুব বেশি হবে বলেই আইসিডিডিআরবি বা বিএসএমএমইউকে কিট সরবরাহ করতে রাজি হননি কিনা।

একজন জনস্বাস্থ্য নেতা হিসাবে তিনি কি জনগণকে নিম্ন সংবেদনশীল টেস্ট কিট ব্যবহারের ফলে বিপুল সংখ্যক মিথ্যা পজিটিভ কেস তৈরি করতে এবং মানুষের জীবনকে বিপদে ফেলতে পারেন? সেটাও আবার শুধু এই কারণে যে, কিট মূল্যায়নের প্রক্রিয়াটি ব্যয়বহুল বা বিলম্বিত হবে? সরকার যদি তার কিটের দাবির সাথে একমত হত এবং প্রয়োজনীয় মূল্যায়ন না করত, তবে কীভাবে এটা বিজ্ঞান, উদ্ভাবন, পণ্য বিকাশ এবং এর বিশ্বব্যাপী আস্থা অর্জনে বাংলাদেশকে সহায়তা করতো?

৫. গণস্বাস্থ্যের কিট ব্যবহার করে তার পজিটিভ রেজাল্ট আসাটাকে তিনি কিটের যথার্থতা বলে প্রমাণ করছেন? তার পরীক্ষাটা কি তার কিটের ১১-৪০% সংবেদনশীলতার মধ্যে পড়তে পারে না?

আমি সবসময় আমার দেশের যে কোনও উদ্ভাবন এবং বিকাশের জন্য গর্ববোধ করি। উন্নত স্বাস্থ্য অর্জনে বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি এদেশের অনেক প্রতিষ্ঠান, এনজিও এবং সুশীল সমাজের কাছ থেকে বিশ্ব অনেক কিছু শিখতে পারে। আমি জানি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আন্তরিকতার সাথে বাংলাদেশকে মহামারী কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করার জন্য সর্বোত্তমভাবে অবদান রাখতে চেয়েছিলেন। একইভাবে, চীন থেকে কাঁচামাল আনতে সরকার আন্তরিকভাবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছিল এবং দ্রুত ও ব্যাপকভাবে এই কিট ব্যবহার করে কম খরচে বেশি সংখ্যক মানুষকে পরীক্কখার আওতায় আনার প্রত্যাশা করছিল। 

দুঃখের বিষয়, সমস্ত কঠোর পরিশ্রম এবং আন্তরিক প্রচেষ্টা কাঙ্ক্ষিত ফলাফল দেয় নি! আমি বলব না যে এটি ব্যর্থতা। আমাদের সকলকে অবশ্যই একমত হতে হবে ভুল টেস্ট কিট কোনো সমাধান নয়। একটি ভুল টেস্ট কিট নির্বাচন করে সরকার মানুষের দুর্ভোগ বাড়িয়ে তুলতে পারে না এবং জাতীয় অর্থনীতিকে বিপদে ফেলতে পারে না।

আমি জানি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছিলেন সরকার ‘অন্ধকার ঘরে একটি কালো বিড়াল’ ধরার চেষ্টা করছে। কেন এই জাতীয় মিডিয়া সেনসেশন বিজ্ঞান এবং এর বিধিবিধানের প্রতি সম্পূর্ণ অবহেলা করছেন! বিশ্বের অনেক সংস্থাই টেস্ট কিট তৈরিতে বিনিয়োগ করে এবং অনেক সময়ই সফল হয় না। মানসম্পন্ন অ্যান্টিবডি টেস্ট কিট না থাকার কারণে যুক্তরাজ্য তার অ্যান্টিবডি পরীক্ষায় অনেক বেশি বিলম্ব করেছে।

কোনো মিডিয়া সেনসেশন বা কেবল আত্মপ্রচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া কারও সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা উচিৎ নয়, যখন কিনা এর সঙ্গে জনগণের জীবন ও দুর্ভোগ জড়িত থাকে। 

আমি একমত যে, ভুল হতে পারে। এ থেকে অবশ্যই শিক্ষা নেওয়া উচিৎ। একটি সুন্দর বর্তমান এবং ভবিষ্যতের জন্য আমাদের অতীতের ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিতে হবে। ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ তার জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে কোভিড -১৯ এর বিধ্বংসী অভিজ্ঞতা এবং বিশাল দুর্ভোগের বিষয়ে যা বলেছিলেন, আমি সেটাই এখানে তুলে ধরছি-

“আমরা আমাদের দেশে যা করেছি তাতে আমরা গর্বিত হতে পারি। অবশ্যই এই চ্যালেঞ্জটি আমাদের দুর্বলতা, অন্য অঞ্চলের উপর আমাদের নির্ভরতা প্রকাশ করে দিয়েছে। একই সঙ্গে আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোর জটিলতা এবং আমাদের সামাজিক ও আঞ্চলিক বৈষম্যও সামনে নিয়ে এসেছে। আমি এই সমস্ত কিছু থেকেই শিক্ষা নিতে চাই।’

আমাদের সবারও কি এ রকম আত্মপোলব্ধি এবং বিনয় প্রকাশ করে আত্মপ্রচারণা এড়ানো উচিত নয়? আমাদের লক্ষ্য অবশ্যই স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং জীবন বাঁচানো। আমাদের চিকিৎসা পেশাজীবি, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং বিজ্ঞানীদেরও অবশ্যই সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য উপযুক্ত প্রমাণ দিতে প্রস্তুত থাকতে হবে।

ডা. চৌধুরী, স্বাস্থ্য ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে আপনার অবদান উল্লেখযোগ্য। বাংলাদেশ ও এদেশের জনগণের এখনও আপনাকে দরকার ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী! আমরা আপনার প্রতি আমাদের আস্থা রাখতে চাই। আমি কোভিড -১৯ থেকে আপনার দ্রুত এবং সম্পূর্ণভাবে মুক্তির জন্য প্রার্থনা করছি।

 

লেখক: সিনিয়র স্পেশালিস্ট, লিভারপুল স্কুল অব ট্রপিকাল মেডিসিন, যুক্তরাজ্য।  

           সাবেক পরিচালক, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

           থাইল্যান্ড ও নামিবিয়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাবেক প্রতিনিধি।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

এক বছরের রাষ্ট্রপতির যত অর্জন


Thumbnail

আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।

দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।

আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।

গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে, তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও একই ভাবে থেকেছেন।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।


রাষ্ট্রপতি   মো. সাহাবুদ্দিন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

শেখ হাসিনা ছাড়া কেউই অপরিহার্য নয়


Thumbnail

প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।

আওয়ামী লীগ যদি আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয় সেটি ভিন্ন কথা। কিন্তু আওয়ামী লীগ যদি টিকে থাকতে চায় তাহলে দলকে এবার কঠোর সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। এটা এখন সময়ের দাবি। যারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি তারা ইনিয়ে বিনিয়ে এখন নানান অজুহাত তৈরি করছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের উচিত হবে এ সমস্ত অজুহাত না শোনা। কারণ যিনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করেছেন তিনি দলীয় সিদ্ধান্ত পরিপন্থি কাজ করেছেন এটা সুস্পষ্ট। সুতরাং এখানে দল উচিত তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। দল করলে তাকে দলীয় শৃঙ্খলা মানতেই হবে। অনথায় দল থেকে বাদ দিতে হবে। যারা দলীয় সিদ্ধান্তের পরিপন্থী কাজ করেন তারা কখনই দলের জন্য মঙ্গলজনক নয়। এদের মত আট-দশ দলে না থাকলে আওয়ামী লীগের কিছু যায়-আসে না। একমাত্র আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক ছাড়া আর কেউই আওয়ামী লীগের জন্য অপরিহার্য নয়। শেখ হাসিনাই কেবল মাত্র আওয়ামী লীগ এবং দেশের স্বার্থে অপরিহার্য। সুতরাং, এখন আমরা দেখতে চাই শৃঙ্খলা পরিপন্থীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ কি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

যারা আওয়ামী লীগ সভাপতি নির্দেশনা অমান্য করেছেন তিনি দলের যত বড় নেতাই হোন না কেন তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি। দরকার হলে দল থেকে তাদেরকে বাদ দিতে হবে কিংবা বহিষ্কারের মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। শুধু বহিষ্কারই নয়, তাদের প্রাথমিক সদস্য পদও বাতিল করতে হবে। এতে করে কারও যদি এমপিত্ব চলে যায় তো যাবে। কিন্তু দলের শৃঙ্খলা ধরে রাখতে হবে দলের স্বার্থে। তাদের আসনে যে কাউকে নির্বাচন করে জিতে আসতে পারবেন। কোন মন্ত্রী এমপি আওয়ামী লীগের জন্য অপরিহার্য নয়। যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন উপজেলা গুলো প্রার্থী দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে দল কী সিদ্ধান্ত নেয় সেটা দেখার জন্য গোটা দেশের মানুষ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দিকে তাকিয়ে আছে।

অতীতে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে দেখেছি দেশের বৃহত্তর স্বার্থে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে। বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে এবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও কঠোর পদক্ষেপ নেবেন এমনটি আশা আওয়ামী লীগের প্রতিটি তৃণমূল নেতাকর্মীর। এখন আওয়ামী লীগ শেষ পর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত নেয় আমরা সেটার অপেক্ষা আছি।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

শেখ হাসিনার সমালোচনা করলেও কেউই তার বিকল্প খুঁজে পান না


Thumbnail

দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। 

দার্শনিক শেখ হাসিনা এখন আগে দার্শনিক পরে রাষ্ট্রনায়ক। এতদিন তিনি ছিলেন আগে রাষ্ট্রনায়ক পরে এবং দার্শনিক। এখন তিনি আগে দার্শনিক পরে রাষ্ট্রনায়ক। কারণ তিনি একের পর এক দর্শনকে যেভাবে স্থায়ী রূপ দিয়ে যাচ্ছেন তাতে এদেশের সকলের মনোবলও বৃদ্ধি পাচ্ছে। নতুন মন্ত্রিসভাতেও তিনি দর্শনের প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। তিনি পুরনোদের সাথে নতুনদের যুক্ত করে নেতৃত্বের একটি চমৎকার ভারসাম্য তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। যা আমরা এই ১০০ দিনে বুঝতে পেরেছি এই নতুন মন্ত্রিসভার কাজকর্মে। সেদিক থেকে আমি অনুধাবন করতে পারি যে, এই ১০০ দিনে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা এখন পর্যন্ত শতভাগ সফল।

গোটা বিশ্ব এখন যুদ্ধের মধ্যে পড়েছে। করোনার পর থেকে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ গোটা বিশ্ব অর্থনীতিতে টলটলয়মান করে দিয়েছে। এখন আবার নতুন করে মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা শুরু হয়েছে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে। বলা যায় বিশ্বে একটা মিনি বিশ্ব যুদ্ধ চলছে। গাজায় হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এরকম পরিস্থিতিতে দার্শনিক শেখ হাসিনার সামনে বিরাট চ্যালেঞ্জ। তবে আশার কথা যে, এখন পর্যন্ত তিনি সঠিক পথে আছেন এবং সফল ভাবে পুরো পরিস্থিতি মোকাবিলা করে যাচ্ছেন। বিশ্বের অস্থির পরিস্থির কথা অনুধাবন করে তিনি প্রতিনিয়ত বিভিন্ন রকম নির্দেশনা দিচ্ছেন। যেমন-বিশ্ব বাজারে নতুন নতুন বাজারের সন্ধান। আমাদের যেন খাদ্য ঘাটতি পড়তে না হয় সেজন্য তিনি আগাম আমাদের সতর্ক করে দিচ্ছেন। পাশাপাশি আমাদের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়াতেও তিনি জোরালো ভাবে আহ্বান করেছেন। 

একজন জেনারেলকে কীভাবে বিচার করা হয়? তিনি কয়টি ব্যাটল জয় করলেন সেটা দিয়ে কিন্তু নয়। তাকে বিচার করা হয় যখন তিনি একটা ব্যাটলে হেরে যান এবং তার সৈন্যরা যখন পুরো ভেঙে পড়েন ঠিক সে সময় তিনি কীভাবে তার সৈন্যদের উজ্জীবিত করতে পারলেন সেটা বিবেচনায় নেওয়া হয়। দার্শনিক শেখ হাসিনাও সে রকম একজন জেনারেল, যে জেনারেল কঠিন সময়ে সাধারণ জনগণকে সবচেয়ে কম কষ্টে রেখে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এবং ভবিষ্যতেও যেন তিনি সফল ভাবে নিয়ে যাবেন সেটা বলাই বাহুল্য। অনেকে তার সমালোচনা করছেন ঠিক কিন্তু কেউ তার বিকল্পের কথা বলতে পারছেন না। তিনি দলকে যেমন ধরে রেখেছেন বা নেতৃত্ব দিচ্ছেন ঠিক তেমনিভাবে সরকারকেও সঠিক পথে পরিচালনা করছেন। সুতরাং শেখ হাসিনার বিকল্প যে শেখ হাসিনাই এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। নতুন সরকারের প্রথম ১০০ দিনের মত সামনের দিনগুলোতে সাফল্য ধরে রাখবে এটাই আমরা প্রত্যাশা করি।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

কতিপয় সাংবাদিক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর চেয়েও ক্ষমতাধর


Thumbnail

বারো বছর আগের কথা। ডেভিড ক্যামেরুন তখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। সে সময় একদিন তিনি একটি হাসপাতালের ওয়ার্ডে ঢুকে পড়লেন। রোগীর অনুমতি সাপেক্ষে রোগীর সাথে ছবি তুলতে গেলেন। বাঁধ সাধলেন ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা একজন চিকিৎসক। জীবাণু প্রতিরোধের কোন পদক্ষেপ না নিয়ে এবং চিকিৎসকের অনুমতি ব্যতিরেকে তিনি ওই কাজটি করছিলেন। ডেভিড ক্যামেরুন তাঁর ভুল বুঝতে পেরেছিলেন সাথে সাথে। ক্ষমা চাইলেন এবং ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে গেলেন।

ভিন্ন চিত্র দেখলাম শনিবার সকালে বরিশাল সদর হাসপাতালে। দায়িত্বরত চিকিৎসক ওয়ার্ডে রাউন্ড দিতে যেয়ে দেখেন দুজন টিভি সাংবাদিক ওয়ার্ডে ভিডিও করছেন। ভিডিও শেষ হবার পর চিকিৎসক তাঁর রাউন্ড শুরু করলেন। রাউন্ড শুরু করতেই দুজন সাংবাদিক আবার ক্যামেরা ধরে চিকিৎসকের সাথে কথা বলা শুরু করলেন। চিকিৎসক তাদের পরিচয় জানতে চাইলেন। বিনয়ের সাথে নিচু স্বরে একে একে ২০ বার (গুনে নিশ্চিত হয়েই বলছি) সাংবাদিকের নাম জিজ্ঞেস করলেন, পরিচয় জানতে চাইলেন। উক্ত সাংবাদিক নাম বলেননি, পরিচয় দেননি। বরং উচ্চস্বরে উল্টা পাল্টা কথা বলেছেন, পাল্টা প্রশ্ন করেছেন। অবশেষে কর্তব্যরত চিকিৎসক উর্ধতন কাউকে ফোন দেয়ার পর সাংবাদিক সাহেব তার নাম বলেছেন। এখানে দুটি প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে।  প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে, সাংবাদিক দুজন কি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর চেয়েও ক্ষমতাধর হয়ে গেছেন ? দ্বিতীয় প্রশ্ন, সাংবাদিক দুজনকে কেন নাম বলতে হবে ? নাম, পদবি, পরিচয় থাকবে তাদের বুকে বা কোমরে প্রদর্শিত আই ডি কার্ডে। এখন দেখার বিষয়,  প্রদর্শিত স্থানে আই ডি ছিল কিনা ? না থাকলে থাকবে না কেন?

সাংবাদিক ও চিকিৎসকবৃন্দ ঘটনার ভিডিও চিত্র সমূহ পৃথকভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিয়েছেন। সব গুলো ভিডিও কয়েকবার দেখেছি, পর্যালোচনা করেছি। দায়িত্বরত চিকিৎসক কখনোই উচ্চস্বরে কথা বলেননি। তিনি যথেষ্ট ধৈর্য্য, বুদ্ধিমত্তা ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। পক্ষান্তরে সাংবাদিক দুজন বারবার উচ্চস্বরে কথা বলেছেন। তাদের কথা বলার ধরণ দেখে মনে হয়েছে, এটি একটি মগের মুল্লুক। কর্তব্যরত চিকিৎসক ওয়ার্ড রাউন্ড শুরু করার আগে প্রতি রোগীর সাথে একজন এটেন্ডেন্ট ব্যাতিরেকে সবাইকে বের হবার কথা বলেছেন। সবাই বেরিয়ে না গেলে তিনি চিকিৎসা শুরু করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন। সেটাই নিয়ম।  সারা দুনিয়ায় সেটাই হয়ে থাকে। সাংবাদিকদ্বয় সেটি শুনতে নারাজ। এখানে তারা স্পষ্টতই সরকারি কাজে বাধা সৃষ্টি করেছেন, যা আইনত দণ্ডনীয়।  

দিন শেষে বেসরকারি টিভি চ্যানেলে দেখলাম সাংবাদিকদের হেনস্থা করেছে ডাক্তার। অথচ ভিডিও গুলি পর্যালোচনা করলে যে কেউ বলবেন, ডাক্তারকে হেনস্থা করেছে সাংবাদিকরা। আসলেই মগের মুল্লুক। ঘটনা কি ? আর সংবাদ শিরোনাম কি? এসব মগের মুল্লুকের রাজত্ব  থেকে জাতিকে পরিত্রান দেয়া প্রয়োজন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, বিএমএ, এফডিএসএর, বিডিএফ ও সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ সমন্বয়ে একটি কমিটি করে দেয়া দরকার। কমিটি হাসপাতালে সাংবাদিক প্রবেশে ও তাদের দায়িত্ব নির্ধারণে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করবে। সে নীতিমালায় যাতে স্বাস্থ্য কর্মীদের কাজে বাধা প্রদান না করা হয়, রোগীর অনুমতি ব্যাতিরেকে তাদের ছবি, ভিডিও বা রোগ সংক্রান্ত কোন তথ্য প্রকাশ বা প্রচার না করা হয়, সেসব বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকা প্রয়োজন। তা না হলে হাসপাতাল সমূহে এ ধরণের অরাজকতা হতেই থাকবে, বাড়তেই থাকবে।  

লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

প্রথম আলোর পর কী ডেইলি স্টারও বিক্রি হবে?


Thumbnail

এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা করবেন।

প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর। আমার ধারণা যারাই প্রথম আলো কিনেন না কেন তারা প্রথম দিকে মতিউর রহমান সাহেবকে রাখলেও পরবর্তীতে ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে সম্পাদক পরিবর্তন করবে। আর প্রথম আলো যদি কোন যুক্তিপূর্ণ লোকের কাছে দেয় তাহলে আমার মতে এখানে সম্ভবত আনিসুল হক সাহেব সম্পাদক হবেন। কারণ তার প্রতি লোকের অনেক শ্রদ্ধাবোধ আছে এবং তিনি সবসময় একটা রেড লাইন রক্ষা করে চলেন। এটা আমরা সকলেই জানি। তার সাথে অনেকেরই  ভালো সম্পর্ক এবং তিনি খুবই জ্ঞানী লোক।

এর আগে মতিউর রহমান যখন একতা থেকে আজকের কাগজে যান, তখন তার উদ্দেশ্যই ছিল যে, একটি পত্রিকা কীভাবে চলে সেটা শেখা এবং এখান থেকে একসাথে সাংবাদিক নিয়ে বেরিয়ে যাওয়া। তিনি সেটা করেছিলেন। তারপর ভোরের কাগজ থেকে একই কাজ করেছেন। সুতরাং তার সত্যিকারের নীতিবোধ বলতে যেটা বোঝায় সেটা দুর্ভাগ্যবশত তিনি প্রমাণ করতে পারেননি।

তিনি এক সময় কমিউনিস্টদের সাথে থাকলেও এখন তার চেয়ে বড় দক্ষিণপন্থী পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়াই কঠিন। এ কারণে প্রথম আলো যে বিক্রি হবে এই ব্যাপারে সাধারণ লোকের ভিতরে এখন আর কোন সন্দেহ নেই।

এখন প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টারের কী হবে এই নিয়ে আলাপ আলোচনা হচ্ছে এবং এই আলাপ আলোচনা খুব দীর্ঘদিন যে চলবে তা না। আমার মনে হয় জুন-জুলাই মাসের ভিতরেই এর একটা ফয়সালা হয়ে যাবে। কারণ স্বাভাবিক ভাবেই বুঝি যে, একটি পত্রিকা পাঠকপ্রিয়তা পেতে বেশ সময় লাগে। এটা একদিন দুইদিনের ব্যাপার না। আবার ঠিক তেমনিভাবে যখন পাঠকপ্রিয়তা কমতে থাকে সেটাও একদিন দুইদিনে হয় না। ধীরে ধীরে হয়। এই মিডিয়া জগতের নিয়মই তাই।

আমি ১৯৬১ সালে পত্রিকা বলতে শুধুমাত্র ইত্তেফাক এর কথাই জানতাম। সেই ধারণা থেকে বলতে পারি এখন প্রথম আলোর যদি কিছু কর্মী এর চেয়ে ভালো কোন সুযোগ সুবিধা দেখেন তাহলে তারা বিক্রি হওয়ার আগেই চলে যাবেন। কারণ স্বাভাবিকভাবেই একজন সাংবাদিকের একটা ক্যারিয়ার আছে এবং প্রথম আলোর মতো পত্রিকাতে কাজ করে তিনি তো যে কোন পত্রিকায় যেতেও পারবেন না। তার কারণ গেলে তার ওই লেখার যে মান সেটা মূল্যায়ন নাও হতে পারে। তবে আমার ধারণা প্রথম আলোতে কাজ করেছেন এমন যে কাউকে টেকনিক্যাল গ্রাউন্ডে অনেক গুরুত্ব দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে আমি অবাক হব না যদি দু এক মাসের ভিতরে দেখা যায় যে আস্তে আস্তে প্রথম আলো বিভিন্ন কর্মী অন্য পত্রিকায় যাওয়া শুরু করে দিয়েছেন।

ব্যাংক মার্জারের যেমন একটি ঘটনা বর্তমানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ঠিক তেমনি পত্রিকা জগতেও শিল্প গোষ্ঠীর যে গন্ডগোলের ঘটনা ঘটেছে এটিও ব্যাংক মার্জারের ঘটনার পর্যায়ে চলে যাবে। ব্যাংকিং ক্ষেত্রে দেখা যায়, দুটি ব্যাংক একীভূত হচ্ছে। আর এদিকে দেখা যাবে, সংবাদকর্মীরা অন্য পত্রিকায় চলে যাচ্ছে।

তবে আমার মনে হয় না, এখন যে অবস্থা চলছে এতে প্রথম আলো আর আগের মতো প্রথম আলো থাকতে পারবে। এটা কিছুতেই সম্ভব না এটি মোটামুটিভাবে নিশ্চিত। তাই আমার মনে হয় প্রথম আলো সেই ব্যাংক মার্জারের পর্যায়ে চলে এসেছে। এখন অন্য পত্রিকা যাদের আছে, তারাও প্রথম আলো কিনে নিতে পারেন। এটি সম্ভব। এরকম শিল্পগোষ্ঠীর কোন কমতি বর্তমানে বাংলাদেশে নেই। যে কোন শিল্প গোষ্ঠীই এটা কিনবে।

তবে আমি আশা রাখব, যারাই প্রথম আলো কিনবে, তারা যেন অন্তত পক্ষে এটা খেয়াল রাখে যাতে সাংবাদিকদের কোন ক্ষতি না হয়। সুতরাং এদেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমার দাবী হচ্ছে সাংবাদিকরা যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।


প্রথম আলো   ডেইলি স্টার  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন