ইনসাইড থট

আওয়ামী লীগ, গ্রামগঞ্জের সৃজনশীল নেতা - কর্মী!

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১:০০ পিএম, ০৩ জুলাই, ২০২০


Thumbnail

নব্বই দশকে উপজেলা সদরে সরকারি কলেজে ছাত্রলীগের একজন কর্মী ছিলাম। মহান মুক্তিযুদ্ধ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক ইতিহাস প্রচারে দেয়ালিকার কাজ করতাম। আর্ট পেপার ক্রয় করে লিখে কলেজে টানিয়ে রাখতাম।  ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে মঞ্চ নাটকের আয়োজন করলাম। কলেজ শাখা ছাত্রলীগের শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সম্পাদকের দায়িত্বে থাকার সময় গফরগাঁও সরকারি কলেজের মাঠে রক্তাক্ত বাংলা ` নামে এই নাটকে অভিনয় করলাম একাত্তরের কুখ্যাত রাজাকারের ভূমিকায়। বাবা ৭১ সালের মুক্তিযোদ্ধা, নব্বই দশকে রাজাকারের ভূমিকার আমার অভিনয়! নিজের কাছে একটু কেমন লাগলো। কিন্তু অভিনয় ভাল হওয়ার অভিনন্দন পাওয়ার পর ঠিক করলাম এসব নাটক সাধারন মানুষদের দেখানো দরকার। তবে কিছুটা বাধাও ছিল। গফরগাঁও রেলওয়ে ষ্টেশনে পরপর দু` টি মঞ্চ নাটক করে ফেললাম।`মুক্তিযোদ্ধার কেচকি মাইর` নামে একটি নাটকেও ৭১ সালের রাজাকারের ভূমিকায় অভিনয় করতে হলো। নাটকের শেষ পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধারা রাজাকারকে ধরে মারতে লাগলো। দর্শকদের  করতালির স্রোত থেকে একটুকু বুঝতে পারলাম বিএনপি জামায়াত কর্তৃক মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস মুছে ফেলার যে অপচেষ্টা চলছে। তা নিশ্চয় ক্ষণিকের।

ছাত্রলীগ রাজনীতি করার সময় দেখেছি, বিএনপি ক্ষমতার সময় ৯৫ সালে কিভাবে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মী সর্মথকদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রকাশ্যে টাকা পয়সা জিনিস পত্র লুটপাট করে নিয়েছিল সন্ত্রাসীরা। সেই সময়কার বিএনপির সন্ত্রাসীদের কেউ কেউ নাকি এখন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। ইদানিং আমার ভাবনা গুলো ইতিবাচক।  তাই  নাম প্রকাশ করতে চাই না। যাক,  উপজেলা সদরে বিএনপি পাড়া বলে চিহ্নিত তৎকালীন নাম কেজি স্কুল ( বর্তমান আদর্শ শিশু নিকেতন )। এখানে গঠন করেছিলাম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদ। আহবায়কের দায়িত্ব পালন করার সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ পরিবারের সদস্যদের হত্যাকারীদের বিচার দাবী করার নানা রকম প্রচারণা করা হয়েছিল। এ কাজে খুশি হয়ে তৎকালীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ৫ হাজার টাকা অনুদান দিলেন সংগঠনের নামে৷ উপজেলা নির্বাহী অফিস থেকে এই অনুদানের টাকা নিয়ে শুরু করলাম এবার সাংস্কৃতিক কার্যক্রম। অনেক বাধার মাঝেও স্বাধীন দেশে রাজাকার ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার দাবী করার কাজ ছিল মূল উদ্যোগ। পরে রৌহা গ্রামের তৎকালীন উপজেলা মুক্তিযুদ্ধা সংসদের কমান্ডার মরহুম গিয়াস উদ্দিন চাচার পরামর্শে উপজেলা মুক্তিযুদ্ধা প্রজন্ম ছাত্র সাংস্কৃতিক কমান্ডের সভাপতির দায়িত্ব পালন করি। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা থাকা কালীন সময়ে ছাত্রলীগ সংগঠন ও স্থানীয় সাংবাদিক থাকার সময় ১৯৯৮ সালে দেশে ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ অসহায়দের পাশে কিভাবে দাঁড়াতে হয়। নদীতে নৌকায় করে হাঁটু পানিতে নেমে নেমে ত্রাণ দিয়েছি। প্রত্যক্ষ করেছি গণমানুষের দল আওয়ামী লীগকে মানুষ কি রকম পছন্দ করেন।

আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন,  তৃণমূল আওয়ামী লীগের প্রাণ। হ্যাঁ বাস্তবতাও তাই। গ্রাম গঞ্জের আওয়ামী লীগের সৃজনশীল নেতা কর্মীদের কিছু কথা বলছি। চরাঞ্চলের শামছুল হক । সবাই মাইক শামছু ভাই নামে ডাকেন। কারণ, ছোট বেলা থেকেই দেখে আসছি, ব্রক্ষপুত্র নদের চরাঞ্চলের ওপারের শামছু ভাই হাট, বাজার, দোকান পাটসহ যে কোন স্থানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য দিতেন। আওয়ামী লীগের  যে  কোন সভা সমাবেশে প্রারম্ভিক বক্তব্য দিতেন তিনি। তাই শামছু ভাই কমিটির প্রচার সম্পাদক ছিলেন। দেখতাম, উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে নৌকা নিয়ে লাঠি খেলোয়ার দল নানা কসরত করতে করতে বাদ্য যন্ত্রের শব্দে মাইলের পর মাইল হেঁটে হেঁটে বিশাল মিছিল নিয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে যোগ দেওয়া। 

১৯৯৬ সালের আওয়ামী লীগ সরকার দেশ পরিচালনার সময় যারা আমার নিজ এলাকার সুযোগ সুবিধাভোগী ছিলেন তারা ২০০১ সালে নির্বাচনের আগে হঠাৎ নিরব হতে লাগলেন। আমার নিজ গ্রামের চিত্র যদি বলি, এখানে কোন সময় নৌকা জয়লাভ করতে পারেনি। শুধুমাত্র ২০০১ সালে জাতীয় নির্বাচনে নৌকার জয়লাভ দিয়ে শুরু।  এখন এই গ্রাম আওয়ামী লীগের ঘাঁটি বলা চলে৷ এক সময় মুসলিম লীগ অধ্যুষিত এই এলাকা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের হওয়ার পেছনে অনেক ইতিহাস।  এই গ্রাম, ইউনিয়ন বা উপজেলার আওয়ামী লীগের সেই সব নেতা কর্মী ও সমর্থকরা লড়াই সংগ্রাম করেছেন তাঁর অনুভূতির সংগঠন আওয়ামী লীগের জন্য। এটাই তাদের আনন্দ। তারা আছেন এখনও। এরপর ১/১১ সময় গ্রাম গঞ্জের সংগ্রামী আওয়ামী লীগ নেতা কর্মী বা সমর্থকরা আওয়ামী লীগেই ছিলেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তেমন পরিশ্রম হয়নি। নৌকার গণজোয়ার। দেখেছি, কিভাবে ঈদের আনন্দের মতো ভোটাররা নিজ এলাকায় নৌকা স্লোগান দিয়ে মুখরিত করেছিলেন ভোটের আগে। এরপর ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে বিএনপি জামায়াতের নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা সোচ্চার ছিলেন। নির্বাচনের পর বিএনপি জামায়াতের আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধেও সাধারন নৌকা ভক্ত গ্রাম গঞ্জের মানুষ সজাগ ছিলেন। আগুনে পুড়া শিশু শিক্ষার্থী রাকিবের স্কুলে যাওয়া বন্ধ নিয়ে একটি প্রতিবেদন করতে গিয়ে  দেখতে পেলাম মানুষ বিএনপি জামায়াতের সন্ত্রাস কিভাবে সমালোচনা করেন। অনেকে বললেন,  বিএনপি জামায়াতের সন্ত্রাসী তান্ডব দেখেছি ২০০১ সালেই। যাক, গত জাতীয় নির্বাচনে আমি নিজে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গ্রাম গঞ্জের বিভিন্ন পেশার মানুষের একটু ব্যতিক্রম বক্তব্য প্রচার করার সময় দেখেছি কত সৃজনশীল চিন্তা ভাবনা রয়েছে তাদের৷ যেমন, একজন রিকসা চালক বললেন ‘আমার নেত্রী, আমার অহংকার’। এই কনটেন্ট ফেইসবুকে দেওয়ার পর ভাইরাল হয়ে গেল। কারণ,  গ্রাম গঞ্জের সাধারন মানুষের সহজ সরল অনুভূতি অনেকেই পছন্দ করেন।

এছাড়া আওয়ামী লীগ অধ্যুষিত আমার উপজেলার তরুণ প্রজন্ম বর্তমানে সৃজনশীলতা পছন্দ করেন। শুধু লোক দেখানোর জন্য নয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার বা আত্নকেন্দ্রীক করতে নয়,  বাস্তব সৃজনশীল,  বিজ্ঞান মনস্ক ও নতুন চিন্তাধারায় কাজ করতে চান তরুণরা। দুর্ণীতি ও দুর্বৃত্তায়ন পছন্দ করেন না এই তরুণ প্রজন্ম। ২০০১ সালে নির্বাচনের ছাত্রলীগ ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের কলম সৈনিক থাকার অপরাধে মিথ্যা মামলায় জেল হাজত খাটতে হয়েছিল। পাশে কাউকে পাইনি। ১/১১ সময় ছাড় পাইনি। মিথ্যা মামলায় জেল হাজত। অবশ্য, আওয়ামী লীগের দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকার পরও নিজেকে কোন সুবিধাভোগীর তালিকায় নাম লেখায়নি কিন্তু। কোন পদ পদবী নেওয়ার জন্য তদবীর করিনি। আমি মনে করি, কোন কিছু চাওয়ার বা পাওয়ার নাই। কারণ,আমার অনুভূতির সংগঠন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়। এই সংগঠনের সভাপতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আছেন বলেই আমরা সুরক্ষিত। এ কথা শুধু আমার নয়, গ্রাম গঞ্জের আওয়ামী লীগের সৃজনশীল অসংখ্য নেতা কর্মীদের। আওয়ামী লীগের গ্রাম গঞ্জের একজন প্রয়াত নেতার কথা বলছি! গরিবের উপকার করতেন । সম্ভব নয়, এটা ভাবতেন না, উপকার করতেন কর্মীদের। পকেট থেকে টাকা বের করে দিতে দেখেছি। একদিন খাবার দোকান নজরুল ভাইকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, আচ্ছা আপনার ভাতের হোটেলের সব চেয়ে বড় কাষ্টমার কে ?  তিনি বলেছিলেন, খোকা চেয়ারম্যান। অবাক হয়ে কারণ জিজ্ঞেস করার পর বললেন, হরদম মানুষকে খাওয়ান। কেন, উত্তরে জানালেন, এমনেই। এই থেকে বুঝে নিতে হবে কতটা মানবিক মানুষ ছিলেন তিনি। তখন অবশ্য খোকা ভাই চেয়ারম্যান ছিলেন না। দেখতাম প্রায়ই অনেক দলীয় কর্মী খোকা ভাইয়ের বিরুদ্ধে খুব উত্তেজিত থাকতেন। ভাবতাম এভাবে বলছেন কেন। কৌতুহলী হওয়ার কারণে একটু কাছে গিয়ে দেখলাম ‘উত্তেজিত ওই দলীয় কর্মী খোকা ভাইয়ের সামনে যাওয়ার পর নরম। কত শান্ত। মনে হয় জীবনেও কোন ক্ষোভ বা রাগ ছিল না খোকা ভাইয়ের প্রতি।

অনেক ইতিবাচক ঘটনা আছে,  লিখে শেষ করা সম্ভব না। জনবান্ধব , কর্মীবান্ধব ও দলবান্ধব ছিলেন অ্যাডভোকেট মীর আবু তালেব খোকা ভাই। ৫ বার ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।  তৃণমূলের এই রাজনৈতিক ব্যক্তিকে কেন্দ্রীয় সবাই চিনতেন। বলতেন গফরগাঁওয়ের খোকা চেয়ারম্যান। রাজনীতি, আইন পেশা ও সমাজকল্যাণমূলক কাজ করে গেছেন আমৃত্যু। কখনই দলের মতাদর্শ থেকে আদর্শচ্যুত হননি এই মুক্তিযোদ্ধা। ছাত্রলীগ করার কারণে নয়, মূলত পাশাপাশি সাংবাদিকতা করার কারণে একটা অভ্যাস ছিল, প্রশ্ন করা। একদা খোকা ভাইয়ের কাছে প্রশ্ন ছিল, আওয়ামী লীগের আপনারা প্রবীণ হচ্ছেন। কিন্তুু একটা সময় তৃণমূলের ` সেগেন্ড লাইন অফ ডিফেন্স কারা !  খোকা ভাইয়ের মতো রাজনৈতিক নেতা আওয়ামী লীগের জন্য আগামীদিনে অনেক দরকার। কিন্তুু আমার এলাকায় কয়জন খোকা ভাই বর্তমানে আছেন, একটু বলবেন ! গত জুন মাসে প্রাক্তন আ্যডভোকেট, আওয়ামী লীগ নেতা, ৫ বার নির্বাচিত গফরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান,  মুক্তিযোদ্ধা মীর আবু তালেব খোকা ভাইয়ের ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী ছিলো। আন্দোলন,  সংগ্রাম, মিছিল,  মিথ্যা মামলা, নির্যাতন ও নীপিড়ন এসব নিজের চোখে অনেকেই প্রত্যক্ষ করেননি এখনকার নতুন প্রজন্ম!  আমি নিজে ভুক্তভোগী। খালেদা নিজামী সরকারের আমলে পুলিশের লাঠি ও মিথ্যা মামলার জেল হাজত, রিমান্ড এবং কি নিজ এলাকা ছেড়ে থাকা। খোকা ভাইরা ছিলেন আমাদের নেতা। ইতিবাচক একটি বিষয় দিয়ে লেখার ইতি টানছি, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ২০১২ সালে ‘দিন বদলের এক বছর’ নামে উপজেলায় তৎকালীন সময়ের সরকারের চলমান উন্নয়ন বার্তা জনগনের মাঝে পৌঁছানোর জন্য একটি প্রকাশনার সম্পাদনার দায়িত্ব পালন করেছিলাম। সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি ছিলেন খোকা ভাই। বইটি আছে, কিন্তুু তৃণমূলের জনমানুষের এই নেতা নেই। তবে আমি দেখেছিলাম কিভাবে মানুষের মাঝে এই আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন বার্তার প্রকাশনা তুলে দিতেন খোকা ভাই।  কি চমৎকার মূখের হাঁসি ছিল এই অনুভূতির দলের প্রতি। 

লেখক
গণমাধ্যমকর্মী ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা



মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

বিসিএস পরীক্ষার জন্য ছোট বেলা থেকেই প্রস্তুতি প্রয়োজন


Thumbnail

১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার।  জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?

১৯৯৫ সালে বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা দেই, ১৭তম বিসিএস। জীবনে একবারই এই পরীক্ষা দেই। উত্তীর্ণ হই। সাড়ে আট বছর চাকুরী করেছি, ছেড়েও দিয়েছি । সে অন্য প্রসঙ্গ। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় একটি প্রশ্ন ছিল, ল্যাপটপ কি ? অপশন ছিল- ছোট কুকুর, পর্বতারোহন সামগ্রী, বাদ্যযন্ত্র ও ছোট কম্পিউটার। উত্তর কি দিয়েছিলাম তা মনে নেই। তবে এটুকু মনে আছে যে, আমি উত্তরের জায়গায় ছোট কম্পিউটারে টিক দেইনি। জীবনে যে জিনিসের নামই শুনিনি তাতে টিক দেই কেমনে ? সেকালের কোন গাইড বইতে এ ধরণের কোন প্রশ্ন বা তার উত্তর নেই বলে শুনেছি। পরীক্ষার্থীদের প্রায় ৯৯ ভাগ সঠিক উত্তর দিতে পারেনি। গাইড পড়ে এ ধরণের প্রশ্নের উত্তর দেয়া সম্ভব নয়। তবে যারা আধুনিক প্রযুক্তি বা অনাগত প্রযুক্তি সম্পর্কে ধ্যান ধারণা রাখে তারা সঠিক উত্তর দিয়েছিল।

ঘটনাটি মাথায় এলো সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও দেখে। সেখানে দেখলাম হাজার হাজার ছাত্র ছাত্রী হুড়োহুড়ি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে ঢুকছে। শুনলাম তারা আসন্ন বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিবে। ভিডিওটি আবার দেখার জন্য গুগলে অনুসন্ধান করলাম- 'ঢাবি লাইব্রেরিতে বিসিএস পরীক্ষার্থীদের ভিড়'। সেখানে দেখি শত শত খবর। প্রতি বছর নাকি এমনটি হয়। লাইব্রেরিতে ঢুকতে হুড়োহুড়ি। পরীক্ষার আগে নাকি সেখানে এমন যুদ্ধ চলে। বিসিএস কি দু এক মাস বা দু এক বছরের প্রস্তুতির ব্যাপার ? একবার পরীক্ষা দিয়ে আমার কাছে তা মনে হয়নি। আমার মতে, এর জন্য সমগ্র শিক্ষা জীবন ধরে প্রস্তুতি প্রয়োজন। এটি আমার একান্ত ব্যক্তিগত অভিমত। আমার সাথে অনেকেই একমত নাও হতে পারেন।

ছোট কাল থেকে নিয়মিত অধ্যাবসায়ের পাশাপাশি নিয়মিত সংবাদপত্র পড়া প্রয়োজন। জগৎ সংসার, দেশ বিদেশ, বিজ্ঞান, সাহিত্য, রাজনীতি, অর্থনীতি, ইতিহাস, ভূগোল, খেলাধুলা বিষয়ে খোঁজ খবর রাখা দরকার। কোন একটি দেশি বা বিশ্ব ইভেন্ট চলছে। সেটি চলাকালে দৈনন্দিন খোঁজ খবর রাখার পাশাপাশি ওই ইভেন্টের অতীত জেনে নিলেন। কবে থেকে ইভেন্টটি চলছে, কোথায় সেটি শুরু হয়েছিল, সেটি জেনে নিলেন। নিয়মিত সংবাদপত্র পড়লে বা টিভি সংবাদ দেখলে সেগুলি আপনা আপনি জেনে যাবেন।

তবে প্রিলিমিনারি পরীক্ষার জন্য একটু প্রস্তুতির প্রয়োজন রয়েছে। আমি নিয়েছি এক সপ্তাহের। তাও ইন্টার্নি চলাকালে ডিউটির ফাঁকে ফাঁকে। আপনি এর জন্য সর্বোচ্চ এক মাস বরাদ্ধ রাখতে পারেন। বাংলা সাহিত্য ও ইতিহাস অংশে কিছু সাল মনের মধ্যে গেঁথে নেয়ার জন্য গাইড বইটি একটু চোখ বুলাতে পারেন। যে সব বিষয়ে দুর্বলতা রয়েছে সেগুলো একটু দেখতে পারেন। অংকের ফর্মুলা গুলো একটু ঝালাই করে নিতে পারেন। সমসাময়িক বিশ্ব বিষয়ে অনেকের দুর্বলতা থাকে। সংবাদপত্রের এ অংশটুকু প্রায়ই এড়িয়ে যাওয়া হয়। এ অধ্যায়টিও দেখে নিতে পারেন। প্রিলিমিনারি পরীক্ষার আগে যদি এর চেয়েও বেশি সময় প্রয়োজন হয়, তাহলে বুঝতে হবে আপনার দুর্বলতা অনেক। বিসিএস পরীক্ষার জন্য ছোট বেলা থেকে আপনার প্রস্তুতি নেই। সেক্ষেত্রে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা আপনার জন্য কঠিন হয়ে যাবে। লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

মতিউর রহমানই প্রথম আলো বিক্রির প্রধান বাঁধা?


Thumbnail

দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।

শুধু কর্ণফুলী গ্রুপই নয়, প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করতে স্কয়ার গ্রুপের সাথেও বেশ অগ্রসর হয়েছিলেন মতিউর রহমান। এর মধ্যে বসুন্ধারাসহ আরও কয়েকটি গ্রুপ এতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। কিন্তু আমার জানা মতে সর্বশেষ এস আলম গ্রুপ এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য বেশ অগ্রসর হয়েছে এবং তারাই এখন সবচেয়ে অগ্রগামী। কিন্তু এস আলম গ্রুপ কেনার জন্য বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান। কারণ উনি দেখছেন যে, একমাত্র কর্ণফুলী ছাড়া অন্য যে কোন গ্রুপে গেলে তার সম্পাদক পদের নিশ্চয়তা নেই।

তবে ধারণা করা হচ্ছে, যারাই ‘প্রথম আলো’ প্রতিষ্ঠানটি ক্রয় করুক না কেন, তারা মতিউর রহমানকে প্রথম দিকে রাখলেও পরবর্তীতে তারা পরিবর্তন করবে। যদি প্রথম আলোতে কেউ সম্পাদকের দায়িত্বে আসেন, আমার ধারণা আনিসুল হক আসতে পারেন। কারণ আনিসুল হক সবার কাছে যেমন সম্মানিত তেমনি জ্ঞানী ব্যক্তিত্বের অধিকারী।

‘প্রথম আলো’ প্রতিষ্ঠানটি যদি এস আলম গ্রুপ কিনে নেয় তাহলে প্রধান বাঁধা হবে মতিউর রহমান। কিন্তু তার বাঁধা টিকবে না। কারণ কোন প্রতিষ্ঠানের যদি ব্যবসায়ীক দ্বন্দ্ব দেখা দেয় তাহলে ওই প্রতিষ্ঠানটি কয়েক ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। ‘প্রথম আলো’ নিজেদের ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের ফলে তিনটি গ্রুপে বিভক্ত হয়েছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে চরম দ্বন্দ্ব বিরাজ করছে। সাধারণত যার যার দৃষ্টিকোণ থেকে প্রতিষ্ঠানটিকে তারা দেখবে। সরাসরি না হলেও প্রথম আলোর মতিউর রহমান এই দ্বন্দ্বে জড়িয়ে গেছেন। যদিও মতিউর রহমান বিভিন্নিভাবে বিষয়টি প্রকাশ করে বুঝাতে চেষ্টা করছেন যে, এতে উনার কোন আগ্রহ নেই। 

তবে এর আগে থেকেই কিছু গণমাধ্যমে এসেছিল যে, মতিউর রহমন ও ডেইলি স্টারের মাহফুজ আনাম এই দ্বন্দ্বে জড়িত রয়েছেন। যদিও বিষয়টি তাদের মধ্যকার বিষয়। কিন্তু এখন প্রথম আলো বিক্রিতে প্রধান বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন মতিউর রহমান। অচিরেই এই বাঁধা অতিক্রম করে ‘প্রথম আলো’ বিক্রি হবে এবং প্রতিষ্ঠানটি কিনবে এস আলম। কারণ এস আলম একজন বিচক্ষণ ব্যবসায়ী। তিনি ব্যবসাতেই যুক্ত হচ্ছেন ব্যর্থ হচ্ছেন না। বরং সফল হচ্ছেন।

‘প্রথম আলোর’ কেনার জন্য দেশে যেসব কর্পোরেট হাউজগুলো আছে তাদের অনেকেরই আগ্রহ রয়েছে। তবে এক একজনের আগ্রহ একেক কারণে। কেউ চান প্রথম আলোর জনপ্রিয়তা ও অভিজ্ঞ জনবলের কারণে, আবার কিছু কর্পোরেট হাউজের ইচ্ছে হলো ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠানটির গুরুত্ব একেবারে কমিয়ে আনা। এসব বিভিন্ন কারণে আগ্রহ থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

তবে আমার বিশ্বাস প্রথম আলো বিক্রিতে যে প্রধান বাঁধা মতিউর রহমান। তার বাঁধা টিকবে না। অবশেষে প্রতিষ্ঠানটি একটা কর্পোরেট হাউজের হাতেই যাবে। আমার ধারণা মতে, এস আলম গ্রুপই প্রথম আলোকে কিনতে সক্ষম হবে। আমরা হয়ত কয়েক মাসের মধ্যেই দেখব যে, প্রথম আলোর নতুন মালিক হিসেবে আরেকটি কর্পোরেট হাউজ এসে দাঁড়িয়েছে। প্রথম আলোতে বর্তমানে যারা অভিজ্ঞ সাংবাদিক আছেন যারা শিক্ষিত তাদেরকে ইতোমধ্যে অনেক গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান অভিজ্ঞ লোকদের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। 

আমার ধারণা, এ পর্যায়ে প্রথম আলো বিক্রি কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না। এমনকি মতিউর রহমানের চেষ্টাও সফল হবে না। তবে আমার সবসময়ের আকাঙ্খা, সংবাদপত্রের সাথে যারা জড়িত তাদের চাকরি যেন অবশ্যই নিশ্চয়তা থাকে। কারণ এরা দীর্ঘদিন পরিশ্রম করে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন, নিজেদেরকে একটা পর্যায়ে এনেছেন আর এদের চাকরি অবশ্যই থাকতে হবে এবং তাদের যে মেধা, সেই মেধা থেকে জাতি যেন বঞ্চিত না হয়।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

এক বছরের রাষ্ট্রপতির যত অর্জন


Thumbnail

আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।

দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।

আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।

গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে, তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও একই ভাবে থেকেছেন।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।


রাষ্ট্রপতি   মো. সাহাবুদ্দিন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

শেখ হাসিনা ছাড়া কেউই অপরিহার্য নয়


Thumbnail

প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।

আওয়ামী লীগ যদি আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয় সেটি ভিন্ন কথা। কিন্তু আওয়ামী লীগ যদি টিকে থাকতে চায় তাহলে দলকে এবার কঠোর সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। এটা এখন সময়ের দাবি। যারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি তারা ইনিয়ে বিনিয়ে এখন নানান অজুহাত তৈরি করছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের উচিত হবে এ সমস্ত অজুহাত না শোনা। কারণ যিনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করেছেন তিনি দলীয় সিদ্ধান্ত পরিপন্থি কাজ করেছেন এটা সুস্পষ্ট। সুতরাং এখানে দল উচিত তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। দল করলে তাকে দলীয় শৃঙ্খলা মানতেই হবে। অনথায় দল থেকে বাদ দিতে হবে। যারা দলীয় সিদ্ধান্তের পরিপন্থী কাজ করেন তারা কখনই দলের জন্য মঙ্গলজনক নয়। এদের মত আট-দশ দলে না থাকলে আওয়ামী লীগের কিছু যায়-আসে না। একমাত্র আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক ছাড়া আর কেউই আওয়ামী লীগের জন্য অপরিহার্য নয়। শেখ হাসিনাই কেবল মাত্র আওয়ামী লীগ এবং দেশের স্বার্থে অপরিহার্য। সুতরাং, এখন আমরা দেখতে চাই শৃঙ্খলা পরিপন্থীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ কি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

যারা আওয়ামী লীগ সভাপতি নির্দেশনা অমান্য করেছেন তিনি দলের যত বড় নেতাই হোন না কেন তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি। দরকার হলে দল থেকে তাদেরকে বাদ দিতে হবে কিংবা বহিষ্কারের মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। শুধু বহিষ্কারই নয়, তাদের প্রাথমিক সদস্য পদও বাতিল করতে হবে। এতে করে কারও যদি এমপিত্ব চলে যায় তো যাবে। কিন্তু দলের শৃঙ্খলা ধরে রাখতে হবে দলের স্বার্থে। তাদের আসনে যে কাউকে নির্বাচন করে জিতে আসতে পারবেন। কোন মন্ত্রী এমপি আওয়ামী লীগের জন্য অপরিহার্য নয়। যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন উপজেলা গুলো প্রার্থী দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে দল কী সিদ্ধান্ত নেয় সেটা দেখার জন্য গোটা দেশের মানুষ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দিকে তাকিয়ে আছে।

অতীতে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে দেখেছি দেশের বৃহত্তর স্বার্থে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে। বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে এবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও কঠোর পদক্ষেপ নেবেন এমনটি আশা আওয়ামী লীগের প্রতিটি তৃণমূল নেতাকর্মীর। এখন আওয়ামী লীগ শেষ পর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত নেয় আমরা সেটার অপেক্ষা আছি।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

শেখ হাসিনার সমালোচনা করলেও কেউই তার বিকল্প খুঁজে পান না


Thumbnail

দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। 

দার্শনিক শেখ হাসিনা এখন আগে দার্শনিক পরে রাষ্ট্রনায়ক। এতদিন তিনি ছিলেন আগে রাষ্ট্রনায়ক পরে এবং দার্শনিক। এখন তিনি আগে দার্শনিক পরে রাষ্ট্রনায়ক। কারণ তিনি একের পর এক দর্শনকে যেভাবে স্থায়ী রূপ দিয়ে যাচ্ছেন তাতে এদেশের সকলের মনোবলও বৃদ্ধি পাচ্ছে। নতুন মন্ত্রিসভাতেও তিনি দর্শনের প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। তিনি পুরনোদের সাথে নতুনদের যুক্ত করে নেতৃত্বের একটি চমৎকার ভারসাম্য তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। যা আমরা এই ১০০ দিনে বুঝতে পেরেছি এই নতুন মন্ত্রিসভার কাজকর্মে। সেদিক থেকে আমি অনুধাবন করতে পারি যে, এই ১০০ দিনে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা এখন পর্যন্ত শতভাগ সফল।

গোটা বিশ্ব এখন যুদ্ধের মধ্যে পড়েছে। করোনার পর থেকে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ গোটা বিশ্ব অর্থনীতিতে টলটলয়মান করে দিয়েছে। এখন আবার নতুন করে মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা শুরু হয়েছে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে। বলা যায় বিশ্বে একটা মিনি বিশ্ব যুদ্ধ চলছে। গাজায় হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এরকম পরিস্থিতিতে দার্শনিক শেখ হাসিনার সামনে বিরাট চ্যালেঞ্জ। তবে আশার কথা যে, এখন পর্যন্ত তিনি সঠিক পথে আছেন এবং সফল ভাবে পুরো পরিস্থিতি মোকাবিলা করে যাচ্ছেন। বিশ্বের অস্থির পরিস্থির কথা অনুধাবন করে তিনি প্রতিনিয়ত বিভিন্ন রকম নির্দেশনা দিচ্ছেন। যেমন-বিশ্ব বাজারে নতুন নতুন বাজারের সন্ধান। আমাদের যেন খাদ্য ঘাটতি পড়তে না হয় সেজন্য তিনি আগাম আমাদের সতর্ক করে দিচ্ছেন। পাশাপাশি আমাদের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়াতেও তিনি জোরালো ভাবে আহ্বান করেছেন। 

একজন জেনারেলকে কীভাবে বিচার করা হয়? তিনি কয়টি ব্যাটল জয় করলেন সেটা দিয়ে কিন্তু নয়। তাকে বিচার করা হয় যখন তিনি একটা ব্যাটলে হেরে যান এবং তার সৈন্যরা যখন পুরো ভেঙে পড়েন ঠিক সে সময় তিনি কীভাবে তার সৈন্যদের উজ্জীবিত করতে পারলেন সেটা বিবেচনায় নেওয়া হয়। দার্শনিক শেখ হাসিনাও সে রকম একজন জেনারেল, যে জেনারেল কঠিন সময়ে সাধারণ জনগণকে সবচেয়ে কম কষ্টে রেখে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এবং ভবিষ্যতেও যেন তিনি সফল ভাবে নিয়ে যাবেন সেটা বলাই বাহুল্য। অনেকে তার সমালোচনা করছেন ঠিক কিন্তু কেউ তার বিকল্পের কথা বলতে পারছেন না। তিনি দলকে যেমন ধরে রেখেছেন বা নেতৃত্ব দিচ্ছেন ঠিক তেমনিভাবে সরকারকেও সঠিক পথে পরিচালনা করছেন। সুতরাং শেখ হাসিনার বিকল্প যে শেখ হাসিনাই এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। নতুন সরকারের প্রথম ১০০ দিনের মত সামনের দিনগুলোতে সাফল্য ধরে রাখবে এটাই আমরা প্রত্যাশা করি।



মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন