নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৫৯ পিএম, ০১ ডিসেম্বর, ২০২০
আজ অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকদের জন্য একটি আনন্দের দিন। করোনা ভাইরাস আক্রমণের পর থেকে বিভিন্ন শহরে যান ও বিমান চলাচল বন্ধ ছিল স্বাস্থ্য নিরাপত্তার কথা ভেবে। বিশেষ করে কুইন্সল্যান্ড সরকার খুবই কঠোরতা প্রদর্শন করেছে এ সময়ে । এক পর্যায়ে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীর আবেদনও নাকচ করেছেন কুইন্সল্যান্ড মুখ্যমন্ত্রী। আজ সেই বন্ধ দুয়ার উন্মুক্ত হলো।
এদিকে গতকাল থেকে মেলবোর্ন শহরে অফিস খুলেছে ৮ মাস বন্ধ থাকার পর। ওদিকে যুক্তরাজ্যে কোরোনার প্রকোপ কমেছে। লক ডাউন তাদের উপকারে এসেছে। এরকম একটি আনন্দের সময় যে খবরটি বেদনার কারণ হয়ে উঠলো তা হলো : নড়াইলের ছেলে “তুর্কি মুন্নার স্বপ্ন শেষ-বিদেশ গিয়ে তার আর উচ্চ শিক্ষা নেয়া হলোনা।“ কাক ডাকা ভোরে ছিনতাইকারীরা ছিনিয়ে নিলো আরেকটি মায়ের স্বপ্ন, আরেকটি তরুনের স্বপ্ন, আরেকটি পরিবারের স্বপ্ন।
ওই কাক ডাকা ভোরে আমি , আমার স্ত্রী ও সন্তান বেঁচেছি এক অবধারিত মৃত্যুর হাত থেকে। ছিনতাইকারী গাড়িতে করে টানছে আমার স্ত্রীর ব্যাগ, আর আমরা তিনজনে রিকশায়। এরকম পরিস্থিতিতে হয় নিচের পড়ে মাথায় আঘাত লেগে কিংবা ছিনতাইকারীর চুরিতে আরও অনেকে শাহাদৎ বরণ করেছেন। সেদিন হয়তো আমার স্বপ্নগুলো শেষ হয়ে যেত !
এভাবে অনেক স্বপ্ন ঝরে যায়। চিরদিন কে কার কথা মনে রাখবে? একদিন সব কিছু ভুলে যেতে হয়। ঢাকা শহর যে নানা কারণে এখন একটি অনিরাপদ শহর তা বলবার অপেক্ষা রাখে না। আমার এ কথার জবাবে হয়তো মাননীয় মন্ত্রী বলবেন-পৃথিবীর কোনো শহরই নিরাপদ নয়। সব শহরেই আছে খুন , গুম, হত্যা , ধর্ষণ। সুতরাং, এটাই বাস্তবতা। তার পরেও মনে প্রশ্ন জাগে- কিছুই কি আমাদের করবার নেই ? বাস্তবতাই কি সব?
মাননীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর উপর যেমনটি জনগণের আস্থা আছে- অনেকের মন্ত্রীর উপর কিন্তু তেমনটি নেই। খুব কাছ থেকে মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানবার সুযোগ হয়েছিল বলে আমি এরকম আশাবাদী। আপনার বিজ্ঞতা পারে আমাদের মুক্তির অফুরন্ত দ্বার খুলতে মাননীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী। হয়তো আরও একটু চেষ্টা করবার সুযোগ আছে? মাননীয় মন্ত্রী আপনার মুখপানে চেয়ে আছে বাংলার প্রতিটি নারী -পুরুষ -শিশু। আশা করি আপনি পারবেন একটি নিরাপদ শহর, একটি নিরাপদ দেশ জাতিকে উপহার দিতে। প্লিজ!
করোনা আসার পর অনেকেই বলছিলো মানুষ এবার ভালো হয়ে যাবে - করোনা ভাইরাস মানুষকে বদলে দিয়ে ভালো করে দেবে। আমি তখন মনে মনে হাসছিলাম। কি সরল বিশ্বাস আমাদের। কথায় আছে কয়লা ধুলে নাকি ময়লা যায় না। আর স্বভাব যায় না মরলে। সুতরাং, ভালো হওয়া কারো কারো পক্ষে সম্ভব নয়। ভালো হতে চাইলেও ভালো হওয়া যায় কি ? অনেকে ভালো মনে করতাম , বিশ্বাস করতাম। কিন্তু একদিন সেই বিশ্বাসকে মিথ্যে প্রমান করে আনন্দে আত্মহারা হয়। অন্য দিকে হেরে যাওয়া মানুষটি ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। কি জানি - বিদ্রোহী কবি কেন নীরব হয়ে গিয়েছিলেন। তবে, ডিজিটাল নিরাপত্তার আইনের দোহাই দিয়ে এখন অনেকে নীরব! এই নীরবতা কি ভালো লক্ষণ হতে পারে?
পৃথিবীটা একটি রঙ্গ মঞ্চ যেন - সেখানে হাসি -কান্না আমাদের নিত্য দিনের সাথী। কথায় আছে কপালের লিখন না যায় খণ্ডন। আমাদের কপালে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ছিল আমরা সেটা দেখেছি। আমাদের কপালে করোনা ভাইরাস ছিল সেটা দেখছি। এসব কিছুর পরেও একটি কথা আছে চেষ্টা করলে ভাগ্যের লিখন খুলতে পারে।
সুপ্রিয় পাঠক, হয়তো ভাবছেন আমি মুন্নার কথা বলতে গিয়ে কোথায় যাচ্ছি! তাই আমি আবারও ঢাকা শহরে ফিরে আসি। দার্শনিকদের মতে, আমরা আসলে মায়া -লোভেই সবকিছু করছি। আর এভাবে প্রতিদিন পৃথিবীর বুকে মানুষের স্বরূপকে উন্মোচন করছি। আমরা যে পশু তা আমরা সকলকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যেন। তাই শিশু-নারী নির্যাতনের আনন্দে মেতে উঠি। সামান্য কিছুর জন্য খুন করে ফেলি।
আমরা জানি আমাদের পাশেই আছে রোগ, জীবাণু , মরণের ফাঁদ। তবুও আমরা সেসবকে ভুলে যাই। প্রশ্ন হলো : আমরা কবে আসলে সচেতন হবো ? আমাদের চেতনায় ছিল সমতা, সহমর্মিতা, ভালোবাসার চেতনা। সেগুলো যেন দিন দিন ফুরিয়ে যাচ্ছে। বিরোধীদের মুখে এখন "চেতনা" একটি গালিতে পরিনিত হয়েছে। উত্থান হয়েছে মেরুদন্ডহীনতা, উন্মাদনা, ও ভণ্ডামির।
আমরা নিরাপদ শহর চাই। সেই নিরাপত্তা চাই আমরা কোনো জন্তু জানোয়ারের থেকে নয়। এই শহরে এখন বাঘ নেই, শেয়াল নেই, ভাল্লুক নেই। নেই ভুত-পেত্নী। আছে মানুষ কাঠামোর ভেতরে মানুষ নামক প্রাণী! তাই সহজেই এই মানুষ গুলো হয়ে যায় জানোয়ার। কারণ সে তার নিজের ভেতরের পশুকে দমন করতে পারে না।
আমার জানি, একটি কম্পিউটার নিজের মতো চলতে পারে না। সেই কম্পিউটার এখন রোগ নির্ণয়ে ডাক্তারের ভূমিকায় অবতীর্ণ। বিজ্ঞানের এই অভাবিত উন্নয়ন আমাদেরকে আশাবাদী করে তোলে। হয়তো একটি মানুষের মন কম্পিউটার জানতে পারবে এবং কারও মনে মন্দ চিন্তা এলে সেটা একটি এলার্ট জারি করবে। এবং আমরা নিরাপত্তাকে নিচ্চিত করতে পারব হয়তো। তবে বিকল্প একটি পথ এখনো আমাদের জানা আছে। আর সেটা হলো শিক্ষা। । মানুষকে কমান্ড দেয় তার শিক্ষা। সেজন্য একজন মা হচ্ছেন সেই ভালো শিক্ষক - যাকে প্রয়োজন আমাদের সমাজের । কিন্তু বাবারা মায়েদেরকে যে ভাবে নির্যাতন করে, ভুল পথে চালিত করে যে মায়েরা কেবল অসহায়ভাবে তাকিয়ে দেখেন।
আমাদের সমাজে এখন ভালো শিক্ষকের খুব অভাব। একসময় আলেমরা শিক্ষক ছিলেন। তারা নানা ব্যক্তি স্বার্থে নিজেদেরকে নষ্ট করে ফেলছেন। এরপর এসেছে বিদ্যালয়ের শিক্ষক। দিনে দিনে তারাও নষ্ট হয়ে গেছেন। এই নষ্ট হতে হতে আমরা এতটা নষ্ট হয়েছি যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়ে মোয়া মুড়কির মতো পিএইচডি দিচ্ছি এবং এভাবে একজন ভালো মানুষকে একজন মন্দ মানুষের সঙ্গে সমান করে দিচ্ছি।
কথায় আছে মাথায় যদি পচন ধরে তবে দেহের পক্ষে সেটা প্রতিরোধ সম্ভব হয় না। শিক্ষক যদি হয় মাথা তবে সেই মাথায় পচন থামানোর সময় এখন! মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি কি আমাদের পাশে একটু দাঁড়াবেন কি যারা এই মাথায় পচন ধরাচ্ছে তাঁদেরকে আলাদা করতে? এরা শিক্ষাঙ্গনে ভয়াবহ ভাইরাস। আপনি যদি একটু অভয় দেন- তাহলে জনগণ রুখে দেবে এই ভয়াবহ শিক্ষা দুর্নীতির ভাইরাসকে। প্লিজ!
গতকাল আমাদের একজন চিকিৎসক নেতা বলেছেন - ভ্যাকসিনের উপর নির্ভর না করে স্বাস্থ্য বিধি মেনে করোনা ভাইরাসকে মোকাবেলা করতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমরাতো বিগত ১০ মাস দেখলাম। আমরা এখন জানি এই ভাইরাস এর স্বরূপটি কি। আমাদের অর্থনীতিকে কিভাবে সচল রাখতে হবে সেটাও জেনেছি। এবার কি আমরা সকলে মিলে এই ভাইরাস কে পরাজিত করতে পারি কি ?
বাঙালিরা ২00 বছর বৃটিশদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে, বাঙালিরা পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ করেছে। সেই অকুতোভয় জাতি কেন হেরে যাবে দুর্নীতি কিংবা কোরোনা ভাইরাস এর কাছে? আমরা জাতির পিতার আদেশে মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। আপনি কেবল একটি ডাক দেন বঙ্গবন্ধুর মতো করে। নিয়ম মেনে ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করতে হবে- সেই ডাক আপনার মুখ থেকে জাতি শুনতে চায়। জাতি আরেকটি ৭ মার্চ চায়- যেদিন বঙ্গবন্ধু মুক্তির সংগ্রামে ডাক দিয়েছিলেন। সেই ডাক আপনিই দিতে পারেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। জনতা সেই ডাকে সাড়া দিয়ে শিক্ষা, সমাজ , প্রশাসন থেকে সকল ভাইরাস থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করবে। সেই ডাকটা দিবেন কি ?
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিজয়ের মাসে আপনার নেতৃত্বে জাতি আরেকটি বিজয় অর্জন করতে চায়। আমাদের স্বপ্নগুলো যেন সম্মিলিতভাবে আপনার স্বপ্নে পরিনিত হয় যেভাবে বাঙালির স্বাধীনতার স্বপ্ন বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠে ধনিত হয়েছিল সেই ৭ মার্চে। আপনার হাত ধরে বাঙালি অর্থনৈতিক মুক্তির পথ পেয়েছে , জাতি তেমনি সামাজিক মুক্তির পথ খুঁজতে চায় আপনার আহ্ববানে। আপনার ডাকের অপেক্ষায় বাংলার নিপীড়িত জনতা। সম্প্রতি এক সাংবাদিক গণ জাগরণের কথা বলেছেন। সেই গণ জাগরণ হোক আপনার ডাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ডাক ছিল স্বাধীনতার মাসে। আর এই বিজয়ের মাসে হোক মুক্তির ডাক।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
দেশে একটি সুষ্ঠু
নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে
রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং
সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা
সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ
ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি
সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।
আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা
রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত
অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের
গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান
ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে
দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে
এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক
করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি
একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি
পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার
করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের
সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন
পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন
শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী
লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের
প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন
করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে
সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।
গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে,
তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো
দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের
অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা
পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে
প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ
এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে
নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও
একই ভাবে থেকেছেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি
হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে
যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু
এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার
পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে
তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:২৬ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি
প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর
রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা
করবেন।
প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে
আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা
নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর। আমার ধারণা যারাই প্রথম আলো কিনেন না
কেন তারা প্রথম দিকে মতিউর রহমান সাহেবকে রাখলেও পরবর্তীতে ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে
সম্পাদক পরিবর্তন করবে। আর প্রথম আলো যদি কোন যুক্তিপূর্ণ লোকের কাছে দেয় তাহলে আমার
মতে এখানে সম্ভবত আনিসুল হক সাহেব সম্পাদক হবেন। কারণ তার প্রতি লোকের অনেক শ্রদ্ধাবোধ
আছে এবং তিনি সবসময় একটা রেড লাইন রক্ষা করে চলেন। এটা আমরা সকলেই জানি। তার সাথে
অনেকেরই ভালো সম্পর্ক এবং তিনি খুবই জ্ঞানী
লোক।
এর আগে মতিউর রহমান যখন একতা থেকে আজকের কাগজে যান, তখন তার উদ্দেশ্যই
ছিল যে, একটি পত্রিকা কীভাবে চলে সেটা শেখা এবং এখান থেকে একসাথে সাংবাদিক নিয়ে বেরিয়ে
যাওয়া। তিনি সেটা করেছিলেন। তারপর ভোরের কাগজ থেকে একই কাজ করেছেন। সুতরাং তার সত্যিকারের
নীতিবোধ বলতে যেটা বোঝায় সেটা দুর্ভাগ্যবশত তিনি প্রমাণ করতে পারেননি।
তিনি এক সময় কমিউনিস্টদের সাথে থাকলেও এখন তার চেয়ে বড় দক্ষিণপন্থী
পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়াই কঠিন। এ কারণে প্রথম আলো যে বিক্রি হবে এই ব্যাপারে সাধারণ লোকের
ভিতরে এখন আর কোন সন্দেহ নেই।
এখন প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টারের কী হবে এই নিয়ে আলাপ আলোচনা হচ্ছে
এবং এই আলাপ আলোচনা খুব দীর্ঘদিন যে চলবে তা না। আমার মনে হয় জুন-জুলাই মাসের ভিতরেই
এর একটা ফয়সালা হয়ে যাবে। কারণ স্বাভাবিক ভাবেই বুঝি যে, একটি পত্রিকা পাঠকপ্রিয়তা
পেতে বেশ সময় লাগে। এটা একদিন দুইদিনের ব্যাপার না। আবার ঠিক তেমনিভাবে যখন পাঠকপ্রিয়তা
কমতে থাকে সেটাও একদিন দুইদিনে হয় না। ধীরে ধীরে হয়। এই মিডিয়া জগতের নিয়মই তাই।
আমি ১৯৬১ সালে পত্রিকা বলতে শুধুমাত্র ইত্তেফাক এর কথাই জানতাম।
সেই ধারণা থেকে বলতে পারি এখন প্রথম আলোর যদি কিছু কর্মী এর চেয়ে ভালো কোন সুযোগ সুবিধা
দেখেন তাহলে তারা বিক্রি হওয়ার আগেই চলে যাবেন। কারণ স্বাভাবিকভাবেই একজন সাংবাদিকের
একটা ক্যারিয়ার আছে এবং প্রথম আলোর মতো পত্রিকাতে কাজ করে তিনি তো যে কোন পত্রিকায়
যেতেও পারবেন না। তার কারণ গেলে তার ওই লেখার যে মান সেটা মূল্যায়ন নাও হতে পারে। তবে
আমার ধারণা প্রথম আলোতে কাজ করেছেন এমন যে কাউকে টেকনিক্যাল গ্রাউন্ডে অনেক গুরুত্ব
দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে আমি অবাক হব না যদি দু এক মাসের ভিতরে দেখা যায় যে আস্তে আস্তে
প্রথম আলো বিভিন্ন কর্মী অন্য পত্রিকায় যাওয়া শুরু করে দিয়েছেন।
ব্যাংক মার্জারের যেমন একটি ঘটনা বর্তমানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ঠিক
তেমনি পত্রিকা জগতেও শিল্প গোষ্ঠীর যে গন্ডগোলের ঘটনা ঘটেছে এটিও ব্যাংক মার্জারের
ঘটনার পর্যায়ে চলে যাবে। ব্যাংকিং ক্ষেত্রে দেখা যায়, দুটি ব্যাংক একীভূত হচ্ছে। আর
এদিকে দেখা যাবে, সংবাদকর্মীরা অন্য পত্রিকায় চলে যাচ্ছে।
তবে আমার মনে হয় না, এখন যে অবস্থা চলছে এতে প্রথম আলো আর আগের
মতো প্রথম আলো থাকতে পারবে। এটা কিছুতেই সম্ভব না এটি মোটামুটিভাবে নিশ্চিত। তাই আমার
মনে হয় প্রথম আলো সেই ব্যাংক মার্জারের পর্যায়ে চলে এসেছে। এখন অন্য পত্রিকা যাদের
আছে, তারাও প্রথম আলো কিনে নিতে পারেন। এটি সম্ভব। এরকম শিল্পগোষ্ঠীর কোন কমতি বর্তমানে
বাংলাদেশে নেই। যে কোন শিল্প গোষ্ঠীই এটা কিনবে।
তবে আমি আশা রাখব, যারাই প্রথম আলো কিনবে, তারা যেন অন্তত পক্ষে
এটা খেয়াল রাখে যাতে সাংবাদিকদের কোন ক্ষতি না হয়। সুতরাং এদেশের একজন সাধারণ নাগরিক
হিসেবে আমার দাবী হচ্ছে সাংবাদিকরা যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।
মন্তব্য করুন
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।
দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই।
বারো বছর আগের কথা। ডেভিড ক্যামেরুন তখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। সে সময় একদিন তিনি একটি হাসপাতালের ওয়ার্ডে ঢুকে পড়লেন। রোগীর অনুমতি সাপেক্ষে রোগীর সাথে ছবি তুলতে গেলেন। বাঁধ সাধলেন ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা একজন চিকিৎসক। জীবাণু প্রতিরোধের কোন পদক্ষেপ না নিয়ে এবং চিকিৎসকের অনুমতি ব্যতিরেকে তিনি ওই কাজটি করছিলেন। ডেভিড ক্যামেরুন তাঁর ভুল বুঝতে পেরেছিলেন সাথে সাথে। ক্ষমা চাইলেন এবং ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে গেলেন।
এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা করবেন। প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর