নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৫৯ পিএম, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
গতকাল দেখলাম যে, হাইকোর্টে আল জাজিরার বাংলাদেশের সম্পর্কে যে নেতিবাচক প্রচারণা করেছে সে বিষয়ে হাইকোর্ট তাদের রায় প্রদান করেছেন। যেহেতু হাইকোর্ট তাদের রায় প্রদান করেছেন সেজন্য আমি এই বিষয়ে কোনও বক্তব্য প্রদান করতে চাই না। তবে শুধু এতটুকু বলবো, আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে যে বিচারকরা যখন জিজ্ঞাসা করেছেন যে, এতদিন হয়ে গেলো জনগণ যা যা পড়ার বা দেখার তা সবাই পড়েছে বা দেখেছে এখন এটা বন্ধ করাতে কি লাভ হবে। যাইহোক এ বিষয়টি রেখে আমি আসলে কথায় আসছি সেটি হচ্ছে এই যে, আওয়ামী লীগ একটি বড় দল। এই দলের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণা আগে থেকেই ছিল এখন আরো বাড়ছে এবং দিন দিন এই নেতিবাচক প্রচারণা আরো বাড়বে।
বিশ্বব্যাপী সবাই জানে যে, যাদের অজস্র টাকা আছে তারা মিথ্যাকে ব্যবহার করে সত্যকে মিথ্যা বানিয়ে ফেলতে পারে। হিটলারের প্রচারমন্ত্রী যোসেফ গোয়েবলস তখন বার বার মিথ্যাকে লোকের কানে দিয়ে সত্য হিসেবে গ্রহণ করাতে সক্ষম হয় নি। এখন গোয়েবলস এর অভাব বর্তমান যুগে নেই। বরং পার্থক্য হচ্ছে গোয়েবলস হয়ত ততটা শিক্ষিত ছিল না কিন্তু এখন যারা এসব করে তারা যথেষ্ট লেখাপড়া করে এবং তারা যথেষ্ট পরিশ্রম করেই বাংলাদেশের নেতিবাচক ভাবমূর্তি বিশ্বের সামনে প্রচার করতে চায়। তাদের একমাত্র টার্গেট হচ্ছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। যিনি বিশ্বের অন্যতম সেরা রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে পরিচিত যিনি এই করোনাকালেও দেশের জনগণের অর্থনৈতিক অবস্থা এবং সবকিছুকেই সচল রেখেছেন এবং ভ্যাকসিন সময়মতো পেয়েছেন। আমাদের জিডিপির উন্নতি হচ্ছে, সমস্ত দিক থেকে বাংলাদেশ এখন পৃথিবীতে একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অবস্থায় নেতিবাচক প্রচারণার উদ্দেশ্য কি?
উদ্দেশ্য হচ্ছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে বিশ্বে এবং এদেশের জনগণের সামনে কোনও রকমভাবে তার ভাবমূর্তি নষ্ট করা যায় তখনই তারা আসল আঘাতটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে করবে। এগুলো কোবলমাত্র ভূমিকা। অর্থাৎ আসল আঘাত তারা এখনো শুরু করে নি। তারা কেবলমাত্র মিডিয়ায় নেতিবাচক প্রচারনা করে দেখছে যে এর ফলাফল কি হয়। আমার ধারণা তারা যেটা আশা করেছিলো সেটা হয়েছে। সেটি হলো আওয়ামী লীগের মতো একটি শক্তিশালী দলে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে এই যে নেতিবাচক প্রচারণা করা হলো এর কোনও সঠিকভাবে যুক্তি দিয়ে সত্যিকারের কোনও প্রতিবাদ আমার নজরে পড়েনি। একমাত্র ব্যাতিক্রম হচ্ছে বাংলা ইনসাইডারের সৈয়দ বোরহান কবীর। তিনি প্রথম থেকে এর প্রতিবাদ করে গেছেন। তিনি অন্যের মতো এটি সঠিক নয় না বলে একের পর এক যুক্তি দিয়ে এই বিষয়টি জনগণকে জানাবার চেষ্টা করেছেন। এমনকি তিনি দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনেও লিখেছেন। এবং প্রত্যেক জায়গায় তিনি যুক্তি দিয়ে বলেছেন।
আর এরপরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা গওহর রিজভী ডয়েচে ভেলেতে এর প্রতিবাদ করেছেন। সেখানে ডয়েচে ভেলের নামকরা সাংবাদিক টিম সেবাস্টিয়ানের প্রশ্নে আবার এই আল জাজিরার প্রসঙ্গ আসে। এবং তিনি অত্যন্ত বিচক্ষণতার সাথে এইসব প্রশ্নের উত্তর দেন। টিম সেবাস্টিয়ান গওহর রিজভীকে নোটের পরে নোট অনেক বড় বইয়ের সমান হবে, সেই সমস্ত পয়েন্ট তুলে আনছিলেন যাতে তাকে একের পর এক ঘায়েল করা যায়। এমনকি যখন প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর গওহর রিজভী সঠিক, সুন্দরভাবে এবং যুক্তি দিয়ে দিয়েছেন। যেমন একটি উদাহরণ দেই, তিনি যখন আমাদের সেনাপ্রধানকে নিয়ে কথা বলেন। তখন তিনি বোঝান তিনি যখন ক্যাডেটও হননি তখন তার ভাইদের নিয়ে তাকে জড়ানো হলো। এর কি যুক্তি আছে ? কিন্তু এর কোনও জবাব টিম সেবাস্টিয়ান দিতে পারলো না।
তারপরে আর একটি জায়গায় গওহর রিজভী যাতে বিরক্ত হন সেজন্য তাকে বলা হয় আপনাকে তো উপদেষ্টা করা হয়েছে এবং টাকা দেয়া হয় যাতে করে আপনি সরকারের এই নেতিবাচক কাজগুলোকেও সমর্থন করবেন। তিনি শুধু প্রতিবাদ স্বরূপ না না বলে অন্যান্য পয়েন্টে আলাপ করলেন। এর কিছু পরে যখন গওহর রিজভীকে উত্তর দিতে না দিয়েই তারা অন্য প্রশ্নে ঢুকে যাচ্ছিলেন তখন গওহর রিজভী বলেন, শুনুন আপনি আমাকে প্রশ্ন করেছেন আমাকে উত্তর দিতে হবে। আমি সবই বুঝলাম তখন থেকে আপনি একের পর এক বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক সব প্রশ্ন করলেন। বাংলাদেশের যে উন্নতি হয়েছে, কোভিড-১৯ এ যেখানে আপনার দেশ পর্যন্ত কিছুই সঠিকভাবে করতে পারে নি সেখানে জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের দেশে সঠিকভাবে করেছেন। আপনার দর্শকদের তো আপনি সেটি বলছেন না। তার মানে আপনাকে টাকা দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশের নেতিবাচক প্রচারণার জন্য।
আমি বলতে চাচ্ছি এই যে, জিনিষটি এর আসল প্রতিবাদের ভাষা ছিলো যুক্তিপূর্ণ দিয়ে। কারণ যখন মিডিয়াতে বলে তখন তার জবাব মিডিয়াতেই দিতে হয়। লেখার জবাব লেখায়, কথার জবাব কথায় এটিই বিশ্বে প্রমানিত এবং এতেই কাজ হয়। শুধু আন্দাজে বলে দিলাম যে ঠিক বলা হয়নি তাতেই লোকজন বিশ্বাস করবে এটা হতে পারে না। এতো বড় আওয়ামী লীগের কি কোনও প্রচার সেল আছে ? আমার তো মনে হয় নাই। হয় তারা এই করোনাতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে অথবা তারা করোনার টিকা নেয়ার অপেক্ষায় আছে। যদি তাই না হতো তাহলে শুধুমাত্র একটি কাজই সফলতার সাথে হচ্ছে আর তা হলো যারা অন্য দল থেকে ঘুরে আওয়ামী লীগে আসছে তাদেরকেই গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হচ্ছে। তারাই বড় বড় কাজ করছে। কিন্তু যখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সরাসরি আঘাত আসছে তখন তার যুক্তিপূর্ণ উত্তর দেয়ার জন্য লোকের অভাব দেখা যাচ্ছে।
এতো বুদ্ধিজীবী এতো রাষ্ট্রীয় পদক দেওয়া হয় বছরের পর বছর তাহলে তারা কি করছে। আমরা না হয় সাধারণ লোক, আমরা কিছু করি নাই যার জন্য রাষ্ট্র আমাদের কোনও পদক বা কিছু দেবে। আর আমি সেটা আশাও করি না। আমরা পদক পাওয়ার জন্য বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বস করি না, আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কারণে তার আদর্শে বিশ্বাসী। আমরা জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশিত পথে কথা বলি তাকে বিশ্বাসের কারণে। তিনি এতো বুদ্ধিজীবীকে পদক দিলেন কিন্তু এখন এইসব বুদ্ধিজীবীরা কোথায় গেলেন। আমি একটি উদাহরণ দেই, ১/১১ তে আমি তখনকার যে প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দীন আহমদের অফিসে আমি একা গিয়েছিলাম। নেত্রীকে বিদেশে পাঠানো প্রয়োজন ছিল। তখন আমি কোনও লোক খুঁজে পাই নাই। সমস্ত দেশবাসি টেলিভিশনে দেখেছে বিষয়টি। তবুও তো চেষ্টা করেছি।
জনগণের চেষ্টায় সবকিছু মিল হয়েছে। আমি এখানে কোনও কৃতিত্ব নিচ্ছি না কিন্তু আমি এখানে চেষ্টা টা তো করেছি। সেটা এখন আওয়ামী লীগের মনে নাই। যদিও মনে থাকার দরকারও নেই। কিন্তু এই সময় যেখানে সরাসরি তিনি সরকারের সঙ্গে যুক্ত নয় বা দলের সঙ্গে যুক্ত নয়, তিনি নিজে অত্যন্ত পরিশ্রমী এবং সত্যিকারে বুদ্ধিজীবী বলতে যদি বোঝায়, বয়স খুব কম কিন্তু আমি অবশ্যই সৈয়দ বোরহান কবীরকে একজন বুদ্ধিজীবী বলবো। কারণ যেকোনও সময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আঘাত করলে আমি একটি ঘটনা আজ পর্যন্ত দেখি নাই যেখানে নাকি কোনও না কোনও ভাবে তার যুক্তিপূর্ণ প্রতিবাদ সৈয়দ বোরহান কবীর করেন নি। এই বোরহান কবীর কিন্তু রাষ্ট্রীয় কোনও স্বীকৃতি পায়ও নি পাওয়ার দরকারও বোধহয় তার নেই। কারণ তার কাজ তো সে কারোর মুখের দিকে চেয়ে করেন না।
এখন এটি প্রমাণ হলো যে আসলে আওয়ামী লীগে দায়িত্বপূর্ণ কোনও লোক নেই। এরা খামোখা গলাবাজি করতে পারে। যুক্তি দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাজগুলিকে দেশে এবং বিদেশের জনগণের মধ্যে প্রচার করতে হবে। যেকোনও অপপ্রচারকে বাধা দিতে হবে তার জন্য উপযুক্ত কোনও সেল নেই। আজও পত্রিকাতে দেখলাম তারা একটি কমিটি গঠন করলেন। শুধু এগুলো করে তো কোনও লাভ হবে না। আসলে কোথায় কোন লোক আছে সেটা খুঁজে বের করতে হবে এবং যদি খুঁজে বের করা না হয় মুখে যত বড় বড় কথাই বলা হোক না কেন যখন আমাদের প্রতি চরম আঘাত আসবে তখন কি হবে। ইতিমধ্যে ষড়যন্ত্রকারীদের টাকা পয়সা লোকজন এবং সবচেয়ে বড় যে তাদের সম্পদ সেটা হচ্ছে আওয়ামী লীগের দলে ভেতরে এবং আওয়ামী লীগের সরকারের ভেতরে তাদের লোক ঢুকে গিয়েছে।
সুতরাং এই আঘাতকে প্রতিহত করতে হলে এখন থেকে অবশ্যই সঠিকভাবে আওয়ামী লীগকে হতে হবে। আমার কাছে মনে হচ্ছে আওয়ামী লীগ তার সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। এখন যদি জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ২ দিনের জন্য জ্বরে পড়ে বসে শুয়ে থাকতে হয় এবং কাজ না করেন তাহলে বাংলাদেশের অবস্থা কি হবে তা চিন্তা করা কঠিন। মাত্র আমি ২ দিনে কথা বললাম সেই জায়গায় বছরের পর বছর তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। দেশ অবশ্যই আগাচ্ছে এতে কোনও সন্দেহ নাই। কিন্তু শুধু আগালে হবে না। শুধু ভালো কাজ করলেই হবে না সেটি জনগণকে দেশে এবং বিদেশে বোঝতে হবে। এই জায়গাতে আমাদের বিরাট রকমের একটি ফারাক সৃষ্টি হয়েছে এবং এইখানে যোগ্য লোককে বসানোর জন্য আমি আকুল আবেদন জানাচ্ছি।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি
প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর
রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা
করবেন।
প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে
আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা
নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর। আমার ধারণা যারাই প্রথম আলো কিনেন না
কেন তারা প্রথম দিকে মতিউর রহমান সাহেবকে রাখলেও পরবর্তীতে ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে
সম্পাদক পরিবর্তন করবে। আর প্রথম আলো যদি কোন যুক্তিপূর্ণ লোকের কাছে দেয় তাহলে আমার
মতে এখানে সম্ভবত আনিসুল হক সাহেব সম্পাদক হবেন। কারণ তার প্রতি লোকের অনেক শ্রদ্ধাবোধ
আছে এবং তিনি সবসময় একটা রেড লাইন রক্ষা করে চলেন। এটা আমরা সকলেই জানি। তার সাথে
অনেকেরই ভালো সম্পর্ক এবং তিনি খুবই জ্ঞানী
লোক।
এর আগে মতিউর রহমান যখন একতা থেকে আজকের কাগজে যান, তখন তার উদ্দেশ্যই
ছিল যে, একটি পত্রিকা কীভাবে চলে সেটা শেখা এবং এখান থেকে একসাথে সাংবাদিক নিয়ে বেরিয়ে
যাওয়া। তিনি সেটা করেছিলেন। তারপর ভোরের কাগজ থেকে একই কাজ করেছেন। সুতরাং তার সত্যিকারের
নীতিবোধ বলতে যেটা বোঝায় সেটা দুর্ভাগ্যবশত তিনি প্রমাণ করতে পারেননি।
তিনি এক সময় কমিউনিস্টদের সাথে থাকলেও এখন তার চেয়ে বড় দক্ষিণপন্থী
পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়াই কঠিন। এ কারণে প্রথম আলো যে বিক্রি হবে এই ব্যাপারে সাধারণ লোকের
ভিতরে এখন আর কোন সন্দেহ নেই।
এখন প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টারের কী হবে এই নিয়ে আলাপ আলোচনা হচ্ছে
এবং এই আলাপ আলোচনা খুব দীর্ঘদিন যে চলবে তা না। আমার মনে হয় জুন-জুলাই মাসের ভিতরেই
এর একটা ফয়সালা হয়ে যাবে। কারণ স্বাভাবিক ভাবেই বুঝি যে, একটি পত্রিকা পাঠকপ্রিয়তা
পেতে বেশ সময় লাগে। এটা একদিন দুইদিনের ব্যাপার না। আবার ঠিক তেমনিভাবে যখন পাঠকপ্রিয়তা
কমতে থাকে সেটাও একদিন দুইদিনে হয় না। ধীরে ধীরে হয়। এই মিডিয়া জগতের নিয়মই তাই।
আমি ১৯৬১ সালে পত্রিকা বলতে শুধুমাত্র ইত্তেফাক এর কথাই জানতাম।
সেই ধারণা থেকে বলতে পারি এখন প্রথম আলোর যদি কিছু কর্মী এর চেয়ে ভালো কোন সুযোগ সুবিধা
দেখেন তাহলে তারা বিক্রি হওয়ার আগেই চলে যাবেন। কারণ স্বাভাবিকভাবেই একজন সাংবাদিকের
একটা ক্যারিয়ার আছে এবং প্রথম আলোর মতো পত্রিকাতে কাজ করে তিনি তো যে কোন পত্রিকায়
যেতেও পারবেন না। তার কারণ গেলে তার ওই লেখার যে মান সেটা মূল্যায়ন নাও হতে পারে। তবে
আমার ধারণা প্রথম আলোতে কাজ করেছেন এমন যে কাউকে টেকনিক্যাল গ্রাউন্ডে অনেক গুরুত্ব
দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে আমি অবাক হব না যদি দু এক মাসের ভিতরে দেখা যায় যে আস্তে আস্তে
প্রথম আলো বিভিন্ন কর্মী অন্য পত্রিকায় যাওয়া শুরু করে দিয়েছেন।
ব্যাংক মার্জারের যেমন একটি ঘটনা বর্তমানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ঠিক
তেমনি পত্রিকা জগতেও শিল্প গোষ্ঠীর যে গন্ডগোলের ঘটনা ঘটেছে এটিও ব্যাংক মার্জারের
ঘটনার পর্যায়ে চলে যাবে। ব্যাংকিং ক্ষেত্রে দেখা যায়, দুটি ব্যাংক একীভূত হচ্ছে। আর
এদিকে দেখা যাবে, সংবাদকর্মীরা অন্য পত্রিকায় চলে যাচ্ছে।
তবে আমার মনে হয় না, এখন যে অবস্থা চলছে এতে প্রথম আলো আর আগের
মতো প্রথম আলো থাকতে পারবে। এটা কিছুতেই সম্ভব না এটি মোটামুটিভাবে নিশ্চিত। তাই আমার
মনে হয় প্রথম আলো সেই ব্যাংক মার্জারের পর্যায়ে চলে এসেছে। এখন অন্য পত্রিকা যাদের
আছে, তারাও প্রথম আলো কিনে নিতে পারেন। এটি সম্ভব। এরকম শিল্পগোষ্ঠীর কোন কমতি বর্তমানে
বাংলাদেশে নেই। যে কোন শিল্প গোষ্ঠীই এটা কিনবে।
তবে আমি আশা রাখব, যারাই প্রথম আলো কিনবে, তারা যেন অন্তত পক্ষে
এটা খেয়াল রাখে যাতে সাংবাদিকদের কোন ক্ষতি না হয়। সুতরাং এদেশের একজন সাধারণ নাগরিক
হিসেবে আমার দাবী হচ্ছে সাংবাদিকরা যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:০৬ পিএম, ১৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সোনালী যুগ পার করছেন। ইতিমধ্যে টানা চার মেয়াদে তুমুল ম্যান্ডেটের সাথে অধিষ্ঠিত হওয়ার পর, তিনি বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী মহিলা সরকার প্রধানের লরেল ধরে রেখেছেন। জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ের মধ্য দিয়ে তিনি পঞ্চম্বারের মত ক্ষমতা নিশ্চিত করে এই অঞ্চলের প্রায় সব মহল থেকে প্রশংসার কুড়িয়েছেন। বিশ্বে এমন ঘটনা বিরল যেখানে কারও নেতৃত্বে থাকার ব্যাপারে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ চীন এবং ভারত উভয়ই একমত। শেখ হাসিনা সেই বিরল একটি দৃষ্টান্ত। মত কিংবা রাজনৈতিক আদর্শ, নির্বিশেষে সকল আঞ্চলিক শক্তিগুলো তার আসন্ন প্রশাসনকে অভিনন্দন জানায়। তবে জানুয়ারির নির্বাচনের পরে বেশিরভাগেরই দৃষ্টি যুক্তরাষ্ট্রের দিকে স্থির ছিল। কারণ বাংলাদেশের গনতন্ত্র নিয়ে নির্বাচনের আগে থেকেই বেশ সরব ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট বাংলাদেশের নির্বাচন অবাধ এবং সুষ্ঠু হয়নি বললেও মার্কিন কর্মকর্তারা নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দেয় এবং একসঙ্গে কাজ করারও আশাবাদ ব্যক্ত করে। নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের উপর যে মার্কিন চাপ দৃশ্যমান ছিল, যুক্তরাষ্ট্রের এমন বক্তব্যে শেখ হাসিনা সরকারের উপর সেই মার্কিন চাপ অনেকটাই কমছে এবং তার আগামী পথচলাকে অনেকটাই সহজ করে দিয়েছে।
তবুও, অনেকেই বলছেন বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ব্যাপকভাবে বয়কট করা হয়েছে। এর মূল কাওন হিসেবে তারা বলছেন, বিরোধী দলে নির্বাচন বয়কট এবং বিরোধীদের বয়কটের আহ্বানের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে সাধারণ জনগণের ভোট বর্জন।
অংশগ্রহণ নাকি বয়কট?
দেশটির প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং তার মিত্ররা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও সব বিরোধী দল অবশ্য তাদের অনুসরণ করেনি। নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে সাতাশটি দল প্রার্থী দিয়েছিল। এছাড়া প্রায় ৩০০ আসনের বিপরীতে প্রায় ১৯০০ স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। তাই নির্বাচনে বিএনপির অনুপস্থিতি লক্ষ্য করা গেলেও, একাধিক নির্বাচনী এলাকার ব্যাপক প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন হয়েছে এবং ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করেছে।
নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল ৪১.৮ শতাংশ। গত নির্বাচনের তুলনায় এই সংখ্যা কম হলেও সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এই সংখ্যাকে কম বলার সুযোগ নেই। অনেকে এটিকে বিরোধী দলের নির্বাচন বয়কট জনমনে প্রতিফলিত হয়েছে বলে দেখছে। বিরোধীদের বয়কট নিঃসন্দেহে ভোটার উপস্থিতিতে প্রভাব ফেলেলেও, কম ভোটার উপস্থিতি মানেই জনগণ ভোটকে প্রত্যাখ্যান করেছে এওনটি ভাবার কোন সুযোগ নেই। মূলত বিএনপির বিভিন্ন নির্বাচন বিরোধী কর্মসূচী, বিক্ষোভ, সমাবেশ, গাড়িতে ট্রেনে বাসে অগ্নিসংযোগ, ভোটের আগের দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টার হরতাল-অবরোধের ডাক দেশের পরিস্থিতিকে অস্থির করে তোলে। যার ফলে নিজদের নিরাপত্তার জন্যই অনেক ভোটার নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে না গিয়ে বাড়িতে থাকতে বাধ্য হয়েছে।
তবে যে সব নির্বাচনী এলাকায় একাধিক জনপ্রিয় প্রার্থী নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন সেসব এলাকায় ভোটার উপস্থিতি ছিল ৬০ শতাংশের বেশি। আবার যেস এলাকায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা কম ছিল সেসব এলাকায় ভোটার উপস্থতি ছিল কম। অর্থাৎ ভোটাররা বিএনপির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে নির্বাচন বর্জন করেনি; প্রতিদ্বন্দ্বিতাই মূলত ভোটার উপস্থিতিকে প্রভাবিত করেছে।
তবে নির্বাচন কমিশনের রিপোর্ট করা ভোটারদের পরিসংখ্যান নিয়ে বিভ্রান্তি রয়ে গেছে। দুপুরে নির্বাচন কমিশনের করা প্রেস ব্রিফিংয়ে ভোটার উপস্থিতি মাত্র ২৭ শতাংশ ঘোষণা করা হলেও, শেষে ৪১.৮ শতাংশ চূড়ান্ত ভোটার উপস্থিত ঘোষণা করা হয়। এর কারণ হিসেবে নির্বাচন কমিশন জানায়, দুপুরের সংখ্যাটি প্রকৃত সময়ে ছিল না। যেহেতু বাংলাদেশে ম্যানুয়াল পেপার ব্যালট সিস্টেম ব্যবহার করা হয় যেখানে ভোটগুলি হাতে গণনা করা হয় এবং গ্রামীণ এলাকা থেকে ফলাফল প্রেরণে কয়েক ঘন্টা পিছিয়ে ছিল। যা দুপুরের ভোটার উপস্থতি এবং সর্বশেষ ভোটার উপস্থিতির মধ্যে ব্যবধান ব্যাখ্যা করে। সেক্ষেত্রে মোট ভোটের ১৪ শতাংশ শুধু শেষ সময়ে দেয়া হয়েছে এমন অভিযোগ সত্য নয়।
নির্বাচন কমিশন হয়ত সঠিক। কিন্তু যেহেতু সন্দেহের তীর ছোড়া হয়েছে সেহেতু, নির্বাচন কমিশন সমস্ত ভোটকেন্দ্রের প্রতি ঘণ্টায় ভোট গণনার বিস্তারিত একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে সন্দেহের সমাধান করতে পারে। এ ধরনের স্বচ্ছতা ভোটদানের প্রশ্নে স্পষ্টতা প্রদান করবে এবং যেকারো বিভ্রান্তি দূর করতে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান হিসেবে কাজ করবে।
বাংলাদেশ কি একদলীয় রাষ্ট্র?
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের আরেকটি নিরঙ্কুশ বিজয়ের পর অনেকেই বাংলাদেশ একটি একদলীয় রাষ্ট্রের দিকে ধাবিত হচ্ছে বলে সতর্ক করেছেন। ৩০০ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ২২৩টি আসনে এবং আওয়ামী লীগের অনুগত স্বতন্ত্ররা আরও ৬২টি আসনে জয়লাভ করে। যার ফলে সংসদে ৯৫ শতাংশ নির্বাচিত সংসদ সদস্যই আওয়ামী লীগের পক্ষে এবং সংসদে কোন অর্থবহ বিরোধী দলের অস্তিত্ব নেই।
তবে বিষয়টি এত সরল নয়। প্রথমত, সংসদের স্বতন্ত্র সদস্যদের আওয়ামী লীগের ল্যাপডগ বলে উপেক্ষা করা বাংলাদেশের রাজ্নৈতিক প্রেক্ষাপটে কতটা যৌক্তিক সে প্রশ্ন থেকে যায়। কারণ প্রত্যেক স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লী প্রার্থীর সাথে তীব্র নির্বাচনী লড়াইয়ের পরই বিজয়ী হয়েছেন। তারা সংসদে তাদের ভোট এবং তাদের বক্তৃতায়র পুরো স্বাধীনতা ভোগ করবেন। বাংলাদেশের সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে সংসদ সদস্যদের তাদের দলের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু স্বতন্ত্র প্রার্থী কোন দলের অধীনে না থাকায় তারা এই বিধিনিষেধের বাইরে। এই প্রেক্ষাপটে, শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকা সত্ত্বেও, নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করতে ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আ.লীগ প্রশংসার যোগ্য। আ.লীগ দলের সিনিয়র ব্যক্তিদের স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অনুমতি দিয়ে, অবশ্যই সম্ভাব্য অন্তর্দলীয় বিরোধের ঝুঁকিতে পড়েছে। তবুও, এটি ভোটারদের প্রকৃত নির্বাচনী বিকল্প প্রদান এবং সংসদে মত বৈচিত্র্যকে প্রসারিত করেছে।
উপরন্তু, একটি নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একটি অপ্রতিরোধ্য সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করা একটি দল একদলীয় রাষ্ট্রের সমতুল্য নয়। বাংলাদেশকে একদলীয় রাষ্ট্র না বানিয়ে অতীতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একই রকমের সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে। একইভাবে ভারত ও জাপান বহুদলীয় গণতন্ত্র না হারিয়ে একদলীয় আধিপত্য অর্জন করেছে। মূল প্রশ্ন হল আওয়ামী লীগ নিজে এই অতি সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদের আয়োজন করেছিল নাকি বিএনপির নির্বাচন বয়কটের কারণে এটি অনেকটা অনিবার্য ছিল।
বিএনপি যদিও যুক্তি দেবে—যে কোনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড কখনোই ছিল না এবং ২৮ অক্টোবরের সমাবেশের পর বিএনপি নেতাদের দমন-পীড়ন ও গণগ্রেপ্তার সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ এবং তাদের অংশগ্রহণকে বাধাগ্রস্ত করেছে। তবে, ২৮ অক্টোবরের আগেও বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রত্যাখ্যান করে ইতিমধ্যেই নির্বাচনে নিজেদের অপ্রাসঙ্গিক করে তুলেছিল। নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন কমিশনের ডাকা একটি নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার জন্যই ২৮ অক্টোবরের বিক্ষোভ করেছিল দলটি। ফলে সেই সময়ে কমিশনের কর্তৃত্বের অধীনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, অরাজকতা দমনে এবং নির্বাচনের অগ্রগতি নিশ্চিত করতে শক্তি প্রয়োগ করেছিল। এটি কোনভাবে নির্বাচন বর্জনের কারণ হতে পারে। বলপ্রয়োগের অসামঞ্জস্যপূর্ণ ব্যবহার আলাদা মূল্যায়নের প্রয়োজন, তবে এটি নির্বাচনী নয় বরং আইন-শৃঙ্খলার চোখে দেখাই উত্তম।
দায়বদ্ধতা
এমন উদ্বেগজনক দাবি করার পরিবর্তে, পর্যবেক্ষকদের জিজ্ঞাসা করা উচিত ছিল যে প্রাথমিক বিরোধী দল বিএনপি কেন মাঠ হারাল। সরকার যেমন শক্তিপ্রয়োগের জন্য যাচাই-বাছাইয়ের পরোয়ানা দেয়, তেমনি বিএনপিকে তার গণতান্ত্রিক দায়িত্ব পালনের জন্য জবাবদিহি করতে হবে।
১৭ কোটি মানুষের প্রতিনিধিত্বকারী একটি প্রধান রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির দায়িত্ব ছিল সংসদে ভোটারদের আওয়াজ দেওয়া। নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না এমন অনুমানের উপর ভিত্তি করে নির্বাচন বর্জন করে, তারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এবং জনগণের অধিকারকে উপেক্ষা করেছে। তর্কের খাতিরে আ. লীগের অধীনে নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে না ধরে নিলেও, বিএনপি’র তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত মে ২০১১ সালে এটিকে অসাংবিধানিক রায় দিয়েছিল। তাছাড়া, পূর্ববর্তী তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা তার ম্যান্ডেটকে অতিক্রম করেছিল, জাতীয় জরুরি অবস্থা জারি করেছিল এবং দলীয় নেতাদের বন্দী করেছিল রাজনীতিকে বাধাগ্রস্থ করেছিল।
নির্বাচন বয়কট শুধুমাত্র ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে সুফল এনে দিয়েছে। বিএনপি নির্বাচনের মাধ্যমে জনসাধারণের ম্যান্ডেট অনুসরণ করার চেয়ে তত্ত্বাবধায়ক শাসনের মধ্যে একটি সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরির উচ্চাকাঙ্ক্ষা করেছিল। গণতন্ত্রের প্রতি ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গীকার নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও মূলত বিএনপি’র এই আত্ম বিধ্বংসী এবং অপরিপক্ক রাজনৈতিক সিদ্ধান্তই আওয়ামী লীগের ক্ষমতার পথ সুগম করেছে।
বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যাপক বয়কট সর্বজন গৃহীত
মন্তব্য করুন
এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা করবেন। প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর
‘এসো, এসো, এসো হে বৈশাখ।/তাপসনিশ্বাসবায়ে মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়ে/ বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক/যাক পুরাতন স্মৃতি, যাক ভুলে-যাওয়া গীতি/ অশ্রুবাষ্প সুদূরে মিলাক/ মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা,/ অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা।’ অর্থাৎ ১৪৩১ বঙ্গাব্দে পুরাতন স্মৃতি মুছে যাক, দূরে চলে যাক ভুলে যাওয়া স্মৃতি, অশ্রুঝরার দিনও সুদূরে মিলাক। আমাদের জীবন থেকে বিগত বছরের ব্যর্থতার গ্লানি ও জরা মুছে যাক, ঘুচে যাক; নববর্ষে পুরাতন বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক। রমজান ও ঈদের পর দেশের মানুষের জীবনে আরো একটি উৎসবের ব্যস্ততা নতুন বছরে মঙ্গল শোভাযাত্রায় উদ্ভাসিত।ফিলিস্তিনবাসীর উপর হামলা আর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে এর মধ্যে মারা গেছেন অসংখ্য মানুষ।তবু মৃত্যুর মিছিলে জীবনের গান ফুল হয়ে ফুটেছে। যুদ্ধের সংকট আমাদের পরাস্ত করতে পারেনি কারণ পৃথিবীর মৃত্যু উপত্যকা পেরিয়ে এদেশে বৈশাখ এসেছে নতুন সাজে।
সমাজ, রাষ্ট্রে নেতার ছড়াছড়ি। নেতাদের পোস্টার, ফেস্টুনে ভরে গেছে শহর, গ্রাম। তবে এদের বেশিরভাগই সুবিধাভোগী, অর্থলোভী। এদের মধ্যে আদর্শের লেশমাত্র নেই। সততা, দেশপ্রেম এবং জনগণের প্রতি ন্যুনতম দায়বদ্ধতা নেই। এদের কোনো পেশা নেই। রাজনীতি কে এরা অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। নেতা নয়, বরং এদেরকে নির্দ্বিধায় চাঁদাবাজ, দখলদার, মাদক ব্যাবসায়ী বলা যায়। রাজনৈতিক দলের নাম ভাঙিয়ে এরা হেন অপকর্ম নেই যা করে না। এদের অনেকে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, অবৈধভাবে দখল এবং মাদক ব্যাবসার মত জঘন্য কাজের সাথে সম্পৃক্ত। এসব আদর্শহীন, অসৎ, সুবিধাভোগী, অর্থলোভী নেতাদের ভীড়ে সৎ, দেশপ্রেমিক, আদর্শিক নেতাদের দেখা পাওয়া দুষ্কর। সমাজ, রাষ্ট্রে এমন নেতাও আছেন যারা দেশ এবং দেশের মানুষের জন্য তাদের সর্বস্ব উজাড় করে দেন। ষাট, সত্তর, আশি এবং নব্বইয়ের দশকে এমন নেতার সংখ্যা ছিল বেশি। বর্তমানে হাজারো অসৎ নেতার মধ্যে এমন সৎ, আদর্শিক, দেশপ্রেমিক নেতা খুঁজে পেতে মাইক্রোস্কোপের প্রয়োজন হয়। দিন দিন যেভাবে রাজনীতিতে অসৎ নেতাদের দাপট বাড়ছে, আগামিতে প্রকৃত নেতাদের খুঁজতে হয়ত ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপ প্রয়োজন হবে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সোনালী যুগ পার করছেন। ইতিমধ্যে টানা চার মেয়াদে তুমুল ম্যান্ডেটের সাথে অধিষ্ঠিত হওয়ার পর, তিনি বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী মহিলা সরকার প্রধানের লরেল ধরে রেখেছেন। জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ের মধ্য দিয়ে তিনি পঞ্চম্বারের মত ক্ষমতা নিশ্চিত করে এই অঞ্চলের প্রায় সব মহল থেকে প্রশংসার কুড়িয়েছেন। বিশ্বে এমন ঘটনা বিরল যেখানে কারও নেতৃত্বে থাকার ব্যাপারে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ চীন এবং ভারত উভয়ই একমত। শেখ হাসিনা সেই বিরল একটি দৃষ্টান্ত। মত কিংবা রাজনৈতিক আদর্শ, নির্বিশেষে সকল আঞ্চলিক শক্তিগুলো তার আসন্ন প্রশাসনকে অভিনন্দন জানায়। তবে জানুয়ারির নির্বাচনের পরে বেশিরভাগেরই দৃষ্টি যুক্তরাষ্ট্রের দিকে স্থির ছিল। কারণ বাংলাদেশের গনতন্ত্র নিয়ে নির্বাচনের আগে থেকেই বেশ সরব ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট বাংলাদেশের নির্বাচন অবাধ এবং সুষ্ঠু হয়নি বললেও মার্কিন কর্মকর্তারা নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দেয় এবং একসঙ্গে কাজ করারও আশাবাদ ব্যক্ত করে। নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের উপর যে মার্কিন চাপ দৃশ্যমান ছিল, যুক্তরাষ্ট্রের এমন বক্তব্যে শেখ হাসিনা সরকারের উপর সেই মার্কিন চাপ অনেকটাই কমছে এবং তার আগামী পথচলাকে অনেকটাই সহজ করে দিয়েছে।