নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৫৯ পিএম, ০২ মার্চ, ২০২১
(বাংলাদেশে সুশীল সমাজকে নিয়ে আলোচনা এখন তুঙ্গে। বিশেষ করে ‘মুশতাকের মৃত্যু, নির্বাচন কমিশন ইত্যাদি নিয়ে সুশীল সমাজ অত্যন্ত সক্রিয়। সুশীল সমাজ নিয়ে কিছু লিখেছেন আকবর আলী খান। প্রাসঙ্গিক বিবেচনা করে তার ‘আজব ও জবর-আজব অর্থনীতি’ গ্রন্থে ‘বাংলাদেশে সিভিল সমাজ: বাস্তবতার সন্ধানে’ একটি ধারণা নিবন্ধের কিছু অংশ উদ্বৃত করা হলো।)
আজকাল সুশীল শব্দটির যত্রতত্র আকছার অপপ্রয়োগ দেখা যাচ্ছে। কোনো কোনো উৎসাহী আমলা ‘সিভিল সার্ভেন্ট’-এর প্রতিশব্দ হিসেবে লিখছেন ‘সুশীল সেবক’। এখানে একসঙ্গে দুটি অপরাধ করা হচ্ছে। প্রথমত, ‘সিভিল সার্ভেন্ট’-এর প্রতিশব্দ রূপে ‘সুশীল সেবক’ ব্যবহার বাংলাদেশ সংবিধানে সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। বাংলাদেশের সংবিধানের ১৫৩ অনুচ্ছেদ অনুসারে সংবিধানের বাংলা পাঠ চূড়ান্ত। সংবিধানের ১৩৫ অনুচ্ছেদে ‘সিভিল পোষ্ট’- এর স্থলে ‘অসামরিক পদ’ শব্দ-যুগল ব্যবহৃত হয়েছে। সংবিধানে চাকরিসংক্রান্ত বিষয়ে ‘সিভিল’ অর্থ হলো ‘অসামরিক’; কোনো অবস্থাতেই ‘সুশীল’ নয়। ‘সার্ভেন্ট’ শব্দটি সংবিধানে ব্যবহৃত হয়নি। তবে সংবিধানের ১৩৩ অনুচ্ছেদে ‘সার্ভিস’ শব্দের স্থলে ‘কর্ম’ শব্দটি প্রয়োগ করা হয়েছে। তাই সংবিধান অনুসারে ‘সিভিল সার্ভেন্ট’-এর প্রতিশব্দ হবে ‘অসামরিক কর্মে নিযুক্ত ব্যক্তি’।
দ্বিতীয়ত, সরকারি কর্মচারীদের সুশীল সেবক বর্ণনা করা একটি ডাহা মিথ্যা প্রচারণা। ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস সম্পর্কে প্রায়ই বলা হতো যে এর ‘neither Indian, nor civil, nor service’। অর্থাৎ এরা ‘ইন্ডিয়ান’ নয় (এর বেশির ভাগ কর্মকর্তাই ইংরেজ ছিলেন, ভারতীয় নয়); মোটেও ‘সিভিল’ নয় (এদের অনেকেই ছিলেন অত্যন্ত উদ্ধত) এবং এদের মধ্যে সার্ভিসের লেশমাত্রও ছিলো না (এরা সেবা করতেন না; প্রজাদের শাসন করতেন)।
বাংলাদেশে ‘সিভিল সার্ভেন্ট’দের সম্পর্কেও একই মন্তব্য প্রযোজ্য। যাঁরা ‘সিভিল সার্ভেন্ট’দের সুশীল সেবক বলে জাহির করার চেষ্টা করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৪২০ ধারায় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
সুশীল শব্দটির সবচেয়ে ব্যাপক অপপ্রয়োগ হচ্ছে সুশীল সমাজ শব্দগুচ্ছ। ইংরেজি ‘সিভিল’ শব্দটির অনেক অর্থ রয়েছে। শব্দটির অর্থ শুধু ভদ্র, অমায়িক, বিনয়ী বা সুশীল নয়। ‘সিভিল কোর্টের’ পরিভাষা হলো ‘দেওয়ানি আদালত’। ‘সিভিল ওয়ারের’ অর্থ সুশীল যুদ্ধ নয়, গৃহযুদ্ধ। তেমনি ‘সিভিল ম্যারেজ’কেও কেউ সুশীল বিবাহ বলে না।
সুশীল শব্দটির সংজ্ঞা নিয়ে গোপাল ভাঁড়ের একটি চমৎকার কাহিনী রয়েছে। গল্পটি নিম্নরূপ: গোপাল একদিন রাজসভায় এসে বলল, ‘মহারাজ, আজ একজন সুশীল বালকের দেখা পেয়েছি।’
মহারাজ বললেন, ‘তুমি কী করে বুঝলে সে সুশীল বালক?’
গোপাল বলল, ‘বাপ আর ছেলে মাঠে কাজ করছিল। কিছুক্ষণ কাজ করার পর ছেলে বাবাকে বলল, ‘বাবা তুমি একটু দূরে সরে যাও, ‘আমি এখন গাঁজা টানব। গুরুজনের সামনে কখনো গাঁজা টানা উচিত নয়।’ এবার আপনিই বলুন, ‘ছেলেটি সুশীল কি না?’
সিভিল সমাজের লোকেরা গাঁজা-ভাং নিয়ে নেশা করে কি না জানি না। তবে তারা অনেক কাজ করে যা সুশীল লোকেরা করে না।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:২৬ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি
প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর
রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা
করবেন।
প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে
আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা
নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর। আমার ধারণা যারাই প্রথম আলো কিনেন না
কেন তারা প্রথম দিকে মতিউর রহমান সাহেবকে রাখলেও পরবর্তীতে ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে
সম্পাদক পরিবর্তন করবে। আর প্রথম আলো যদি কোন যুক্তিপূর্ণ লোকের কাছে দেয় তাহলে আমার
মতে এখানে সম্ভবত আনিসুল হক সাহেব সম্পাদক হবেন। কারণ তার প্রতি লোকের অনেক শ্রদ্ধাবোধ
আছে এবং তিনি সবসময় একটা রেড লাইন রক্ষা করে চলেন। এটা আমরা সকলেই জানি। তার সাথে
অনেকেরই ভালো সম্পর্ক এবং তিনি খুবই জ্ঞানী
লোক।
এর আগে মতিউর রহমান যখন একতা থেকে আজকের কাগজে যান, তখন তার উদ্দেশ্যই
ছিল যে, একটি পত্রিকা কীভাবে চলে সেটা শেখা এবং এখান থেকে একসাথে সাংবাদিক নিয়ে বেরিয়ে
যাওয়া। তিনি সেটা করেছিলেন। তারপর ভোরের কাগজ থেকে একই কাজ করেছেন। সুতরাং তার সত্যিকারের
নীতিবোধ বলতে যেটা বোঝায় সেটা দুর্ভাগ্যবশত তিনি প্রমাণ করতে পারেননি।
তিনি এক সময় কমিউনিস্টদের সাথে থাকলেও এখন তার চেয়ে বড় দক্ষিণপন্থী
পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়াই কঠিন। এ কারণে প্রথম আলো যে বিক্রি হবে এই ব্যাপারে সাধারণ লোকের
ভিতরে এখন আর কোন সন্দেহ নেই।
এখন প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টারের কী হবে এই নিয়ে আলাপ আলোচনা হচ্ছে
এবং এই আলাপ আলোচনা খুব দীর্ঘদিন যে চলবে তা না। আমার মনে হয় জুন-জুলাই মাসের ভিতরেই
এর একটা ফয়সালা হয়ে যাবে। কারণ স্বাভাবিক ভাবেই বুঝি যে, একটি পত্রিকা পাঠকপ্রিয়তা
পেতে বেশ সময় লাগে। এটা একদিন দুইদিনের ব্যাপার না। আবার ঠিক তেমনিভাবে যখন পাঠকপ্রিয়তা
কমতে থাকে সেটাও একদিন দুইদিনে হয় না। ধীরে ধীরে হয়। এই মিডিয়া জগতের নিয়মই তাই।
আমি ১৯৬১ সালে পত্রিকা বলতে শুধুমাত্র ইত্তেফাক এর কথাই জানতাম।
সেই ধারণা থেকে বলতে পারি এখন প্রথম আলোর যদি কিছু কর্মী এর চেয়ে ভালো কোন সুযোগ সুবিধা
দেখেন তাহলে তারা বিক্রি হওয়ার আগেই চলে যাবেন। কারণ স্বাভাবিকভাবেই একজন সাংবাদিকের
একটা ক্যারিয়ার আছে এবং প্রথম আলোর মতো পত্রিকাতে কাজ করে তিনি তো যে কোন পত্রিকায়
যেতেও পারবেন না। তার কারণ গেলে তার ওই লেখার যে মান সেটা মূল্যায়ন নাও হতে পারে। তবে
আমার ধারণা প্রথম আলোতে কাজ করেছেন এমন যে কাউকে টেকনিক্যাল গ্রাউন্ডে অনেক গুরুত্ব
দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে আমি অবাক হব না যদি দু এক মাসের ভিতরে দেখা যায় যে আস্তে আস্তে
প্রথম আলো বিভিন্ন কর্মী অন্য পত্রিকায় যাওয়া শুরু করে দিয়েছেন।
ব্যাংক মার্জারের যেমন একটি ঘটনা বর্তমানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ঠিক
তেমনি পত্রিকা জগতেও শিল্প গোষ্ঠীর যে গন্ডগোলের ঘটনা ঘটেছে এটিও ব্যাংক মার্জারের
ঘটনার পর্যায়ে চলে যাবে। ব্যাংকিং ক্ষেত্রে দেখা যায়, দুটি ব্যাংক একীভূত হচ্ছে। আর
এদিকে দেখা যাবে, সংবাদকর্মীরা অন্য পত্রিকায় চলে যাচ্ছে।
তবে আমার মনে হয় না, এখন যে অবস্থা চলছে এতে প্রথম আলো আর আগের
মতো প্রথম আলো থাকতে পারবে। এটা কিছুতেই সম্ভব না এটি মোটামুটিভাবে নিশ্চিত। তাই আমার
মনে হয় প্রথম আলো সেই ব্যাংক মার্জারের পর্যায়ে চলে এসেছে। এখন অন্য পত্রিকা যাদের
আছে, তারাও প্রথম আলো কিনে নিতে পারেন। এটি সম্ভব। এরকম শিল্পগোষ্ঠীর কোন কমতি বর্তমানে
বাংলাদেশে নেই। যে কোন শিল্প গোষ্ঠীই এটা কিনবে।
তবে আমি আশা রাখব, যারাই প্রথম আলো কিনবে, তারা যেন অন্তত পক্ষে
এটা খেয়াল রাখে যাতে সাংবাদিকদের কোন ক্ষতি না হয়। সুতরাং এদেশের একজন সাধারণ নাগরিক
হিসেবে আমার দাবী হচ্ছে সাংবাদিকরা যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:০৬ পিএম, ১৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।
দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই।
বারো বছর আগের কথা। ডেভিড ক্যামেরুন তখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। সে সময় একদিন তিনি একটি হাসপাতালের ওয়ার্ডে ঢুকে পড়লেন। রোগীর অনুমতি সাপেক্ষে রোগীর সাথে ছবি তুলতে গেলেন। বাঁধ সাধলেন ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা একজন চিকিৎসক। জীবাণু প্রতিরোধের কোন পদক্ষেপ না নিয়ে এবং চিকিৎসকের অনুমতি ব্যতিরেকে তিনি ওই কাজটি করছিলেন। ডেভিড ক্যামেরুন তাঁর ভুল বুঝতে পেরেছিলেন সাথে সাথে। ক্ষমা চাইলেন এবং ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে গেলেন।
এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা করবেন। প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর