নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৬ জুন, ২০২১
সম্প্রতি (১৬/৩/২০২১) বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে একটি অভিন্ন নিয়োগ নীতিমালা প্রণয়ন করেছেন। নানা সমালোচনা হলেও এটির কিছু ভালো দিকও আছে-বারবার অংশীজনের মতামত নেয়া হয়েছে যাতে এটি inclusive ও টেকসই উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হয়। তবে যে বিষয়টি ওই নীতিমালা প্রণয়নে আসেনি সেটি হলো: কিভাবে পদের বিজ্ঞাপন দেয়া হবে এবং কিভাবে অনলাইনে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
আমরা জানি টেকসই উন্নয়ন হলো "development that meets the needs of the present without compromising the ability of future generations to meet their own needs” (United Nations General Assembly, 1987, p. 43). আমরা এটাও জানি বাংলাদেশ টেকসই উন্নয়ন অর্জনে বিশ্বদরবারে দায়বদ্ধ। সেই দায়বদ্ধতা থেকে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন পদ সৃষ্টি, বিজ্ঞাপন, নিয়োগ পরীক্ষার মতো বিষয়গুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দিকনির্দেশনা দিতে পারতো। যেহেতু, সেই রকম দিকনির্দেশনা আমাদের নেই এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য থেকে শুরু করে বিভাগীয় সভাপতির ক্ষমতা প্রদর্শনে ব্যস্ত, আমাদের অভিজ্ঞতা ও পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদগুলো থেকে যা জানা যায়, এরকম একটি সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে কিভাবে টেকসই উন্নয়ন অর্জন সম্ভব হয় সেটা নিয়ে আমার আজকের আলোচনা এবং এই আলোচনার প্রেক্ষাপট জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে ৬ জন প্রভাষক নিয়োগের বিরুদ্ধে ৮ জন শিক্ষকের প্রতিবার ও রিট পিটিশন।
আমি ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল দর্শন বিভাগ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালযে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করি। ১৯৮৮ সালে যাত্রা শুরু করা এই বিভাগে আমরা তখন ৬ জন শিক্ষক। মহান আল্লাহ দেয়া এই শ্রেষ্ঠ উপহার যত্ন করে রাখতে চেষ্টা করেছি বিগত ৩১ বছর। আজ আমি এই বিভাগের সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ শিক্ষিক। সে এক অন্যরকম আনন্দ। আমার ছাত্ররা বিগত ১০ বছরে অনেক খুব ভালো ফল করে ঢাকা রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে -উন্মুক্ত, জগন্নাথ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন সহযোগী/সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কাজ করছে। তারা যেকোনো সময়ে অধ্যাপক হবে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেকে এখন অধ্যাপক। এমনকি একজন ছাত্রী কলা ও মানবিকী অনুষদে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে থেকে স্বর্ণপদক পেয়ে এখন কানাডাতে পিএইচডি করছে। এছাড়া অস্ট্রেলিয়া থেকে এম এ করে সরকারি কলেজ চাকরি করে এখন পিএইচডি করছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান নতুন নিয়োগ তরুণ মেধাকে কাজে লাগানোর জন্য প্রয়োজন। আমরা জানি সক্রেটিসের ছাত্র ছিলেন প্লেটো। আর প্লেটোর ছাত্র ছিলেন এরিস্টটল। একথা বলবার অর্থ হলো নতুনদের মেধা মূল্যবান। সেই মেধাকে দেশ ও জাতির কাজে লাগাতে বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্নভাবে নিয়োগ দিয়ে থাকে। জ্ঞান গরিমায় নতুনরা পুরাতনদেরকে হার মানিয়ে দিয়েছে। সুতরাং, বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা অপেক্ষা করি। প্রতিবছরই এখানে নিয়োগ হয়না। আবার প্রতিটি পদ তথা প্রভাষক থেকে অধ্যাপক-বিজ্ঞাপন দিতে হয়। উদ্দেশ্য উন্মুক্ত প্রতিযোগিতা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে থেকে যদি কেউ যোগ্য থাকেন তার জন্য সুযোগ রাখা। এখন অবশ্য সকলেই একদিন অধ্যাপক হতে পারেন আপগ্রেডিং প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে- সুতরাং নতুন কেউ যাতে না আসতে পারে সেজন্য উচ্চতর পদগুলোর বিজ্ঞাপন দেয়া হয় না। প্রাথমিকভাবে, বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ে টিচিং অ্যাসোসিয়েট নিয়োগ দেয়া হয়। যদি শুন্য পদ থাকে তবে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। আর উচ্চপদে নিয়োগ উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার মধ্যদিয়ে অর্জন করতে হয়। আর সেকারণেই তারা র্যাংকিংয়ে স্থান পায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ প্রক্রিয়া অন্য সকল প্রতিষ্ঠান থেকে আলাদা। পদ শুন্য থাকলেও নিয়োগ দেয়া বন্ধ থাকতে পারে - প্রত্যাশা আগামীতে হয়তো একজন আরো ভালো শিক্ষক পাওয়া যেতে পারে। যিনি শুধু শিক্ষকই হবেন না গবেষক হবেন।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন ধরণের শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়। কিছু শিক্ষক পাঠদান করবেন, কিছু শিক্ষক পাঠদান ও গবেষণা করবেন এবং কিছু শিক্ষক গবেষণা করবেন। সেখানে আছে অর্গানোগ্রাম। যদি ২টি অধ্যাপক থাকে তবে ৪টি সহযোগী অধ্যাপক, ৬টি সহকারী অধ্যাপক এবং ৮টি প্রভাষক পদ থাকে। অর্থাৎ, সকলেই অধ্যাপক হতে পারেন না।
একজন শিক্ষক ৪০ বছর একটি বিভাগের থেকে মানুষ গড়বেন। সুতরাং, কেবল প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়া যায় না। তার আরও অনেক বিষয় দেখা হয়ে থাকে। এই অন্য বিষয় দেখাটাকে যুক্তি দিয়ে অসার প্রমাণ করা যায়। তবুও আমরা এই পদ্ধতি মেনে নিয়েছি। ভালো কিছু চাই সে আশায় আমরা অপেক্ষায় থাকি।
সম্প্রতি অনুষদের এক সভায় একটি নতুন বিভাগের তরুণ শিক্ষকরা অধ্যাপকের পদ চেয়ে কথা বলছিলেন।উল্লেখ্য পদ সৃষ্টি ও বিজ্ঞাপনের জন্য দেশের সবচে পুরাতন বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভাগের শিক্ষকদের মতামতের ভিত্তিতে হয়ে থাকে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একটু ভিন্ন রকম। পদ সৃষ্টির রায় বিভাগের সকলের কাছ থেকে নেয়া হয় এবং সেটা অনুষদের সভায় উত্থাপিত হয় এবং সেখান থেকে অনুমোদিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলে সুপারিশ আকারে অনুমোদিত হয়। এরপর সেটা সিন্ডিকেট পাশ করে। এবং চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন।
পদ সৃষ্টিতে এভাবে বিভাগের শিক্ষকদের সুপারিশ প্রয়োজন হলেও বিজ্ঞাপন তথা নিয়োগের সিদ্ধান্ত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চেয়ারম্যান নিতে পারেন। একারণেই এখানে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। দর্শন বিভাগের ৬ জন অস্থায়ী প্রভাষকের নিয়োগ দেয়ার সিদ্ধান্ত মাননীয় উপাচার্য নিলেও বিভাগের শিক্ষকদের কিংবা অনুষদের মতামত নেয়া হয়নি।
আমরা মনে করি এই ৬ জন প্রভাষক নিয়োগের বিষয়টি যেভাবে ঘটছে তা টেকসই উন্নয়নের বিরোধী। টেকসই উন্নয়ন ন্যায়পরতা, অংশীজনের মতামত, rights of future generations, deliberation, inclusive decision making নৈতিক আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করে।এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এসবের বালাই নেই। নেই সুশাসন, জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতার ন্যূনতম ছাপ।
বাংলাদেশ জাতিসংঘে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ টেকসই উন্নয়ন বাস্তবায়ন করবে।সেই অঙ্গীকারে অংশীজনের মতামতকে মর্যাদা দেবে বলে বাংলাদেশ সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দর্শন বিভাগের শিক্ষকরা অনেকেই টেকসই উন্নয়নের উপর পিএইচডি করেছেন। আবার এই বিষয়ে অনেকেই প্রবন্ধ লিখেছেন এবং কিছুদিন আগে ২০১৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল নির্মাণে অংশীজনের মতামত না নেয়াতে আন্দোলন করেছেন।
সেই বিবেচনায় বিভাগের শিক্ষকরা মনে করছেন শিক্ষক নিয়োগের বেলায়ও অংশীজনের মতামত নেয়া প্রয়োজন ছিল। এখানে সরকার গৃহীত টেকসই উন্নয়ন ধারণাকে অবজ্ঞা করে সেই সনাতনী শাসন কায়েম করা হয়েছে। ফলে বিষয়টিকে সন্দেহের চোখে দেখার সুযোগ হয়েছে।
কেন তড়িঘড়ি করে মাত্র ১৪ দিনের সময় দিয়ে এই মহামারীর সময়ে ৬ জন প্রভাষক নিয়োগ দেয়ার চেষ্টা চলছে যখন কিনা যারা নিয়োজিত আছেন তারই কাজ করতে পারছেন না? কেনই বা মাত্র ৩ দিনের নোটিসে ৫৭ আবেদনকারীর ভাইভা অনলাইনে নেয়ার হচ্ছে? এই কি তাহলে সুশাসনের নমুনা!
শিক্ষকরা আরও কিছু কারণে মনে করেন এক সঙ্গে ৬ জন শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার প্রয়োজন নেই। প্রথমত বিভাগে কোনো প্রভাষকের পদ শুন্য নেই।
বিভাগে যে শিক্ষক আছেন তাদের দিয়েই বিভাগ পরিচালনা করে আসছেন বর্তমান ও অতীত দুই সম্মানিত সভাপতি। যদি এখন ৬ জন প্রভাষক নিয়োগ দেয়া হয় তবে তারা সহসাই স্থায়ী হতে পারবেন না। এবং তাদের স্থায়ী নিয়োগ দিতে হলে শুন্য ওই উঁচু পদগুলোকে Down Garde করতে হবে। ফলে বিতর্কিত upgradation নিয়ম অব্যাহত থাকবে এবং একদিন সকল পদ প্রভাষক পদে পরিনিত হবে। সুতরাং, বিশ্ববিদ্যালয়ের যে আলাদা নিয়োগ ব্যবস্থা ও অর্গানোগ্রাম বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
আর এই মতের শিক্ষকরা (যারা এভাবে নিয়োগ দিচ্ছেন) বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ শিক্ষকদেরকে পরামর্শ দেন নতুন বিভাগে অধ্যাপক পদ সৃষ্টি না করতে- যাতে বর্তমানদের সুবিধা অব্যাহত থাকে। যা অনৈতিক। ব্যক্তিগতভাবে এই নীতি আমি ও আমাদের প্রতিবাদী শিক্ষকরা পছন্দ করছেন না।
যে উদ্দেশ্য নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা সেই উদ্দেশ্যকে ঠিক রাখতে হলে সৃষ্ট অর্গানোগ্রাম মেনে চলতে হবে। এবং যে পদ শুন্য থাকবে সেই পদের বিজ্ঞাপন দিতে হবে। আইনের ফাঁক গলিয়ে শুন্য পদ থাকা সত্ত্বেও Upgradation নৈতিকভাবে সঠিক হয় না। সর্বোপরি সকল শুন্য পদ এখনই পূরণ করলে আগামীতে মেধাবী ছাত্র বঞ্চিত হবে যা টেকসই উন্নয়ন ধারণার পরিপন্থী।
বিগত ১০ বছরে দর্শন বিভাগে ১টি অধ্যাপক, ৩টি সহযোগী অধ্যাপক, ৪টি সহকারী অধ্যাপকের পদ শুন্য হয়েছে। এবং সেগুলো শুন্য বিবেচনা করে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। বিভাগে বর্তমানে যে কজন শিক্ষক আছেন তাদের কর্মঘন্টা হিসাব করলে কমপক্ষে ১৭৪ ঘন্টা প্রতি সপ্তাহে। বিভাগে ১ম পর্ব থেকে শেষ পর্ব এবং এমফিল শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখতে ৪০টি কোর্সের পাঠ দান চলছে। প্রতিটি কোর্সের ৩ ঘন্টা সপ্তাহে বিবেচনায় নিলে ৬০ ঘন্টার একটি কোর্সের জন্য ২০ সপ্তাহে পাঠদান করা হলে ১২০ ঘন্টার জনবল প্রয়োজন। সেখানে আছে ১৭৪ ঘন্টা। আর বছর ৫২ সপ্তাহ। সুতরাং অবশিষ্ট থাকে ৫৪ ঘন্টা ও পুরো একটি সেমিস্টার অর্থাৎ ১৭৪ ঘন্টা। এভাবে গণনা করলে, আর যদি সেমিস্টার সিস্টেম করা হয়, তবে আরো ৪০টি কোর্স পড়ানোর সক্ষমতা বিভাগের আছে।
উপরের পরিসংখ্যান থেকে সকলেই পদ বিজ্ঞাপনের বিপক্ষে হয়তো যুক্ত হবেন। কিন্তু তার পরেও টেকসই উন্নয়নের জন্য আমি পদ বিজ্ঞাপনের পক্ষেই থাকছি। কারণ (১) মেধাকে মূল্যায়ন করতে হবে, (২) টেকসই উন্নয়নের আলোকে বর্তমান প্রজন্মর অধিকারকে (Rights of Present generations) মর্যাদা দিতে হবে।
সেজন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে আগেই সভাপতিকে বিভাগের শুন্য পদ বিজ্ঞাপন দিতে বলেছি। কারণ কিছু ভালো প্রার্থী আছে। কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে ৬টি প্রভাষক পদের বিজ্ঞাপন দিতে হবে। যদি আগেই পদ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হতো তবে আজকে যারা প্রার্থী তারা আগেই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে পারতো। পদ থাকার পরেও কেন বিজ্ঞাপন দেয়া হয়নি উপাচার্য ও বিভাগের সভাপতি তার জবাব দিতে পারবেন।আমার প্রশ্ন:কেন প্রভাষক পদে বিজ্ঞাপন- কেন সহকারী , সহযোগী বা অধ্যাপক পদে বিজ্ঞাপন নয়? Rights of immediate past generations কে মূল্যায়ন করতে উঁচু পদগুলোর বিজ্ঞাপন দিতে হবে।তাতে ন্যায়পরতা, সুশাসন ও স্বচ্ছতা অর্জিত হবে।
একটি ঘটনাটির কথা এখানে বলা প্রাসঙ্গিক মনে করছি। প্রায় বছর চারেক আগের কথা। আমার এক ছাত্রকে বর্তমান ইউজিসি চেয়ারম্যান আমাদের বিজ্ঞ অভিভাবক অধ্যাপক শহীদুল্লাহ একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দিয়ে এসে আমাকে ডেকে নিয়ে বলেছিলেন দর্শন বিভাগ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রটি অসাধারণ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকের চেয়ে ভালো। ১০ বছর পর প্রভাষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়ার পর ওই অসাধারণ ছাত্রটি আজ বঞ্চিত হলো। আমরা মনে করতে পারি কি ওই ছাত্রটিকে বঞ্চিত করতে এই আয়োজন ?
আজ যে ছাত্রটি জহর লাল নেহেরু -ইন্ডিয়া থেকে এমএ করে পিএইচডি করছে, যে ছাত্রীটি কানাডাতে পিএইচডি করছে, যে ছাত্রটিকে নিয়োগ দেয়ার আনন্দ স্বেচ্ছায় আমাকে কাছে ডেকে নিয়ে প্রকাশ করেন (একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ডিন , উপাচার্য ও বর্তমান ইউজিসি চেয়ারম্যান) তাদেরকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
সমাজে কিছু মানুষ আছে তারা সব কিছুতেই মন্দ দেখে বলেই আজ অন্যায় এর প্রতিবাদ হয়ে যায় প্রচারণা ও ষড়যন্ত্র। আর সেজন্য দিনে দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা হয়ে যাচ্ছে মেরুদন্ডহীন।বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিং হয়ে যাচ্ছে কল্পনাতীত স্বপ্ন।
আবার ফিরে আসি দর্শন বিভাগের নিয়োগের বিষয়ে। প্রথমত, দর্শন বিভাগের সভাপতি ও মাননীয় উপাচার্য অংশীজনের অহংবোধের মর্যাদা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন।দ্বিতীয়ত কেবল মাত্র প্রভাষক পদের বিজ্ঞাপন দিয়ে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার মধ্যদিয়ে উচ্চতর যোগ্যতার প্রার্থীদেরকে বঞ্চিত করেছেন। তৃতীয়ত, ৬টি প্রভাষক পদের বিজ্ঞাপন ও নিয়োগ ভবিষত মেধাবীদের বঞ্চিত করবে। এটাও টেকসই উন্নয়নের পরিপন্থী এবং injustice। টেকসই উন্নয়ন আমাদেরকে শিক্ষা দেয় সব কিছুর উপরে ন্যায়পরতা বা জাস্টিসকে মূল্য দিতে। এবং এই জাস্টিস অতীত, বর্তমান ও ভবিৎষ্যৎ প্রজন্মর অধিকার সংরক্ষণের কথা বলে।
আমরা আরও জানতে পেরেছি যে, পাবলিক সার্ভিস কমিশন প্রতিদিন একটি বোর্ডে ২০ জন প্রার্থীর মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে থাকে। আর সেখানে একটি unsecure মাধ্যমে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একদিনে ৫৭ প্রার্থীর ভাইভা নেয়া হয়েছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় গত একাডেমিক কাউন্সিলের সুপারিশে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে এই মহামারীর সময়ে অনলাইনে পরীক্ষা ও মৌখিক পরীক্ষার নীতিমালা অনুমোদন করেছে। কিন্তু তারা অনলাইনে শিক্ষক নিয়োগের জন্য কোনো নীতিমালা প্রণয়ন না করে উল্টো স্রোতে সাঁতার কাটছেন। আমরা গত ৮ জুন শতাধিক শিক্ষকের ভার্চুয়াল মিটিং এ বিষয়টি (জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভা) আলোচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়কে নীতিমালা প্রণয়ন করতে অনুরোধ করি যা সিদ্ধান্ত আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। এবিষয়ে আমরা প্রতিবাদী শিক্ষকরা ইউজিসির নজরে আনলে বিজ্ঞ কমিশন ১৩/০৬/২০১২ একটি নির্দেশনা দিয়েছেন। আমরা মনে করি ইউজিসির ওই সিদ্ধান্ত যুগান্তকারী ও সময়পোযোগী।
এখনোও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগের জন্য অনলাইনে মৌখিক পরীক্ষার নীতিমালা প্রবর্তন করা করার কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করে নি। বরং শিক্ষক সমিতির আহ্বানকে আমলে না নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ দর্শন বিভাগের ৮জন শিক্ষকের মতামতকে উপেক্ষা করে কোনো নীতিমালা ছাড়াই মাত্র ৪ দিনের নোটিসে ১২/০৬/২০২১ তারিখ একদিনে ৫৭ জনের মৌখিক পরীক্ষা নিয়েছেন। সুতরাং, এটা বোধগম্য যে এখানে Injustice হয়েছে। সেই injustice থেকে আবেদনকারীদেরকে রক্ষা করতে এবং স্বচ্ছতা আনতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ৮ জন শিক্ষকের আবেদনে সাড়া দিয়ে গত ১৩ জুন তারিখ অনলাইনে মৌখিক পরীক্ষার একটি নীতিমালা প্রকাশ করেছেন। আমরা মনে করি অভিভাবক হিসেবে ইউজিসি এখানে এক অসাধারণ ভূমিকা রেখেছেন।
আমরা বাংলাদেশের সর্বোচ আদালতে নিবেদন করেছি এই নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ করে ইউজিসির প্রতি সন্মান রেখে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ যেন একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেট এর মাধ্যমে অনলাইন নিয়োগ নীতিমালা প্রণয়ন করে এবং সেই নীতিমালা অনুসরণ করে আগামী দিনের নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালিত হোক।
আমরা মনে করি দর্শন বিভাগ সহ সারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগে টেকসই উন্নয়ন চিন্তার প্রতিফলন যেন ঘটে। কারণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে, জাতিসংঘে, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে; মহামান্য রাষ্ট্রপতি বিভিন্ন সময়ে বক্তৃতায়; বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের মাননীয় স্পিকার , মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী, মাননীয় সাংসদ বৃন্দ টেকসই উন্নয়নের পক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়েছেন। এমনকি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে একটি আলাদা অফিস টেকসই উন্নয়নের জন্য নিয়োজিত আছে। টেকসই উন্নয়ন অর্জনের লক্ষ্যে, ন্যায়নীতির স্বার্থে, অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে এবং বর্তমান ও ভবিৎষত প্রজন্মর অধিকার সংরক্ষণ করে দেশের সকল নিয়োগ সিদ্ধান্ত নেয়া হবে আশা করি।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি
প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর
রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা
করবেন।
প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে
আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা
নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর। আমার ধারণা যারাই প্রথম আলো কিনেন না
কেন তারা প্রথম দিকে মতিউর রহমান সাহেবকে রাখলেও পরবর্তীতে ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে
সম্পাদক পরিবর্তন করবে। আর প্রথম আলো যদি কোন যুক্তিপূর্ণ লোকের কাছে দেয় তাহলে আমার
মতে এখানে সম্ভবত আনিসুল হক সাহেব সম্পাদক হবেন। কারণ তার প্রতি লোকের অনেক শ্রদ্ধাবোধ
আছে এবং তিনি সবসময় একটা রেড লাইন রক্ষা করে চলেন। এটা আমরা সকলেই জানি। তার সাথে
অনেকেরই ভালো সম্পর্ক এবং তিনি খুবই জ্ঞানী
লোক।
এর আগে মতিউর রহমান যখন একতা থেকে আজকের কাগজে যান, তখন তার উদ্দেশ্যই
ছিল যে, একটি পত্রিকা কীভাবে চলে সেটা শেখা এবং এখান থেকে একসাথে সাংবাদিক নিয়ে বেরিয়ে
যাওয়া। তিনি সেটা করেছিলেন। তারপর ভোরের কাগজ থেকে একই কাজ করেছেন। সুতরাং তার সত্যিকারের
নীতিবোধ বলতে যেটা বোঝায় সেটা দুর্ভাগ্যবশত তিনি প্রমাণ করতে পারেননি।
তিনি এক সময় কমিউনিস্টদের সাথে থাকলেও এখন তার চেয়ে বড় দক্ষিণপন্থী
পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়াই কঠিন। এ কারণে প্রথম আলো যে বিক্রি হবে এই ব্যাপারে সাধারণ লোকের
ভিতরে এখন আর কোন সন্দেহ নেই।
এখন প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টারের কী হবে এই নিয়ে আলাপ আলোচনা হচ্ছে
এবং এই আলাপ আলোচনা খুব দীর্ঘদিন যে চলবে তা না। আমার মনে হয় জুন-জুলাই মাসের ভিতরেই
এর একটা ফয়সালা হয়ে যাবে। কারণ স্বাভাবিক ভাবেই বুঝি যে, একটি পত্রিকা পাঠকপ্রিয়তা
পেতে বেশ সময় লাগে। এটা একদিন দুইদিনের ব্যাপার না। আবার ঠিক তেমনিভাবে যখন পাঠকপ্রিয়তা
কমতে থাকে সেটাও একদিন দুইদিনে হয় না। ধীরে ধীরে হয়। এই মিডিয়া জগতের নিয়মই তাই।
আমি ১৯৬১ সালে পত্রিকা বলতে শুধুমাত্র ইত্তেফাক এর কথাই জানতাম।
সেই ধারণা থেকে বলতে পারি এখন প্রথম আলোর যদি কিছু কর্মী এর চেয়ে ভালো কোন সুযোগ সুবিধা
দেখেন তাহলে তারা বিক্রি হওয়ার আগেই চলে যাবেন। কারণ স্বাভাবিকভাবেই একজন সাংবাদিকের
একটা ক্যারিয়ার আছে এবং প্রথম আলোর মতো পত্রিকাতে কাজ করে তিনি তো যে কোন পত্রিকায়
যেতেও পারবেন না। তার কারণ গেলে তার ওই লেখার যে মান সেটা মূল্যায়ন নাও হতে পারে। তবে
আমার ধারণা প্রথম আলোতে কাজ করেছেন এমন যে কাউকে টেকনিক্যাল গ্রাউন্ডে অনেক গুরুত্ব
দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে আমি অবাক হব না যদি দু এক মাসের ভিতরে দেখা যায় যে আস্তে আস্তে
প্রথম আলো বিভিন্ন কর্মী অন্য পত্রিকায় যাওয়া শুরু করে দিয়েছেন।
ব্যাংক মার্জারের যেমন একটি ঘটনা বর্তমানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ঠিক
তেমনি পত্রিকা জগতেও শিল্প গোষ্ঠীর যে গন্ডগোলের ঘটনা ঘটেছে এটিও ব্যাংক মার্জারের
ঘটনার পর্যায়ে চলে যাবে। ব্যাংকিং ক্ষেত্রে দেখা যায়, দুটি ব্যাংক একীভূত হচ্ছে। আর
এদিকে দেখা যাবে, সংবাদকর্মীরা অন্য পত্রিকায় চলে যাচ্ছে।
তবে আমার মনে হয় না, এখন যে অবস্থা চলছে এতে প্রথম আলো আর আগের
মতো প্রথম আলো থাকতে পারবে। এটা কিছুতেই সম্ভব না এটি মোটামুটিভাবে নিশ্চিত। তাই আমার
মনে হয় প্রথম আলো সেই ব্যাংক মার্জারের পর্যায়ে চলে এসেছে। এখন অন্য পত্রিকা যাদের
আছে, তারাও প্রথম আলো কিনে নিতে পারেন। এটি সম্ভব। এরকম শিল্পগোষ্ঠীর কোন কমতি বর্তমানে
বাংলাদেশে নেই। যে কোন শিল্প গোষ্ঠীই এটা কিনবে।
তবে আমি আশা রাখব, যারাই প্রথম আলো কিনবে, তারা যেন অন্তত পক্ষে
এটা খেয়াল রাখে যাতে সাংবাদিকদের কোন ক্ষতি না হয়। সুতরাং এদেশের একজন সাধারণ নাগরিক
হিসেবে আমার দাবী হচ্ছে সাংবাদিকরা যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:০৬ পিএম, ১৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সোনালী যুগ পার করছেন। ইতিমধ্যে টানা চার মেয়াদে তুমুল ম্যান্ডেটের সাথে অধিষ্ঠিত হওয়ার পর, তিনি বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী মহিলা সরকার প্রধানের লরেল ধরে রেখেছেন। জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ের মধ্য দিয়ে তিনি পঞ্চম্বারের মত ক্ষমতা নিশ্চিত করে এই অঞ্চলের প্রায় সব মহল থেকে প্রশংসার কুড়িয়েছেন। বিশ্বে এমন ঘটনা বিরল যেখানে কারও নেতৃত্বে থাকার ব্যাপারে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ চীন এবং ভারত উভয়ই একমত। শেখ হাসিনা সেই বিরল একটি দৃষ্টান্ত। মত কিংবা রাজনৈতিক আদর্শ, নির্বিশেষে সকল আঞ্চলিক শক্তিগুলো তার আসন্ন প্রশাসনকে অভিনন্দন জানায়। তবে জানুয়ারির নির্বাচনের পরে বেশিরভাগেরই দৃষ্টি যুক্তরাষ্ট্রের দিকে স্থির ছিল। কারণ বাংলাদেশের গনতন্ত্র নিয়ে নির্বাচনের আগে থেকেই বেশ সরব ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট বাংলাদেশের নির্বাচন অবাধ এবং সুষ্ঠু হয়নি বললেও মার্কিন কর্মকর্তারা নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দেয় এবং একসঙ্গে কাজ করারও আশাবাদ ব্যক্ত করে। নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের উপর যে মার্কিন চাপ দৃশ্যমান ছিল, যুক্তরাষ্ট্রের এমন বক্তব্যে শেখ হাসিনা সরকারের উপর সেই মার্কিন চাপ অনেকটাই কমছে এবং তার আগামী পথচলাকে অনেকটাই সহজ করে দিয়েছে।
তবুও, অনেকেই বলছেন বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ব্যাপকভাবে বয়কট করা হয়েছে। এর মূল কাওন হিসেবে তারা বলছেন, বিরোধী দলে নির্বাচন বয়কট এবং বিরোধীদের বয়কটের আহ্বানের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে সাধারণ জনগণের ভোট বর্জন।
অংশগ্রহণ নাকি বয়কট?
দেশটির প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং তার মিত্ররা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও সব বিরোধী দল অবশ্য তাদের অনুসরণ করেনি। নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে সাতাশটি দল প্রার্থী দিয়েছিল। এছাড়া প্রায় ৩০০ আসনের বিপরীতে প্রায় ১৯০০ স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। তাই নির্বাচনে বিএনপির অনুপস্থিতি লক্ষ্য করা গেলেও, একাধিক নির্বাচনী এলাকার ব্যাপক প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন হয়েছে এবং ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করেছে।
নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল ৪১.৮ শতাংশ। গত নির্বাচনের তুলনায় এই সংখ্যা কম হলেও সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এই সংখ্যাকে কম বলার সুযোগ নেই। অনেকে এটিকে বিরোধী দলের নির্বাচন বয়কট জনমনে প্রতিফলিত হয়েছে বলে দেখছে। বিরোধীদের বয়কট নিঃসন্দেহে ভোটার উপস্থিতিতে প্রভাব ফেলেলেও, কম ভোটার উপস্থিতি মানেই জনগণ ভোটকে প্রত্যাখ্যান করেছে এওনটি ভাবার কোন সুযোগ নেই। মূলত বিএনপির বিভিন্ন নির্বাচন বিরোধী কর্মসূচী, বিক্ষোভ, সমাবেশ, গাড়িতে ট্রেনে বাসে অগ্নিসংযোগ, ভোটের আগের দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টার হরতাল-অবরোধের ডাক দেশের পরিস্থিতিকে অস্থির করে তোলে। যার ফলে নিজদের নিরাপত্তার জন্যই অনেক ভোটার নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে না গিয়ে বাড়িতে থাকতে বাধ্য হয়েছে।
তবে যে সব নির্বাচনী এলাকায় একাধিক জনপ্রিয় প্রার্থী নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন সেসব এলাকায় ভোটার উপস্থিতি ছিল ৬০ শতাংশের বেশি। আবার যেস এলাকায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা কম ছিল সেসব এলাকায় ভোটার উপস্থতি ছিল কম। অর্থাৎ ভোটাররা বিএনপির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে নির্বাচন বর্জন করেনি; প্রতিদ্বন্দ্বিতাই মূলত ভোটার উপস্থিতিকে প্রভাবিত করেছে।
তবে নির্বাচন কমিশনের রিপোর্ট করা ভোটারদের পরিসংখ্যান নিয়ে বিভ্রান্তি রয়ে গেছে। দুপুরে নির্বাচন কমিশনের করা প্রেস ব্রিফিংয়ে ভোটার উপস্থিতি মাত্র ২৭ শতাংশ ঘোষণা করা হলেও, শেষে ৪১.৮ শতাংশ চূড়ান্ত ভোটার উপস্থিত ঘোষণা করা হয়। এর কারণ হিসেবে নির্বাচন কমিশন জানায়, দুপুরের সংখ্যাটি প্রকৃত সময়ে ছিল না। যেহেতু বাংলাদেশে ম্যানুয়াল পেপার ব্যালট সিস্টেম ব্যবহার করা হয় যেখানে ভোটগুলি হাতে গণনা করা হয় এবং গ্রামীণ এলাকা থেকে ফলাফল প্রেরণে কয়েক ঘন্টা পিছিয়ে ছিল। যা দুপুরের ভোটার উপস্থতি এবং সর্বশেষ ভোটার উপস্থিতির মধ্যে ব্যবধান ব্যাখ্যা করে। সেক্ষেত্রে মোট ভোটের ১৪ শতাংশ শুধু শেষ সময়ে দেয়া হয়েছে এমন অভিযোগ সত্য নয়।
নির্বাচন কমিশন হয়ত সঠিক। কিন্তু যেহেতু সন্দেহের তীর ছোড়া হয়েছে সেহেতু, নির্বাচন কমিশন সমস্ত ভোটকেন্দ্রের প্রতি ঘণ্টায় ভোট গণনার বিস্তারিত একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে সন্দেহের সমাধান করতে পারে। এ ধরনের স্বচ্ছতা ভোটদানের প্রশ্নে স্পষ্টতা প্রদান করবে এবং যেকারো বিভ্রান্তি দূর করতে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান হিসেবে কাজ করবে।
বাংলাদেশ কি একদলীয় রাষ্ট্র?
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের আরেকটি নিরঙ্কুশ বিজয়ের পর অনেকেই বাংলাদেশ একটি একদলীয় রাষ্ট্রের দিকে ধাবিত হচ্ছে বলে সতর্ক করেছেন। ৩০০ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ২২৩টি আসনে এবং আওয়ামী লীগের অনুগত স্বতন্ত্ররা আরও ৬২টি আসনে জয়লাভ করে। যার ফলে সংসদে ৯৫ শতাংশ নির্বাচিত সংসদ সদস্যই আওয়ামী লীগের পক্ষে এবং সংসদে কোন অর্থবহ বিরোধী দলের অস্তিত্ব নেই।
তবে বিষয়টি এত সরল নয়। প্রথমত, সংসদের স্বতন্ত্র সদস্যদের আওয়ামী লীগের ল্যাপডগ বলে উপেক্ষা করা বাংলাদেশের রাজ্নৈতিক প্রেক্ষাপটে কতটা যৌক্তিক সে প্রশ্ন থেকে যায়। কারণ প্রত্যেক স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লী প্রার্থীর সাথে তীব্র নির্বাচনী লড়াইয়ের পরই বিজয়ী হয়েছেন। তারা সংসদে তাদের ভোট এবং তাদের বক্তৃতায়র পুরো স্বাধীনতা ভোগ করবেন। বাংলাদেশের সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে সংসদ সদস্যদের তাদের দলের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু স্বতন্ত্র প্রার্থী কোন দলের অধীনে না থাকায় তারা এই বিধিনিষেধের বাইরে। এই প্রেক্ষাপটে, শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকা সত্ত্বেও, নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করতে ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আ.লীগ প্রশংসার যোগ্য। আ.লীগ দলের সিনিয়র ব্যক্তিদের স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অনুমতি দিয়ে, অবশ্যই সম্ভাব্য অন্তর্দলীয় বিরোধের ঝুঁকিতে পড়েছে। তবুও, এটি ভোটারদের প্রকৃত নির্বাচনী বিকল্প প্রদান এবং সংসদে মত বৈচিত্র্যকে প্রসারিত করেছে।
উপরন্তু, একটি নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একটি অপ্রতিরোধ্য সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করা একটি দল একদলীয় রাষ্ট্রের সমতুল্য নয়। বাংলাদেশকে একদলীয় রাষ্ট্র না বানিয়ে অতীতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একই রকমের সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে। একইভাবে ভারত ও জাপান বহুদলীয় গণতন্ত্র না হারিয়ে একদলীয় আধিপত্য অর্জন করেছে। মূল প্রশ্ন হল আওয়ামী লীগ নিজে এই অতি সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদের আয়োজন করেছিল নাকি বিএনপির নির্বাচন বয়কটের কারণে এটি অনেকটা অনিবার্য ছিল।
বিএনপি যদিও যুক্তি দেবে—যে কোনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড কখনোই ছিল না এবং ২৮ অক্টোবরের সমাবেশের পর বিএনপি নেতাদের দমন-পীড়ন ও গণগ্রেপ্তার সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ এবং তাদের অংশগ্রহণকে বাধাগ্রস্ত করেছে। তবে, ২৮ অক্টোবরের আগেও বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রত্যাখ্যান করে ইতিমধ্যেই নির্বাচনে নিজেদের অপ্রাসঙ্গিক করে তুলেছিল। নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন কমিশনের ডাকা একটি নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার জন্যই ২৮ অক্টোবরের বিক্ষোভ করেছিল দলটি। ফলে সেই সময়ে কমিশনের কর্তৃত্বের অধীনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, অরাজকতা দমনে এবং নির্বাচনের অগ্রগতি নিশ্চিত করতে শক্তি প্রয়োগ করেছিল। এটি কোনভাবে নির্বাচন বর্জনের কারণ হতে পারে। বলপ্রয়োগের অসামঞ্জস্যপূর্ণ ব্যবহার আলাদা মূল্যায়নের প্রয়োজন, তবে এটি নির্বাচনী নয় বরং আইন-শৃঙ্খলার চোখে দেখাই উত্তম।
দায়বদ্ধতা
এমন উদ্বেগজনক দাবি করার পরিবর্তে, পর্যবেক্ষকদের জিজ্ঞাসা করা উচিত ছিল যে প্রাথমিক বিরোধী দল বিএনপি কেন মাঠ হারাল। সরকার যেমন শক্তিপ্রয়োগের জন্য যাচাই-বাছাইয়ের পরোয়ানা দেয়, তেমনি বিএনপিকে তার গণতান্ত্রিক দায়িত্ব পালনের জন্য জবাবদিহি করতে হবে।
১৭ কোটি মানুষের প্রতিনিধিত্বকারী একটি প্রধান রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির দায়িত্ব ছিল সংসদে ভোটারদের আওয়াজ দেওয়া। নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না এমন অনুমানের উপর ভিত্তি করে নির্বাচন বর্জন করে, তারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এবং জনগণের অধিকারকে উপেক্ষা করেছে। তর্কের খাতিরে আ. লীগের অধীনে নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে না ধরে নিলেও, বিএনপি’র তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত মে ২০১১ সালে এটিকে অসাংবিধানিক রায় দিয়েছিল। তাছাড়া, পূর্ববর্তী তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা তার ম্যান্ডেটকে অতিক্রম করেছিল, জাতীয় জরুরি অবস্থা জারি করেছিল এবং দলীয় নেতাদের বন্দী করেছিল রাজনীতিকে বাধাগ্রস্থ করেছিল।
নির্বাচন বয়কট শুধুমাত্র ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে সুফল এনে দিয়েছে। বিএনপি নির্বাচনের মাধ্যমে জনসাধারণের ম্যান্ডেট অনুসরণ করার চেয়ে তত্ত্বাবধায়ক শাসনের মধ্যে একটি সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরির উচ্চাকাঙ্ক্ষা করেছিল। গণতন্ত্রের প্রতি ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গীকার নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও মূলত বিএনপি’র এই আত্ম বিধ্বংসী এবং অপরিপক্ক রাজনৈতিক সিদ্ধান্তই আওয়ামী লীগের ক্ষমতার পথ সুগম করেছে।
বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যাপক বয়কট সর্বজন গৃহীত
মন্তব্য করুন
এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা করবেন। প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর
‘এসো, এসো, এসো হে বৈশাখ।/তাপসনিশ্বাসবায়ে মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়ে/ বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক/যাক পুরাতন স্মৃতি, যাক ভুলে-যাওয়া গীতি/ অশ্রুবাষ্প সুদূরে মিলাক/ মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা,/ অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা।’ অর্থাৎ ১৪৩১ বঙ্গাব্দে পুরাতন স্মৃতি মুছে যাক, দূরে চলে যাক ভুলে যাওয়া স্মৃতি, অশ্রুঝরার দিনও সুদূরে মিলাক। আমাদের জীবন থেকে বিগত বছরের ব্যর্থতার গ্লানি ও জরা মুছে যাক, ঘুচে যাক; নববর্ষে পুরাতন বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক। রমজান ও ঈদের পর দেশের মানুষের জীবনে আরো একটি উৎসবের ব্যস্ততা নতুন বছরে মঙ্গল শোভাযাত্রায় উদ্ভাসিত।ফিলিস্তিনবাসীর উপর হামলা আর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে এর মধ্যে মারা গেছেন অসংখ্য মানুষ।তবু মৃত্যুর মিছিলে জীবনের গান ফুল হয়ে ফুটেছে। যুদ্ধের সংকট আমাদের পরাস্ত করতে পারেনি কারণ পৃথিবীর মৃত্যু উপত্যকা পেরিয়ে এদেশে বৈশাখ এসেছে নতুন সাজে।
সমাজ, রাষ্ট্রে নেতার ছড়াছড়ি। নেতাদের পোস্টার, ফেস্টুনে ভরে গেছে শহর, গ্রাম। তবে এদের বেশিরভাগই সুবিধাভোগী, অর্থলোভী। এদের মধ্যে আদর্শের লেশমাত্র নেই। সততা, দেশপ্রেম এবং জনগণের প্রতি ন্যুনতম দায়বদ্ধতা নেই। এদের কোনো পেশা নেই। রাজনীতি কে এরা অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। নেতা নয়, বরং এদেরকে নির্দ্বিধায় চাঁদাবাজ, দখলদার, মাদক ব্যাবসায়ী বলা যায়। রাজনৈতিক দলের নাম ভাঙিয়ে এরা হেন অপকর্ম নেই যা করে না। এদের অনেকে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, অবৈধভাবে দখল এবং মাদক ব্যাবসার মত জঘন্য কাজের সাথে সম্পৃক্ত। এসব আদর্শহীন, অসৎ, সুবিধাভোগী, অর্থলোভী নেতাদের ভীড়ে সৎ, দেশপ্রেমিক, আদর্শিক নেতাদের দেখা পাওয়া দুষ্কর। সমাজ, রাষ্ট্রে এমন নেতাও আছেন যারা দেশ এবং দেশের মানুষের জন্য তাদের সর্বস্ব উজাড় করে দেন। ষাট, সত্তর, আশি এবং নব্বইয়ের দশকে এমন নেতার সংখ্যা ছিল বেশি। বর্তমানে হাজারো অসৎ নেতার মধ্যে এমন সৎ, আদর্শিক, দেশপ্রেমিক নেতা খুঁজে পেতে মাইক্রোস্কোপের প্রয়োজন হয়। দিন দিন যেভাবে রাজনীতিতে অসৎ নেতাদের দাপট বাড়ছে, আগামিতে প্রকৃত নেতাদের খুঁজতে হয়ত ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপ প্রয়োজন হবে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সোনালী যুগ পার করছেন। ইতিমধ্যে টানা চার মেয়াদে তুমুল ম্যান্ডেটের সাথে অধিষ্ঠিত হওয়ার পর, তিনি বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী মহিলা সরকার প্রধানের লরেল ধরে রেখেছেন। জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ের মধ্য দিয়ে তিনি পঞ্চম্বারের মত ক্ষমতা নিশ্চিত করে এই অঞ্চলের প্রায় সব মহল থেকে প্রশংসার কুড়িয়েছেন। বিশ্বে এমন ঘটনা বিরল যেখানে কারও নেতৃত্বে থাকার ব্যাপারে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ চীন এবং ভারত উভয়ই একমত। শেখ হাসিনা সেই বিরল একটি দৃষ্টান্ত। মত কিংবা রাজনৈতিক আদর্শ, নির্বিশেষে সকল আঞ্চলিক শক্তিগুলো তার আসন্ন প্রশাসনকে অভিনন্দন জানায়। তবে জানুয়ারির নির্বাচনের পরে বেশিরভাগেরই দৃষ্টি যুক্তরাষ্ট্রের দিকে স্থির ছিল। কারণ বাংলাদেশের গনতন্ত্র নিয়ে নির্বাচনের আগে থেকেই বেশ সরব ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট বাংলাদেশের নির্বাচন অবাধ এবং সুষ্ঠু হয়নি বললেও মার্কিন কর্মকর্তারা নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দেয় এবং একসঙ্গে কাজ করারও আশাবাদ ব্যক্ত করে। নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের উপর যে মার্কিন চাপ দৃশ্যমান ছিল, যুক্তরাষ্ট্রের এমন বক্তব্যে শেখ হাসিনা সরকারের উপর সেই মার্কিন চাপ অনেকটাই কমছে এবং তার আগামী পথচলাকে অনেকটাই সহজ করে দিয়েছে।