নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:০৭ পিএম, ১৫ জুলাই, ২০২১
করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতিতে আর মাত্র ৬ দিন পর মুসলমানদের অন্যতম বড় উৎসব ঈদ-উল-আযহা বা কোরবানির ঈদ। ঈদ-উল-আযহায় ইসলামের বিধান অনুযায়ী ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ পশু কোরবানি করেন। করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে এই ৬ দিনে ঢাকা থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষের দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকা, চট্রগ্রামসহ অন্যান্য শহরে কোরবানী পশু পরিবহন নির্বিঘ্ন, ঝুঁকিমুক্ত, নিরাপদ করা খুব সহজ নয়। তারপরও বিদ্যমান যাতায়াত মাধ্যমগুলোর পরিকল্পিত ব্যবহার এবং আমাদের সকলের বিশেষ করে জনসাধারণ, যানবাহন মালিক-শ্রমিক, আইন প্রয়োকারী সংস্থা, তৈরি পোষাক শিল্প মালিক-শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সম্মিলিত উদ্যোগ, প্রচেষ্টায় মানুষের যাতায়াত ও পশু পরিবহন অনেকাংশে নিরাপদ করা সম্ভব।
ঈদ উপলক্ষ্যে প্রায় ৮০ লক্ষ মানুষ ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাবে। করোনার উর্ধ্বমুখী সংক্রমণের মধ্যেও পরিবার-পরিজন ও আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য সকল কষ্ট তুচ্ছ করে তারা বাড়ি যেতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। এর পাশাপাশি তৈরি পোষাক শিল্পের নারী শ্রমিকদের অনেকের সন্তান তাদের দাদী-দাদা, নানী-নানার কাছে থাকে। ঈদের ছুটি ছাড়া সন্তানদের সাথে মিলিত হওয়ার সুযোগ না থাকায় তারা সকল বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে বাড়িতে ছুটে যাবেন।
ঈদকে সামনে রেখে প্রতি বছর সরকারের বিভিন্ন সংস্থা এবং সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে পরিবহন সেবা প্রদানকারীগণ ঈদে মানুষের যাতায়াত ঝুঁকিমুক্ত ও নিরাপদ করার লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করে। তারপরও যাতায়াত ব্যবস্থায় চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ঘরমুখো মানুষ সড়কপথে মর্মান্তিক দুর্ঘটনাসহ রেল ও নৌপথে নানাভাবে সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হন। বিভিন্ন সময়ে বিশেষ করে ঈদে বিপুল সংখ্যক হতাহতের ঘটনা আমাদেরকে আতংকিত করে। ঈদকে কেন্দ্র করে মাত্র কয়েকটি দিন উপভোগ করতে যাওয়া মানুষের সকল আনন্দ নিরানন্দে পরিণত হয় যাতায়াতের তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণে। তাই ঈদে দেশের সর্বত্র যাতায়াত ঝুঁকিমুক্ত, নিরাপদ ও স্বচ্ছন্দময় করার জন্য সমন্বিত, বাস্তবধর্মী, কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
এবার ঈদের পরপরই মানুষের কর্মস্থলে ফেরার তেমন কোনো তাড়া থাকবে না। কেননা ইতোমধ্যে সরকার করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ঈদের পর ২৩ জুলাই সকাল ছয়টা থেকে ৫ আগষ্ট রাত ১২টা পর্যন্ত ১৫ দিন কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। এসময়ে সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিসসমূহ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ থাকার পাশাপাশি সকল প্রকার শিল্প-কলকারখানাও বন্ধ থাকবে। সড়ক, রেল ও নৌ-পথে গণপরিবহন (অভ্যন্তরীণ বিমানসহ) ও সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। শপিংমল/মার্কেটসহ সকল দোকানপাট বন্ধ থাকবে। তাই অযথা ঈদের পরপরই ঢাকায় ফিরে আসার জন্য অস্থির হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।
ঈদে অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায় যানজট এবং পাল্লা দিয়ে ঘটে দুর্ঘটনা। জাতীয় মহাসড়ক, আঞ্চলিক সড়কে যানজট ও দুর্ঘটনার প্রধান কারণঃ অতিরিক্ত যানবাহন, যানবাহনে অতিরিক্ত মালামাল পরিবহন, ফিটনেসবিহীন ও ত্রুটিযুক্ত যান চলাচল, অদক্ষ চালক, চালকদের ট্রাফিক আইন না মানা, সড়কে প্রদত্ত সংকেত অনুসরণ না করা, ঘন ঘন লেন পরিবর্তন, ওভারটেকিং, বাস স্টপেজে এলোমেলোভাবে বাসে যাত্রী উঠানো-নামানো, ত্রুটিপূর্ণ সড়ক, সড়কের বিভিন্নস্থান যান চলাচলের অনুপোযোগী, সড়ক পরিচালনা ও মেরামতের সঠিক পরিকল্পনার অভাব, সড়কে প্রয়োজনীয় সংকেত ও নির্দেশনা সম্বলিত সাইনবোর্ডের অভাব, ধীরগতির যান চলাচল, সড়ক দখল করে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করা, ট্রাফিক আইন প্রয়োগে শিথিলতা, দক্ষ ও লজিস্টিকস সমৃদ্ধ ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার অভাব, আইন যথাযথভাবে প্রয়োগের অভাব, মহাসড়কে গরুর হাট স্থাপন, ইত্যাদি।
ঈদে ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাওয়া ও ফেরার ক্ষেত্রে সৃষ্ঠ সমস্যাসমূহঃ রেল, বাস ও লঞ্চের টিকেট কালোবাজারী ও টিকেট সংগ্রহে যাত্রীদের বিড়ম্বনার শিকার, বাস ও লঞ্চে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, যাত্রীদের সীমাহীন চাপের তুলনায় পর্যাপ্ত যানবাহনের অভাব (রেলগাড়ি, মোটরযান ও নৌযান), যাত্রীদের যানজটের কারণে দীর্ঘ সময় মহাসড়ক ও টার্মিনালে অবস্থান করা, রেলের শিডিউল বিপর্যয়ে রেলপথ ও ষ্টেশনে এবং নৌপথের নাব্যতা সংকটে নৌযান ও টার্মিনালে অবর্ণনীয় ভোগান্তি, রেলগাড়িতে ভীড়ের কারণে উঠা-নামাতে দুর্ভোগ। এছাড়াও নিয়ম-নীতি না মেনে ওভারটেকিং, ঘন ঘন লেন পরিবর্তন করা, রেল ক্রসিং অতিক্রম করা, দ্রুতগতিতে বেপরোয়া যানবাহন চালানোর ফলে সড়ক দুর্ঘটনায় ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটে। নৌযানে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনের ফলে নৌ দুর্ঘটনা ঘটে থাকে।
নিরাপদ, জ্বালানী সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব বাহন রেল ও নৌপথকে উপপেক্ষা করা; অতিরিক্ত সড়ক নির্ভরতা, ত্রুটিপূর্ণ সড়ক অবকাঠামো ও যানবাহন, অদক্ষ ও লাইসেন্সবিহীন চালক, বেপরোয়া ও অতিরিক্ত গতিতে যানবাহন চালনা, অতিরিক্ত লোড বহন, সড়কে প্রদত্ত সংকেত অনুসরণ না করা, দুর্ঘটনার জন্য দায়ীদের শাস্তির আওতায় না আনা, আইন যুগোপযোগী না করা, আইনের যথাযথ প্রয়োগ না হওয়া, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা ( মালিক, চালক, বিআরটিএ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর), সর্বস্তরে সচেতনতার অভাব, ঢাকাকেন্দ্রিক উন্নয়ন, সর্বোপরি সূদুরপ্রসারী পরিকল্পনার অভাবে যাতায়াতে যানজট ও দুর্ঘটনা প্রতিনিয়তঃ বেড়ে চলেছে। সুতরাং যাতায়াত ব্যবস্থার এই সংঙ্কট উত্তরণে পরিকল্পিত ও সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরী।
ঢাকাকেন্দ্রিক উন্নয়নের ফলে সারাদেশ থেকে মানুষ প্রতিদিন ঢাকার দিকে ছুটছে। কেউবা ঢাকায় অবস্থান করার জন্য কেউবা সংক্ষিপ্ত সময়ের কাজে আসছেন। উৎসবের সময় লক্ষ লক্ষ মানুষ ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আসা-যাওয়া করেন। এই চাপ সামলানো অসম্ভব এবং অযৌক্তিকও বটে! রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে যাতায়াতের এই চাহিদা অনেকাংশেই হ্রাস করা সম্ভব। এজন্য বিভাগীয়, জেলা, উপজেলা শহর, পৌর এলাকায় মানুষের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। এমনকি গ্রাম পর্যায়ে উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। যাতে করে নিকটবর্তী স্থানে মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয় এবং তাদের নিত্যদিনের প্রয়োজন মেটানোর সুযোগ পায়।
করণীয়
১. গার্মেন্টসসহ শ্রমিকঘন শিল্পপ্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের ছুটি ঈদের আগে ভাগ করে প্রদান করা। এ বছর ঈদ অতি সন্নিকটে বিধায় বিভিন্ন এলাকার গার্মেন্টসসহ শ্রমিকঘন শিল্পপ্রতিষ্ঠানসমূহের মালিকগণ তাদের নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ঐ এলাকার অর্ধেক সংখ্যক শিল্পপ্রতিষ্ঠানে ঈদের ২(তিন) দিন আগে এবং বাকি অর্ধেক শিল্পপ্রতিষ্ঠানে ঈদের ১ (এক) দিন আগে ছুটি প্রদান করা। এক্ষেত্রে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, স্বরাষ্ট্র ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগী ভ’মিকা পালন করা।
২. বাস, রেল ও নৌযানের সংখ্যা বৃদ্ধি করা। লক্কড়-ঝক্কড়, ফিটনেসবিহীন ও ত্রুটিযুক্ত যান চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা এবং মাঠপর্যায়ে নজরধারীর মাধ্যমে তা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা।
৩. ঈদের আগে বিভিন্ন অফিস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাস নির্ধারিত ভাড়ায় আন্ত:নগর/আন্ত:জেলা রুটে পরিচালনা করা। এক্ষেত্রে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়, বিআরটিএ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট অফিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃক কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
৪. ওভারটেকিং, বেপরোয়া চালনা, ঘন ঘন লেন পরিবর্তন করা, গতি নিয়ন্ত্রণ না করা, ট্রাফিক আইন ও সিগনাল মেনে চলার ক্ষেত্রে বাস চালকদের সর্তক করা এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগ করা।
৫. অতিরিক্ত যাত্রী বহনে বাস ও নৌযানের চালক ও মালিকদের সর্তক করা এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগ করা।
৬. রেল লাইন নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করা, রেলের বিদ্যমান সক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহার করা।
৭. রেল-সড়ক ক্রসিংগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
৮. সড়কপথ যথাযথভাবে মেরামত করা, সড়ক দখল করে পরিচালিত বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ করা।
৯. ভূয়া লাইসেন্সধারী মোটরযান ও নৌযানের চালকদের নিষিদ্ধ করা।
১০. মহাসড়কে বিশেষ নজরদারীর মাধ্যমে যানবাহনের গতি, ওভারটেকিং ও বেপরোয়া চালনা নিয়ন্ত্রণ করা এবং আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা। এলক্ষ্যে ঈদের আগে ও পরে সার্বক্ষণিক মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা।
১১. বাস টার্মিনাল, রেল ষ্টেশন, নৌ বন্দর, হাইওয়ে, রেল ও নৌযানে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও আনসার নিয়োগ করা।
১৩. রেল, বাস ও নৌযানের টিকেট বিক্রির ক্ষেত্রে কালোবাজারী রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
১৪. মহাসড়কে গরুর হাট স্থাপন নিষিদ্ধ করা এবং তা যথাযথভাবে মনিটর করা।
১৫. ঈদের পর ২৩ জুলাই সকাল ছয়টা থেকে ৫ আগষ্ট রাত ১২টা পর্যন্ত আরোপিত কঠোর বিধিনিষেধের সময় সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিসসমূহ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ, সকল প্রকার শিল্প-কলকারখানা বন্ধ, সড়ক, রেল ও নৌ-পথে গণপরিবহন (অভ্যন্তরীণ বিমানসহ) ও সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ, শপিংমল/মার্কেটসহ সকল দোকানপাট বন্ধ থাকার বিষয়ে গণমাধ্যমে বিশেষ করে ইলেকট্রোনিক মিড়িয়ায় ব্যাপকভাবে প্রচার করা। যাতে ঘরমুখো মানুষ ঈদের পরপরই ঢাকায় ফিরে আসা থেকে বিরত থাকে।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:২৬ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি
প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর
রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা
করবেন।
প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে
আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা
নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর। আমার ধারণা যারাই প্রথম আলো কিনেন না
কেন তারা প্রথম দিকে মতিউর রহমান সাহেবকে রাখলেও পরবর্তীতে ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে
সম্পাদক পরিবর্তন করবে। আর প্রথম আলো যদি কোন যুক্তিপূর্ণ লোকের কাছে দেয় তাহলে আমার
মতে এখানে সম্ভবত আনিসুল হক সাহেব সম্পাদক হবেন। কারণ তার প্রতি লোকের অনেক শ্রদ্ধাবোধ
আছে এবং তিনি সবসময় একটা রেড লাইন রক্ষা করে চলেন। এটা আমরা সকলেই জানি। তার সাথে
অনেকেরই ভালো সম্পর্ক এবং তিনি খুবই জ্ঞানী
লোক।
এর আগে মতিউর রহমান যখন একতা থেকে আজকের কাগজে যান, তখন তার উদ্দেশ্যই
ছিল যে, একটি পত্রিকা কীভাবে চলে সেটা শেখা এবং এখান থেকে একসাথে সাংবাদিক নিয়ে বেরিয়ে
যাওয়া। তিনি সেটা করেছিলেন। তারপর ভোরের কাগজ থেকে একই কাজ করেছেন। সুতরাং তার সত্যিকারের
নীতিবোধ বলতে যেটা বোঝায় সেটা দুর্ভাগ্যবশত তিনি প্রমাণ করতে পারেননি।
তিনি এক সময় কমিউনিস্টদের সাথে থাকলেও এখন তার চেয়ে বড় দক্ষিণপন্থী
পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়াই কঠিন। এ কারণে প্রথম আলো যে বিক্রি হবে এই ব্যাপারে সাধারণ লোকের
ভিতরে এখন আর কোন সন্দেহ নেই।
এখন প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টারের কী হবে এই নিয়ে আলাপ আলোচনা হচ্ছে
এবং এই আলাপ আলোচনা খুব দীর্ঘদিন যে চলবে তা না। আমার মনে হয় জুন-জুলাই মাসের ভিতরেই
এর একটা ফয়সালা হয়ে যাবে। কারণ স্বাভাবিক ভাবেই বুঝি যে, একটি পত্রিকা পাঠকপ্রিয়তা
পেতে বেশ সময় লাগে। এটা একদিন দুইদিনের ব্যাপার না। আবার ঠিক তেমনিভাবে যখন পাঠকপ্রিয়তা
কমতে থাকে সেটাও একদিন দুইদিনে হয় না। ধীরে ধীরে হয়। এই মিডিয়া জগতের নিয়মই তাই।
আমি ১৯৬১ সালে পত্রিকা বলতে শুধুমাত্র ইত্তেফাক এর কথাই জানতাম।
সেই ধারণা থেকে বলতে পারি এখন প্রথম আলোর যদি কিছু কর্মী এর চেয়ে ভালো কোন সুযোগ সুবিধা
দেখেন তাহলে তারা বিক্রি হওয়ার আগেই চলে যাবেন। কারণ স্বাভাবিকভাবেই একজন সাংবাদিকের
একটা ক্যারিয়ার আছে এবং প্রথম আলোর মতো পত্রিকাতে কাজ করে তিনি তো যে কোন পত্রিকায়
যেতেও পারবেন না। তার কারণ গেলে তার ওই লেখার যে মান সেটা মূল্যায়ন নাও হতে পারে। তবে
আমার ধারণা প্রথম আলোতে কাজ করেছেন এমন যে কাউকে টেকনিক্যাল গ্রাউন্ডে অনেক গুরুত্ব
দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে আমি অবাক হব না যদি দু এক মাসের ভিতরে দেখা যায় যে আস্তে আস্তে
প্রথম আলো বিভিন্ন কর্মী অন্য পত্রিকায় যাওয়া শুরু করে দিয়েছেন।
ব্যাংক মার্জারের যেমন একটি ঘটনা বর্তমানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ঠিক
তেমনি পত্রিকা জগতেও শিল্প গোষ্ঠীর যে গন্ডগোলের ঘটনা ঘটেছে এটিও ব্যাংক মার্জারের
ঘটনার পর্যায়ে চলে যাবে। ব্যাংকিং ক্ষেত্রে দেখা যায়, দুটি ব্যাংক একীভূত হচ্ছে। আর
এদিকে দেখা যাবে, সংবাদকর্মীরা অন্য পত্রিকায় চলে যাচ্ছে।
তবে আমার মনে হয় না, এখন যে অবস্থা চলছে এতে প্রথম আলো আর আগের
মতো প্রথম আলো থাকতে পারবে। এটা কিছুতেই সম্ভব না এটি মোটামুটিভাবে নিশ্চিত। তাই আমার
মনে হয় প্রথম আলো সেই ব্যাংক মার্জারের পর্যায়ে চলে এসেছে। এখন অন্য পত্রিকা যাদের
আছে, তারাও প্রথম আলো কিনে নিতে পারেন। এটি সম্ভব। এরকম শিল্পগোষ্ঠীর কোন কমতি বর্তমানে
বাংলাদেশে নেই। যে কোন শিল্প গোষ্ঠীই এটা কিনবে।
তবে আমি আশা রাখব, যারাই প্রথম আলো কিনবে, তারা যেন অন্তত পক্ষে
এটা খেয়াল রাখে যাতে সাংবাদিকদের কোন ক্ষতি না হয়। সুতরাং এদেশের একজন সাধারণ নাগরিক
হিসেবে আমার দাবী হচ্ছে সাংবাদিকরা যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:০৬ পিএম, ১৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।
দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই।
বারো বছর আগের কথা। ডেভিড ক্যামেরুন তখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। সে সময় একদিন তিনি একটি হাসপাতালের ওয়ার্ডে ঢুকে পড়লেন। রোগীর অনুমতি সাপেক্ষে রোগীর সাথে ছবি তুলতে গেলেন। বাঁধ সাধলেন ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা একজন চিকিৎসক। জীবাণু প্রতিরোধের কোন পদক্ষেপ না নিয়ে এবং চিকিৎসকের অনুমতি ব্যতিরেকে তিনি ওই কাজটি করছিলেন। ডেভিড ক্যামেরুন তাঁর ভুল বুঝতে পেরেছিলেন সাথে সাথে। ক্ষমা চাইলেন এবং ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে গেলেন।
এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি হচ্ছে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যদি প্রথম আলো কে বা কারা কিনবে সেটা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। তবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান চাইবেন কোথায় গেলে তার চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে। সেভাবেই তিনি বিক্রি করার চেষ্টা করবেন। প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টির পাশাপাশি একই রকম আরেকটি প্রশ্ন সামনে আসছে। আর সেটা হলো প্রথম আলোর পরে কে? তাহলে কি প্রথম আলোর পরে ডেইলি স্টার? তবে এটা নির্ভর করবে প্রথম আলোর কি ভাগ্য হয় তার ওপর