নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:০০ পিএম, ৩১ জুলাই, ২০২১
জীবন পরিচালনার ক্ষেত্রে মিনিমালিজম খুবই চমৎকার একটি টার্ম। আর যারা মিনিমাল একটি জীবন পরিচালনা করে তাদেরকে বলা হয় মিনিমালিস্ট। হয়ত অনেকেই কথাটি শুনে একটু ভ্রু কুঁচকে তাকাবেন। মিনিমালিস্ট জীবন আদর্শ হিসেবে নেয়া আজকের দুনিয়ায় রীতিমতো কষ্টকল্প। মিনিমালিস্ট জীবন আসলে কী? এর মানে হচ্ছে, একান্ত প্রয়োজনীয় জিনিস ব্যতীত বাহুল্য সম্পদ বা দ্রব্য বর্জন করে মানিয়ে নেয়া এক জীবন। অর্থাৎ, সীমিত সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার এবং অপ্রয়োজনীয় সবকিছুকে বিদায়।
ভারতীয় উপমহাদেশের হিমালয় পর্বতমালার পূর্বাংশে অবস্থিত এই দেশটিকে বলা হয় দ্রুক ইয়ুল বা বজ্র ড্রাগনের দেশ। এশিয়ার সুইজারল্যান্ড হিসেবে খ্যাতেই পাহাড়েঘেরা দেশটির আয়তন মাত্র ৪৬,৫০০ বর্গকিলোমিটার। মালদ্বীপের পর এটিই দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে কম ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। ছোট্ট এই দেশটির শিল্প খাত এখনও অনুন্নত পর্যায়ে রয়েছে সম্পদের সীমাবদ্ধতার কারণে, আর ঠিক সে কারণেই কুটির শিল্পকে খুব বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়ে থাকে। তবে বর্তমানে অন্যান্য বৃহৎ শিল্পও মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে ভুটানে। প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে ভুটান সৌহার্দ্য বজায় রেখে চলে। কারও সাথে সাতে পাঁচে নেই এই দেশটি করোনা মহামারী আসবার পর থেকেই একের পর এক চমকের সৃষ্টি করে যাচ্ছে বিশ্ব দরবারে।
দক্ষিণ এশিয়ায় করোনা ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত দেশ ভারতের সাথে সীমান্ত একদম মাখো মাখো হয়ে থাকা সত্ত্বেও ভুটানে করোনা আক্রান্ত ও আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার রীতিমতো কম। একেবারে ঈর্ষণীয় সাফল্য যাকে বলে, সেটিই করে দেখিয়েছে ভুটান। গত বছর ভুটানে করোনা ভাইরাস আঘাত হানার পর একেবারে সবকিছুর সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় দেশটি। ২০২০ সালে ভুটানে করোনা ভাইরাসে একজনও মৃত্যুবরণ করেনি এবং দেশটির প্রথম মৃত্যু হয়েছে এই বছরের জানুয়ারি মাসে। এমন নয় যে ভুটানে প্রতিদিন কেউ সংক্রমিত হচ্ছে না। হচ্ছে, কিন্তু অপরাপর দেশগুলোর সাথে ভুটানের পার্থক্য আসলে ঠিক কোথায়?
দেশটিতে ৬ মার্চ প্রথমবারের মতো এক মার্কিন পর্যটক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে তৎক্ষণাৎ তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয় এবং তার সংস্পর্শে যারা এসেছিলো সকলকে খুঁজে বের করে কোয়ারান্টাইনে রাখা হয়। এর মাধ্যমে আমরা ভুটানের সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্তের পরিচয় পাই। জায়গার অপ্রতুলতা থাকা সত্ত্বেও করোনা ভাইরাসের চিকিৎসার জন্য দেশটি গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ১২০টি কোয়ারান্টাইন কক্ষের ব্যবস্থা করে ফেলে। যারা ভুটানের বাইরে থেকে এসেছিল, তাদেরকে ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারান্টাইনে পাঠানো হয়েছিল। পাঠক হয়ত একটু চমকে ভাবতে পারেন, এমন সময়ানুবর্তী সিদ্ধান্ত কীভাবে নিতে পেরেছে দেশটি? আসলে ভুটানের রাজা নিজেও একজন ডাক্তার। সরেজমিনে তিনি দেশের করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছেন।
প্রথম করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়লে সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া হয় এবং জনসমাগম নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং অন্যান্য বিষয়ে সতর্কতার জন্যও ভুটানের রাজা নানা বিধিনিষেধ জারি করেন। এমনকি গরীব মানুষের জন্য ঘরে বসেই খাদ্যের ব্যবস্থা করা হয়। এজন্যই তখন বলেছিলাম ভুটান হচ্ছে একটি মিনিমালিস্ট দেশ। অধিক সম্পদ ও উন্নত চিকিৎসাব্যবস্থা না থাকলেও যে প্রাপ্য সম্পদের সঠিক ব্যবহার করে দুর্যোগ মোকাবিলা করা যায়, ভুটান হচ্ছে তার সর্বোতকৃষ্ট উদাহরণ। এখানে পাঠকদের আরেকটি কথা জানিয়ে রাখি। ভুটানে চিকিৎসকের সংখ্যা বর্তমানে ৩০০ বা তার কিছু বেশি। হাজারের কোটা এখনও পেরোয়নি।
করোনা মহামারির কারণে মৃত্যু ও সংক্রমণের কারণে হিমশিম খাচ্ছে গোটা বিশ্ব। এমন পরিস্থিতিতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর অবস্থা আরও নাজুক, ঠিক সেই সময়ে দেশের মোট প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার ৯০ শতাংশকে টিকা দিয়েছে ছোট্ট দেশ ভুটান। ফলে একে একটি ‘অনন্য কীর্তি’ হিসেবে বর্ণনা করেছে জাতিসংঘের সংস্থা ইউনিসেফ।
সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০ জুলাই করোনাভাইরাসের টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শুরু করে মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে ৯০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের টিকার কোর্স শেষ করেছে ভুটান, ফলে একে ‘অনন্য কীর্তি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে ইউনিসেফ।
কীভাবে তা সম্ভব করতে পেরেছে ছোট্ট এই দেশটি?
প্রতিবেদনে পাই চমৎকার এক বুদ্ধিমত্তার সামগ্রিক নিদর্শন। ২০ জুলাই টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেয়া শুরু হলেও এর প্রস্তুতি অন্তত কয়েক মাস আগে থেকেই নেয়া হচ্ছিল। অর্থাৎ, হুট করেই কাজে নেমে পড়েনি ভুটান। চারদিক খেয়াল করেছে, নিজেদের সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হয়ে পরিকল্পনা করেছে, এরপর বাস্তবায়ন করেছে। বিশ্বের অনেক বড় বড় রাষ্ট্রই ভুটানের কাছ থেকে এই শিক্ষা নিতে পারে।
ভুটান টিকা দেবার প্রস্তুতি গ্রহণের পাশাপাশি এর প্রচারণাও শুরু করেছিল জোরেশোরে। ভুটানের অনেক মানুষের পেশাই পশুচারণ। হিমালয়ের পাদদেশে অনেকের বসবাস। এসব অঞ্চলে টিকা নিয়ে কীভাবে যাওয়া যাবে, তা ছিল একটি অন্যতম কঠিন চ্যালেঞ্জ। এই কঠিন চ্যালেঞ্জকেই হেলিকপ্টারের সাহায্যে সহজ করে ফেলেছে ভুটান। টিকা পরিবহনের সময় কোল্ড চেইনের ব্যবস্থাও করেছে। তাছাড়া যুবা এবং স্বেচ্ছাসেবীদেরও কাজে লাগাতে পেরেছে দেশটি দারুণভাবে। এই স্বেচ্ছাসেবীরা পায়ে হেঁটেই ঘরে ঘরে দিয়ে এসেছেন টিকা।
দেশটিতে টিকা পাওয়ার যোগ্য ৫ লক্ষ ৩০ হাজার মানুষের মধ্যে ৪ লক্ষ ৮০ হাজার মানুষকেই গত বুধবার পর্যন্ত টিকাদান প্রক্রিয়ার আওতায় আনা গিয়েছে। মহামারির মধ্যে এটিই ছিল সবচেয়ে দ্রুত টিকাদান কর্মসূচি।
রাজধানী থিম্পু থেকে উইল পার্কস বলেন, বিশ্বটা যেন এমন হয়যাতে উদ্বৃত্ত টিকা গরীব কিংবা কম টিকা রয়েছে, এমন দেশগুলোতে পাঠানো হয়। ভুটানে চিকিৎসক কম, নার্সের সংখ্যাও কম। কিন্তু সঠিক সময়ে সঠিক কাজটি করবার মাধ্যমে দেশটি তার জনগণকে বাঁচাতে পেরেছে। সেখানে বিশাল বিশাল অট্টালিকা নেই, উন্নয়নের জোয়ার নেই, বেশি বাজেটও থাকে না। সম্পদের জন্য এখনও পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হয়। তবে সে দেশটির মাঝে যা রয়েছে, তা হলো পরামর্শদাতা এবং সঠিক সময়ে সঠিক কাজটি করার স্পৃহা। দেশের জনগণও সরকারকে সাহায্য করে গিয়েছে অকুণ্ঠভাবে। মিলেমিশেই তাই করোনা টিকাদান কর্মসূচী পালন করা গিয়েছে।
পাশের দেশ থেকে যদি আমরা এখনও শিক্ষা নিতে না পারি, তাহলে কবে?
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
দেশে একটি সুষ্ঠু
নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে
রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং
সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা
সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ
ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি
সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।
আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা
রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত
অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের
গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান
ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে
দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে
এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক
করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি
একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি
পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার
করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের
সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন
পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন
শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী
লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের
প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন
করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে
সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।
গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে,
তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো
দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের
অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা
পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে
প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ
এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে
নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও
একই ভাবে থেকেছেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি
হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে
যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু
এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার
পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে
তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:২৬ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।
দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই।