লিট ইনসাইড

লালু

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩:১৮ পিএম, ০২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭


Thumbnail

ওগো কি অইলো?  ঘরে বইয়া না থাইকা যাও খ্যাতে থোন এক বস্তা ঘাস কাইট্টা নিয়া আহো।

হ, যাইতাছি।

রমিজ উদ্দিন একটি বস্তা নিয়ে ঘরে থেকে বের হয়ে গেল। যেতে যেতে সে ভাবছে লালুর কথা। পশু হলেও তাদের সন্তান হারা ঘরকে পূর্ণ করে রেখেছে। দু বছর ধরে তারা লালুকে লালন পালন করছে। সেই ছোট্ট লালুর তিরিং বিরিং চলন বলন এখনো তাঁর চোখে ভাসে।

দিন যত বেড়ে চলছে লালুর প্রতি ভালবাসা, স্নেহও তত বৃদ্ধি পাচ্ছে রমিজ উদ্দিন আর আমেনা বেগমের। পলাশপুরের একটি অজপাড়াগাঁয়ে থাকে তারা। বাড়িতে একখানা ছোট্ট পাট খড়ির বেড়ার ঘর, আথাল সহ গোয়াল ঘর, তার সাথে মিলানো রান্নাঘর।

পানির কোনো সুব্যবস্থা নেই। বড় অভাবের সংসার! নিজেদের খাবার জুটাতেই বারোটা বেজে যায় তার ওপর লালু। অভাবটা যেন আর ও স্বচ্ছ হয়ে ধরা দেয়। তবুও লালু তাদের আদরের সন্তান। তাদের অবসরের পুরোটাই কাটে লালুকে নিয়ে। তার আদরের কিঞ্চিৎ অবহেলা তাদের সয় না। নিজেদের কষ্ট ফুল হয়ে ঝরে, যদি লালু ভালো থাকে। এসব ভাবতে ভাবতে দুপুর গড়িয়ে এলো। ক্ষুধাও পেয়েছে খুব। তড়িঘড়ি করে

ঘাসের বস্তা নিয়ে বাড়ি ফিরল রমিজ।

কি গো, খাওয়ার কি আছে দ্যাও দেহি। অনেক খিদা লাকছে।

ভাত ছারা খাওনের তো আর কিচ্ছু নাই। কোনো কাম কাইজ নাই। বাজারে যাও না কত্ত দিন খেয়াল আছে?

রমিজ চুপ হয়ে থাকে। তার সময়টা খুব খারাপ যাচ্ছে। ক্ষেতে কোনো কাজ নেই। তাই সে বেকার। বউয়ের কথার পাল্টা কোনো জবাব তার জানা নেই।

ভাত ই দাও। সাথে একটা কাঁচা মরিচ, পেয়াজ আর একটু লবণ দিও।

হঠাৎ মাঠের দিক থেকে হৈ চৈ শুনা যাচ্ছে।

কি অইছে? এত শোরগোল কিহের? মাঠে তো লালুরে বাইন্ধা দিয়া আইছিলাম!

দৌড়ে গেল রমিজ। লালু মাটিতে পড়ে আছে তার পিছনের ডান পা  থেকে রক্ত ঝরছে। রমিজ লালু বলে চিৎকার দিলো!

লালু কি অইছে তর? কেডায় করল এমন সর্বনাশ?

আমেনা ও দৌড়ে আসলো। আশপাশের খেলতে আসা বাচ্চারা বললো, গরুডারে কুত্তায় কামর দিছে। আরও কামরাইতো আমরা আইয়া ধাওয়াইছি।

রমিজ আমেনা ভেবে পায় না কি করবে তারা। ঘরে একটি কানাকড়িও নেই। কুকুরের কামড়! দ্রুত চিকিৎসা না করালে পরে কোনো উপায় থাকবে না। টাকার জন্য প্রতিবেশীদের দারস্থ হয়ে কোন লাভ হলো না। সবশেষে শ্বশুর শ্বাশুড়ির দেওয়া শেষ চিহ্ন এবং ঘরের একমাত্র সোনা নাকের ফুলটি বিক্রয় করেই লালুর চিকিৎসা হলো।

বড় বাড়ির খান সাহেব, আরে রমিজ মিয়া দেখি! কি খবর?

আপনেগো দোয়ায় ভালই খান সাহেব। কবে আইলেন?

শহরে থেকেও খান সাহেব তার আঞ্চলিকতা দূর করতে পারেন নি। অবশ্য এ নিয়ে কারো কোনো আপত্তি ও নেই।

এই তো আইলাম। বাড়ি যাইও।

অইলো জামুনে।

ঐ লাল গরুডা কার?

আমার খান সাহেব।

মাশাল্লাহ! মাশাল্লাহ! গরু তো ভালোই বানাইছো দেহি। আডে ভাল দাম পাওয়া যাইব। ব্যাচ না ক্যান?

রমিজের বুকের বাম পাশটায় যেন ছুরির আঘাতে যখম হয়ে গেল গরুর বিক্রির কথা শুনে।

না না খান সাহেব! অমন কতা কইবেন না। ও আমার সন্তান। ওরে ব্যাচার কতা স্বপন দ্যাহাও যে আমার পাপ।

হা হা হা। তোমার মাতা খারাপ অইছে রমিজ মিয়া। পশু কি কারও সন্তান অইতে পারে? ওরা নির্বোধ। কিচ্ছু বুজে না। অগো মানুষ পাইল্লা নাইল্লা বড় করে। আডে ব্যাচে। টাহা পায়। নিজেগো কামে খরচ করে। অরা দইরা রাহার জিনিস না। যদি ব্যাচো আমারে জানাইয়ো। আর তিন মাস পরেই তো কোরবানি।

রমিজ রিতিমতো রেগে যাচ্ছে। তার এ কথা শুনতে ভাল লাগছে না।

অনেক অইছে খান সাহেব আপনে এহন আহেন। আমার টাহা লাগবো না। আমার লালুরে আমি বেচমু না। এরহম কতা ভুলেও আমারে আর কইবেন না।

খান সাহেব রমিজের এমন স্বভাব বিরুদ্ধ কথা শুনে অপমান বোধ করলেন। মনে মনে বললেন এর একটা জবাব সে দিবেই।

তুই কিন্ত আমারে অপমান করলি রমিজ।

আরে যান, যান! কালে কালে এমন কত সাহেব দ্যাকলাম। কেউ কারও না।

রমিজ একটু নিচু স্বরে বলে, আপনেগো অনেক টাহা। আডে গ্যালে আর ও ভালো গরু আনতে পরবেন। অর দিকে নজর দিয়েন না।

খান সাহেবদের নজর বলে কথা! খান সাহেব উত্তেজিত হয়ে,

আমি ও দেকমু তুই ক্যামনে তর গরু বাড়িতে রাহস! বলতে বলতে চলে গেল।

রমিজ লালুকে জড়িয়ে ধরে চোখের জল আর ধরে রাখতে পারল না। কান্না ভারাক্রান্ত স্বরে সে বলে, তর ওপর খান সাহেবের নজর পোরছে। আমি কোতায় আবডাল করে রাকুম তরে??

লালু কি বুঝেছে সেই জানে। তার চোখ গড়িয়ে ও পানি বেয়ে পড়ছে।

বেলা দুটার দিকে রমিজ ক্ষেত থেকে এসেছে।

হুনছোনি? আমার লুঙ্গি আর পেরনডা দ্যাও। গাঙ্গে থোন অ্যাট্টা ডুব দিয়া আহি। আইয়া ভাত খামু। কি অইলো? হুনো না কিচ্ছু?  চোক কান গ্যালো নি নাকি?

অনেক ডাকাডাকির পরও আমেনা বেগমের কোন আলাপ নেই। বাধ্য হয়ে রমিজ মাঠের ময়লা জড়ানো হাত পা ঘরে ঢুকলো। ঘরের মধ্যে চাল ছড়িয়ে আছে, উবু করা পাতিল, পাশে তার বউ পড়ে আছে। রমিজ চিৎকার দিয়ে উঠল। প্রতিবেশীরা তার আর্তনাদ শুনে দৌড়াদৌড়ি করে এলো। শ্বাস-প্রশ্বাস চলছে তবে কেন চেতন নেই তাঁর। সকলে ধরাধরি করে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেল। দুপুর গড়িয়ে বিকেল তারপর গোধুলি নেমে এলো আমেনার জ্ঞান তখনও আসে নি। কিছুদিন হলো তার শ্বাস ছোট হয়ে আসছিল, চেহারাটাও তুলনামূলক ফুলে গিয়েছিল। এটাকে সুস্বাস্থ্যের লক্ষণ ভেবে গ্রাহ্য করা হয় নি। রাত দশটার দিকে রিপোর্ট এলো, তার কিডনি রোগ হয়েছে। দ্রুত কিডনি পরিবর্তন করতে হবে না হয় আসন্ন বিপদের আশঙ্কা। রমিজ মনে হয় মধ্য সাগরে পড়েছে। তিন বেলা যে ঘরে খাবার জোটে না সেখানে লাখ টাকা তো স্বপ্নের ও অতীত। প্রায় আড়াই লাখ টাকা না হলে আমেনাকে বাঁচানো অসম্ভব হয়ে পড়বে। রমিজের একমাত্র আত্মীয়া, বন্ধু, সাথী, জীবন সঙ্গী, স্বপ্নচারিণী সবই হলো আমেনা। তার জীবনের বিপরীতে সকল সম্পদই রমিজের কাছে তুচ্ছ। যে করেই হোক টাকা তো জোগাড় করতেই হবে। সম্পদ বলতে শুধু তার বাড়িটিই। কোনো উপায় না পেয়ে সবশেষে ভাবল বাবার রেখে যাওয়া ভিটেটা বন্ধক রেখে বড় বাড়ির খান সাহেবের কাছ থেকে টাকা আনবে। এলাকায় সে ছাড়া এত টাকা দেওয়ার মত কেউ নেই। রমিজ তাঁকে সব খুলে বলল।

সুযোগ সন্ধানী খান সাহেব আজহার আলি বললেন, টাহা দিতে পারি একটা শর্তে।

আমি আপনের যে কোন শর্তে রাজি। কন আমারে কি করতে অইবো।

কিচ্ছু করতে অইবো না। তর গরুডা আমার চাই। পনের দিন পর প্রথম কোরবানির দিন আমি তর লালুরে জবাই দিমু।

খান সাহেব!!

মাতা গরম করতাছোস ক্যা? তর টাহা লাগব দিমু তয় আমারডাও তো তর দ্যাকতে অইব না? তুই ই ভাব তর বউ বড় না তর গরু লালু? রমিজ অনেক ভেবে উপায় না পেয়ে রাজি হয়ে গেল। টাকা নিয়ে সোজা সে হাসপাতালে গেল। টাকা দেওয়ার পরেই আমেনার পুরো চিকিৎসা শুরু হলো। লালুকে খান সাহেব তার লোকজন নিয়ে নিতে আসলো। লালু এক পা ও নড়ে না। পাঁচ সাত জন ওনেক কষ্টে টেনে হিচড়ে নিয়ে গেল। লালু বার বার চেষ্টা করছিল রমিজের কাছে ছুটে আসতে আর হাম্বা হাম্বা ডাকে ভেঙ্গে নিয়েছিল পুরো পলাশপুর। রমিজ হাত পা ছেড়ে দাড়িয়ে আছে লালু চাইছে সে তাকে ফিরাক, রমিজের মন ও চাইছে তাই তবে সে সাধ্য কি তার আর আছে!

আমেনা ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছে আর লালু মৃত্যুর দিন গুনছে। রমিজ সময় পেলে চুরি করে লালুকে একটু দেখে আসছে। যাতে ও বাড়ির কারো নজরে না পড়ে। লালু খাবার মুখে তুলে না সারাক্ষণ চোখ বেয়ে জল পড়ে।

আমেনা প্রায় সুস্থ হয়ে গিয়েছে। ডাক্টার বলেছে কোরবানির প্রথম দিনে তাকে বাড়ি নিয়ে যাওয়া যাবে। এ দিকে রমিজের খাওয়া, গোসল, ঘুম কিছুই ঠিক নেই। সর্ব শোকে কাতর সে। রমিজ আমেনাকে আনতে গেল। তাদের আসতে আসতে দুপুর হলো। এতক্ষণে লালুর এক দেহ শত হাজার টুকরো হয়ে ভাগাভাগি শুরু হয়েছে।

আজহার আলি বড় কণ্ঠে বলছে মাংসডারে চাইর ভাগে ভাগ করবি। এক ভাগ ফ্রীজে রাকমু। জামাই-মাইয়া, নতুন মেহমান আইবো তাগো নিগ্গা। এক ভাগ বাড়ির মানুষের। আর বাকি দুই ভাগ আত্মীয়, প্রতিবেশী, গরীবদের অল্প অল্প দিয়া যা থাহে সব খাওয়ার জন্য।

মাংস কাটা ও ভাগের শেষে রমিজের বাড়িতে একজনকে দিয়ে মাংস পাঠানো হলো।

আমেনা বাড়িতে এসে, কি আবস্তা অইছে উঠ্যান বারি গরের! যেন কত জন্মে বসবাস বাদ দিছি!

ঘরে বসে স্বামীর অবস্থার উন্নতির কথা বললো সে। তারপর জানতে চাইলো তার আদরের লালুর কথা। রমিজের কাছে পৃথিবীর সকল ভাষা এসে ব্যর্থ হয়ে ফিরে যায়। তার মুখ পাথর হয়ে গেছে। চোখ অশ্রুতে ছলছল করছে। কি অইলো কতা কও না ক্যান? কই আমার লালু? খাওন দাওন দিছো তো ঠিক মত?

এর মধ্যে বড় বাড়ি থেকে একজন মাংস নিয়ে এসেছে।

খান সাহেব আমারে মাংস দিয়া পডাইছে।

মাংসটা তার হাত থেকে নিয়ে, তোমার লালু কই আছে জানতে চাইছো না? তোমার লালু আছে! এ গাঁয়ের সব্বার ঘরে ঘরে। খালি এ গাঁয়েই না উপরওয়ালার কাছেও সে গ্যাছে। আমাগো কাছেও সে আছে! মাংসর টুকরোগুলো দুহাতে নেড়ে নেড়ে রমিজ বলে, দ্যাহো! দ্যাহো! এ আমাগো লালু!

আমেনা কথা বলতে পারে না। রমিজকে ধরে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে আর্তনাদ করছে।

চোখের সামনে ভেসে ওঠে লালুর সজল চাহনি আর রঙ্গিন দেহখানা। শূন্য পড়ে আছে গোয়াল ঘর, শূন্য রমিজ আমেনার হৃদয়। তবে পূর্ণ, উল্লাসময় খান সাহেবের বাড়ি। খান সাহেবদের কোনো অপূর্ণতা নেই।

 

বাংলা ইনসাইডার/এসএ/জেডএ 



মন্তব্য করুন


লিট ইনসাইড

কবিতা

প্রকাশ: ০২:০৩ পিএম, ২৩ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail




মন্তব্য করুন


লিট ইনসাইড

বিশ্বের সেরা এবং আকর্ষণীয় পাচ মসজিদ

প্রকাশ: ১১:০২ এএম, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail

বিশ্বের এমন পাঁচটি মসজিদ সম্পর্কে জেনে নিন:


১. মসজিদুল হারাম, মক্কা, সৌদি আরব:

বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মানুষ দেখতে যায়, এমন মসজিদের তালিকায় সবার প্রথমে আছে পবিত্র নগরী মক্কার মসজিদুল হারাম। প্রতিবছর প্রায় ৮০ লাখ মানুষ এই মসজিদে যান। এটিই বিশ্বের সবচেয়ে বড় মসজিদ। একসঙ্গে ১৫ লাখ মানুষ এখানে প্রবেশ করে ঘুরে দেখতে পারেন। মুসলমানদের কাছে সবচেয়ে পবিত্র তিন স্থানের একটি এই মসজিদুল হারাম। মুসলমানদের কিবলা পবিত্র কাবাশরিফ এখানেই অবস্থিত।

তবে যে কেউ চাইলেই মসজিদুল হারামে প্রবেশ করতে পারেন না। অমুসলিমদের জন্য মক্কা নগরীতে প্রবেশ পুরোপুরি নিষিদ্ধ।


২. শেখ জায়েদ মসজিদ, আবুধাবি, সংযুক্ত আরব আমিরাত:

২০০৭ সালে স্থাপিত এই মসজিদ পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মসজিদগুলোর একটি। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ঝাড়বাতি ও সবচেয়ে বড় গালিচাও আছে এই মসজিদে।

আরব আমিরাতে বসবাসকারীদের বেশির ভাগই প্রবাসী, যাঁরা মূলত শ্রমজীবী হিসেবে বিভিন্ন দেশ থেকে সেখানে যান। এই বৈচিত্র্যময়তাই মসজিদটির নকশার মূল ভিত্তি। ব্রিটিশ, ইতালীয় ও আমিরাতি স্থপতিরা মিসর, মরক্কো, তুরস্ক, পাকিস্তানসহ বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশের মসজিদের নকশা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে শেখ জায়েদ মসজিদের নকশা এঁকেছেন।

প্রতিবছর মসজিদটি দেখতে প্রচুর দর্শনার্থী আসেন। শুধু ২০১৭ সালেই এসেছেন প্রায় ৫৮ লাখ দর্শনার্থী। নামাজের সময় ছাড়া অন্য সময় অমুসলিম দর্শনার্থীরাও মসজিদ ঘুরে দেখতে পারেন। তবে শুক্রবার অমুসলিম দর্শনার্থীদের এই মসজিদে প্রবেশ নিষেধ।


৩. আয়া সোফিয়া, ইস্তাম্বুল, তুরস্ক:

ইউরোপের সবচেয়ে আকর্ষণীয় শহরগুলোর একটি তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুল। আর ইস্তাম্বুল বা গোটা ইউরোপের অন্যতম সুন্দর মসজিদ আয়া সোফিয়া। ৩৬০ খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দে স্থাপিত এ স্থাপনা শুরুতে মসজিদ ছিল না। ১৪৬৩ সালে সুলতান মেহমেদ এটিকে মসজিদ হিসেবে স্বীকৃতি দেন।

১৯৩৪ সালে এটিকে জাদুঘরে রূপান্তরিত করে তৎকালীন তুরস্ক সরকার। কিন্তু ২০২০ সালে তুরস্কের রাষ্ট্রপতি রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এটিকে আবার নামাজ আদায়ের জন্য মুসল্লিদের কাছে উন্মুক্ত করে দেন। ১৯৮৫ সালে আয়া সোফিয়াকে বিশ্ব ঐতিহ্যর স্বীকৃতি দেয় ইউনেসকো।


৪. আল–আকসা মসজিদ, পূর্ব জেরুজালেম, ইসরায়েল:

মুসলিম স্থাপত্যশৈলীর শুরুর দিককার অন্যতম নিদর্শন জেরুজালেমের আল–আকসা মসজিদ।

বলা হয়ে থাকে, খোলাফায়ে রাশিদিনের অন্যতম খলিফা হজরত উমর (রা.)–র শাসনামলে ৬৩৭ খ্রিষ্টাব্দে শুরু হয় মসজিদটির নির্মাণকাজ। তবে বর্তমানে আল-আকসা বলতে পুরো চত্বরটাকেই বোঝানো হয়। ‘হারাম আল শরিফ’ নামে পরিচিত এই চত্বরের চার দেয়ালের মধ্যে আছে কিবলি মসজিদ, কুব্বাতুস সাখরা (ডোম অব দ্য রক) ও বুরাক মসজিদ। মূল আল–আকসা বা কিবলি মসজিদ হলো ধূসর সীসার পাতে আচ্ছাদিত গম্বুজওয়ালা একটি স্থাপনা। তবে পর্যটকের কাছে আল–আকসা নামে বেশি প্রসিদ্ধ সোনালি গম্বুজের স্থাপনা কুব্বাতুস সাখরা।

জেরুজালেমের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদ ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকায় উঠে আসে ১৯৮১ সালে। এখানে প্রায় চার লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন । তবে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেমে অবস্থিত আল-আকসা মসজিদ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েলি পুলিশ। কোনো মুসল্লিকে তারা মসজিদ প্রাঙ্গণে ঢুকতে দিচ্ছে না। পবিত্র স্থানটির দায়িত্বে থাকা ইসলামিক ওয়াক্‌ফ বিভাগ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।


৫. দ্বিতীয় হাসান মসজিদ, কাসাব্লাঙ্কা, মরক্কো:

আলজেরিয়ার জামা এল জাযের মসজিদের মিনার সবচেয়ে উঁচু, ৮৭০ ফুট। তারপরেই কাসাব্লাঙ্কার দ্বিতীয় হাসান মসজিদের মিনার, উচ্চতা ৬৮৯ ফুট। মরক্কোর বাদশাহ দ্বিতীয় হাসানের তত্ত্বাবধানে নির্মিত মসজিদটির নকশাকার ফরাসি স্থপতি মিশেল পিনসু।

আটলান্টিক মহাসাগরের একটি শৈলান্তরীপের মাথায় মসজিদটির অবস্থান। মেঝের একটা অংশ স্বচ্ছ কাচের বলে আটলান্টিকের নীল পানি দেখতে পান নামাজে যাওয়া মুসল্লিরা। দেয়ালে মার্বেলের চোখধাঁধানো কারুকাজ। ছাদ অপসারণযোগ্য বলে নামাজ পড়তে যাওয়া মুসল্লিরা রাতের আকাশও দেখতে পান।

দ্বিতীয় হাসান মসজিদের মিনার থেকে একটি লেজাররশ্মি মুসলমানদের কিবলা কাবাঘরের দিকে তাক করা। অনন্য স্থাপত্যশৈলীর জন্য জগৎ–খ্যাত এই মসজিদে একসঙ্গে ১ লাখ ৫ হাজার মুসল্লির নামাজ আদায় করার সুবিধা আছে।


মসজিদ   সেরা  


মন্তব্য করুন


লিট ইনসাইড

মুখের ঠিকানা

প্রকাশ: ১২:১৬ পিএম, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail




মন্তব্য করুন


লিট ইনসাইড

স্পর্শে তুমি

প্রকাশ: ০৪:৪৫ পিএম, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail




মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন