লিট ইনসাইড

গরুর গলায় কোন মালা?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫:৪২ পিএম, ০২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭


Thumbnail

সেই সব দিনগুলোতে শীতকালে ঈদ হতো। বিকাল-সন্ধ্যায় নদীর পাড়ে হিম  বাতাসে যতটা সম্ভব মোটা কাপড় পরে খেলাধুলা করতাম আমরা। আর কোরবানির গরু দেখে মুগ্ধ হতাম অথবা হতাশ হয়ে পড়তাম। হাটবারে দুপুর শুরু হতে না হতেই কত কত গ্রামের মানুষ গরু নিয়ে পরানপুর বা লোহাগাড়া যেতে ব্যস্ত হয়ে পড়তো। কেউ কেউ যেত ভাটিয়াপাড়ার হাটে। আমরা কেবলই খেলাধুলার ফাঁকে গরু নিয়ে তুমুল কৌতূহল প্রকাশ করতাম। কোন গরুর স্বাস্থ্য দেখে নিজেরাই মাংসের ভাগ বসাতে চাইতাম। হঠাৎ দুয়েকটা গরুর সুন্দর সাজগোজ দেখে কিছুদূর তাঁর সঙ্গে হাটতাম। খেলা বন্ধ করে কিছুক্ষণ ভালোমন্দ সমালোচনা চালাতাম। বিক্রয়যোগ্য যেকোনো কিছুর উপস্থাপন বড় ব্যাপার তা বুঝার ক্ষমতা তখনো আসেনি। তবে মানুষের মনোরঞ্জনের জন্য সাজসজ্জার প্রয়োজনীয়তা আমার জন্মের আগে থেকেই চলে আসছে। কত কত বছর পার হয়ে গেলো; তখন থেকে গরু সাজসজ্জার ব্যাপারে এখনের মানুষ বেশি সচেতন। বদলেছে সেই সংখ্যা, পরিবর্তন হয়েছে সাজসজ্জারও।

কোন কোরবানির ঈদে হিঙ্গুল দাদা’র পালে জবরদস্ত এঁড়ে গরু হয়নি, এমন হতে দেখিনি। তবে এই বেচারা প্রথমদিকে গরুর  সাজসজ্জায় আস্থা রাখতে পারেনি। তাতে দুয়েক হাজার টাকা কম পেলেও সে বিষয় বোঝার প্রয়োজনীয়তা এই মুরুব্বীর ছিল না। এক বছর হিঙ্গুল দাদা’র পালে বিরাট সুদেহি এক এঁড়ে গরু হল। গ্রামে অত বড় গরু কেনার মানুষ পাওয়া কঠিন। দাদা সিদ্ধান্ত নিলো কোনো ভাবে ট্রাকে করে নিয়ে গরুটি ঢাকার হাটে উঠাবে। এরমধ্যে কোনো এক দলালের বুদ্ধিতে গরুকে সুন্দর করে সাজানো হলো। গলায় লাল কাগজের ফুলের মালা, চুটে জরি মাখা আর রঙ করা দড়ি দিয়ে দু’দিক থেকে বাঁধা হয়েছে। সেবারে বেশ চড়া দামে গরু বিক্রি করতে পেরেছিলেন এই ভদ্রলোক। এতে এলাকার মানুষের মনে দুই ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। প্রথমত, সবাই হিঙ্গুল দাদার বুদ্ধিমত্তার বাহবা জানায়। দ্বিতীয়ত, এলাকার অনেক গরু মালিক গরু সাজসজ্জায় বিশ্বাসী হয়।  এমনকি হায়দারের শুকনা গরুকেও ব্যাপক সাজসজ্জা করে হাটে যেতে দেখা যায়।  কমপক্ষে একটি রঙিন কাগজের মালা দেওয়া হয়েছিল প্রায় সব গরুকেই।

গরুর সাজালে একটু বেশি দাম পাওয়াই যায়, এমন কথা নিশ্চিত করে বলছি না। তবে দৃষ্টি আকর্ষনের সুবিধা হয় শতভাগ। যা বিক্রেতার জন্য জরুরি। আরেকটি বিষয় লক্ষণীয়। তা হচ্ছে- উৎসবের আমেজ তৈরি হয়। যা কোরবানির  ঈদ পালনে একটু আধটু হলেও প্রয়োজনীয়। এখন উন্নত প্রযুক্তির যুগ, এ যুগে সাঁজের মালা বানানোর উপায় অন্তহীন। রঙিন কাগজের বাইরেও রকমারি মালা পরাতে দেখা যায় গরুর গলায়। এতে জাতি খুব উদ্ধার না হলেও উৎসবের ঐতিহ্য মাথা তুলে দাড়ায়, মানুষে মানুষে সমালোচনা হয়। অতঃপর ঈদ উৎসবমুখর হয়ে ওঠে।

কয়েক বছর আগের কথা। কোরবানির ঈদ সামনে রেখে গাবতলী হয়ে বাড়ি যাচ্ছিলাম। আমিন বাজার পার হতে বেশ সুদেহি এক গরু ঘিরে মানুষের ভিড় দেখলাম। গরুর মালিক তাকে বেঁধে রেখে একটু পানিটানি খাচ্ছিলো হয় তো। অন্যরকম সাঁজ দেখে এরই মধ্যে মানুষে মানুষে গবেষণা শুরু হয়েছে। বাসের কোন কোন যাত্রীকেও অংশগ্রহণ করতে দেখা গেলো। কেউ বলছে, গরুর গলায় যেই মালা লাল-নিল আলো দিচ্ছে তা নিতান্তই ব্যাটারি চালিত কিছু লাইট, এতে এত উত্তেজনার কিছু নেই, সমালোচনারও দরকার দেখিনা। পাশের দুয়েক জন তাকে সমর্থন করলেও অন্য সিটের দুই বন্ধু ফিসফিস করে বলতে লাগলো- সমাচলনা করার কিছু নেই আবার এই লোক নিজেই সমালোচনা করছে। আমি মনে মনে ভাবলাম, এতে হয় তো গরুর মালিক বিশাল অংকের টাকা লাভ করবে না, কিন্তু উৎসব আমেজ আনতে তাঁর অবদান অন্য গরুর মালিক থেকে একটু হলেও বেশি। সে খাতিরে এই মালিককে একটা ধন্যবাদ দিতে পারলে মন্দ হতো না। আবার ভাবলাম, গরুর মালা দেখে মজা পাওয়ার বয়স আমার নেই এখন। একবার ছোটবেলার স্মৃতিচারণও হল। স্কুলে পড়ার সময়ে বাড়িতে না বলে চুপিচাপি বন্ধুরা মিলে কোরবানির গরুর হাট দেখতে গিয়েছিলাম একবার। তখন ঘুরে ঘুরে বড় গরুর পাশে দাঁড়িয়ে থাকতাম। খুব আগ্রহ নিয়ে দেখতাম কোনটা  কত দামে  বিক্রি হচ্ছে। আবার নিজেদের মধ্যে সমালোচনা করতাম- কোন গরুর সাঁজ সবচেয়ে সুন্দর হয়েছে। কোন গরুর গলায় কোন মালা। দূর থেকে কোন গরুর গলায় মালা দেখলে মনে মনে প্রশ্ন জাগতো-  এই গরুর গলায় কোন মালা? কাগজের নাকি প্লাস্টিকের, নাকি অন্যকিছুর।  চাপা  কৌতূহল তাড়া করতো ভীষণ ভাবে।

বাংলা ইনসাইডার/এএসি/জেডএ

 



মন্তব্য করুন


লিট ইনসাইড

কবিতা

প্রকাশ: ০২:০৩ পিএম, ২৩ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail




মন্তব্য করুন


লিট ইনসাইড

বিশ্বের সেরা এবং আকর্ষণীয় পাচ মসজিদ

প্রকাশ: ১১:০২ এএম, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail

বিশ্বের এমন পাঁচটি মসজিদ সম্পর্কে জেনে নিন:


১. মসজিদুল হারাম, মক্কা, সৌদি আরব:

বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মানুষ দেখতে যায়, এমন মসজিদের তালিকায় সবার প্রথমে আছে পবিত্র নগরী মক্কার মসজিদুল হারাম। প্রতিবছর প্রায় ৮০ লাখ মানুষ এই মসজিদে যান। এটিই বিশ্বের সবচেয়ে বড় মসজিদ। একসঙ্গে ১৫ লাখ মানুষ এখানে প্রবেশ করে ঘুরে দেখতে পারেন। মুসলমানদের কাছে সবচেয়ে পবিত্র তিন স্থানের একটি এই মসজিদুল হারাম। মুসলমানদের কিবলা পবিত্র কাবাশরিফ এখানেই অবস্থিত।

তবে যে কেউ চাইলেই মসজিদুল হারামে প্রবেশ করতে পারেন না। অমুসলিমদের জন্য মক্কা নগরীতে প্রবেশ পুরোপুরি নিষিদ্ধ।


২. শেখ জায়েদ মসজিদ, আবুধাবি, সংযুক্ত আরব আমিরাত:

২০০৭ সালে স্থাপিত এই মসজিদ পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মসজিদগুলোর একটি। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ঝাড়বাতি ও সবচেয়ে বড় গালিচাও আছে এই মসজিদে।

আরব আমিরাতে বসবাসকারীদের বেশির ভাগই প্রবাসী, যাঁরা মূলত শ্রমজীবী হিসেবে বিভিন্ন দেশ থেকে সেখানে যান। এই বৈচিত্র্যময়তাই মসজিদটির নকশার মূল ভিত্তি। ব্রিটিশ, ইতালীয় ও আমিরাতি স্থপতিরা মিসর, মরক্কো, তুরস্ক, পাকিস্তানসহ বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশের মসজিদের নকশা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে শেখ জায়েদ মসজিদের নকশা এঁকেছেন।

প্রতিবছর মসজিদটি দেখতে প্রচুর দর্শনার্থী আসেন। শুধু ২০১৭ সালেই এসেছেন প্রায় ৫৮ লাখ দর্শনার্থী। নামাজের সময় ছাড়া অন্য সময় অমুসলিম দর্শনার্থীরাও মসজিদ ঘুরে দেখতে পারেন। তবে শুক্রবার অমুসলিম দর্শনার্থীদের এই মসজিদে প্রবেশ নিষেধ।


৩. আয়া সোফিয়া, ইস্তাম্বুল, তুরস্ক:

ইউরোপের সবচেয়ে আকর্ষণীয় শহরগুলোর একটি তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুল। আর ইস্তাম্বুল বা গোটা ইউরোপের অন্যতম সুন্দর মসজিদ আয়া সোফিয়া। ৩৬০ খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দে স্থাপিত এ স্থাপনা শুরুতে মসজিদ ছিল না। ১৪৬৩ সালে সুলতান মেহমেদ এটিকে মসজিদ হিসেবে স্বীকৃতি দেন।

১৯৩৪ সালে এটিকে জাদুঘরে রূপান্তরিত করে তৎকালীন তুরস্ক সরকার। কিন্তু ২০২০ সালে তুরস্কের রাষ্ট্রপতি রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এটিকে আবার নামাজ আদায়ের জন্য মুসল্লিদের কাছে উন্মুক্ত করে দেন। ১৯৮৫ সালে আয়া সোফিয়াকে বিশ্ব ঐতিহ্যর স্বীকৃতি দেয় ইউনেসকো।


৪. আল–আকসা মসজিদ, পূর্ব জেরুজালেম, ইসরায়েল:

মুসলিম স্থাপত্যশৈলীর শুরুর দিককার অন্যতম নিদর্শন জেরুজালেমের আল–আকসা মসজিদ।

বলা হয়ে থাকে, খোলাফায়ে রাশিদিনের অন্যতম খলিফা হজরত উমর (রা.)–র শাসনামলে ৬৩৭ খ্রিষ্টাব্দে শুরু হয় মসজিদটির নির্মাণকাজ। তবে বর্তমানে আল-আকসা বলতে পুরো চত্বরটাকেই বোঝানো হয়। ‘হারাম আল শরিফ’ নামে পরিচিত এই চত্বরের চার দেয়ালের মধ্যে আছে কিবলি মসজিদ, কুব্বাতুস সাখরা (ডোম অব দ্য রক) ও বুরাক মসজিদ। মূল আল–আকসা বা কিবলি মসজিদ হলো ধূসর সীসার পাতে আচ্ছাদিত গম্বুজওয়ালা একটি স্থাপনা। তবে পর্যটকের কাছে আল–আকসা নামে বেশি প্রসিদ্ধ সোনালি গম্বুজের স্থাপনা কুব্বাতুস সাখরা।

জেরুজালেমের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদ ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকায় উঠে আসে ১৯৮১ সালে। এখানে প্রায় চার লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন । তবে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেমে অবস্থিত আল-আকসা মসজিদ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েলি পুলিশ। কোনো মুসল্লিকে তারা মসজিদ প্রাঙ্গণে ঢুকতে দিচ্ছে না। পবিত্র স্থানটির দায়িত্বে থাকা ইসলামিক ওয়াক্‌ফ বিভাগ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।


৫. দ্বিতীয় হাসান মসজিদ, কাসাব্লাঙ্কা, মরক্কো:

আলজেরিয়ার জামা এল জাযের মসজিদের মিনার সবচেয়ে উঁচু, ৮৭০ ফুট। তারপরেই কাসাব্লাঙ্কার দ্বিতীয় হাসান মসজিদের মিনার, উচ্চতা ৬৮৯ ফুট। মরক্কোর বাদশাহ দ্বিতীয় হাসানের তত্ত্বাবধানে নির্মিত মসজিদটির নকশাকার ফরাসি স্থপতি মিশেল পিনসু।

আটলান্টিক মহাসাগরের একটি শৈলান্তরীপের মাথায় মসজিদটির অবস্থান। মেঝের একটা অংশ স্বচ্ছ কাচের বলে আটলান্টিকের নীল পানি দেখতে পান নামাজে যাওয়া মুসল্লিরা। দেয়ালে মার্বেলের চোখধাঁধানো কারুকাজ। ছাদ অপসারণযোগ্য বলে নামাজ পড়তে যাওয়া মুসল্লিরা রাতের আকাশও দেখতে পান।

দ্বিতীয় হাসান মসজিদের মিনার থেকে একটি লেজাররশ্মি মুসলমানদের কিবলা কাবাঘরের দিকে তাক করা। অনন্য স্থাপত্যশৈলীর জন্য জগৎ–খ্যাত এই মসজিদে একসঙ্গে ১ লাখ ৫ হাজার মুসল্লির নামাজ আদায় করার সুবিধা আছে।


মসজিদ   সেরা  


মন্তব্য করুন


লিট ইনসাইড

মুখের ঠিকানা

প্রকাশ: ১২:১৬ পিএম, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail




মন্তব্য করুন


লিট ইনসাইড

স্পর্শে তুমি

প্রকাশ: ০৪:৪৫ পিএম, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail




মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন