নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১১ জানুয়ারী, ২০১৮
সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল মঈন ইউ আহমেদ বলেছেন, বেগম জিয়া সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করে বাংলাদেশের রাজতন্ত্র কায়েম করতে চেয়েছিলেন। তিনি ক্ষমতার চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের আয়োজন করেছিলেন। ২২ জানুয়ারি নির্বাচনের পর তাঁর রাষ্ট্রপতি হবার পরিকল্পনা ছিল, তখন তারেক হতেন প্রধানমন্ত্রী। নিউইয়র্কে তাঁর ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে আলাপকালে সাবেক সেনাপ্রধান এই মন্তব্য করেন।
সম্প্রতি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আলী মঈন ইউ আহমেদের সমালোচনা করেন। আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনকালে তিনি বলেন, ‘সাবেক সেনাপ্রধান মঈন ইউ আহমেদের উৎসাহেই এই মামলা।’
নিউইয়র্কের বাঙালি কমিউনিটির কয়েকজন জেনারেল মঈনের কাছে এর সত্যতা সম্পর্কে জানতে চাইলে সাবেক সেনাপ্রধান এ তথ্যকে আজগুবি এবং অসত্য বলে মন্তব্য করেন। জেনারেল মঈন বলেন, ওই মামলা করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান করেছিলেন সাবেক সেনাপ্রধান হাসান মাশহুদ চৌধুরীকে। তিনি অত্যন্ত সৎ ও নীতিবান মানুষ। মঈন ইউ আহমেদ স্থানীয় বাঙ্গালিদের বলেছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার দুর্নীতি দমন কমিশনকে স্বাধীন এবং স্বতন্ত্র একটি প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা দিয়েছিলেন। দুর্নীতি দমন কমিশন যা করেছে, তা স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ ভাবেই করেছে। এ ব্যাপারে আমার বা সেনাবাহিনীর কোনো ভূমিকা ছিল না।
স্থানীয় বাঙালিরা সাবেক সেনাপ্রধানের কাছে জানতে চান যে, তিনি তিন বাহিনীর প্রধান হতে চেয়েছিলেন কিনা? জবাবে তিনি এটাকেও কল্পনাপ্রসূত বলে মন্তব্য করেন। জেনারেল মঈন ইউ আহমেদ বলেন, `বরং বেগম জিয়াই আমাকে ২২ জানুয়ারির নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করতে বলেছিলেন।’মঈন ইউ মনে করেন, `২২ জানুয়ারি ২০০৭ সালের নির্বাচন হলে দেশ হতো দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য। দেশে কায়েম হতো রাজতন্ত্র।’তিনি স্মৃতিচারণ করে বলেন, `এক সন্ধ্যায় ডেকে ম্যাডাম আমাকে ২২ জানুয়ারি নির্বাচন করতে সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চাইলেন।’ তিনি আমাকে বললেন, ‘এটাই আমার শেষ নির্বাচন।’ আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘আপনি কী অবসরে যাবেন’, উত্তরে তিনি হেসে বললেন, ‘ছেলেরা আমাকে রাষ্ট্রপতি বানাতে চাইছে।’ আমি তখন জানতে চাইলাম, ‘তাহলে প্রধানমন্ত্রী কে হবে?’ উত্তরে তিনি তারেকের নাম উচ্চারণ করেন।
বাঙালি কমিউনিটির কাছে এই প্রথম খোলামেলা আলোচনায় সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করা, নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করার ব্যাপারেও তিনি আমার সাহায্যে চেয়েছিলেন।’ জেনারেল মঈন বলেন, বেগম জিয়ার সমস্যা হলো, তিনি সেনাবাহিনীকে তাঁর নিজস্ব সংগঠন বা কেনা গোলাম মনে করেন। সেনাবাহিনীর প্রধানের স্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও তাঁর কাছ থেকে সেনাবাহিনী উল্লেখ করার মতো কিছুই পায়নি। ব্যক্তিগতভাবে তাঁর ভাইয়ের (প্রয়াত সাঈন ইস্কান্দার) বন্ধু-বান্ধবরা লাভবান হয়েছে।’ সাবেক এই সেনাপ্রধান মনে করেন, ‘বেগম জিয়া যদি তাঁর ছেলের দেখানো পথে না হেঁটে, বিএনপির বিচক্ষণ নেতাদের পরামর্শে চলতেন তাহলে তাঁর বা বিএনপির এই অবস্থা হতো না।’
Read in English- http://bit.ly/2mjkiWk
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
যশোর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা
মন্তব্য করুন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান ফরিদপুর
মন্তব্য করুন
ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন দূতাবাস
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।
আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে যে, আগামী মে মাসে তার বাংলাদেশ সফর করার কথা। এরপরও আরও কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্বের বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের বাঁক বলে মনে করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নানা বাস্তবতায় বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্য মুখী হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমানে পরিবর্তিত বিশ্বে এবং যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর বাংলাদেশকে নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকার জন্য বাংলাদেশের কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম কারণ হলো- বাকিতে তেল-জ্বালানি পাওয়া। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটের ফলে জ্বালানি তেলের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কোথাও এক বছরের বাকিতে, কোথাও তারও বেশি সময় বাকিতে জ্বালানি তেল আহরণের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিবাচক সমঝোতা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
কাতারের সঙ্গেও এমন একটি সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানা গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে৷
দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের অভিবাসীদের জন্য একটি বড় বাজার। বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এই সব দেশগুলোতে বিপুল সংখ্যক বাঙালি বসবাস করে। যুদ্ধের ফলে এই সমস্ত দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে অনেকে মনে করছে। অনেক শ্রমিক ছাঁটাই হতে পারে। আর এটি মাথায় রেখেই বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিচ্ছে, যেন বাংলাদেশের শ্রমিকরা এই শ্রমিক ছাঁটাই এর আওতায় না পড়ে।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক সংকট সেই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় অদূর ভবিষ্যতে নগদ সহায়তা দরকার হতে পারে, দ্রুত ঋণ দরকার হতে পারে। আর সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের সংকট নিরসনের একটা বড় ভরসাস্থল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর এই সমস্ত বাস্তবতায় বাংলাদেশ এখন মধ্যপ্রাচ্যমুখী। বাংলাদেশের ঋণের হার অনেক বেশি। বাংলাদেশে ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। অর্থনীতি ক্রমশ ঋণ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এখানে থেকে উত্তরণের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের সম্পদশালী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন একটি দূরদর্শী কূটনৈতিক চিন্তা বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ আগামী কয়েক বছর বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ দেনা মেটাতে হবে। এই কারণেই বাংলাদেশ কখনও যেন সংকটে না পরে সেজন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে দেখে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়।
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।