নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:০৯ পিএম, ২২ জানুয়ারী, ২০১৮
শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ। ২০০৮ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত বর্তমান সরকারের প্রথম মেয়াদের মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালনে সততার স্বাক্ষর রেখে ‘মি. ক্লিন’ হিসেবে পরিচিত পান। ওই স্বীকৃতির প্রতিদান হিসেবেই ২০১৩ এর শেষ দিকে সর্বদলীয় নির্বাচনকালীন সরকারের ছোট মন্ত্রিসভায় স্থান হয় তাঁর। পরে ২০১৪ এর নির্বাচনে জয়ী হয়ে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট। নতুন মন্ত্রিসভায় অনেক রদবদল হলেও শিক্ষামন্ত্রী থাকেন নূরুল ইসলাম নাহিদই। তবে ২০১৪ থেকে এখনো পর্যন্ত একই মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালন করেও চরম বিতর্কিত চরিত্র হয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরিণত হয়েছে অনিয়ম-দুর্নীতির আখড়ায়। প্রশ্ন ফাঁস, পাঠ্যবই কেলেঙ্কারি, এমপিও ভুক্তিতে অনিয়মসহ নানা অভিযোগ এখন শিক্ষা মন্ত্রণালয় নিয়ে। এসব দমনে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ শিক্ষামন্ত্রী। জনমণে প্রশ্ন কী হলো মি. ক্লিনের?
অতিসম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয় আলোচনায় এসেছে সেখানকার দুই কর্মীর হঠাৎ নিখোঁজে। পরে জানা যায়, দুজনই আছেন গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কার্যালয়ে। শিক্ষামন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিও) মোতালেব হোসেন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মচারী নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ তুলেছে ডিবি। একাধিক সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার পরিচয় দিয়ে তারা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির রাজত্ব কায়েম করেছে।
আরও জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শুধু এই দুজন কর্মকর্তাই নয় আরও অনেকেই আছেন যাঁরা দুর্নীতি-অনিয়মে যুক্ত। আর এমন চিত্র অন্য অনেক মন্ত্রণালয়েরও মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন ক্ষেত্রে জামাত-বিএনপিপন্থী সহ সরকারবিরোধী দলগুলোর অনেকেই ঠাঁই করে নিয়েছে। তারাই দুর্নীতির আখড়া বানাচ্ছে মন্ত্রণালয়গুলোতে। মোতালেব হোসেন ও নাসির উদ্দিনের মতো অনেকেই মন্ত্রীদের অতি ঘনিষ্ঠতার সুযোগ নিয়ে হয়তো মন্ত্রীদের অজ্ঞাতসারেই দুর্নীতি, অনিয়ম ও টেন্ডারবাজিতে জড়িয়ে ফেলছে। মন্ত্রীরা হয়তো জানছেনও না তাঁদের ইমেজ কোনো পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছেন এই অতি বিশ্বস্তরা। আবার ক্ষেত্র বিশেষ দায়িত্বশীলরাই হয়ে উঠছেন এদের রক্ষাকবচ।
সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই কর্মচারী ডিবির হাতে আটকের কথা জানার পর শিক্ষামন্ত্রীর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এমনটি তাঁকে আগে থেকে জানাতে পারত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, এরা মন্ত্রীর এতটাই আস্থাভাজন তাঁকে জানালে হয়তো এদের আটকই সম্ভব হতো না।
আর বিশেষজ্ঞদের মতে, মন্ত্রীসহ দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের অধিনস্তদের দুর্নীতি-অনিয়মের দায়ভার তাঁদেরই নিতে হবে। নিজে ক্লিন বলে অধনস্তদের দুর্নীতি মেনে নেওয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ক্ষেত্রে অধনস্ত কর্মচারীদের দুর্নীতি-অনিয়মেই মি. ক্লিন হয়েছেন মি. ডার্টি।
বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীসহ দায়িত্বশীলদের ঠিক করতে হবে আশে পাশে কারা থাকবে। আশে পাশের ঘনিষ্ঠদের ব্যাপারে সব ধরনের সাবধানতা নিতে হবে দায়িত্বশীলদেরই। কারণ এদের মাধ্যমে অনেকক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রিত হয় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। দায়িত্বশীলদের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় অনেকক্ষেত্রেই এদের ভূমিকা থাকে অগ্রগন্য। সেখানেই যদি সমস্যা দেখা দেয় তবে এটি হবে ‘সরষের মধ্যেই ভূতের’ মতো অবস্থা।
আশার কথা হলো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রণালয়গুলোর দুর্নীতি-অনিয়ম দূর করতে বিশেষ উদ্যোগী হয়েছেন। আর তাঁর কারণে ডিবি ও দুদক এ ব্যাপারে নজরদারি ও তদন্ত বাড়িয়েছে। তাঁদের কার্যকর ভূমিকার কারণে আটক হয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুজন। এই আটক বাকি সরষের ভূত ও তাঁদের আশ্রয়দাতাদের জন্যও অশনিসংকেত বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক বিএসএমএমইউ
মন্তব্য করুন
রাজার ভুটান ভুটান তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত
মন্তব্য করুন
ভালো চাকরির প্রলোভনে লিবিয়ায় গিয়ে জিম্মির শিকার চট্টগ্রামের চার তরুণ। সেখানে তাদের ওপর চালানো হয় নির্যাতন। আর সেই ভিডিও স্বজনদের কাছে পাঠিয়ে দাবি করা হয়েছে ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ।
বুধবার (২৭ মার্চ) বিকেলে জিম্মিদের অভিভাবকরা এ ঘটনায় চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং থানার ওসিকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন।
লিবিয়ায় মানব পাচার চক্রের হাতে জিম্মি চার তরুণ হলেন- আনোয়ারা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের মধ্যম গহিরা বাচা মিয়া মাঝির ঘাট এলাকার নুরুল আলমের ছেলে ওয়াসিম, একই এলাকার মৃত মোজাহের মিয়ার ছেলে বোরহান উদ্দিন, আবদুর রহিমের ছেলে জাবেদুর রহিম ও জেবল হোসেনের ছেলে নাঈম উদ্দিন। এদের বয়স ১৯ থেকে ২২ বছরের মধ্যে।
অপহৃতদের স্বজনরা জানান, রায়পুর ইউনিয়নের গহিরা এলাকার মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে জহিরুল ইসলাম লিবিয়ায় নিয়ে চাকরি দেয়ার কথা বলে ফেব্রুয়ারিতে জনপ্রতি ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা নেন। ওই তরুণরা ১৬ ফেব্রুয়ারি লিবিয়ায় পৌঁছেন। লিবিয়ায় তাদের সংঘবদ্ধ একটি চক্রের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর জনপ্রতি ১০ লাখ টাকা দাবি করে তাদের নির্যাতন করা শুরু হয়। মানব পাচার চক্র এরপর নির্যাতনের ভিডিও পাঠানো শুরু করে পরিবারের সদস্যদের কাছে।
স্বজনরা জানান, চট্টগ্রামের জহিরুল ভুক্তভোগীদের টুরিস্ট ভিসায় প্রথমে দুবাই নিয়ে যায়। সেখানে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর থানার বাসিন্দা মো. মিজান নামে এক লোকের হাতে ওদেরকে তুলে দেয়া হয়। মিজান তিনদিন পর তাদের সবার পাসপোর্ট নিজের কাছে নিয়ে নেয়। সাতদিন পর দুবাই থেকে মিসর হয়ে লিবিয়ায় নিয়ে মিজান ওই চার তরুণকে অন্য দালালের হাতে তুলে দেয়।
আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইশতিয়াক ইমন জানান, অপহৃতদের স্বজনদের কাছ থেকে তারা লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
লিবিয়া বাংলাদেশি জিম্মি নির্যাতন ভিডিও মুক্তিপণ
মন্তব্য করুন
পিটার হাস নির্বাচন মার্কিন রাষ্ট্রদূত
মন্তব্য করুন
নড়াইলের লোহাগড়ায় দ্বন্দ্বের জেরে আওয়ামী লীগের এক নেতাকে ইয়াবা
ট্যাবলেট দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে আওয়ামী লীগের আরেক কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনাস্থল
থেকে ৫০০টি ইয়াবা উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকাল পৌনে ৮টার দিকে উপজেলার ইতনা ইউনিয়নের
চরদৌলতপুর গ্রামের দ্বীন মোল্যার মুদি দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
গ্রেপ্তার জিয়া চৌধুরী (৩৩) উপজেলার ইতনা ইউনিয়ন আ.লীগের কর্মী।
তিনি ইতনা ইউনিয়নের দক্ষিণ লংকারচর গ্রামের মো. আজগর চৌধুরীর ছেলে। ভুক্তভোগী মো. আরজ
আলী ওরফে লিচু কাজী (৫৮) উপজেলার ইতনা ইউনিয়ন আ.লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকালে আওয়ামী লীগ
নেতা লিচু কাজী চরদৌলতপুর বাজার থেকে পাংখারচর বাড়িতে ফেরার পথে দ্বীন মোল্যার দোকানের
সামনে পৌঁছলে অভিযুক্ত জিয়া ডেকে নিয়ে বসান তাকে।
এ সময় পাশে বসে কৌশলে লিচু কাজীর পাঞ্জাবির পকেটে জিয়া একটি প্যাকেট
ঢুকাতে গেলে তখন ধস্তাধস্তি হয়। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে নীল রঙের জীপারযুক্ত পাঁচটি
পলি ব্যাগ মাটিতে পড়ে যায়। সেখানে ৫০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ছিল। ওই সময় পুলিশের উপস্থিতি
টের পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে জিয়া চৌধুরী দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে ঘটনার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য
লিচু চৌধুরীকে লোহাগড়া থানায় নেওয়া হয়। ঘটনাস্থল থেকে পাঁচটি পেকেটে থাকা ৫০০ ইয়াবা
উদ্ধার করে পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদে লিচু কাজী পুলিশকে জানান যে, সমাজে আমাকে হেয় করার
জন্য জিয়া এমন নাটক সাজায়। উপস্থিত ভ্যানচালক আজিম ফকিরও পুলিশকে একই সাক্ষ্য দেন।
এ ঘটনার জের ধরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই দিন বিকেলেই ইয়াবা কারবারি
জিয়া চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ জিয়া চৌধুরীকে গ্রেপ্তারকালে সাংবাদিকদের তিনি
বলেন, আমি অপরাধী নই।
আওয়ামী লীগ নেতা লিচু কাজী থানা থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের বলেন,
সামাজিকভাবে হেয় করতে সুপরিকল্পিতভাবে প্রতিপক্ষরা জিয়ার মাধ্যমে ইয়াবা দিয়ে আমাকে
ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিল। সত্য উদঘাটিত হওয়ায় আল্লাহর অশেষ রহমতে আমি অভিযোগ থেকে মুক্তি
পেয়েছি।
এ বিষয়ে লোহাগড়া থানার ওসি কাঞ্চন কুমার রায় বলেন, মাদকবিরোধী অভিযানে
জিয়া চৌধুরী নামের এক মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে থানায় একটি
মাদক মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে আদালতের মাধ্যমে আসামিকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন
ভালো চাকরির প্রলোভনে লিবিয়ায় গিয়ে জিম্মির শিকার চট্টগ্রামের চার তরুণ। সেখানে তাদের ওপর চালানো হয় নির্যাতন। আর সেই ভিডিও স্বজনদের কাছে পাঠিয়ে দাবি করা হয়েছে ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ। বুধবার (২৭ মার্চ) বিকেলে জিম্মিদের অভিভাবকরা এ ঘটনায় চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং থানার ওসিকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন।