নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ এএম, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮
স্বল্পোন্নত দেশের তকমা আর নয়। এমন দেশের তালিকায় থেকে শিগগিরই বেরিয়ে আসছে বাংলাদেশ। সবগুলো শর্ত পূরণ করে জাতিসংঘের কাছ থেকে এখন শুধু ঘোষণা পাওয়ার অপেক্ষা। আগামী মার্চেই আসতে পারে সেই শুভ বার্তা।
জাতিসংঘের পরামর্শক সংস্থা ইকোসকের ‘কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট’ বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের জন্য সুপারিশ করেছে। স্বল্পোন্নত দেশের গন্ডি উত্তরণের জন্য জাতিসংঘের যে তিনটি শর্ত পূরণ করতে হয়, তাতে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে বাংলাদেশ।
এই স্বীকৃতি বাংলাদেশের জন্য এক অনন্য মাইলফলক। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরনের জন্যে জাতিসংঘের শর্তগুলো হলো: মাথাপিছু গড় আয়, মানবিক সম্পদ সূচক, অর্থনৈতিক ঝুঁকি সূচক।
মাথাপিছু গড় আয় স্বল্পন্নোত দেশ থেকে বের হওয়ার একটি অন্যতম সূচক। বিশ্বব্যাংকের এটলাস পদ্ধতির আলোকে নির্ধারিত মাথাপিছু গড় আয়ের এক হাজার ২৪২ ডলার বাংলাদেশ অতিক্রম করেছে। ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু গড় আয় ছিল মাত্র ১২৯ মার্কিন ডলার। চলতি অর্থবছরে মাথাপিছু আয় বেড়ে হয়েছে এক হাজার ৬১০ ডলার। এ হিসাবে গত ৪৪ বছরের ব্যবধানে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু গড় আয় বেড়েছে প্রায় ১১ গুণ।
মানব উন্নয়ন সূচকে স্বল্পোন্নত থেকে বেরুবার জন্য অন্তত ৬৬ পয়েন্ট প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশের, যা ইতিমধ্যেই অর্জিত হয়েছে। ১৯৭১সালে আমাদের দেশের মানুষের গড় আয়ু ছিল ৪৭ বছর তা আজ প্রায় ৭২ বছর। ১৯৭১ সালের দিকে ৫ বছরের নিচে শিশু মৃত্যুর হার ছিল প্রতি হাজারে ২২২ দশমিক ৭ জন। এখন তা প্রতি হাজারে ৩৪ দশমিক ২ জন। সাক্ষরতার হার গত নয় বছরে ৪৪ শতাংশ হার বৃদ্ধি পেয়ে ৭২ দশমিক ৩০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
অর্থনৈতিক ঝুঁকি সূচকেও বাংলাদেশ লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি অর্জন করেছে। এই সূচকে নূন্যতম ৩২ বা তার কম স্কোর থাকতে হয়। বাংলাদেশের বর্তমান স্কোর ২৪ দশমিক ৯। দারিদ্রতা দূরীকরণে বাংলাদেশের সফলতা সারা বিশ্বকে বিস্মিত করেছে। ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৩ বিলিয়ন ডলার। রপ্তানি আয় ৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিক্রম করেছে।
এই তিনটি শর্ত পূরণ করায় জাতিসংঘ স্বীকৃতি দিয়েছে যে বাংলাদেশ আর নিন্ম আয়ের দেশ নয়। জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (ইউএনসিডিপি) মার্চে তাদের পরবর্তী বৈঠক বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হওয়ার জন্যে সুপারিশ করবে।
একটা সময় বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে পরিচিত ছিল ক্ষুধা ও দারিদ্রের প্রতীক হিসেবে। বন্যা আর দূর্যোগের দেশ হিসেবে ছিল দুর্নাম। সেই অবস্থা থেকে বাংলাদেশের আজকের অবস্থান কোনো রূপকথা নয়।
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ কে নিয়ে আশাবাদী মানুষ সারা বিশ্বে খুব কম ছিল। বাংলাদেশকে নিয়ে তুচ্ছতাচ্ছিল্যের অভাব ছিল না। সেই বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা দেখে অনেক দেশ আমাদের তাদের রোল মডেল ভাবতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই।
বাংলাদেশ শুধুই জাতিসংঘের দেওয়া শর্তই পূরণ করে নাই, অনান্য ক্ষেত্রেও অর্জন করেছে ইর্ষনীয় সাফল্য অর্জন করেছে ।
খাদ্য উৎপাদনে বাংলাদেশ অসামান্য সফলতা অর্জন করেছে। ২০১৭ সালে বাংলাদেশ ৩ দশমিক ৯৭ কোটি মেট্রিক টন খাদ্য উৎপাদন করেছে। ২০০৬-০৭ সালে বার্ষিক খাদ্য উৎপাদন ছিল ২ দশমিক ৮৪ কোটি মেট্রিক টন।
২০১৮ সালে জানুয়ারির প্রথম দিনেই ৩৪ কোটি পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে।
পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বর্তমানে পৃথিবীর মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে।
‘সবার জন্য বিদ্যুৎ’ প্রধানমন্ত্রীর এই ভিশনের আলোকে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২০০৮ সালের তিন হাজার ২৬৪ মেগাওয়াট থেকে বর্তমানে ১৬ হাজার ৩৫০ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে।
নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের অর্জন ইউনেস্কো কর্তৃক স্বীকৃত।
তথ্য প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ একটি বিপ্লবের স্বাক্ষী। মোবাইল টেলিফোন সিমের সংখ্যা ২০১৭ সালে ১৩ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। বর্তমানে ইন্টারনেট গ্রাহকের সংখ্যা ৭ কোটির উপরে।
বাংলাদেশের এই স্বপ্ন পূরণের গল্প পৃথিবীর দারিদ্রপীড়িত রাষ্ট্র গুলোর জন্য আজ অনুপ্রেরণায় উৎস। বাংলাদেশেকে এখন কেউ ক্ষুধা, বন্যার দেশ বলবে না। করুণা আর অবজ্ঞায় তাকাবে না।
বাংলাদেশের নাগরিকরা আজ সারা বিশ্বে বাড়তি মর্যাদা পাবে। বাংলাদেশের অভিবাসীরা পাবে সম্মান। সবুজ পাসপোর্ট আর হবে না তাচ্ছিল্যের পাত্র।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে ক্রমেই এগিয়ে চলছে। পদ্মা সেতু, মেট্রো রেল,রূপপুর পারমানবিক প্রকল্প্র, ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ কেন্দ্র,পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর, কর্ণফুলী টানেল, বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট, ১২ টি হাই-টেক পার্ক, সারাদেশে ৫০০০ এর বেশি ডিজিটাল সেন্টার এসবই বাংলাদেশের উন্নয়নের জলন্ত উদাহরণ।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে বাংলাদেশের সফলতার পেছনে প্রধানমন্ত্রীর কিছু উদ্যোগ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখেছে। যেমন, নারীর ক্ষমতায়ন, আশ্রয়ন,শিক্ষা সহায়তা, একটি বাড়ি একটি খামার, ডিজিটাল বাংলাদেশ, কমিউনিতি ক্লিনিক, বিনিয়োগ বিকাশ, পরিবেশ সুরক্ষা, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, এবং সবার জন্য বিদ্যুৎ।
বাংলা ইনসাইডার/আরকে/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. সামন্ত লাল সেন
মন্তব্য করুন
জলবায়ু সহনশীল মৎস্যচাষ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মোঃ আব্দুর রহমান
মন্তব্য করুন
ড. ইউনূস পুরস্কার বিতর্ক দ্য ট্রি অব পিস
মন্তব্য করুন
ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপের
এক বছরের জন্য চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন
চৌধুরী। জাতীয়
সংসদ সচিবালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বুধবার (২৭ মার্চ) ১৪৮তম আইপিইউ অ্যাসেম্বলির গভর্নিং কাউন্সিলের
সমাপনী সেশনে স্পিকারের অংশগ্রহণ স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী সুইজারল্যান্ডের জেনেভাতে
‘১৪৮তম আইপিইউ অ্যাসেম্বলি’ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত গভর্নিং কাউন্সিলের সমাপনী সেশনে বক্তব্য
রাখেন।
এ সেশনে আইপিইউর প্রেসিডেন্ট ড. টুলিয়া অ্যকসন, আইপিইউ সেক্রেটারি
জেনারেল মার্টিন চুংগংসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সমাপনী সেশনে বক্তব্য প্রদানকালে স্পিকার বলেন, গত ২৩ মার্চ তারিখে
সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় আইপিইউ সমাবেশে এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপের সভায় সভাপতিত্ব
করা ছিল এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা।
এক বছরের জন্য এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপের চেয়ারম্যান হিসেবে নেতৃত্ব
দেওয়ার দায়িত্ব নিতে পেরে তিনি আনন্দিত।
তিনি বলেন, বৈঠকে এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপের ৩২টি সদস্য রাষ্ট্র
উপস্থিত ছিল এবং তারা পারস্পরিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে সব এজেন্ডা সমাধানে অংশ নেয়।
এ সময় সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সদস্য হিসেবে জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ
নূর-ই-আলম চৌধুরী, শফিকুল ইসলাম, মাহবুব উর রহমান, শাহাদারা মান্নান, নীলুফার আনজুম,
এইচ এম বদিউজ্জামান, মো. মুজিবুল হক, আখতারুজ্জামান এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র
সচিব কে এম আব্দুস সালাম উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় সংসদ স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী আইপিইউ
মন্তব্য করুন
জলবায়ু সহনশীল মৎস্যচাষ পদ্ধতি উদ্ভাবন করতে সরকার পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মোঃ আব্দুর রহমান। সরকারের গৃহীত উন্নয়নমূলক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে মৎস্য উৎপাদন ও সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে সকল স্টেকহোল্ডাদেরে এগিয়ে আসতে তিনি আহবান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, জলবায়ু সহনশীল মৎস্য উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনার জন্য গবেষণার উপর বিশেষ জোর দিতে হবে।