নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০৩ মার্চ, ২০১৮
বেগম জিয়াকে ছাড়াই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নতুন ছক তৈরি হচ্ছে। বদলে যাচ্ছে জোটগুলোর কাঠামো। চারটি জোটের লড়াইয়ে আগামী নির্বাচনকে জমজমাট করতে কাজ শুরু হয়েছে। চলছে আলাপ আলোচনা। ভোটের মাঠে ২০ দলীয় জোট থাকবে না, তা প্রায় নিশ্চিত। বিএনপি, জাতীয় পার্টির নেতৃত্বে নতুন নির্বাচনী জোট আত্মপ্রকাশের প্রস্তুতি চলছে। ২০ দলীয় জোট যেমন থাকছে না, তেমনি ভোটের মাঠে ‘মহাজোট’ও থাকবে না। তবে ১৪ দলীয় জোট অটুট থাকবে।
তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ আওয়ামী লীগ। তবে এবার আওয়ামী লীগ ভোটের বিন্যাস পাল্টে দিচ্ছে। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী বাংলা ইনসাইডারকে নিশ্চিত করেছেন যে, এবার আওয়ামী লীগ ‘মহাজোট’ করে নির্বাচন করবে না। তিনি বলেন, ‘খুব নাটকীয় কিছু না ঘটলে আওয়ামী লীগ ১৪ দলগত ভাবে নির্বাচন করবে। জাতীয় পার্টি আলাদা নির্বাচন করবে। তবে মতিয়া চৌধুরী ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, ১৪ দলের সঙ্গে আরও দুই একটা দল যুক্ত হতে পারে। যেমন আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর নেতৃত্বাধীন জেপি ১৪ দলে যুক্ত হতে পারে। বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগকে কেউ কেউ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোটে আনার চেষ্টা করছে। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ‘আগামী নির্বাচন বাঙালির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সকল শক্তিকে এক মঞ্চে আনতে চাই।’ বাম মোর্চার বাইরের সকল প্রগতিশীল শক্তিকে এক ছাতার নিচে আনার কাজ করছে আওয়ামী লীগ। বেগম মতিয়া চৌধুরী মনে করেন, ‘আগামী দুই তিন মাসের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের এই জোটের অবয়ব পরিষ্কার হবে।’
সবচেয়ে বড় জোট বিন্যাস পরিবর্তন হবে বিএনপিতে। বেগম জিয়া গ্রেপ্তার হওয়ার পর মাত্র দুটি বৈঠক হয়েছে ২০ দলীয় জোটে। দুই একটি কর্মসূচিতে ২০ দলীয় জোটের জামাত ছাড়া শরিকরা থাকলেও এখন বিএনপির সঙ্গে তার সম্পর্ক আলগা। বিএনপি জামাতের শীতল সম্পর্ক উষ্ণ হয়নি। জামাত এখন একলা চলো নীতি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বৃহত্তর জোট গঠনের লক্ষে বিএনপি কাজ করছে। বিএনপির ওই নেতা স্বীকার করেছেন, ২০ দলে জামাত থাকায় অনেক দলই ২০ দলে অন্তভুক্ত হতে রাজি নয়। এ কারণেই নির্বাচনী জোট আলাদা হতে পারে।‘ বিএনপির একাধিক সূত্র বলছে, ২০ দলীয় জোটের বিজেপি, এলডিপিকে নিয়ে অন্যান্য কয়েকটি দলকে নিয়ে নতুন জোটের কাজ বহুদুর এগিয়েছে। নাগরিক ঐক্য, বিকল্প ধারা এবং আ.স.ম আবদুর রবের নেতৃত্বাধীন জাসদের সঙ্গে বিএনপির প্রায় সমাপ্ত আলোচনা জামাতেই আটকে আছে। গত কয়েকদিন ধরে বিএনপির নেতারা কোনো রাখ ঢাক না রেখেই জামাতকে বাদ দেওয়ার কথা বলছে। বিএনপির নেতা ড. মঈন খান স্বীকার করেন, ‘বিএনপি জামাত থেকে আলাদা হলে , সর্বদলীয় ঐক্য করতে পারে। ‘ বর্তমান সরকারকে হটাতে এরকম ঐক্য জাতীয় দাবি বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন। বিএনপি নেতারা বলছেন, জামাত থেকে বেরিয়ে এলে, গণফোরাম, বামফ্রন্টের মতো দলগুলোর সঙ্গেও ঐক্য করা সম্ভব। তবে, বেগম জিয়াকে জেলে রেখে নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মতদ্বৈততা জোট প্রশ্নেও ছড়িয়ে পড়েছে। বিএনপিতে যারা খালেদা জিয়া ছাড়া নির্বাচনে না যাবার পক্ষে, তাঁরা ২০ দলীয় জোটও না ভাঙ্গতে অটল। নাম প্রকাশ না করার শর্তে, এই মতের এক বিএনপি নেতা বলেন, ‘জোট ভাঙ্গা, বিএনপি ভাঙ্গা এবং বেগম জিয়াকে ছাড়া নির্বাচনে যাওয়া – একই সূত্রে গাঁথা। এটাই সরকারের ব্লু প্রিন্ট।’ ওই নেতা মনে করেন ,’সরকার চাইছে জিয়া পরিবার ছাড়া একটি নতুন বিএনপি করতে। ওই বিএনপিএর সঙ্গে সরকারের এজেন্টদের জোড়া লাগিয়ে, জোট করে অংশগ্রহণ মূলক নির্বাচন দেখাতে ।
কিন্তু ওই নেতা যাই বলুক, বিএনপিতে নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। সঙ্গে শুরু হয়েছে জোট মেরুকরণের প্রক্রিয়া। আওয়ামী লীগের মতো বিএনপি নেতারাও বলছেন ‘অল্প কিছু দিনের মধ্যেই বিএনপির নেতৃত্বে সর্বদলীয় জোট চূড়ান্ত হবে।’
মহাজোটে না থাকলেও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এরশাদ গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। এরশাদ আগামী নির্বাচনে ইসলাম পছন্দ দলগুলোর নেতৃত্ব দেবে, এটা প্রায় নিশ্চিত। ২০ দলীয় জোট থেকে খেলাফত আন্দোলনসহ অন্তত সাতটি ইসলামী দল বেরিয়ে যাওয়া নিশ্চিত। এরা এরশাদের নেতৃত্বে জোটে যোগ দেবে। জাতীয় পার্টির কো চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন ‘আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টির নেতৃত্বে জোট হবে সবচেয়ে বড় চমক। এই জোট হবে ইসলামী আশা -আকাঙ্ক্ষার ফসল।’
জি এম কাদের আশা করছেন হেফাজতে ইসলামও তাদের জোটে যোগ দেবে। একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, বিএনপি জামাতের ‘ধর্মীয়’ ভোট বাক্স ভাঙতে এরশাদের জোটকে সরকারই পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে। অবশ্য জাতীয় পার্টির কো- চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ বা বিএনপি কারো সঙ্গেই আঁতাতের কথা অস্বীকার করেছেন।
তিন জোটের ঢামাঢোলে বাম মোর্চাও আগামী নির্বাচনে তার ক্ষুদ্র শক্তি নিয়ে আত্মপ্রকাশ করবে। কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলছেন, ‘তিনটি রাজনৈতিক দল লুটেরা। আমরা মানুষের কথা বলবো। এটাই আমাদের শক্তি।’ বাম মোর্চা নিশ্চিত করেছে, ২০১৪’র মতো নির্বাচন বর্জনের পথে তারা এবার হাঁটবে না।
আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা আশাবাদী চার রকম জোটের ভোট যুদ্ধ একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করবে। যে নির্বাচনে সবাই ভুলে যাবে বেগম জিয়াকে এবং জিয়া পরিবারকে।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলা থেকে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় চার বছর জেলখাটা সেলিম প্রধান। শুধু তাই নয়, ক্যাসিনো–কাণ্ডে
গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তিনি। অনলাইন ক্যাসিনোর মূল হোতা সাজাপ্রাপ্ত সেলিম প্রধান এবার
উপজেলা নির্বাচন করছেন।
সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে সেলিম প্রধানের গণসংযোগের কিছু ভিডিও
চিত্র ছড়িয়ে পড়ায় এ নিয়ে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে উৎসুক্য তৈরি হয়েছে।
তবে উপজেলা পরিষদ আইন বলছে, কোনো নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে
দোষী সাব্যস্ত হয়ে দুই বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে এবং মুক্তিলাভের পর পাঁচ বছর অতিবাহিত
না হলে কোনো ব্যক্তি চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার এবং থাকবার যোগ্য
হবেন না।
এ বিষয়ে সেলিম প্রধান বলেন, দুদকের মামলায় আপিল ও সাজা স্থগিত করতে
তিনি হাইকোর্টে আবেদন করেছেন। তাই নির্বাচন করতে তাঁর আইনগত কোনো বাধা নেই।
ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চলাকালে ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর হজরত শাহজালাল
আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থাইল্যান্ডগামী বিমান থেকে নামিয়ে এনে সেলিম প্রধানকে গ্রেপ্তার
করে র্যাব। এরপর তাঁর বাসা ও অফিসে অভিযান চালিয়ে দেশি–বিদেশি মুদ্রা ও বিপুল পরিমাণ
বিদেশি মদ জব্দ করা হয়। তখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলেছিল, সেলিম প্রধান বাংলাদেশে
অনলাইন ক্যাসিনো বা অনলাইন জুয়ার মূল হোতা। তিনি প্রচুর টাকা বিদেশে পাচার করেছেন।
তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সেলিম প্রধান বাংলাদেশে প্রথম অনলাইন ক্যাসিনো চালু করেন।
তিনি গুলশান ও বনানীতে পি ২৪ এবং টি ২১ অনলাইন নামে অনলাইনে ভিডিও গেম খেলার প্ল্যাটফর্ম
চালু করেন। পরে ২০১৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর সেগুলোকে অনলাইন ক্যাসিনোয় রূপান্তর করেন। ওই
অনলাইন ক্যাসিনোর প্রধান কেন্দ্র ছিল ফিলিপাইনে।
সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা ছাড়াও ঢাকার গুলশান থানায়
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ
আইনে তিনটি মামলা হয়। বিচারাধীন এসব মামলায় জামিনে রয়েছেন তিনি।
২০২৩ সালের ৩০ এপ্রিল দুদকের করা মামলার রায় দেন বিচারিক আদালত।
তাতে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের দুই ধারায় সেলিম প্রধানকে চার বছর করে কারাদণ্ড
দেন আদালত। ইতিমধ্যে তাঁর সাজাভোগ শেষ হওয়ায় এবং বাকি মামলায় জামিন পাওয়ায় গত বছরের
অক্টোবরে মুক্তি পান তিনি। সাজার বিরুদ্ধে তিনি হাইকোর্টে যে আপিল করেছেন, সেটা শুনানির
অপেক্ষায় রয়েছে।
এদিকে, ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার
ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এক রায়ে বলেছেন, কোনো ব্যক্তির
দুই বছরের বেশি দণ্ড ও সাজা হলে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। সাজা স্থগিত থাকলেও
নির্বাচনে অংশ নেওয়া যাবে না; যদি সাজা উপযুক্ত আদালতে বাতিল না হয়।
এ বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, অতীতে সাজাপ্রাপ্ত হলেও আপিল করে নির্বাচন করতে পারতেন। কিন্তু হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী এখন মনে হয় না সেলিম প্রধান নির্বাচন করতে পারবেন। খালেদা জিয়াও এ কারণে নির্বাচন করতে পারেননি।
উপজেলা নির্বাচন ক্যাসিনো সেলিম প্রধান
মন্তব্য করুন
এবার দেশেরে বাজারে কমলো সোনর দাম। প্রতি গ্রাম স্বর্ণের দাম ১০
হাজার ২৭৫ টাকা থেকে কমিয়ে ১০ হাজার ১৮৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই হিসেবে ২২ ক্যারেটের
এক ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম দাঁড়াচ্ছে ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৯৮ টাকা।
শনিবার (২০ এপ্রিল) বাজুসের স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড
প্রাইস মনিটরিং কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য
জানানো হয়।
সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ জুয়েলারি অ্যাসোসিয়েশন সোনার
নতুন দাম নির্ধারণ করেছে, যা আজ থেকেই কার্যকর হবে।
সোনার দাম পরিবর্তন হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রূপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার ১ হাজার ৭১৫ টাকা, ২১ ক্যারেটের রুপা ১ হাজার ৬৩৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের রুপা ১ হাজার ৪০০ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপা ১ হাজার ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন
কিছুদিন পূর্বেও যে শসা বাজারে ৮০ টাকা কেজি দরে পাওয়া যাচ্ছিল সেই শসা বর্তমানে মণ প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা দরে। এমন পরিস্থিতিতে শসার ন্যায্য দাম না পাওয়ায় লোকসানের মুখে পড়ছেন চাষিরা। শনিবার (২০ এপ্রিল) ময়মনসিংহের গৌরীপুরের বাজারগুলোতে এমন চিত্র দেখা গেছে।
এদিন উপজেলার কয়েকটি গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, খেত থেকে শসা তুলছেন কৃষকেরা। কেউ পাইকারি দরে প্রতি কেজি শসা দুই টাকা আড়াই টাকা দামে বিক্রি করছেন। কেউ শসা তুলে খেতেই ফেলে দিচ্ছেন, কেউবা খেত থেকে শসা তুলছেনই না।
উপজেলার অচিন্তপুর গ্রামের শসাচাষি আমিনুল হক শাহীন বলেন, এবার ৪০ শতাংশ জমিতে শসার আবাদ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে। প্রথম দিকে ৮০-৯০ টাকা মণ বিক্রি করলেও এখন খেতেই যাই না। বর্তমানে ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। শসা বিক্রি করে ন্যায্য দাম না পাওয়ায় শ্রমিকদের মজুরি দিয়ে শসা উত্তোলন করে কোনো লাভ নাই। খেতের মধ্যেই শসা লাউয়ের মতো বড় হচ্ছে, পচতেছে।
মোবারকপুর গ্রামের চাষি আলী বলেন, ৩০ শতাংশ জমিতে শসা চাষ করেছি। ফলন দেখে খুশি হয়েছিলাম কিন্তু বর্তমানে শসা তুলে বাজারে নিয়ে গেলে বিক্রি হচ্ছে না। পরে ২ টাকা দরে এক পরিচিত পাইকারের কাছে ৯০-১০০ মণ বিক্রি করেছি। বাজারদরে হতাশ হয়ে পড়েছি। লাভ তো দূরের কথা খরচ তোলাই দায় হয়ে পড়েছে।
ব্যবসায়ী মিন্টু মিয়া বলেন, আমরা বিভিন্ন কৃষকের কাছ থেকে শসা ১শ টাকা মণ কিনে সিলেটে বিক্রি করি ২শ টাকা মণ। বর্তমানে এক ট্রাক শসা পাঠাতে মণ প্রতি আড়তদারকে দিতে হয় ২০ টাকা, লেবার খরচ হয় ১৫ টাকা, বস্তা ক্রয় করতে হয় ২০ টাকায় এবং পাঠাতে ভাড়া লাগে ২২ হাজার টাকা। এই টাকা খরচ করে সিলেটে শসা পাঠালে এখন আর আমাদের লাভ হয় না, লোকসান গুণতে হচ্ছে।
ইছুলিয়া গ্রামের ব্যবসায়ী আশরাফুল ইসলাম আশরাফ বলেন, এখন শসার ব্যবসা করে আমরা লোকসানের মধ্যে আছি। আমাদের ২-৩ লাখ করে লস হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন জলি বলেন, রমজান মাসকে সামনে রেখে গৌরীপুরে কৃষকরা অধিক পরিমাণে শসা উৎপাদন করেছে এবং বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় বাজারে আমদানিও বেশি। তাই দাম দ্রুত কমে যাচ্ছে। এতে দাম কমে যাওয়ায় কৃষকদের লাভ কম হচ্ছে।
মন্তব্য করুন
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ বলেছেন, আমার
পরিবার ও আমার নামে অসত্য তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। তিলকে তাল বানিয়ে উপস্থাপন করা হয়েছে।
সবাইকে ঈদুল ফিতর ও বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে বেনজীর আহমেদ
বলেন, ’আপনারা জানেন যে আমি প্রায় দুই বছর আগে চাকরি থেকে অবসর নিয়েছি। এই অবসরকালীন
সময়ে আমি নিরিবিলি জীবন কাটাচ্ছি। চাকরিকালীন সময় বিগত ২০১২ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত
আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি গোষ্ঠী কর্তৃক অবিরত এবং ক্রমাগত অপপ্রচার এবং ব্যক্তিগত
চরিত্রহননের অপচেষ্টার শিকার হয়েছি।’
আজ শনিবার (২০ এপ্রিল) তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে ‘আমার কিছু কথা’ শিরোনামে
এক ভিডিও বার্তায় দৈনিক কালেরকণ্ঠে প্রকাশিত সংবাদ নিয়ে এসব কথা বলেন বেনজীর আহমেদ।
তিনি জানান, সম্প্রতি পত্রিকায় আমি এবং আমার পরিবারের বিরুদ্ধে
কিছু খুবই আপত্তিজনক, মানহানিকর, অসত্য এবং বিকৃত সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। সেই সংবাদের
সূত্র ধরে অন্যান্য কতিপয় আউটলেট একই রকমের সংবাদ পুনরাবৃত্তি ক্রমে পরিবেশন করেছে।
তবে দেশের মূলধারার প্রিন্ট এবং মিডিয়া এই অসত্য, মানহানিকর এবং বিকৃত সংবাদ পরিবেশনে
কোন আগ্রহ দেখায়নি। এজন্য মূলধারার গণমাধ্যমগুলোর সাংবাদিক বন্ধুগণের প্রতি আমি এবং
আমার পরিবারের অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা।
বেনজীর আহমেদ বলেন, গোপালগঞ্জের পারিবারিক কৃষি খামারের ভূমির পরিমাণ
যা উল্লেখ করা হয়েছে তা সঠিক নয়। জমির সকল তথ্য ট্যাক্স ফাইলে উল্লেখ আছে। এছাড়া আমার
পরিবারের সদস্যদের জাতীয় পরিচয় পত্রসহ বেশ কিছু তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। যা আমাকে মারাত্নকভাবে
ক্ষতিগ্রস্থ করেছে।
চাকরিরত অবস্থায় পুলিশ প্রশাসনে নিজের অবদানের কথা উল্লেখ করে তিনি
বলেন, ‘চাকরি জীবনে ব্যক্তিগতভাবে আমি ঘুষ এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। পুলিশ
কমিশনার এবং র্যাবের মহাপরিচালক হিসেবে জনগণের সেবার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাঠামোগত
প্রশাসনিক এবং অপারেশনাল সংস্কার বা রিফর্মের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। জুনিয়র পদগুলোতে
পদোন্নতিতে যে দুর্নীতির অভিযোগ ছিল, সেখানেও পদোন্নতি বিধিমালা ব্যাপক সংস্কার করে
দুর্নীতিমুক্ত পদোন্নতির ব্যবস্থা করেছি। আমার পুরো ক্যারিয়ারে আমি পুলিশের অভ্যন্তরীণ
দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করেছি, আমার অবসরের পর আমাকে দুর্নীতিবাজ প্রমাণের অপচেষ্টা
অত্যন্ত হতাশাজনক এবং দুঃখজনক।’
বেনজীর আহমেদের পারিবারিক ব্যবসা ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় উল্লেখ
করে বলেন, ‘বিগত ১০ বছর ধরে আমাদের পারিবারিক ব্যবসা প্রকাশ্যে এবং সর্বসম্মুখে পরিচালিত
হয়ে আসছে। এখানে গোপন বা আড়াল করার কোনও সুযোগ নেই। ঢাকার কাছে বিঘার পর বিঘা কোন জমি
নেই। পূর্বাচলে ৪০ কাঠা জমির উপর ডুপ্লেক্স বাড়ি নেই। পূর্বাচলে সেই কথিত ডুপ্লেক্স
বাড়ির পাশে একই জায়গায় আরও ১০ বিঘা জমিও নেই।’
তিনি বলেন, ‘মগবাজার কেন, রমনা, সিদ্ধেশ্বরী এর আশপাশে আমাদের ফ্ল্যাট
বা অ্যাপার্টমেন্ট কিছুই নেই। আনন্দ হাউজিংয়ে একটি প্লট বুকিং দেই এবং কিস্তির মাধ্যমে
ধীরে ধীরে এই টাকা পরিশোধ করি।
বেনজীর আহমেদ বলেন, আইজিপি থাকা অবস্থায় পূর্বাচলে ফারুক মার্কেটের
পেছনে ১০ কাঠার একটি প্লট কিনেছি। যার বাজার মূল্য ২২ কোটি টাকা দাবি করা হয়েছে। কিন্তু
আমি আইজিপি কিংবা র্যাব ডিজি থাকাকালীন কোনও প্লট কিনিনি। ২০০১ সালে রাজউক বরাবর আবেদন
করে আমি একটি ১০ কাঠার প্লট বরাদ্দ পেয়েছি। নিজের এবং পারিবারিক অর্থের প্রয়োজন হওয়ায়
আমি প্লটটি বিক্রি করেছি। পূর্বাচলে বর্তমানে আমাদের কোনও প্লট বা বাড়ি কিছুই নেই।
রূপগঞ্জে আমাদের কোনও জমি নেই।
তিনি আরও বলেন, আমার এবং পরিবারের ঢাকা ও ঢাকার বাহিরের সম্পত্তির
তথ্য সম্পূর্ণ মিথ্যা। বেতন ভাতার হিসাব কাল্পনিক এবং ভুল।
ভাওয়াল রিসোর্ট, বনানীতে ইউনিক রিজেন্সি হোটেল, কক্সবাজারের বেস্ট
ওয়েস্টার্ন এবং হোটেল রামাদায় বেনজীরের পরিবারের মালিকানা আছে, বলে প্রচার করা হয়েছে
উল্লেখ করে বলেন, ‘এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আমাদের কোনও মালিকানা বা বিনিয়োগ নেই। পদ্মা
ব্যাংক এবং ক্যানাডিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের কোনও মালিকানা বা বিনিয়োগ নেই। সিঙ্গাপুরে
অর্ধশত কোটি টাকার সোনার ব্যবসা, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় জমি কিনেছি মর্মে যা বলা
হয়, সেটাও অসত্য।’
সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের খোঁজ মিলেছে
দাবি করে সম্প্রতি সংবাদ প্রকাশ করে কালেরকণ্ঠ। এরপর থেকেই বেশ আলোচনা চলছে তাকে নিয়ে।
সম্প্রতি প্রকাশিত দৈনিকের দাবি, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি)
ও র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদের বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের খোঁজ মিলেছে।
এরপর থেকেই বেশ আলোচনায় পুলিশের সাবেক এই আইজিপি।
জাতীয় ওই দৈনিকে ‘বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন
প্রকাশ করে, যেখানে তার নানা অর্থ সম্পদের বিবরণ তুলে ধরা হয়। বেনজীরের বিপুল সম্পদের
মধ্যে রয়েছে, গোপালগঞ্জের সাহাপুর ইউনিয়নে সাভানা ইকো রিসোর্ট নামের এক অভিজাত ও দৃষ্টিনন্দন
পর্যটনকেন্দ্র। এছাড়াও তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের নামে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ছয়টি
কোম্পানির খোঁজ পাওয়া গেছে। পাঁচটি প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকার
বেশি হতে পারে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ঢাকার অভিজাত এলাকাগুলোতে বেনজীর আহমেদের
দামি ফ্ল্যাট, বাড়ি আর ঢাকার পাশে বিঘার পর বিঘা জমি রয়েছে। দুই মেয়ের নামে বেস্ট হোল্ডিংস
ও পাঁচতারা হোটেল লা মেরিডিয়ানের রয়েছে দুই লাখ শেয়ার। পূর্বাচলে রয়েছে ৪০ কাঠার সুবিশাল
জায়গাজুড়ে ডুপ্লেক্স বাড়ি, যার আনুমানিক মূল্য কমপক্ষে ৪৫ কোটি টাকা। একই এলাকায় আছে
২২ কোটি টাকা মূল্যের আরও ১০ বিঘা জমি।
মন্তব্য করুন
চলমান তীব্র দাবদাহের ফলে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় হিট স্ট্রোকে
একজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতের নাম জাকির হোসেন। আজ শনিবার (২০ এপ্রিল) সকাল ৭ টার দিকে
মাঠে কৃষিকাজ করতে গিয়ে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হন তিনি। পরে তাকে উদ্ধার করে দামুড়হুদা
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে মৃত্যু হয়।
নিহত জাকির দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা থানার সীমান্ত সংলগ্ন ঠাকুরপুর
গ্রামের আমির হোসেন ছেলে। তিনি পেশায় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি ছিলেন।
নিহতের বাবা আমির হোসেন জানান, ‘রোদ গরমে মাঠের ধান মরার অবস্থা।
ধানের জমিতে সেচ (পানি) দেয়ার জন্য জাকির সকাল ৭ টার দিকে মাঠে যায়। মাঠে যাওয়ার ঘণ্টাখানেক
পর খবর পাই সে মাঠে স্ট্রোক করেছে। মাঠে থাকা অন্য কৃষকরা তাকে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য
কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।’
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সিনিয়র পর্যবেক্ষক
জামিনুর রহমান জানান, আজ শনিবার সকাল ৯ টায় চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা ছিল ৩৩ দশমিক ২ ডিগ্রি
সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৫৮ শতাংশ এবং বেলা ১২ টায় চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা
ছিল ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৮ শতাংশ। বিকেল ৩ টায়
সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রির ঘরে দাঁড়ায়।
মন্তব্য করুন