নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০১ এএম, ০১ এপ্রিল, ২০১৮
শৈশবে সিংহ মামার গল্পের সাথে আমরা সকলেই পরিচিত। এশিয়ার বিভিন্ন জঙ্গলে সিংহের বসবাস থাকলেও বাংলাদেশের বন্য পরিবেশে সিংহের দেখা মেলেনি কখনো। সারাবিশ্বেই জলবায়ু পরিবর্তন ও বনজঙ্গল ধ্বংস হবার কারণে বর্তমানে সিংহের সংখ্যা হাতে গোনা। আমাদের দেশে সিংহের অবস্থান বেশির ভাগই খাঁচার ভেতর।
২০১৩ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহার্নেসবাগ থেকে মেসার্স ফ্যালকন ট্রেডার্সের মাধ্যমে ২টি পুরুষ ও ৫টি মাদি সিংহ আনা হয়। এছাড়াও আনা হয় আরও ৪টি সাদা প্রজাতির সিংহ। আমাদের দেশের আবহাওয়ার সাথে দ্রুতই মানিয়ে নেয় সুদূর আফ্রিকা থেকে আনা এই সিংহগুলো।
গত পাঁচ বছরেই এই সাফারি পার্ক এখন সিংহ প্রজননে দেশের সেরা। বর্তমানে সাফারি পার্কে সিংহ পরিবারের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫টিতে। কোর সাফারির সিংহ বেষ্টনীতে এখন ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত সিংহ রয়েছে। খুব দ্রুতই কিছু সিংহ অন্যত্র স্থানান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক আনিসুর রহমান জানান, ‘ সিংহের খাদ্যাভ্যাসে বিশেষ নজরদারীর কারণে সিংহ প্রজননে আমরা সফলতা পেয়েছি। এ পার্কের মতো দেশের কোথাও এখন এত সিংহ নেই। প্রজননে সাফল্য পাওয়ায় সাফারি পার্কের চাহিদা মিটিয়ে এখন কিছু সিংহ অন্যত্র স্থানান্তর জরুরী। না হলে ইনব্রিডিং (আন্ত:প্রজনন) এর মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। সবচেয়ে অবাকের বিষয় আমরা আফ্রিকান ব্রাউন সিংহ হতে চারটি সাদা সিংহও পেয়েছি।’
পার্কের অপর বন্যপ্রাণী পরিদর্শক মো. সরোয়ার হোসেন খান জানান, পুরুষ সিংহের সাধারণত ওজন হয় ১৫০ এবং ২৫০ কেজি। স্ত্রীরা (সিংহী) সাধারণত ১১০ থেকে ১৯০ কেজি পর্যন্ত হয়। ২ থেকে ৩ বছর বয়সে সিংহী প্রজননক্ষম হয়। সিংহ জন্মের পর অন্ধ থাকে; তারা এক সপ্তাহ বয়সে চোখ খুলে এবং ২ সপ্তাহ বয়স না হলে তাঁরা ভালো করে চোখে দেখতে পারে না। যখন দেখা যায় সিংহী নিজের চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত খাবার নিয়ে যাচ্ছে তখনই জানা যায় বাচ্চা প্রসব করেছে। তারা প্রাকৃতিক পরিবেশে সন্তানের পরিচর্যা নিজেরাই করে থাকে।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোতালেব হোসেন জানান, ‘এপার্কে প্রাণীরা বন্য পরিবেশে উন্মুক্ত থাকে। দর্শনার্থীরা আবদ্ধ অবস্থায় গাড়িতে করে তা উপভোগ করে। বন্য পরিবেশ ও কর্তৃপক্ষের নজরদারীর কারণেই এখানে প্রাণীদের বংশবৃদ্ধি বাড়ছে। আর সিংহ প্রজননে এখন এপার্কই দেশের সেরা অবস্থানে রয়েছে।’
বাংলা ইনসাইডার/আরকে/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
যশোর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা
মন্তব্য করুন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান ফরিদপুর
মন্তব্য করুন
ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন দূতাবাস
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।
আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে যে, আগামী মে মাসে তার বাংলাদেশ সফর করার কথা। এরপরও আরও কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্বের বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের বাঁক বলে মনে করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নানা বাস্তবতায় বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্য মুখী হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমানে পরিবর্তিত বিশ্বে এবং যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর বাংলাদেশকে নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকার জন্য বাংলাদেশের কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম কারণ হলো- বাকিতে তেল-জ্বালানি পাওয়া। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটের ফলে জ্বালানি তেলের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কোথাও এক বছরের বাকিতে, কোথাও তারও বেশি সময় বাকিতে জ্বালানি তেল আহরণের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিবাচক সমঝোতা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
কাতারের সঙ্গেও এমন একটি সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানা গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে৷
দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের অভিবাসীদের জন্য একটি বড় বাজার। বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এই সব দেশগুলোতে বিপুল সংখ্যক বাঙালি বসবাস করে। যুদ্ধের ফলে এই সমস্ত দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে অনেকে মনে করছে। অনেক শ্রমিক ছাঁটাই হতে পারে। আর এটি মাথায় রেখেই বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিচ্ছে, যেন বাংলাদেশের শ্রমিকরা এই শ্রমিক ছাঁটাই এর আওতায় না পড়ে।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক সংকট সেই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় অদূর ভবিষ্যতে নগদ সহায়তা দরকার হতে পারে, দ্রুত ঋণ দরকার হতে পারে। আর সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের সংকট নিরসনের একটা বড় ভরসাস্থল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর এই সমস্ত বাস্তবতায় বাংলাদেশ এখন মধ্যপ্রাচ্যমুখী। বাংলাদেশের ঋণের হার অনেক বেশি। বাংলাদেশে ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। অর্থনীতি ক্রমশ ঋণ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এখানে থেকে উত্তরণের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের সম্পদশালী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন একটি দূরদর্শী কূটনৈতিক চিন্তা বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ আগামী কয়েক বছর বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ দেনা মেটাতে হবে। এই কারণেই বাংলাদেশ কখনও যেন সংকটে না পরে সেজন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে দেখে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়।
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।