নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:৫৯ পিএম, ১১ এপ্রিল, ২০১৮
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, ‘আমি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলিনি। আমি স্বাধীনতা বিরোধী, যুদ্ধাপরাধীদের সন্তানদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলেছি যারা মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতার বিরুদ্ধে এখনো চক্রান্ত করে যাচ্ছে। তারপরও আমার পুরো বক্তব্য না শুনে কোনো শিক্ষার্থী যদি কষ্ট পেয়ে থাকেন, সেজন্য আমি দুঃখিত।’ আজ বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে আলাপকালে অগ্নিকন্যা এ কথা বলেন।
আলাপচারিতায় শুরুতেই তিনি বলেন, ‘যেহেতু আমি সংসদেই এই বক্তব্য রেখেছি, আজ সংসদেই এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য রাখবো।’ মতিয়া চৌধুরী তাঁর পুরো বক্তব্যটি আবার ইউটিউব থেকে শুনিয়ে এই প্রতিবেদক বলেন, ‘দেখেন, আমি কি বলেছি। আমি মুখোশ পরে যারা উপাচার্যের বাসভবনে হামলা করেছে তাদের ‘ইতর’ বলেছি। আমি বলেছি সাইদীর বিচারের পর সাঈদীকে চাঁদে দেখা গেছে এটা বলে যারা তাণ্ডব চালিয়েছিল, তাদের সঙ্গে্ এই তাণ্ডবের সাদৃশ্য আছে। যারা এই হামলা চালিয়েছে তারা অবশ্যই ‘রাজাকারের বাচ্চা’। মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এরা সব সময়ই ষড়যন্ত্র করেছে।’ বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ বলেন, ‘আমি খুশি হতাম যদি শিক্ষার্থীরা আমার পুরো বক্তব্য শুনতো। কিন্তু ওই ‘রাজাকারের বাচ্চারাই’ আমার বক্তৃতা খন্ডিত করে প্রচার করছে। আমি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে কিছু বলেছি, সেটাও অন্য কথা।’
বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘আমি এখনো বিশ্বাস করি, এটা শুধু কোটা সংস্কারের আন্দোলন নয়, এর পেছনে বিএনপি-জামাতের মদদ আছে। ‘রাজাকারের বাচ্চারা’ এই আন্দোলনে মদদ দিচ্ছে।’
সংসদে দেওয়া মতিয়া চৌধুরীর বক্তব্য পুরো তুলে দেওয়া হলো:
সাঈদীকে চাঁদে নিয়ে গিয়ে যারা দেশে অরাজকতা করে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে আঘাত করতে চায় তাদের ধিক্কার জানাই, এদের কোনো ক্ষমা নেই, এদের ক্ষমা করা যাবে না। হয় এরা এ দেশে থাকবে, না হয় আমরা থাকব। এটাই হোক আজকের অঙ্গীকার।
এটা শিক্ষার্থীদের জন্য একটা কলঙ্কজনক ইতিহাস। প্রতিবাদ করতে মুখোশ কেন পরতে হবে? মুখোশ কারা পরে? যারা ভণ্ড, প্রতারক তারাই মুখোশ পরে। সাহস থাকলে মুখটা দেখাও। ইতর হওয়ার একটা সীমা আছে।
অভাবে অনটনে থেকে গ্রামের স্কুলে যে ছাত্রটি পড়াশুনা করে তার গ্রুমিং আর ঢাকা শহরের নামিদামি স্কুলে যে পড়াশুনা করে তার গ্রুমিং এক হবে না। সে আবছায়ায় আছে তাকে আলোতে আনতে অবশ্যই বিশেষ সুবিধা দিতে হবে, এটাই দেশের শাসনতন্ত্রে রয়েছে।
মূল গাত্রদাহ মুক্তিযোদ্ধা কোটা। পৃথিবীর দেশে দেশে যারা স্বাধীনতার জন্য জীবনবাজি রাখে তাদের সন্তানদের জন্য বিশেষ সুযোগ থাকে। এদের দাবি রাজাকারের সন্তানদের জন্য মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের কোটা সংকুচিত করা। পরিষ্কার বলতে চাই মুক্তিযুদ্ধ করেছি, মুক্তিযুদ্ধ চলছে- মুক্তিযুদ্ধ চলবে এবং রাজাকারের বংশধরদের অবশ্যই আমরা দেখে নেব। তবে ছাত্রদের বিরুদ্ধে আমাদের কোনো রাগ নেই। কারণ ফেইসবুকে যারা স্ট্যাটাস দিয়েছে এরা তো ছাত্র না, এরা মতলববাজ, স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-শিবিরের এজেন্ট। এদের সম্পর্কে সামান্যতম শৈথিল্য আমরা দেখতে চাই না।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের নামে সাধারণ ছাত্রদের ব্যবহার করে পরিকল্পিতভাবে গতকাল (রোববার) এই নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। এরা ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বরের বুদ্ধিজীবী হত্যাকারীদের উত্তরসূরি।
এটা শিক্ষার্থীদের জন্য একটা কলঙ্কজনক ইতিহাস। প্রতিবাদ করতে মুখোশ কেন পরতে হবে? মুখোশ কারা পরে? যারা ভণ্ড, প্রতারক তারাই মুখোশ পরে। সাহস থাকলে মুখটা দেখাও। ইতর হওয়ার একটা সীমা আছে।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
যশোর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা
মন্তব্য করুন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান ফরিদপুর
মন্তব্য করুন
ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন দূতাবাস
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।
আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে যে, আগামী মে মাসে তার বাংলাদেশ সফর করার কথা। এরপরও আরও কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্বের বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের বাঁক বলে মনে করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নানা বাস্তবতায় বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্য মুখী হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমানে পরিবর্তিত বিশ্বে এবং যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর বাংলাদেশকে নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকার জন্য বাংলাদেশের কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম কারণ হলো- বাকিতে তেল-জ্বালানি পাওয়া। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটের ফলে জ্বালানি তেলের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কোথাও এক বছরের বাকিতে, কোথাও তারও বেশি সময় বাকিতে জ্বালানি তেল আহরণের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিবাচক সমঝোতা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
কাতারের সঙ্গেও এমন একটি সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানা গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে৷
দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের অভিবাসীদের জন্য একটি বড় বাজার। বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এই সব দেশগুলোতে বিপুল সংখ্যক বাঙালি বসবাস করে। যুদ্ধের ফলে এই সমস্ত দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে অনেকে মনে করছে। অনেক শ্রমিক ছাঁটাই হতে পারে। আর এটি মাথায় রেখেই বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিচ্ছে, যেন বাংলাদেশের শ্রমিকরা এই শ্রমিক ছাঁটাই এর আওতায় না পড়ে।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক সংকট সেই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় অদূর ভবিষ্যতে নগদ সহায়তা দরকার হতে পারে, দ্রুত ঋণ দরকার হতে পারে। আর সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের সংকট নিরসনের একটা বড় ভরসাস্থল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর এই সমস্ত বাস্তবতায় বাংলাদেশ এখন মধ্যপ্রাচ্যমুখী। বাংলাদেশের ঋণের হার অনেক বেশি। বাংলাদেশে ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। অর্থনীতি ক্রমশ ঋণ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এখানে থেকে উত্তরণের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের সম্পদশালী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন একটি দূরদর্শী কূটনৈতিক চিন্তা বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ আগামী কয়েক বছর বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ দেনা মেটাতে হবে। এই কারণেই বাংলাদেশ কখনও যেন সংকটে না পরে সেজন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে দেখে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়।
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।