নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০১৮
বেগম খালেদা জিয়ার ব্যাপারে সরকারের অবস্থান কঠোর থেকে কঠোরতার হচ্ছে। যদিও আওয়ামী লীগের নেতারা বলেছেন, ‘বেগম জিয়ার ভাগ্য আদালতের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে, এখানে সরকারের কিছু করণীয় নেই।’ কিন্তু সাধারণ মানুষও মনে করছে সরকার এ ব্যাপারে কোনো রকম ছাড় দিতে রাজি নয়। বিএনপি নেতারাও ভাবতে পারেননি, বেগম জিয়ার ব্যাপারে সরকারের অবস্থান এতটা ‘নির্দয়’ হবে। তবে মজার ব্যাপার হলো, আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি দুই দলের কোনো নেতাই জানেন না, শেষ পর্যন্ত কি হবে? এর পরিণতি কি? আওয়ামী লীগের একজন সিনিয়র নেতা বলেছেন, ‘একমাত্র প্রধানমন্ত্রী জানেন, বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে তাঁর পরিকল্পনা কি।’ পুরো পরিকল্পনা না বোঝা গেলেও, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা সরকারের কিছু পরিকল্পনা স্পষ্ট বুঝতে পেরেছে। এগুলো হলো:
এক. সরকার স্পষ্টতই বেগম খালেদা জিয়াকে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত জেলে রাখতে বা রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে চায়। এতিমখানা মামলার রায়ে বেগম জিয়া কারাগারে। জিয়া চ্যারিটেবল মামলার বিচারও শেষ পর্যায়ে। আগামী নির্বাচনের আগে বেগম জিয়া ওই মামলাতেও দণ্ডিত হতে পারেন, এমন আশঙ্কা বিএনপির।
দুই. শুধু জেলে রাখা নয়, সরকারের দ্বিতীয় চাওয়াও স্পষ্ট। সরকার চায় বেগম জিয়াকে নির্বাচনের অযোগ্য করতে। কোনোভাবেই যেন আগামী নির্বাচনে তিনি অংশগ্রহণ করতে না পারেন, সে চেষ্টায় আওয়ামী লীগের কোনো রাখঢাক নেই।
তিন. সরকার চায় বেগম জিয়া বিহীন একটি বিএনপিকে নির্বাচনের মাঠে নামাতে। সরকারের মধ্যে একটি হিসাব পরিষ্কার। সরকার মনে করে, বেগম জিয়া দীর্ঘ দিন জেলে থাকলে নির্বাচন প্রশ্নে বিএনপি ভাঙ্গবেই। বিএনপি যদি শেষ পর্যন্ত না ভাঙ্গে, তা হলেও হতাশ একটি বিএনপিকে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে মাঠে রাখতে চায়।
চার. আওয়ামী লীগ সবসময়ই বাংলাদেশের রাজনীতির একটি রূপরেখা বলে। সেটি হলো, বাংলাদেশে যে দলই রাজনীতি করবে তারা বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিশ্বাস করবে। জাতির পিতাকে স্বীকার করে এদেশে সব দল রাজনীতি করবে। আওয়ামী লীগ মনে করে, যদি বিএনপিকে এভাবে চাপে রাখা যায় সেক্ষেত্রে এই দলটিও রাজনীতির সঠিক ধারায় আসতে বাধ্য হবে।
পাঁচ, সরকার মনে করে, ‘জিয়া পরিবার’ হলো বাংলাদেশে গণতন্ত্র এবং সুশাসনের জন্য এক বিষফোঁড়া। জিয়া ‘ডিফিকাল্ট’ করার নামে রাজনীতিতে কালো টাকা, অস্ত্র ঢুকিয়েছেন। বিএনপি মানেই দুর্নীতি এবং লুটপাট। বেগম জিয়ার দণ্ড বিপুল দুর্নীতির এক প্রতীকী বিচার। বাংলাদেশকে দুর্নীতিমুক্ত করার ক্ষেত্রে এটি এক মাইলফলক। তাই দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ করার জন্যই আইনের যথাযথ প্রয়োগ ঘটাতে চায় এই সরকার।
ছয়. আওয়ামী লীগ মনে করে যুদ্ধাপরাধী এবং স্বাধীনতা বিরোধীদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক সংগঠন হলো বিএনপি। একারণেই বিএনপিকে রক্তশূন্য করতে চায় আওয়ামী লীগ।
এই কারণেই আওয়ামী লীগ সরকার বেগম জিয়ার উপর এরকম কঠোর। বেগম জিয়াকে কারান্তরীণ রেখে সরকার এই লক্ষ্যগুলো অর্জন করতে পারবে কিনা তাই এখন দেখার বিষয়।
Read in English- https://bit.ly/2K6k8gk
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
যশোর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা
মন্তব্য করুন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান ফরিদপুর
মন্তব্য করুন
ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন দূতাবাস
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।
আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে যে, আগামী মে মাসে তার বাংলাদেশ সফর করার কথা। এরপরও আরও কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্বের বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের বাঁক বলে মনে করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নানা বাস্তবতায় বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্য মুখী হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমানে পরিবর্তিত বিশ্বে এবং যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর বাংলাদেশকে নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকার জন্য বাংলাদেশের কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম কারণ হলো- বাকিতে তেল-জ্বালানি পাওয়া। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটের ফলে জ্বালানি তেলের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কোথাও এক বছরের বাকিতে, কোথাও তারও বেশি সময় বাকিতে জ্বালানি তেল আহরণের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিবাচক সমঝোতা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
কাতারের সঙ্গেও এমন একটি সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানা গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে৷
দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের অভিবাসীদের জন্য একটি বড় বাজার। বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এই সব দেশগুলোতে বিপুল সংখ্যক বাঙালি বসবাস করে। যুদ্ধের ফলে এই সমস্ত দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে অনেকে মনে করছে। অনেক শ্রমিক ছাঁটাই হতে পারে। আর এটি মাথায় রেখেই বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিচ্ছে, যেন বাংলাদেশের শ্রমিকরা এই শ্রমিক ছাঁটাই এর আওতায় না পড়ে।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক সংকট সেই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় অদূর ভবিষ্যতে নগদ সহায়তা দরকার হতে পারে, দ্রুত ঋণ দরকার হতে পারে। আর সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের সংকট নিরসনের একটা বড় ভরসাস্থল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর এই সমস্ত বাস্তবতায় বাংলাদেশ এখন মধ্যপ্রাচ্যমুখী। বাংলাদেশের ঋণের হার অনেক বেশি। বাংলাদেশে ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। অর্থনীতি ক্রমশ ঋণ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এখানে থেকে উত্তরণের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের সম্পদশালী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন একটি দূরদর্শী কূটনৈতিক চিন্তা বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ আগামী কয়েক বছর বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ দেনা মেটাতে হবে। এই কারণেই বাংলাদেশ কখনও যেন সংকটে না পরে সেজন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে দেখে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়।
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।