ইনসাইড বাংলাদেশ

জাহাঙ্গীরের পাল্লা ভারী, হাল ছাড়েনি হাসান

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩:২৭ পিএম, ২৩ জুন, ২০১৮


Thumbnail

নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর থেকে গাজীপুর সিটিতে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ প্রচার প্রচারণা চলছে। সবারই প্রত্যাশা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন। আর মাত্র কয়েকদিন। নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে মানুষের মুখে মুখে জয়-পরাজয় নিয়ে মতামত প্রকাশ পাচ্ছে। কথায় বলে মানুষের মুখেই জয়। ভোটারের আলোচনা থেকে বোঝা যাচ্ছে জাহাঙ্গীরের পাল্লা ভারী। তবে হাসান সরকার হাল ছেড়ে দেননি। এটা নির্বাচনের সৌন্দর্য। একপক্ষ বিজয় নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ছুটে বেড়াবে। আর পিছিয়ে থেকেও প্রতিপক্ষ শেষ পর্যন্ত লড়ে যাবে। শুধুমাত্র গুটিকয়েক ভোটারের আলোচনা বিবেচনা দিয়ে পাল্লা ভারী মন্তব্য করছি না। কিছু পরিসংখ্যান এবং মাঠ পর্যালোচনাও এর স্বপক্ষে কথা বলে। 

গাজীপুর সিটি নির্বাচন জমে উঠেছে। তবে অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে প্রার্থীর ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তাই শেষ পর্যন্ত বিজয়ী হবে। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম যোজন যোজন এগিয়ে। বয়সে তরুণ হলেও জাহাঙ্গীর রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে নির্বাচনী মাঠ দক্ষতার সাথে সামলে নৌকার আয়ত্বে নিয়েছেন। আর বক্তৃতা বিবৃতিতে তিনি বরাবরই জাত রাজনীতিক। মহানগরীকে নিয়ে তাঁর সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ইতমধ্যেই সাধারণ ভোটাররা গ্রহণ করেছে। তাছাড়া আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত তদারকিতে আওয়ামী লীগ যেকোনো সময়ের চাইতে ঐক্যবদ্ধ। বিএনপি প্রার্থী যতই নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলে গলা ফাটান না কেন। তার অতীত ডিগবাজি মার্কা রাজনীতি আর শারীরিক সক্ষমতা নিয়ে ভোটাররা কমই আগ্রহ দেখাচ্ছে। সবশেষ ঈদুল ফিতরের দিন হাসান সরকার টঙ্গী ভরানে বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী নুর মোহাম্মদের জানাজা নামাজে দুই ব্যক্তির কাঁধে ভর করে শরিক হন। আর বক্তব্যে নিজেও স্বীকার করেন অসুস্থতার কারনে গত সপ্তাহেই ডাঃ নাজিম আহমেদের স্ত্রীর জানাজায় শরিক হতে পারেননি। জড়াগ্রস্থ প্রার্থী হাসান সরকার বাংলাদেশের চলমান রাজনীতিতে দিশেহারা বিএনপির প্রতীকিরুপ। যে রাজনীতি কেবল লিখিত বক্তব্য, লন্ডন-বাংলা স্কাইপি আর গোল টেবিলে সীমাবদ্ধ। আরও একটি জায়গায় গাজীপুর সিটির দুই মেয়র প্রার্থী হাসান-জাহাঙ্গীর আর আওয়ামী লীগ-বিএনপি পরম্পরা ধারন করছেন। হাসান সরকারের ভাই নুরুল ইসলাম সরকার হত্যা মামলায় দন্ডপ্রাপ্ত হয়ে ফাঁসি কাষ্ঠে আছেন। আর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় কারারুদ্ধ এবং ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান দূর্নীতির দন্ড মাথায় দেশান্তরী। রাজধানীর অতি সন্নিকটে গাজীপুর সিটির ভোটারদের এসব বিষয় ভাল করেই জানা আছে। পক্ষান্তরে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বে থাকা শেখ হাসিনা বিশ্ব মানবতার জননী হিসাবে বাংলাদেশের মর্যাদা বাড়িয়েছেন। শেখ হাসিনার তত্বাবধানে তরুণ জাহাঙ্গীর একজন দানবীর এবং জনদরদী হিসাবে গাজীপুরে সুপরিচিত। তাই এটা বলা অতুক্তি হবে না দুই প্রার্থীর ব্যক্তিগত, পারিবারিক এবং দলীয় তুলনাতে জাহাঙ্গীরই যোগ্য প্রার্থী। জাহাঙ্গীরই অধিক জনপ্রিয় এবং ভোটারের প্রথম পছন্দ।  

ভোটের পরিসংখ্যানেও জাহাঙ্গীরের পাল্লা ভারী। তাছাড়া যদি জনপ্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচনের অতীত ইতিহাস পর্যালোচনা করি সেখানেও জাহাঙ্গীর এগিয়ে। হাসান উদ্দিন সরকার কখনোই সরাসরি ভোটে জিতেননি। তিনি সাংসদ প্রার্থী হিসাবে সাম্প্রতিক ৩টি জাতীয় নির্বাচন ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে তৃতীয় হয়েছেন। ২০০৯ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জাহাঙ্গীর বিপুল ভোটের ব্যবধানে ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

আগামী ২৬ জুন নির্বাচনে প্রায় সারে ১১ লাখ ভোটার। বাসিন্দা প্রায় ৩৫ লাখ। কি এদের পরিচয় ? অথবা গাজীপুর সিটিতে কোন শিবিরের কি পরিমাণ ভোট এটাও হিসাব করা যেতে পারে। এটা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ১৯৯১ থেকে ২০০৮ প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি কাষ্টিং ভোটের শতকরা ৩০ থেকে ৩৩ ভাগ ভোট পেয়েছে। ২০০১ সালে বিএনপি ৪০ ভাগ ভোট পায়। তবে ২০০৮ সালে ভোট কমে ৩৩ ভাগ হয়েছে। আওয়ামী লীগের ভোট ১৯৯১ সালের ৩০ ভাগ থেকে বেড়ে ২০০৮ সালে ৪৯ ভাগ হয়েছে। সারাদেশের প্রেক্ষাপটে বিএনপির ভোট বাড়েনি। আবার শরিকদল জামায়াত ১৯৯১ সালে প্রায় সারে ৭ ভাগ ভোট পেয়েছে। সেখানে ২০০৮ সালে পেয়েছে সারে ৪ ভাগ। পক্ষান্তরে মহাজোট সরিক জাতীয় পার্টির ভোট খুব বেশী হেরফের হয়নি। পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে পপুলার ভোট আওয়ামী লীগ দিন দিন বাড়িয়েছে। গাজীপুরে আওয়ামী লীগের শক্তঘাটি এ কথা সর্বজনবিদীত। তারপরও প্রশ্ন আসতে পারে ২০১৩ সালের মেয়র নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থি কেন পরাজিত হলো। জাতীয় নির্বাচনের পর পর হওয়ায় ভাসমান ও তরুণ ভোটারদের মধ্যে তখন আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী বিরুপ মনোভাব ছিল। তাছাড়া শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত প্রার্থীতা নিয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত হীনতাও পরজিত হবার কারন। ইসলামী মনোভাবাপন্ন সকল দলই আওয়ামী বিরোধী শিবিরে কাজ করেছে। এবারের চিত্র একদমই আলাদা। আওয়ামী লীগের রির্জাভ ভোটতো আছেই। ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ শতভাগ রির্জাব ভোটই কাষ্টিং করবে এতে কোন সন্দেহ নেই। সাথে যোগ হয়েছে হেফাজতে ইসলামের নেতৃত্বে ইসলামী মনোভাবাপন্ন একটি শক্তিশালী অংশ। রমজান উপলক্ষে শতাধিক ইফতার মাহফিল করেছে আওয়ামী লীগ। সেখানে প্রতিটি মসজিদ ও মাদ্রাসার ইমাম প্রকাশ্যেই জাহাঙ্গীরের প্রতি সন্তুষ্টি ও সমর্থন ব্যক্ত করেছেন। ইমাম সমিতি, অবসরপ্রাপ্ত সৈনিকদের দল, গাজীপুরে অবস্থিত অন্য জেলার বিভিন্ন সমিতি যেমন- ফরিদপুর, ময়মনসিংহ, উত্তরবঙ্গ, কিশোরগঞ্জ, ঢাকা সমিতির সব সদস্যই প্রকাশ্যে নৌকাকে সমর্থন দিয়েছে। বিভিন্ন বেসরকারী সেবা সংস্থা (ব্র্যাক, প্রশিকা, আশা) ও জাহাঙ্গীরের সমর্থক। জাতীয় পার্টি ও মহাজোট শরিকরাও ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নেমেছে। জাহাঙ্গীরের শক্তির যায়গাই হচ্ছে তরুণ ভোটার। সাথে আছে সোয়া লাখ নতুন ভোটার। এখন নৌকার ৬ লাখ ব্যাচ গাজীপুরের মানুষের গলায় ঝুলছে। এরা সবাই নৌকার সৈনিক। মোট ভোটের অর্ধেকই নারী ভোটার। তরুণ এবং বাস্তবমুখি জাহাঙ্গীর নারীদের খুব সহজেই আকর্ষণ করতে পারে। তাদের সাথে কথা বলে বুঝা গেছে ভোটের বেলায় তরুণ এবং নারীদের অধিকাংশ ভোটই জাহাঙ্গীরের বাক্সে যাবে। সমাজের মাইনরিটি বা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের দাবি মহানগরীতে তাদের সোয়া লাখ ভোট। এর শতভাগই নৌকার সমর্থক। জোয়ার যেদিকে ভাসমান ভোট সেদিকেই থাকে। গাজীপুর সিটিতে ভাসমান ভোটার মানে হচ্ছে কারখানার শ্রমিক এবং চাকুরী ও ব্যবসা সূত্রে বসবাসরত জনগোষ্ঠি। এসব ভোটার অনেক কিছু বিবেচনা করে ভোট দেয়। প্রার্থীর শক্তি সামর্থ, সরকার ঘেষা, বিত্ত-বৈভব এবং সহজে কাছে পাওয়া এসব হিসাব নিকাশ থাকে। জাহাঙ্গীর প্রতিটি ক্ষেত্রেই হাসানের চাইতে ভাল। আবার কর্মস্থলের মালিক পক্ষের নির্দেশেও এই সব শ্রমিকরা প্রভাবিত হতে পারে। সেক্ষেত্রে ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ দলমত নির্বিশেষে জাহাঙ্গীরকে সমর্থন দিয়েছে। প্রতিটি কারখানায় মালিক পক্ষ শ্রমিকদের নৌকায় ভোট দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। প্রিয় পাঠক সর্বশেষ পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রতিদিনই বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মী জাহাঙ্গীরের হাত ধরে আওয়ামী লীগে যোগ দিচ্ছেন। সকল শ্রেনীর মানুষের আগ্রহের কেন্দ্র বিন্দু হচ্ছে জাহাঙ্গীর আলম এবং নৌকা মার্কা। এত কিছু বিচার বিশ্লেষণে এনে বলার সাহস করেছি জাহাঙ্গীরের পাল্লা ভারী।

প্রিয় নগরবাসী ভোট আপনার পবিত্র আমানত। সিদ্ধান্ত নিয়েই নিয়েছেন হয়ত। যে কারনে বাতাসে কানাঘুষা। জাহাঙ্গীরই মেয়র হচ্ছেন। যা কিছু রটে তার কিছু ঘটেও। মহানগরীর ৫৭ টি ওয়ার্ড ঘুরে এমনই মনে হয়েছে। জাহাঙ্গীরের ও মনে রাখতে হবে অনেক প্রত্যাসা নিয়ে জনসাধারন তার পাশে দাড়িয়েছে। আপনি যে পরিকল্পিত নগরীর চিত্র মানসপটে ফুটিয়ে তুলেছেন। তা বাস্তবায়ন করা আপনারই দায়িত্ব। নগরীর ৩৫ লাখ বাসিন্দাই আপনার স্বপ্নের বেড়াজালে আবদ্ধ। জনসাধারনের এবং  আপনার সদিচ্ছার জয় হোক। এই প্রত্যাশা।  

লেখকঃ সাংবাদিক ও কলাম লেখক



মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

সচিবালয় ক্লিনিকে বদলি আতঙ্কে কর্মকর্তারা

প্রকাশ: ১০:৩৯ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

সচিবালয় ক্লিনিক থেকে দুই দিনে সাত চিকিৎসককে বদলি করা হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবের নির্দেশে হঠাৎ এই বদলির ফলে অন্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বদলির আতঙ্কে রয়েছেন। 

জানা গেছে, মঙ্গলবার সচিবালয়ের এক চিকিৎসককে কিশোরগঞ্জে বদলি করা হয়। গতকাল বুধবার আরও ছয়জনকে চাঁদপুর, শরীয়তপুর, ফরিদপুর, মুন্সীগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও রংপুরের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে বদলি করা হয়। নার্স, ফার্মাসিস্ট ও পিয়নসহ অন্য সবাইকে বদলি করার প্রক্রিয়া চলছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তারা বলছেন, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ক্ষুব্ধ হয়ে চিকিৎসকসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বদলি করিয়েছেন।

সচিব জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সচিবালয় ক্লিনিকে অনেকে ১০ থেকে ১২ বছর ধরে রয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে বলেছি, দীর্ঘদিন যারা কাজ করছেন তাদের পর্যায়ক্রমে বদলি করতে। কিন্তু তারা (সচিবালয় ক্লিনিকের কর্মকর্তারা) বিষয়টির ভিন্নভাবে বলছেন।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সচিবালয় ক্লিনিকে চিকিৎসক, নার্স, ফার্মাসিস্ট, পিয়নসহ প্রায় ৫০ জন রয়েছেন। 

সচিবালয় ক্লিনিক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

যশোর ডিওএইচএসে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলার উদ্বোধন

প্রকাশ: ১০:২৪ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

যশোর প্রতিরক্ষা অফিসার হাউজিং সোসাইটি- ডিওএইচএস এলাকায় মাসব্যাপী ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা-২০২৪ শুরু হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে মাসব্যাপী এ শিল্প মেলার শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়।

মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মেজর মোঃ গোলাম হায়দার (অবঃ)। যশোর সেনানিবাসের ক্যান্টনমেন্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার এ. ডাব্লিউ. এম রায়হান শাহ এর সভাপতিত্বে ওই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লেফটেন্যান্ট শ্যামল কুমার রায় (অবঃ)।

মাসব্যাপী শুরু হওয়া এই মেলায় সার্কাস এবং চ্যানেল আইয়ের শিল্পীদের দ্বারা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বিভিন্ন রাইডস এর আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়াও মেলায় কুটির শিল্পের পণ্য সামগ্রীর বিভিন্ন ধরনের স্টল রয়েছে।

যশোর   ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

যাদের কোন ধর্ম নেই তারাই শ্রমিক হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে: প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

প্রকাশ: ০৮:১৬ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ফরিদপুরের মধুখালী পঞ্চপল্লিতে নির্মাণ শ্রমিক দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা খুবই দুঃখজনক ও হৃদয় বিদারক উল্লেখ্য করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান বলেছেন, ‘যাদের কোন জাত নেই, যাদের কোন ধর্ম নেই’ তারাই দুই শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা করেছে। তারা খুনি। এই ঘটনা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। 

তিনি বলেন, যারা ঘটনাটি ঘটিয়েছে তারা মুসলিমও না, হিন্দুও না। তাদের কোনো ধর্ম নেই।
 
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে সামাজিক সম্প্রীতি কমিটির সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন মন্ত্রী। এর আগের দিন বুধবার রাতে নিহত দুই ভাইয়ের বাড়িতে গিয়ে সমবেদনা জানান ও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান এমপি।
 
মন্ত্রী বলেন, অপরাধীরা মনে করেছে, এ হত্যাকান্ড ঘটিয়ে পার পেয়ে যাবে! তার কোন সুযোগ নাই। হত্যাকাণ্ড যারা ঘটিয়েছে তাদেরকে বিচারের আওতায় এনে আইনের ধারানুযায়ী হত্যার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিন্ত করা হবে। ইতোমধ্যেই এ ঘটনায় ১৫ জন আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমাদের সমাজে কে হিন্দু, কে মুসলমান কে কোন জাতি এটা বড় বিষয় নয়, আমরা সকলেই মানুষ। কোন মানুষই এ ঘটনাটিকে মেনে নিতে পারছে না। সকলেই শোকাহত পরিবারটির পাশে দাড়িয়েছেন।
 
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দ্যেশে এসময় মন্ত্রী বলেন, আপনারা অনেক কষ্ট করছেন হত্যাকান্ডের তথ্য উদঘাটন করার জন্য। কেউ কেউ ঘটনাটিকে অন্যদিকে প্রভাবিত করার জন্য হয়তো চেষ্টা চালাচ্ছেন। সেদিকে আপনারা সতর্ক অবস্থানে থাকুন। কোন ভাবেই শান্তি প্রিয় এ এলাকাকে অশান্ত করতে দেওয়া হবে। যে ঘটনাটি ঘটেছে তার সঠিক বিচার শীঘ্রই হবে। যা নিহত দুই ভাইয়ের মা-বাবা দেখে যেতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।
 
এলাকাবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উদ্দ্যেশে এ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার ও মৎস্য মন্ত্রী বলেন, ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে যার যার এলাকায় নেতৃত্বস্থানীয় লোকজন নিয়ে সভা করেন। লোকজনকে বুঝিয়ে বলুন যে, দুই শ্রমিক হত্যাকান্ডের সঠিক বিচার শীঘ্রই হবে। ঘটনাটি নিয়ে আবেগী হয়ে আপনারা কোন বিষয়ে উস্কানি দিবেন না। এলাকায় পাহারার মত অবস্থানে থাকুন। প্রয়োজনে আপনারা প্রশাসনকে সঠিক তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করুন। তিনি বলেন, কোন দল বা কোন সংগঠন যারাই এই পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে আসবেন, তাদেরকে আমি ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নিবো। তবে এ ঘটনাকে ইস্যু করে কোন ধরণের অশান্তি সৃষ্টিকারীদের ছাড় দেওয়া হবে না।
 
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মামনুন আহমেদ অনীকের সভাপতিত্বে সম্প্রীতি কমিটির সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নিহত দুই শ্রমিকের বাবা শাহাজাহান শেখ, মধুখালী সার্কেলের এএসপি মিজানুর রহমান, ফরিদপুর ইসলামীক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক শাহাবুদ্দিন আহমেদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল হক বকু, পৌর মেয়র মোর্শেদ রহমান লিমন, উজানদিয়া মডেল মসজিদের ইমাম হাফেজ আলম হোসেন, উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি সুবাস রায় প্রমুখ। সভায় বিজিবির উপ-অধিনায়ক মেজর বদরুল হুদা আকরাম, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সকল ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
 
উল্লেখ্য, ১৮ এপ্রিল ফরিদপুরের মধুখালীর পঞ্চপল্লীর মন্দিরে আগুনের অভিযোগে দুই শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় স্থানীয় থানায় তিনটি মামলা করা হয়েছে। ঘটনার একদিন পর থানায় মামলা তিনটি নথিভুক্ত করা হয়। এ ঘটনায় মোট ১৫জন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।  বিষয়টি নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। বুধবার রাতে নিহত দুই ভাইয়ের বাড়িতে গিয়ে সমবেদনা জানান ও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান এমপি।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী   আব্দুর রহমান   ফরিদপুর  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ভারতের লেন্স দিয়ে বাংলাদেশকে দেখে না যুক্তরাষ্ট্র: মার্কিন কর্মকর্তা

প্রকাশ: ০৭:৫৬ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে দেখে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে আইপিএস নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

ম্যাক্সওয়েল মার্টিন বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক দুই দেশের অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়। বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কটা আমরা দ্বিপক্ষীয় প্রেক্ষাপট থেকেই দেখি। এই সম্পর্ককে আমরা অন্য দেশের লেন্স (দৃষ্টি) দিয়ে দেখি না।’
 
নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে অভিহিত করেছেন ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন, ‘এটা ইতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকেই বলছি। এই অঞ্চলের সব দেশ নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সামর্থ্য রাখে এবং দায়িত্বশীলতার সঙ্গে অন্যের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করতে পারে। গঠনমূলক ও টেকসই দৃষ্টিভঙ্গির প্রেক্ষাপট থেকে দক্ষিণ এশিয়ার ইতিবাচক নিরাপত্তা কাঠামোর পরিপ্রেক্ষিতে থেকেই  দিক থেকে বলছি। কেন এটা বলছি? স্বাধীনতার পর থেকে দ্রুততার সঙ্গে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এই অঞ্চলে বাংলাদেশের সামর্থ্য ও অবদানের সক্ষমতা দেখেছি। নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিতের সামর্থ্যের পাশাপাশি অন্যের সহায়তাও বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে। বাংলাদেশের অংশীদার হিসেবে আমরা গর্বিত। উদাহরণ হিসেবে মিয়ানমারের প্রাকৃতিক দুর্যোগে সহায়তা এক বিরাট দৃষ্টান্ত।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে দুর্যোগ মোকাবিলায় বিভিন্ন অংশে কাজ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের মতো অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা করেছে।’


ভারত   মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র   মার্কিন দূতাবাস  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

মধ্যপ্রাচ্যে ঝুঁকছে বাংলাদেশ?

প্রকাশ: ০৮:০২ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। 

আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন। 

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে যে, আগামী মে মাসে তার বাংলাদেশ সফর করার কথা। এরপরও আরও কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্বের বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। 

৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের বাঁক বলে মনে করা হচ্ছে। 

কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নানা বাস্তবতায় বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্য মুখী হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমানে পরিবর্তিত বিশ্বে এবং যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর বাংলাদেশকে নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকার জন্য বাংলাদেশের কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম কারণ হলো- বাকিতে তেল-জ্বালানি পাওয়া। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটের ফলে জ্বালানি তেলের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কোথাও এক বছরের বাকিতে, কোথাও তারও বেশি সময় বাকিতে জ্বালানি তেল আহরণের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিবাচক সমঝোতা হয়েছে বলেও জানা গেছে।

কাতারের সঙ্গেও এমন একটি সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানা গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে৷ 

দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের অভিবাসীদের জন্য একটি বড় বাজার। বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এই সব দেশগুলোতে বিপুল সংখ্যক বাঙালি বসবাস করে। যুদ্ধের ফলে এই সমস্ত দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে অনেকে মনে করছে। অনেক শ্রমিক ছাঁটাই হতে পারে। আর এটি মাথায় রেখেই বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিচ্ছে, যেন বাংলাদেশের শ্রমিকরা এই শ্রমিক ছাঁটাই এর আওতায় না পড়ে। 

তৃতীয়ত, বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক সংকট সেই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় অদূর ভবিষ্যতে নগদ সহায়তা দরকার হতে পারে, দ্রুত ঋণ দরকার হতে পারে। আর সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের সংকট নিরসনের একটা বড় ভরসাস্থল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

আর এই সমস্ত বাস্তবতায় বাংলাদেশ এখন মধ্যপ্রাচ্যমুখী। বাংলাদেশের ঋণের হার অনেক বেশি। বাংলাদেশে ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। অর্থনীতি ক্রমশ ঋণ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এখানে থেকে উত্তরণের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের সম্পদশালী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন একটি দূরদর্শী কূটনৈতিক চিন্তা বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ আগামী কয়েক বছর বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ দেনা মেটাতে হবে। এই কারণেই বাংলাদেশ কখনও যেন সংকটে না পরে সেজন্য মধ্যপ্রাচ্যের  দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।


মধ্যপ্রাচ্য   বাংলাদেশ  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন