নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:২৯ এএম, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
ক্রমবর্ধমান ও নতুন ‘অপ্রচলিত হুমকির’ প্রেক্ষাপটে শান্তিরক্ষা বাহিনীতে অন্যতম শীর্ষ সেনা ও পুলিশ সদস্য প্রেরণকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ জাতিসংঘ ব্লু হেলমেট মিশনের সংস্কার ও বর্ধিত মর্যাদা চায় বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বিকেলে জাতিসংঘ মহাসচিব এন্টোনিও গুতেরেজের উদ্যোগে অ্যাকশন ফর পিস কিপিং (এফোরপি)-এর ওপর একটি উচ্চপর্যায়ের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বর্তমানে শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের এখন কিছু স্থানে মোতায়েন করা হচ্ছে, যেখানে শান্তি বজায় রাখার মতো পরিস্থিতি নেই। এবং তারা ক্রমবর্ধমান হারে অ-রাষ্ট্রীয় শক্তির কাছ থেকে অপ্রচলিত হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে।’
জাতিসংঘের মিশনগুলো প্রায়ই অন্যান্য বাহিনীর পাশাপাশি ভিন্ন মর্যাদা নিয়ে কাজ করায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রম আরো জটিল ও বিপজ্জনক হয়ে উঠছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাই যারা সম্মুখ সারিতে রয়েছেন তাদের কথা শুনতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ জন্য শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের সুস্পষ্ট ম্যান্ডেট দিতে হবে এবং এই ম্যান্ডেট বাস্তবায়নে পর্যাপ্ত কর্তৃত্ব ও সরঞ্জামও তাদের দিতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী ব্লু হেলমেট মিশনের ব্যয় ও সৈন্য হ্রাসের যে কোনো পদক্ষেপের বিপক্ষে সতর্কবাণী উচ্চারণ করে বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বিনিয়োগ এ মিশন কর্তৃক বাঁচানো প্রতিটি জীবনের মতোই অমূল্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘(তাই) ব্যয় ও সৈন্য হ্রাস কর্মক্ষেত্রে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের মর্যাদা সমুন্নত রাখতে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে। বিশ্বের গোলযোগপূর্ণ অঞ্চলগুলোতে নিয়োজিত ব্লু হেলমেট মিশনে সেনা ও পুলিশ সদস্য প্রেরণকারী অন্যতম শীর্ষ দেশ হিসেবে বাংলাদেশ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনীর ওপর অতিরিক্ত গুরুত্ব দিচ্ছে।’
বাংলাদেশ জাতিসংঘে শান্তিরক্ষার আহবানে সাড়া দিতে কখনো ব্যর্থ হয়নি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘চলতি বছর আমরা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের ৩০ বছরের অবদান উদযাপন করেছি। বাংলাদেশ জাতিসংঘ সদর দপ্তর এবং মাঠপর্যায়ে আরো অধিক সংখ্যক সিনিয়র নেতৃত্ব পাঠাতে পারলে খুশি হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, শান্তিরক্ষীদের অঙ্গীকার এবং কর্মদক্ষতা যেমন তাদের মোতায়েনের লক্ষ্য অর্জন করতে হবে, তেমন শান্তিরক্ষা মিশনে যেসব দেশ সেনা ও পুলিশ সদস্য প্রেরণ করছে নিরাপত্তা পরিষদ ও জাতিসংঘ সচিবালয়কে সেসব দেশকে আস্থায় নিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা উন্নত করতে হবে। আমরা আশা করি, এ-৪পি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনকে এর লক্ষ্য অর্জনের উপযুক্ত হতে সহায়তা করবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঘোষণায় অর্থবহ অগ্রগতির পাশাপাশি অঙ্গীকারেরও মূল্যায়ন করতে হবে। বাংলাদেশ তার নিজের কর্তব্য পালনে প্রস্তুত রয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশী অনেক শান্তিরক্ষী দায়িত্বরত অবস্থায় প্রাণ হারিয়েছেন। তবুও দায়িত্ব পালনে আমাদের শান্তিরক্ষীদের সংকল্প অবিচল রয়েছে। এখন আমরা সম্ভাব্য স্বল্পতম সময়ে আমাদের শান্তিরক্ষীদের মোতায়েন করতে পারি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের ভালো এবং উন্নত ও অগ্রসর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। তারা যে কোন চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতির সঙ্গে দ্রুত নিজেদের মানিয়ে নিতে পারে। তারা যে জনগণের জন্য কাজ করছে তাদের হৃদয়-মন জয়ের জন্য কাজ করে থাকে। বাংলাদেশ জাতিসংঘ মিশনে দায়িত্ব পালনরত তার সৈন্যদের নিরাপত্তার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। বিশেষ করে আমরা মালিতে আমাদের শান্তিরক্ষী বাহিনীকে মাইন-রোধী যানবাহন সরবরাহ করেছি।’
অন্যান্য মিশনেও এটি অনুসরণ করা হবে বলে নিজ বক্তব্যে জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে নারী শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনে আগ্রহী। আর তাই ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে আমাদের প্রথম নারী হেলিকপ্টার পাইলট দল মোতায়েন করে আমরা মাইলফলক স্থাপন করেছি।
শেখ হাসিনা আরও বলেন,‘আমি জাতিসংঘ মহাসচিবের সার্কেল অব লিডারশিপ-এর কাজের প্রতি অঙ্গীকারাবদ্ধ।’
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বিকেলে জাতিসংঘ দপ্তরের ট্রাস্টিশিপ কাউন্সিল চেম্বারে অনু্ষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ মহাসচিব এন্টোনিও গুতেরেজও বক্তৃতা করেন।
সূত্রঃ বাসস
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক বিএসএমএমইউ
মন্তব্য করুন
রাজার ভুটান ভুটান তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত
মন্তব্য করুন
ভালো চাকরির প্রলোভনে লিবিয়ায় গিয়ে জিম্মির শিকার চট্টগ্রামের চার তরুণ। সেখানে তাদের ওপর চালানো হয় নির্যাতন। আর সেই ভিডিও স্বজনদের কাছে পাঠিয়ে দাবি করা হয়েছে ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ।
বুধবার (২৭ মার্চ) বিকেলে জিম্মিদের অভিভাবকরা এ ঘটনায় চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং থানার ওসিকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন।
লিবিয়ায় মানব পাচার চক্রের হাতে জিম্মি চার তরুণ হলেন- আনোয়ারা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের মধ্যম গহিরা বাচা মিয়া মাঝির ঘাট এলাকার নুরুল আলমের ছেলে ওয়াসিম, একই এলাকার মৃত মোজাহের মিয়ার ছেলে বোরহান উদ্দিন, আবদুর রহিমের ছেলে জাবেদুর রহিম ও জেবল হোসেনের ছেলে নাঈম উদ্দিন। এদের বয়স ১৯ থেকে ২২ বছরের মধ্যে।
অপহৃতদের স্বজনরা জানান, রায়পুর ইউনিয়নের গহিরা এলাকার মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে জহিরুল ইসলাম লিবিয়ায় নিয়ে চাকরি দেয়ার কথা বলে ফেব্রুয়ারিতে জনপ্রতি ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা নেন। ওই তরুণরা ১৬ ফেব্রুয়ারি লিবিয়ায় পৌঁছেন। লিবিয়ায় তাদের সংঘবদ্ধ একটি চক্রের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর জনপ্রতি ১০ লাখ টাকা দাবি করে তাদের নির্যাতন করা শুরু হয়। মানব পাচার চক্র এরপর নির্যাতনের ভিডিও পাঠানো শুরু করে পরিবারের সদস্যদের কাছে।
স্বজনরা জানান, চট্টগ্রামের জহিরুল ভুক্তভোগীদের টুরিস্ট ভিসায় প্রথমে দুবাই নিয়ে যায়। সেখানে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর থানার বাসিন্দা মো. মিজান নামে এক লোকের হাতে ওদেরকে তুলে দেয়া হয়। মিজান তিনদিন পর তাদের সবার পাসপোর্ট নিজের কাছে নিয়ে নেয়। সাতদিন পর দুবাই থেকে মিসর হয়ে লিবিয়ায় নিয়ে মিজান ওই চার তরুণকে অন্য দালালের হাতে তুলে দেয়।
আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইশতিয়াক ইমন জানান, অপহৃতদের স্বজনদের কাছ থেকে তারা লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
লিবিয়া বাংলাদেশি জিম্মি নির্যাতন ভিডিও মুক্তিপণ
মন্তব্য করুন
ভালো চাকরির প্রলোভনে লিবিয়ায় গিয়ে জিম্মির শিকার চট্টগ্রামের চার তরুণ। সেখানে তাদের ওপর চালানো হয় নির্যাতন। আর সেই ভিডিও স্বজনদের কাছে পাঠিয়ে দাবি করা হয়েছে ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ। বুধবার (২৭ মার্চ) বিকেলে জিম্মিদের অভিভাবকরা এ ঘটনায় চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং থানার ওসিকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন।