নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:২০ এএম, ২৭ অক্টোবর, ২০১৮
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের কেউ ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে তাঁকে আওয়ামী লীগ থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হবে।
গতকাল শুক্রবার রাতে গণভবনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের যৌথ সভায় শেখ হাসিনা এমন কঠোর হুঁশিয়ারি ব্যক্ত করেন।
শুধু উন্নয়ন দিয়ে ভোট পাওয়া যায় না। ভোট পাওয়া যায় ভালোবাসা দিয়ে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনবিচ্ছিন্ন এমপিরা দলীয় মনোনয়ন পাবেন না। শেষ মুহূর্তেও দলীয় মনোনয়ন পরিবর্তন করা হতে পারে। এছাড়া এবার চেহারা দেখে কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দাঁড়ালেই এমপি হওয়া যাবে—এটা মনে করেই এবার এত প্রার্থী। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে ওভার কনফিডেন্স হওয়া যাবে না। ছিয়ানব্বই-দুই হাজার সালেও আমরা অনেক উন্নয়ন করেছিলাম। কিন্তু নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারেনি। তাই ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে উন্নয়ন প্রচার করতে হবে। তা না হলে ভোট পাওয়া যাবে না। ’
হেফাজতে ইসলাম আর জামাত এক নয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী কওমি মাদরাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে বিদ্রূপ করে ‘তেঁতুল হুজুর’ না বলা এবং তাঁর সম্পর্কে সব ধরনের নেতিবাচক বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
সভায় পোলিং এজেন্টদের প্রশিক্ষণ নিয়েও দীর্ঘ আলোচনা হয়। সভায় আপাতত প্রতি নির্বাচনী এলাকার তিনজন নেতাকর্মী নিয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকায় পোলিং এজেন্টদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার এবং তফসিল ঘোষণার পর বিভাগীয় ও জেলাপর্যায়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এছাড়া সভায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনার জন্য একটি কোর কমিটিসহ ১৫টি উপকমিটি গঠন করা হয়। কোর কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা, কো-চেয়ারম্যান হিসেবে এইচ টি ইমাম এবং সদস্যসচিব হিসেবে ওবায়দুল কাদেরকে মনোনীত করা হয়। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটিতে কারা থাকবেন তা বিস্তারিত জানানো হয়।
গত বৃহস্পতিবার আইনমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে ড. কামাল হোসেনের বক্তব্য নিয়েও আলোচনা হয়েছে সভায়। ওই বক্তব্য প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ড. কামাল হোসেন হয়তো চাচা হিসেবে ওই সব কথা বলেছেন। আওয়ামী লীগের অনেকে ড. কামালের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
এর আগে সভায় সূচনা বক্তব্যে ঐক্যফ্রন্ট নেতারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন চান কি না সে নিয়েও সভায় সংশয় প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। ঐক্যফ্রন্ট নেতারা দেশে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি চায় বলে তিনি মন্তব্য করেন।
ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের ‘নিরপেক্ষ সরকারের’ অধীনে নির্বাচন দাবির এবং ইভিএম নিয়ে বিরোধী দলগুলোর আপত্তির সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আমরা বিরোধী দলে থাকতে কথা বলা তো দূরের কথা, একটা মিটিংও করতে দেয়নি। আমরা কিন্তু সকলের জন্য সভা-সমাবেশ উন্মুক্ত করে দিয়েছি। কাউকে বাধা দিইনি। এখন একটা ঐক্যজোট হয়েছে। তারা মুখে বড় বড় কথা বলে আর দুর্নীতিবাজ সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া এবং সাজাপ্রাপ্ত তারেক রহমান তাদের সঙ্গে জোট করেছে। সেই দলসহ বিএনপি-জামায়াত জোট ঐক্য হয়েছে। তারা বলল, আমরা নাকি তাদের মিটিং করতে দিচ্ছি না। সিলেটে তারা মিটিং করল। আগেই তারা বলে, আমাদের দিচ্ছে না। আমার যেটা মনে হয় যে তারা চায় আমরা তাদের বাধা দিই। ’
এছাড়া সভায় আগামী নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা।
গতকালের সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ, উপদেষ্টা পরিষদ ও সংসদীয় দলের সদস্যরা।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
যশোর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা
মন্তব্য করুন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান ফরিদপুর
মন্তব্য করুন
ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন দূতাবাস
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।
আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে যে, আগামী মে মাসে তার বাংলাদেশ সফর করার কথা। এরপরও আরও কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্বের বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের বাঁক বলে মনে করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নানা বাস্তবতায় বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্য মুখী হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমানে পরিবর্তিত বিশ্বে এবং যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর বাংলাদেশকে নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকার জন্য বাংলাদেশের কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম কারণ হলো- বাকিতে তেল-জ্বালানি পাওয়া। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটের ফলে জ্বালানি তেলের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কোথাও এক বছরের বাকিতে, কোথাও তারও বেশি সময় বাকিতে জ্বালানি তেল আহরণের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিবাচক সমঝোতা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
কাতারের সঙ্গেও এমন একটি সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানা গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে৷
দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের অভিবাসীদের জন্য একটি বড় বাজার। বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এই সব দেশগুলোতে বিপুল সংখ্যক বাঙালি বসবাস করে। যুদ্ধের ফলে এই সমস্ত দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে অনেকে মনে করছে। অনেক শ্রমিক ছাঁটাই হতে পারে। আর এটি মাথায় রেখেই বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিচ্ছে, যেন বাংলাদেশের শ্রমিকরা এই শ্রমিক ছাঁটাই এর আওতায় না পড়ে।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক সংকট সেই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় অদূর ভবিষ্যতে নগদ সহায়তা দরকার হতে পারে, দ্রুত ঋণ দরকার হতে পারে। আর সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের সংকট নিরসনের একটা বড় ভরসাস্থল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর এই সমস্ত বাস্তবতায় বাংলাদেশ এখন মধ্যপ্রাচ্যমুখী। বাংলাদেশের ঋণের হার অনেক বেশি। বাংলাদেশে ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। অর্থনীতি ক্রমশ ঋণ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এখানে থেকে উত্তরণের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের সম্পদশালী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন একটি দূরদর্শী কূটনৈতিক চিন্তা বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ আগামী কয়েক বছর বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ দেনা মেটাতে হবে। এই কারণেই বাংলাদেশ কখনও যেন সংকটে না পরে সেজন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে দেখে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়।
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।