নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:০৯ পিএম, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৮
বাংলাদেশে দীর্ঘ দশ বছর পর সব দলের অংশগ্রহণে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। দেশের সংবাদমাধ্যমগুলো এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একটি ব্যস্ত সময় পার করছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর দৃষ্টিও আকর্ষণ করছে বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংবাদ মাধ্যম ও সাময়িকী এই নির্বাচন নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে। এখানে কয়েকটি প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ তুলে ধরা হলো:
দি ইন্ডিপেনডেন্ট, ব্রিটেন
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘দি ইন্ডিপেনডেন্ট’ শিরোণাম করেছে ‘বিরোধী দলের কর্মীদের জন্য ভয়ের পরিবেশের মধ্যে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে নির্বাচন’। তারা লিখেছে, গত এক দশক ধরে আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃত্বপরায়ণ শাসনের দিকে ঝুঁকেছে। তবে এই সরকার অসাধারণ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য পুরো অঞ্চলে সাফল্যের এক দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে। কোন দল জয় পেতে যাচ্ছে যে বিষয়ে তারা লিখেছে, এটা বলা মুশকিল যে, ভোটাররা যখন ভোট দিতে যাবে তখন অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নাকি তাদের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, কোনটিকে তারা বেশি গুরুত্ব দেবে। নির্বাচন পরবর্তী অবস্থা সম্পর্কে ইন্ডিপেনডেন্ট বলছে, যদি প্রত্যাশা অনুযায়ী শেখ হাসিনা নির্বাচনে জয় পান তাহলে নিশ্চিতভাবেই দেশজুড়ে কিছু বিক্ষোভ হবে এবং সেগুলো দমন করা হবে।
নিকেই এশিয়ান রিভিউ, জাপান
জাপানের সাময়িকী ‘নিকেই এশিয়ান রিভিউ’ বাংলাদেশের নির্বাচনকে তাদের প্রচ্ছদেই রেখেছে। গত সপ্তাহের সংখ্যাটিতে তারা শিরোনাম করেছে, ‘দ্য রাইজ অ্যান্ড রাইজ অব বাংলাদেশ।’ সাময়িকীটি লিখেছে, সবধরণের প্রতিকূলতাকে অতিক্রম করে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম এক বিস্ময়ে পরিণত হয়েছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এক দশক ধরে ছয় শতাংশের ওপরে, দেশটির গার্মেন্টস শিল্প চীনের পরেই দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। আর মাথাপিছু আয় ২০০৯ সালের পর থেকে তিন গুণ বেড়ে এখন এক হাজার ৭৫০ ডলারে পৌঁছেছে। আর চরম দারিদ্র্যের হার নেমে এসেছে নয় শতাংশের নিচে। এরকম উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক অগ্রগতি হয়েছে যে সরকারের অধীনে, স্বাভাবিকভাবেই তাদের ব্যাপক সমর্থন থাকার কথা। কিন্তু বাংলাদেশের ৩০শে ডিসেম্বরের নির্বাচনের আগে গণ বিক্ষোভ এবং রাজনৈতিক সহিংসতা বাড়ছে। শেখ হাসিনার বিরোধীরা অভিযোগ করছেন, যেভাবে কঠোর হাতে তিনি ক্ষমতা কুক্ষিগত করেছেন, তা নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে দেবে না। পর পর পাঁচ বছরের দুটি মেয়াদের পর এখন কিছু ভোটারের মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। কিন্তু অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে, অনেকেই একমত হবেন যে ক্ষমতাসীন দলের বিজয় (বাংলাদেশের) অধিকতর উন্নয়নের পক্ষে যাবে।’
আনন্দবাজার, ভারত
আনন্দবাজার বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সাক্ষাতকারও নিয়েছে পত্রিকাটি। এদেশের নির্বাচন নিয়ে তাদের একটি প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিলো এরকম, ‘জঙ্গি ঘাঁটি গড়তে দেবেন না হাসিনা’। প্রতিবেদনে তারা লিখেছে, আসন্ন ভোটে জয়ের প্রশ্নে আশাবাদী হয়েও সতর্ক থাকতে চাইছেন আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা। নির্বাচনের আগে একটি চিত্র খুবই স্পষ্ট। বাংলাদেশের রাস্তাঘাটে আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকার অজস্র পোস্টার ব্যানার চোখে পড়লেও বিএনপির ধানের শীষ কার্যত অনুপস্থিত। বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, বিভিন্ন কেন্দ্রে ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে তাদের পোস্টার। প্রচারও করতে দিচ্ছে না আওয়ামী লীগ। অনেকে বলছেন, বিএনপি শিবির যেন ঝড়ের আগে থম মেরে রয়েছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, ভারত
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ‘ব্যাটল ফর বাংলাদেশ’ শিরোনামে লিখেছে, গত এক দশক ধরে শেখ হাসিনা যেসব নীতি এবং কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে চলেছেন, বাংলাদেশে এবারের নির্বাচন সেগুলোর জন্য এক লিটমাস টেস্ট। শেখ হাসিনার এসব কর্মসূচির ইতিবাচক প্রভাবই পড়া উচিৎ নির্বাচনে। কিন্তু ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধে অসন্তোষ, বিশেষ করে তার দলের মন্ত্রী-এমপিদের দুর্নীতি তার জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। পরিতাপের বিষয় হলো, দুর্নীতি এবং সন্ত্রাসের ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন সরকারের প্রধান বিরোধী বিএনপির ভাবমূর্তি আরও বেশি খারাপ। বিএনপির সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হচ্ছে সাংগঠনিকভাবে তারা একেবারেই ছত্রভঙ্গ। দলটি ২০১৪ সালের নির্বাচন বয়কট করেছিল। সেটি ছিল তাদের জন্য আত্মহত্যার সামিল। ওই সিদ্ধান্তের ফলে দলটি যে কেবল শীতনিদ্রায় চলে গিয়েছিল, শুধু তাইই নয় অনেকেই দল ছেড়েছে এবং সংগঠন অকার্যকর হয়ে পড়েছে।
বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি/এমআর
মন্তব্য করুন
মাধ্যপ্রাচ্য শেখ হাসিনা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রদূত ইউসেফ এস ওয়াই রামাদান
মন্তব্য করুন
কাতারের আমির আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি
মন্তব্য করুন
চুয়াডাঙ্গা সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হিট এলার্ট জারি
মন্তব্য করুন
নাটোর সিংড়া উপজেলা পরিষদ ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি জুনায়েদ আহমেদ পলক
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন