নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০১ এএম, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৮
নানা ঘটনা, আলোচনা-সমালোচনার পর আগামী রোববার বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নানা কারণে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বেশ আলোচিত। তবে নির্বাচনের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় বেশ আলোচিত এবং সমালোচিত ছিলেন কিছু ব্যক্তি। এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আলোচিত এবং সমালোচিত ১০ ব্যক্তি হচ্ছেন:
ড. কামাল হোসেন: এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব থেকে বেশি আলোচিত ঘটনা হচ্ছে ড. কামাল হোসেনের রুদ্র রূপ। ড. কামাল হোসেন নিজে নির্বাচন করছেন না। নির্বাচন না করেও তিনি একজন ভাড়াটে নেতা হিসেবে কাজ করেছেন বলে অনেকের অভিযোগ। এবারের নির্বাচনের শুরু থেকেই ড. কামালের হোসেনের রুদ্ররূপ দেখেছেন দেশবাসী। তিনি কখনও পুলিশকে জানোয়ার বলেছেন, আবার কখনও নির্বাচন কমিশন এবং সাংবাদিকদেরকে ধমক দিয়ে কথা বলেছেন। ড. কামাল হোসেনের এমন রুদ্র রূপ এবং ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের কারণে তিনি সবচেয়ে বেশি আলোচিত এবং সমালোচিত ছিলেন এবারের নির্বাচনে।
ইসি মাহবুব তালুকদার: নির্বাচন কমিশন যখন একটি অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রাণান্ত চেষ্টা করে যাচ্ছেন, তখন নির্বাচন কমিশনের একজন নির্বাচন কমিশনার অকপটে একটি দলের পক্ষ অবলম্বন করেছেন। তিনি হচ্ছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মাহবুব তালুকদার। তিনি কোন রাখ-ঢাক ছাড়াই বিএনপির পক্ষে নির্বাচন পরিচালনা করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন। শুধু তাই নয় তিনি নির্বাচন কমিশনকে বিতর্কিত করার জন্যও কাজ করেছেন বলে বিভিন্ন রাজনৈতিক মহল মনে করে। যার ফলে এবারের নির্বাচনে ইসি মাহবুব তালুকদার ছিলেন দ্বিতীয় আলোচিত ব্যক্তি।
হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদঃ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ এবারের নির্বাচনের শুরু থেকে একের পর এক নাটকের জন্ম দিয়েছেন। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পরের দিনেই তিনি চিকিৎসার নামে চলে গেলেন বিদেশে। তিনি দেশে ফিরলেন নির্বাচনী প্রচারণার শেষ মুহূর্তে। এসেই তিনি ঢাকা ১৭ আসন থেকে সরে দাঁড়ালেন। এবারের নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত এরশাদ কী করে তা দেখার বিষয়। এবারের নির্বাচনে নির্বাচনে এরশাদ শুধুই আলোচিতই নয়, একটি বড় কৌতুক হিসেবে নিজেকে আবির্ভূত করেছেন।
মাশরাফি বিন মর্তুজাঃ বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সফল অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে মাশরাফি এবারের জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন। নির্বাচনে মাশরাফি ইতিমধ্যে যথেষ্ট সাড়াও ফেলেছেন। তিনি নির্বাচনের মাঠে শুধু সাড়াই ফেলেনি, দেশজুড়ে নির্বাচনী আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতেও ছিলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা।
বেকার তারকাদের প্রচারণা: এবারের নির্বাচনে বাংলাদেশের যেসব তারকাদের হাতে কোন কাজ নেই, যারা এখন মোটামুটি বেকার, তাঁরা ভবিষ্যৎ প্রাপ্তির আশায় নৌকা মার্কার প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন। বেকার তারকাদের এইসব প্রচারণা ভোটারদের মাঝে যতটা না সাড়া ফেলেছে, তার চেয়ে বেশি বিরক্তি উৎপাদনের কারণ হয়েছে। এই সমস্ত বেকার তারকাদের প্রচারণা বিরক্তিকর আলোচিত ব্যক্তি হিসেবে পরিণত হয়েছে।
শেখ তন্ময়: মাত্র ৩৩ বছর বয়সের তরুণ শেখ সারহান নাসের তন্ময়। বঙ্গবন্ধু পরিবারের তৃতীয় প্রজন্মের প্রথম প্রতিনিধি হিসেবে তিনি এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন। তার বাবা শেখ হেলাল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাতিজা। তিনি এবারের নির্বাচনে তরুণদের মধ্যে যথেষ্ট সাড়া ফেলেছেন। এই নির্বাচনে শেখ তন্ময় অন্যতম আলোচিত ব্যক্তি ছিলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরঃ ২০০১ সালে বিএনপি-জামাত ক্ষমতায় থাকা কালেও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছিলেন একজন প্রতিমন্ত্রী। সেখান থেকে তিনি বিএনপির মহাসচিব হন। বেগম খালেদা জিয়া দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত হলে তিনিই বিএনপির মূল নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন। এবারের নির্বাচনে কার কী লাভ হয়েছে সেটা পরের বিষয় কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপির অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। জিয়া পরিবারের বাইরে তিনিই প্রথম বিএনপি নেতা হিসেবে জনগণের কাছে স্বীকৃতি পেলেন। সম্প্রতি মির্জা ফখরুলের নির্বাচন উপলক্ষে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যথেষ্ট আলোচিত হয়েছে।
মাহমুদুর রহমান মান্না: এবারের জাতীয় নির্বাচনে অষ্টম আলোচিত ব্যক্তি হচ্ছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মাহমুদুর রহমান মান্না। নির্বাচন বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে তিনি নানা রকম হুমকি-ধমকি এবং বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে জনগণের কাছে যথেষ্ট বিরক্তি উৎপাদনের কারণ হয়েছেন। তার নির্বাচনী এলাকায় বিএনপি তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে তিনি একজন নাম সর্বস্ব ব্যক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন।
ওবায়দুল কাদের: এবারের নির্বাচনে ওবায়দুল কাদের কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হয়েছেন। তারপরেও তিনি জাতীয় রাজনীতিতে এবং তার এলাকার পাশের আসনগুলোতে কিছু কিছু অবদান রেখেছেন। এই নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত তার ভাগ্যে কী ঘটবে সে ব্যাপারে জানার জন্য জনগণ অপেক্ষা করছে।
হিরো আলম: এবারের নির্বাচনে আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম বেশ আলোচিত ব্যক্তি ছিলেন। প্রথমে জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও তাকে মনোনয়ন দেয়নি দলটি। নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রথম থেকে কয়েক দফা ব্যর্থ হয়ে হাইকোর্টের শরণাপন্ন হন হিরো আলম। অবশেষে আদালত তাকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুমতি দেয়। নির্বাচনে অংশগ্রহণের গোটা প্রক্রিয়াজুড়ে ইতিবাচক ও নেতিবাচক উভয় ক্ষেত্রে আলোচিত ছিলেন হিরো আলম।
বাংলা ইনসাইডার/আরকে
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
যশোর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা
মন্তব্য করুন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান ফরিদপুর
মন্তব্য করুন
ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন দূতাবাস
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।
আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে যে, আগামী মে মাসে তার বাংলাদেশ সফর করার কথা। এরপরও আরও কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্বের বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের বাঁক বলে মনে করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নানা বাস্তবতায় বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্য মুখী হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমানে পরিবর্তিত বিশ্বে এবং যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর বাংলাদেশকে নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকার জন্য বাংলাদেশের কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম কারণ হলো- বাকিতে তেল-জ্বালানি পাওয়া। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটের ফলে জ্বালানি তেলের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কোথাও এক বছরের বাকিতে, কোথাও তারও বেশি সময় বাকিতে জ্বালানি তেল আহরণের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিবাচক সমঝোতা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
কাতারের সঙ্গেও এমন একটি সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানা গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে৷
দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের অভিবাসীদের জন্য একটি বড় বাজার। বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এই সব দেশগুলোতে বিপুল সংখ্যক বাঙালি বসবাস করে। যুদ্ধের ফলে এই সমস্ত দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে অনেকে মনে করছে। অনেক শ্রমিক ছাঁটাই হতে পারে। আর এটি মাথায় রেখেই বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিচ্ছে, যেন বাংলাদেশের শ্রমিকরা এই শ্রমিক ছাঁটাই এর আওতায় না পড়ে।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক সংকট সেই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় অদূর ভবিষ্যতে নগদ সহায়তা দরকার হতে পারে, দ্রুত ঋণ দরকার হতে পারে। আর সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের সংকট নিরসনের একটা বড় ভরসাস্থল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর এই সমস্ত বাস্তবতায় বাংলাদেশ এখন মধ্যপ্রাচ্যমুখী। বাংলাদেশের ঋণের হার অনেক বেশি। বাংলাদেশে ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। অর্থনীতি ক্রমশ ঋণ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এখানে থেকে উত্তরণের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের সম্পদশালী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন একটি দূরদর্শী কূটনৈতিক চিন্তা বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ আগামী কয়েক বছর বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ দেনা মেটাতে হবে। এই কারণেই বাংলাদেশ কখনও যেন সংকটে না পরে সেজন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে দেখে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়।
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।