নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:১৭ পিএম, ০৭ এপ্রিল, ২০১৯
সড়কে পরিবহনের সীমাহীন নৈরাজ্য, বেপরোয়া চালক, ট্র্যাফিক আইন অমান্যসহ নানা কারণে প্রতিদিনই দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। রাজধানীসহ সারাদেশে সড়কে প্রাণ হারাচ্ছে মানুষ। এরই মধ্যে নিরাপদ সড়কের দাবিতে দেশে সংঘটিত হয়েছে দুই দফা আন্দোলন। শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলন থেকে বিভিন্ন দাবি উত্থাপন করেছেন। তাদের অনেক দাবি-দাওয়া মেনে নিয়ে তা বাস্তবায়নও শুরু করেছে সরকার। কিন্তু তারপরও কোনভাবে থামছে না সড়কে মৃত্যুর মিছিল।
গত তিন মাসে সারাদেশে ১০৪৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১১৬৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। সড়কে নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা সংস্থাটি দেশের ১১টি জাতীয়, ৯টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত সড়ক দুর্ঘটনার তথ্যের ভিত্তিতে গত জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ৩ মাসের সড়ক, রেলপথ ও নৌ-পথ দুর্ঘটনার প্রতিবেদন তৈরি করেছে।
মাসভিত্তিক পরিসংখ্যান:
জানুয়ারি: দুর্ঘটনা ৩২৭টি, নিহত ৩৩৯ জন, আহত ৫৭১ জন।
ফেব্রুয়ারি: দুর্ঘটনা ৩৮৬টি, নিহত ৪২১ জন, আহত ৭৩৪ জন।
মার্চ: দুর্ঘটনা ৩৩৬টি, নিহত ৪০৩ জন, আহত ৬৯৩ জন।
০১ জানুয়ারি ২০১৯ থেকে ৩১ মার্চ ২০১৯ পর্যন্ত সারাদেশে সড়কে মোট দুর্ঘটনা ঘটেছে ১০৪৯টি। এসব দুর্ঘটনায় ১১৬৩ জন নিহত ও আরও অন্তত ১৯৯৮ জন আহত হয়েছে। এসময়ের মধ্যে রেলপথে ঘটা ৪৭টি দুর্ঘটনায় ৫২ জন নিহত ও ৯ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া ৩৫টি নৌ দুর্ঘটনায় ১৯ জনের প্রাণহানি ঘটেছে, আহত হয়েছেন ৪৮ জন।
পরিসংখ্যান মতে, বছরের প্রথম তিন মাসে সড়ক, রেল ও নৌ-পথে মোট দুর্ঘটনা ঘটেছে ১১৩১টি, নিহত ১২৩৪ জন এবং আহত ২০৫৫ জন। সড়কে তিন মাসে এত বেশি দুর্ঘটনার পিছনে ৯টি কারণ দেখিয়েছে সংস্থাটি। তাদের মতে সড়ক দুর্ঘটনার কারণসমূহ:
১. পরিবহন মালিকদের অতি মুনাফালোভী মানসিকতা;
২. মেয়াদোত্তীর্ণ ও ত্রুটিযুক্ত যানবাহন;
৩. চালকদের অদক্ষতা ও বেপরোয়া গতিতে যানবাহন চালানো;
৪. চালকদের শারীরিক ও মানসিক অসুস্থতা;
৫. পরিবহন শ্রমিকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা;
৬. মহাসড়কে নসিমন, করিমন, ভটভটি ইত্যাদি স্বল্পগতির স্থানীয় মোটরযান চলাচল;
৭. তরুণ ও যুবকদের বেপরোয়াভাবে মোটরসাইকেল চালানো;
৮. জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা;
৯. গণপরিবহণে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় চাঁদাবাজি।
এসব সমস্যা সমাধানে কিছু সুপারিশও জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।
সুপারিশসমূহ:
১. গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে;
২. দক্ষ চালক তৈরি করতে হবে;
৩. চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করতে হবে;
৪. মহাসড়কে স্থানীয়ভাবে তৈরি স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল বন্ধ করতে হবে। এজন্য মহাসড়কের পাশ দিয়ে আলাদা রাস্তা তৈরি করতে হবে;
৫. পর্যায়ক্রমে সকল সড়ক মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে;
৬.পরিবহনের মালিক, শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে, প্রতিষ্ঠা করতে হবে আইনের শাসন;
৭.রেলপথ ও নৌ-পথকে সংস্কারের মাধ্যমে আধুনিক ও সম্প্রসারণ করে সড়কের উপর চাপ কমাতে হবে।
বাংলা ইনসাইডার/এমআর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
যশোর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা
মন্তব্য করুন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান ফরিদপুর
মন্তব্য করুন
ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন দূতাবাস
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।
আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে যে, আগামী মে মাসে তার বাংলাদেশ সফর করার কথা। এরপরও আরও কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্বের বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের বাঁক বলে মনে করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নানা বাস্তবতায় বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্য মুখী হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমানে পরিবর্তিত বিশ্বে এবং যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর বাংলাদেশকে নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকার জন্য বাংলাদেশের কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম কারণ হলো- বাকিতে তেল-জ্বালানি পাওয়া। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটের ফলে জ্বালানি তেলের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কোথাও এক বছরের বাকিতে, কোথাও তারও বেশি সময় বাকিতে জ্বালানি তেল আহরণের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিবাচক সমঝোতা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
কাতারের সঙ্গেও এমন একটি সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানা গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে৷
দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের অভিবাসীদের জন্য একটি বড় বাজার। বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এই সব দেশগুলোতে বিপুল সংখ্যক বাঙালি বসবাস করে। যুদ্ধের ফলে এই সমস্ত দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে অনেকে মনে করছে। অনেক শ্রমিক ছাঁটাই হতে পারে। আর এটি মাথায় রেখেই বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিচ্ছে, যেন বাংলাদেশের শ্রমিকরা এই শ্রমিক ছাঁটাই এর আওতায় না পড়ে।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক সংকট সেই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় অদূর ভবিষ্যতে নগদ সহায়তা দরকার হতে পারে, দ্রুত ঋণ দরকার হতে পারে। আর সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের সংকট নিরসনের একটা বড় ভরসাস্থল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর এই সমস্ত বাস্তবতায় বাংলাদেশ এখন মধ্যপ্রাচ্যমুখী। বাংলাদেশের ঋণের হার অনেক বেশি। বাংলাদেশে ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। অর্থনীতি ক্রমশ ঋণ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এখানে থেকে উত্তরণের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের সম্পদশালী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন একটি দূরদর্শী কূটনৈতিক চিন্তা বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ আগামী কয়েক বছর বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ দেনা মেটাতে হবে। এই কারণেই বাংলাদেশ কখনও যেন সংকটে না পরে সেজন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে দেখে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়।
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।