নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৪৮ পিএম, ১৯ অগাস্ট, ২০১৯
তিনদিনের সফরে আজ সোমবার (১৯ আগস্ট) রাতে বাংলাদেশে আসছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের এটিই হতে যাচ্ছে তার প্রথম বাংলাদেশ সফর।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই সফর বেশ কয়েকটি কারণেই গুরুত্বপূর্ণ। এমন একটি সময়ে এই সফরটি হচ্ছে যখন কিনা কাশ্মির ইস্যু নিয়ে সারা বিশ্বেই প্রশ্নের মুখে পড়ছে ভারত। বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার তিস্তা চুক্তিসহ আরও কিছু বিষয় বহু বছর ধরেই ঝুলে আছে। তাছাড়া আগামী অক্টোবরেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফর করবেন। সবকিছু মিলিয়ে জয়শঙ্করের এই সফরটা বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে।
কূটনীতিকরা বলছেন, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই সফরে তিনটি বিষয় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাবে। এর মধ্যে প্রথমটি হলো, রোহিঙ্গা সংকট। এটা খুব সহজেই অনুমান করা যায় যে, রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে ভারতের জোরালো পদক্ষেপের বিষয়ে আলোচনা করবে বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় বিষয়টি হলো, তিস্তা চুক্তি। দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত তিস্তাসহ সব অভিন্ন নদীর পানির বণ্টন দুই পক্ষের বৈঠকে বাড়তি গুরুত্ব পাবে।
তৃতীয় যে বিষয়টি জয়শঙ্কর বিশেষভাবে আলোচনা করবেন বলে মনে করা হচ্ছে তা হলো, কাশ্মির ইস্যু। বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে যে কাশ্মির ইস্যু ভারতের অভ্যন্তরীন বিষয়। এ বিষয়ে বাংলাদেশ হস্তক্ষেপ করবে না। কিন্তু তবুও ভারত চাইতেই পারে যে, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশ কাশ্মির ইস্যুতে দিল্লির পক্ষে সরব হবে। জয়শঙ্কর এ বিষয়টির ওপর জোর দেবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
এই তিনটি বিষয় ছাড়াও দু’দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য, কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার করা, অবৈধ অভিবাসন ও অনুপ্রবেশ নিয়ে আলোচনা হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে একাধিক চুক্তিও স্বাক্ষরিত হতে পারে।
আগামী অক্টোবরের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্ভাব্য নয়াদিল্লি সফর নিয়েও দুই দেশের দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে আলোচনা হতে পারে।
উল্লেখ্য, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পর বাংলাদেশে এটা জয়শঙ্করের প্রথম সফর হলেও গত জুনে তাজিকিস্তানে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। ওই বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট, অমীমাংসিত তিস্তাসহ দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা করেছিলেন দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এর আগে, ২০১৪ সালে সুষমা স্বরাজ ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পর একই বছরের ২৫ জুন প্রথম বিদেশ সফরে ঢাকা এসেছিলেন। ড. এ কে আবদুল মোমেনও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর ভারতের আমন্ত্রণে গত জানুয়ারিতে নয়াদিল্লিতে প্রথম বিদেশ সফর করেন।
বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
যশোর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা
মন্তব্য করুন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান ফরিদপুর
মন্তব্য করুন
ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন দূতাবাস
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।
আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে যে, আগামী মে মাসে তার বাংলাদেশ সফর করার কথা। এরপরও আরও কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্বের বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের বাঁক বলে মনে করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নানা বাস্তবতায় বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্য মুখী হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমানে পরিবর্তিত বিশ্বে এবং যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর বাংলাদেশকে নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকার জন্য বাংলাদেশের কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম কারণ হলো- বাকিতে তেল-জ্বালানি পাওয়া। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটের ফলে জ্বালানি তেলের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কোথাও এক বছরের বাকিতে, কোথাও তারও বেশি সময় বাকিতে জ্বালানি তেল আহরণের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিবাচক সমঝোতা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
কাতারের সঙ্গেও এমন একটি সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানা গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে৷
দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের অভিবাসীদের জন্য একটি বড় বাজার। বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এই সব দেশগুলোতে বিপুল সংখ্যক বাঙালি বসবাস করে। যুদ্ধের ফলে এই সমস্ত দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে অনেকে মনে করছে। অনেক শ্রমিক ছাঁটাই হতে পারে। আর এটি মাথায় রেখেই বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিচ্ছে, যেন বাংলাদেশের শ্রমিকরা এই শ্রমিক ছাঁটাই এর আওতায় না পড়ে।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক সংকট সেই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় অদূর ভবিষ্যতে নগদ সহায়তা দরকার হতে পারে, দ্রুত ঋণ দরকার হতে পারে। আর সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের সংকট নিরসনের একটা বড় ভরসাস্থল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর এই সমস্ত বাস্তবতায় বাংলাদেশ এখন মধ্যপ্রাচ্যমুখী। বাংলাদেশের ঋণের হার অনেক বেশি। বাংলাদেশে ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। অর্থনীতি ক্রমশ ঋণ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এখানে থেকে উত্তরণের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের সম্পদশালী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন একটি দূরদর্শী কূটনৈতিক চিন্তা বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ আগামী কয়েক বছর বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ দেনা মেটাতে হবে। এই কারণেই বাংলাদেশ কখনও যেন সংকটে না পরে সেজন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে দেখে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়।
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।