নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:১০ পিএম, ১৯ অগাস্ট, ২০১৯
দীর্ঘ সাত সপ্তাহ পর বৈঠকে বসে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন এবং মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ আইনের খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এছাড়া আরও দুইটি আইনের খসড়া, একটি নীতিমালা ও দুইটি কোম্পানি গঠনের প্রস্তাবেও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে মন্ত্রিসভার বৈঠকে।
সোমবার (১৯ আগস্ট) তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সাত সিদ্ধান্তে অনুমোদন দেওয়া হয়। এর আগে, গত ২৪ জুন মন্ত্রিসভার সর্বশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর ৩০ জুন জাতীয় সংসদে বাজেট পাস হওয়ার পর ইউরোপের কয়েকটি দেশে সফর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সময়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়নি। প্রধানমন্ত্রী পরে সরকারি সফরে লন্ডনে থাকাকালীনও অনুষ্ঠিত হয়নি মন্ত্রিসভার বৈঠক। আর গত সোমবার ছিল ঈদুল আজহা। সব মিলিয়ে সাত সপ্তাহ পর আজ বৈঠকে বসেছে মন্ত্রিসভা।
চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন
সাত সপ্তাহ পর বৈঠকে বসে শুরুতেই চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১৯-এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। দীর্ঘ পর্যালোচনার অনুমোদন পাওয়া এই খসড়া আইন অনুযায়ী, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আদলে এই বিশ্ববিদ্যালয়েরও চ্যান্সেলর থাকবেন রাষ্ট্রপতি। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষাবিদসহ ১৩ সদস্যের একটি সিন্ডিকেটও থাকবে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ আইন
সামরিক সরকারের আমলে প্রণয়ন করা চালনা বন্দর অধ্যাদেশকে সময়োপযোগী করে আইনে পরিণত করতে ‘মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ আইন ২০১৯’ নামে একটি খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে মন্ত্রিসভার বৈঠকে। সংশোধনীর পর খসড়ায় মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষকে পরিচালনার জন্য একজন চেয়ারম্যান ও ছয় সদস্যের একটি পরিচালনা বোর্ড গঠনের কথা বলা হয়েছে। বন্দর এলাকাকে প্রয়োজনে সংরক্ষিত ঘোষণার ক্ষমতায় দেওয়া হয়েছে কর্তৃপক্ষকে।
মন্ত্রিসভার বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
খসড়া এই আইনে কোনো ব্যক্তির আইন বা বিধি লঙ্ঘনের জন্য ৬ মাসের কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। টোল বন্দর এলাকার মধ্যে পরিবেশ দূষণের জন্য একবছর কারাদণ্ড ও ৫ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। আর টোল ফাঁকিতে একমাস কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকার জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
জাতীয় স্কুল মিল নীতি
দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার কমাতে খাবার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সরকার। এ জন্য ‘জাতীয় স্কুল মিল নীতি’ নামে একটি আইনের খসড়ায় অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এই নীতির আওতায় ২০২৩ সালের মধ্যে দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশুদের জন্য পুষ্টিকর খাবার দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নীতিমালা
প্রতিবন্ধীদের শিক্ষা দেওয়ার নামে যেখানে সেখানে যেন মানহীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতে না পারে, তার জন্য একটি গাইডলাইন তৈরি করছে সরকার। এ লক্ষ্যে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘নিউরো-ডেভেলপমেন্ট প্রতিবন্ধী সম্পর্কিত সমন্বিত/বিশেষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নীতিমালার খসড়া’য় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই নীতিমালায় জেলা-উপজেলা ও সেনানিবাস এলাকায় ১৩ সদস্যের কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী জেলা-উপজেলা পর্যায়ে থানা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক পদাধিকার বলে কমিটি প্রধান হবেন।
দুই কোম্পানির প্রস্তাবে অনুমোদন
সরকারি মালিকানাধীন রুরাল পাওয়ার কোম্পানি (আরপিসিএল) ও চীনের বেসরকারি কোম্পানি শেনজেন স্টার ইনস্ট্রুমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে ‘বাংলাদেশ পাওয়ার ইক্যুপমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গঠনের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। প্রাথমিক পর্যায়ে এই কোম্পানি প্রিপেইড মিটার ও বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম তৈরি করবে। অন্যদিকে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) আওতায় ‘স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড’ নামে আরেকটি কোম্পানি গঠনের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
এছাড়াও সোমবারের বৈঠকে বাংলাদেশ প্রকৌশল গবেষণা আইন শীর্ষক একটি আইনের খসড়ায় অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
যশোর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা
মন্তব্য করুন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান ফরিদপুর
মন্তব্য করুন
ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন দূতাবাস
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।
আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে যে, আগামী মে মাসে তার বাংলাদেশ সফর করার কথা। এরপরও আরও কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্বের বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের বাঁক বলে মনে করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নানা বাস্তবতায় বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্য মুখী হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমানে পরিবর্তিত বিশ্বে এবং যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর বাংলাদেশকে নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকার জন্য বাংলাদেশের কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম কারণ হলো- বাকিতে তেল-জ্বালানি পাওয়া। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটের ফলে জ্বালানি তেলের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কোথাও এক বছরের বাকিতে, কোথাও তারও বেশি সময় বাকিতে জ্বালানি তেল আহরণের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিবাচক সমঝোতা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
কাতারের সঙ্গেও এমন একটি সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানা গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে৷
দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের অভিবাসীদের জন্য একটি বড় বাজার। বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এই সব দেশগুলোতে বিপুল সংখ্যক বাঙালি বসবাস করে। যুদ্ধের ফলে এই সমস্ত দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে অনেকে মনে করছে। অনেক শ্রমিক ছাঁটাই হতে পারে। আর এটি মাথায় রেখেই বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিচ্ছে, যেন বাংলাদেশের শ্রমিকরা এই শ্রমিক ছাঁটাই এর আওতায় না পড়ে।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক সংকট সেই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় অদূর ভবিষ্যতে নগদ সহায়তা দরকার হতে পারে, দ্রুত ঋণ দরকার হতে পারে। আর সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের সংকট নিরসনের একটা বড় ভরসাস্থল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর এই সমস্ত বাস্তবতায় বাংলাদেশ এখন মধ্যপ্রাচ্যমুখী। বাংলাদেশের ঋণের হার অনেক বেশি। বাংলাদেশে ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। অর্থনীতি ক্রমশ ঋণ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এখানে থেকে উত্তরণের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের সম্পদশালী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন একটি দূরদর্শী কূটনৈতিক চিন্তা বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ আগামী কয়েক বছর বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ দেনা মেটাতে হবে। এই কারণেই বাংলাদেশ কখনও যেন সংকটে না পরে সেজন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে দেখে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়।
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।