ইনসাইড বাংলাদেশ

বিএনপির আমলে বুয়েটের সনি হত্যার কথা মনে আছে?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২:৫৩ পিএম, ০৮ অক্টোবর, ২০১৯


Thumbnail

সাবেকুন নাহার সনির কথা মনে আছে? চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ স্কুলে মাধ্যমিক দিয়ে ভর্তি হন চট্টগ্রাম ইস্পাহানী পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজে। চিকেন পক্সের কারণে দুটো বাদ দিয়ে এইসএসসির বাকি সব পরীক্ষা দিতে হয়েছিল সিক বেডে শুয়ে। তবু কৃতিত্বের সাথে স্টার মার্ক পেয়ে পাশ করে যান। অতঃপর ১৯৯৯ সালে ভর্তি হন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমি-কৌশল বিভাগে। তাদের ব্যাচের নাম ছিল- স্বাপ্নিক’৯৯। বেশ সতেজ হাসি-খুশি থাকতেন তিনি। লেভেল-১ টার্ম-২ পর্যন্ত ছিলেন হলেই। এরপরে লেভেল-২ টার্ম-১ –এর প্রথম দিকে হলের সিট ছেড়ে দিয়ে পরিবারের সাথে ঢাকার বাসায় উঠেন।

অতঃপর শুরু হলো লেভেল-২ টার্ম-২। `স্বাপ্নিক` বুয়েটিয়ানরা প্রস্তুতি নিচ্ছিল লেভেল পূর্তি উৎসবের। এর সাথে বিশ্বকাপ ফুটবল শুরু হয়ে যাওয়ায় বুয়েটের প্রথা অনুযায়ী ক্লাস ছুটির দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়ে গিয়েছিল। সব মিলিয়ে বুয়েট ছিল সরগরম।

তবে এটাই ক্যাম্পাসের সম্পূর্ণ চিত্র নয়। এর পাশাপাশি বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-জুড়ে চলছিল তৎকালীন সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠন ‘ছাত্রদলের’ দৌরাত্ম। সাধারণত বুয়েট পলাশী বাজার প্রভৃতি এলাকার চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল ক্যাডাররাই দেখভাল করতো। এবং তখনকার ঢাবি-র ছাত্রদল ক্যাডার সুর্য সেন হলের ‘টগর’-ই ছিল এই টেন্ডার রাজ্যের মূল নিয়ন্তা। এদিকে চট্টগ্রামের সাকা চৌধুরীর অনুগত ও তৎকালীন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি ‘পিন্টু’-র স্নেহভাজন মোকাম্মেল হায়াৎ খান ‘মুকী’ ছিল ছাত্রদল বুয়েট শাখার সভাপতি। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারন সম্পাদকের পদটিও ছিল তার দখলে। এই মুকী যখন নিজ এলাকার তথা বুয়েটের চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজির ‘দায়িত্ব’ নিজে বুঝে নিতে চায় এবং সেই লক্ষে নিজস্ব গানম্যান, ক্যাডার বাহিনী গড়ে তোলে বিপত্তি বাঁধে তখনই। বুয়েটকে কেন্দ্র করে এই দুই ছাত্রদল ক্যাডার ‘টগর’ ও ‘মুকী’-র বিরোধ প্রকাশ্য রূপ নেয়। জুন মাসের শুরুর দিকে বেশ বড় অংকের একটা টেন্ডারকে সামনে রেখে টগর-মুকীর শক্তিমত্তার চূড়ান্ত পরীক্ষা অনিবার্য হয়ে উঠে।

সেদিন ৮ই জুন সকালবেলা বিশ্বকাপ উপলক্ষে ছুটির দাবিতে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে প্রধান ফটকে তালা মারা হয়। ভিসি আর ছাত্রপক্ষের মধ্যে শুরু হয় তর্ক-বিতর্ক। গেট আটকানোর ফলে ঐদিন ক্লাস হয়নি। লেভেল পূর্তি উৎসবের প্রস্তুতির জন্য স্বাপ্নিক’ ৯৯ ব্যাচের অনেকের মতো সনিও ক্যাম্পাসে ছিলেন। বুয়েট বন্ধের উপক্রম হওয়াতে তাঁদের অনুষ্ঠানও পিছিয়ে যায়। ব্যস্ততা না থাকায় সবাই ক্যাম্পাসে বসে খোশ-গল্পে মেতেছিলেন।

ওদিকে টগর-মুকী একে অন্যকে আক্রমনের উদ্দেশ্যে বুয়েটে নিজেদের পজিশন নিচ্ছিল। কয়েক মুহূর্তে বুয়েট পরিণত হয় যুদ্ধক্ষেত্রে। বেলা ১টার দিকে প্রথম গোলা-গুলির আওয়াজ শোনা যায়। এর কিছুদিন আগে এসব ঘটনার জের ধরে ক্যাম্পাসের ভেতরেই খুন হয়েছিলেন ঠিকাদার ‘রাশেদ’। তাই গুলির শব্দে ছাত্র-ছাত্রীরা আতংকিত হয়ে ওঠে। কেউ আশ্রয় নেয় ক্যাফেতে, কেউ হলের দিকে ছুটে যায়। সনি ছাত্রী হলে যাওয়ার পথে আহসান উল্লাহ হলে ঢুকে পড়েন। ততক্ষনে টগর গ্রুপ বুয়েট শহীদ মিনারে চলে আসে। আর মুকী গ্রুপ অবস্থান নেয় তিতুমীর হলে। প্রথম রাউন্ড গুলি বিনিময়ের পর শব্দ থেমে গেলে সনি একটু অপেক্ষা করে আহসান উল্লাহ হল থেকে বেরিয়ে আসেন। আর এটাই তার জীবনাবসানের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বুয়েটে প্রাধান্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ক্ষমতা ও অর্থলিপ্সু ছাত্র নামধারী এই দুই ক্যাডারবাহিনীর সংঘর্ষের মাঝে পড়ে গুলিবিদ্ধ হন সনি। পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে তাঁর কয়েকজন বন্ধু মিলে তাঁকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করিয়ে দেন। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল। বিকাল ৩টার দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন বুয়েটের এক নিরপরাধ হাস্যোজ্জ্বল মেধাবী মুখ।

সনির এই মৃত্যুশোক বুয়েটের সাধারণ ছাত্রদের মাঝে সত্যিকার অর্থেই সেদিন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মুখোমুখি দাঁড়াবার শক্তিতে রূপান্তরিত হয়েছিল। সেই দিন অর্থাৎ ৮ ই জুন সন্ধ্যাতেই সাধারণ ছাত্রদের প্রায় দুই আড়াই হাজার জনের একটা মিছিল ধেয়ে যায় মুকির রশীদ হলের দিকে। মুকি তখনো সেখানে ছিল কিনা নিশ্চিত না হলেও তার অপকর্মের দুই সহযোগীকে সেখানে ঘিরে ফেলে ছাত্ররা।

প্রসংগত সনি মারা যাওয়ার সময় ভিসি ছিলেন নুরুদ্দিন। তিনি সনি মারা যাওয়ার পর টিভিতে বলেন, ‘বুয়েটে কোন সন্ত্রাসী নেই, ওরা বহিরাগত’- যা সবাইকে ক্ষেপিয়ে তোলে। পরে তাকে সরিয়ে দেয়া হয় ও আলী মূর্তজাকে দেওয়া হয় দায়িত্ব। সম্ভবত আলী মূর্তজা ছিলেন বুয়েটের ইতিহাসে একমাত্র ভিসি যিনি মৌলবাদী শক্তির সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে জুতাপেটা হয়েছিলেন ।

এক পর্যায়ে ছাত্রদের থেকে দাবী ওঠে হল রেইড করে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করার। প্রথমে গড়িমসী করলেও পরে ছাত্রদের প্রবল বিক্ষোভের মুখে ভিসি তা মানতে বাধ্য হন। কিন্তু সেটা ছিলো পুলিশী অভিযানের নামে একটা প্রহসন মাত্র। পুলিশ এসে হল রেইড করার নামে উলটো আন্দোলনকারী ছাত্রদের উপরই চড়াও হয়ে তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করে, বুয়েট প্রশাসন আর পুলিশের প্রত্যক্ষ সহযোগীতায় পালিয়ে যায় খুনিদের কেউ কেউ। রাতে রশীদ হলে নিচের ফ্লোর থেকে শরীফ ও সায়হাম গ্রেপ্তার হয়। সাধারণ ছাত্ররা শরীফ ও সায়হামের বিছানা পত্র ও কম্পিউটার হলের মাঠে ফেলে পুড়িয়ে দেয় ।

পরদিন থেকে আবার শুরু হয় আন্দোলন, মুকিসহ সকল খুনীর গ্রেপ্তার ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের দাবীতে। ছাত্রদের এই গণবিস্ফোরণ ঠেকাতে সকালেই অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয় বুয়েট, হলও ভ্যাকেন্ট করে দেয়া হয়। বিকাল পর্যন্ত হল খালি করার সময় দেয়া হয়। এর পর মাস দুয়েক ধরে বুয়েটের হলে কাউকেই ঢুকতে দেয়া হয়নি, বিশেষ অনুমতি ছাড়া। কিন্তু এতেও থেমে থাকেনি বুয়েটিয়ানরা। বন্ধের মাঝেও চলতে থাকে সভা, মিটিং- মিছিল, স্মারকলিপি পেশ। অবস্থা বেগতিক দেখে এক পর্যায়ে বুয়েট কর্তৃপক্ষ নতুন নাটক ফাঁদে। ৮ জুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। তারা মুকী- শরীফ- স্বপন- সায়হামদের সাথে আন্দোলনকারী ছাত্র সুব্রত, ইন্দ্রনীল, বিজয়, শান্ত, সুদীপ্তসহ আরো অনেককে একই কাতারে ফেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করে। এ ঘটনায় সাধারণ ছাত্রদের সামনে বুয়েট প্রশাসনের মুখোশ উন্মোচিত হয়ে পারে। বুঝতে বাকি থাকে না এই গণরোষের হাত থেকে খুনীদের বাঁচাতে ছাত্রদল ক্যাডার, সরকারের পা চাটা পুলিশবাহিনীর সঙ্গে তারাও একাট্টা হয়েছে।

আন্দোলনকারীদের এভাবে হেনস্থা করার পর ৬৩ দিনের মাথায় ১১ আগস্ট বুয়েট খুলে দেয়া হয়। ওই দিনেই আবার বেগবান হয়ে ওঠে আন্দোলন । ছাত্ররা এবার শুরু করে আমরণ অনশন। দেশের বিভিন্ন জায়গা থকে বুদ্ধিজীবীরাও এসে এ আন্দোলনের সাথে তাঁদের সংহতি প্রকাশ করতে শুরু করেন। তাঁদের মাঝে ছিলেন ড. হুমায়ুন আজাদ, অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ, হারুন-উর- রশীদ, গিয়াস উদ্দিন সেলিম, সিরাজুল ইসলাম, হাজেরা সুলতানা, গোলাম কুদ্দুসসহ আরো অনেকে। আর তার বিপরীতে খুনীদেরকে বাঁচাতে এবার মরিয়া হয়ে ওঠে প্রশাসন। তাদের মদদে ছাত্রদল ক্যাডার আর পুলিশ বাহিনী এবার নগ্নভাবে লাঠি সোঠা টিয়ার গ্যাস নিয়ে হামলে পরে ছাত্রদের উপর । আর হলে বাসায় হুমকি ধামকি দেয়ার তো কোন সীমা পরিসীমা ছিল না।

এতকিছুর পরও আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর আকার ধারণ করতে থাকে। ৭ দিনের মাথায় আবার বন্ধ ঘোষণা হয় বুয়েট। এতেও আন্দোলন স্তিমিত করা যায়নি। ক্যাম্পাস ছেড়ে এবার আন্দোলন শুরু হয় রাজপথে। শাহবাগ- প্রেসক্লাব- শহীদ মিনার মুখরিত বুয়েটিয়ানদের স্লোগানে- ‘সনি হত্যার বিচার চাই’। ওই দমন নিপীড়নের মাঝেই ছাত্ররা গড়ে তোলে ‘সন্ত্রাসবিরোধী বুয়েট ছাত্র ঐক্য’ কমিটি। জাতীয় দৈনিকগুলোতেও আন্দোলন আর আন্দোলনকারীদের উপর নেমে আসা অকথ্য পাশবিক নির্যাতনের চিত্র উঠে আসতে শুরু করে। বুয়েটের ক্যাম্পাস ছাড়িয়ে এর উত্তাপ ছড়িয়ে পরে দেশের অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও।অবশেষে রাষ্ট্রযন্ত্র বাধ্য হয় বিচার কাজ শুরু করতে। মুকি অবশ্য ততদিনে দেশের বাইরে পলাতক। তার অনুপস্থিতিতেই ট্রাইব্যুনাল-১ আদালতের বিচারপতি শাহেদ নুরুদ্দিন ২০০৩ সালের ২৯ জুন টগর মুকীর ফাঁসির আদেশ দেন। সরকার ২০০৬ সালে টগর-মুকীর ফাঁসির আদেশ বাতিল করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের ব্যবস্থা করে। সেই মামলা এখনো চলছে।

বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ



মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

৩৩ বছর পর জানা গেল সুফিয়া অবস্থান পাকিস্তানে, ফেরার অপেক্ষায় স্বজনরা

প্রকাশ: ১০:১৮ এএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

১৯৯০ সালে অভিমান করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান সুফিয়া বিবি (৫৯)। পরিবারের লোকজন ওই সময় বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাননি। পরে হাল ছেড়ে দেন স্বজনরা। ধারণা ছিল, সুফিয়া হয়তো বেঁচে নেই।

গত সোমবার (১৫ এপ্রিল) হঠাৎ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘দেশে ফেরা’ নামের একটি পেজে সুফিয়ার পরিচয়সহ ভিডিও সাক্ষাৎকার প্রচার করে পরিবারের সন্ধান চাওয়া হয়। পরে তা দ্রুত ভাইরাল হয়। সুফিয়ার পরিবারের সদস্যরাও তাকে চিনতে পেরে ফিরে পেতে উদ্‌গ্রীব হয়ে উঠেন।

ফেসবুকে সুফিয়ার বক্তব্য অনুযায়ী, তিনি বর্তমানে রয়েছেন পাকিস্তানের করাচির ছোট একটি গ্রামে। সুফিয়ার গ্রামের বাড়ি রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের কাশিগঞ্জ নাওপাড়া গ্রামে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সুফিয়ারা ছয় ভাই ও পাঁচ বোন। ভাই–বোনের মধ্যে সুফিয়া চতুর্থ। ১৯৭৮ সালের দিকে তাঁর বিয়ে হয় বদরগঞ্জ উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের সৌলাপাড়া গ্রামের আবদুল জব্বারের সঙ্গে।

এরপর সুফিয়ার কোলজুড়ে আসে দুই মেয়েসন্তান, নাম রাখা হয় জোবেদা বেগম ও ছোবেদা বেগম। বিয়ের সাত বছর পর স্বামী জব্বার মারা গেলে দুই সন্তান নিয়ে সুফিয়া ফিরে আসেন বাবার বাড়িতে।

স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৯০ সালে বাবার বাড়ি থেকে অভিমান করে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সুফিয়ার বয়স ছিল ২৫-২৬ বছর। তার নিখোঁজের বছর দুয়েক পর বড় মেয়ে ছোবেদা এবং ১৬ বছর পরে ছোট মেয়ে জোবেদা মারা যান। অন্তত ২০ বছর আগে মারা গেছেন সুফিয়ার বাবা চাঁন মামুদ ও মা শরিতন নেছাও। তবে তাঁর সব ভাই-বোন এখনো বেঁচে আছেন।

সুফিয়ার ভাই সহিদার রহমান বলেন, ‘সোমবার রাতে ফেসবুকে ভিডিওতে দেখতে পাই, আমার বোন সুফিয়া মা–বাবা, ভাই–বোন সবার নাম বলছেন। তবে বোনকে দেখেই আমি চিনতে পারি। গত বুধবার মুঠোফোনে ভিডিও কনফারেন্স করে আমরা সব ভাই–বোন তাঁর সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছি। এ সময় বড় বোন সুফিয়া আমাদের খোঁজখবর নেন এবং দেশে ফেরার জন্য আকুতিমিনতি করেন। সুফিয়া বর্তমানে পাকিস্তানের করাচিতে আছেন বলে আমাদের জানিয়েছেন। কিন্তু কীভাবে তিনি পাকিস্তানে গেছেন, তা জানা সম্ভব হয়নি। এখন বোনকে কীভাবে আমরা ফেরত পাব, তা বুঝতে পারছি না। তবে আমরা তাঁকে ফেরত পাওয়ার আশায় অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় আছি।’

সুফিয়ার আরেক ভাই মতিয়ার রহমান বলেন, ‘৩৩ বছর আগে পরিবারের সদস্যদের ওপর অভিমান করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান বড় বোন সুফিয়া। তাকে অনেক জায়গায় খুঁজেও পাইনি। আমরা ধরে নিয়েছিলাম, তিনি বেঁচে নেই। হারিয়ে যাওয়ার পর মা–বাবাও শোকার্ত হয়ে মারা গেছেন। তাঁরা আজ বেঁচে থাকলে অনেক খুশি হতেন। আইনি জটিলতা কাটিয়ে এখন আমরা বোনকে পাকিস্তান থেকে ফিরিয়ে আনার জোর দাবি জানাচ্ছি সরকারের কাছে।’

মধুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আলম বলেন, ‘বিষয়টি জেনেছি। আমিও চাই, সুফিয়া নিজ দেশে স্বজনদের কাছে ফিরে আসুক। এখন সুফিয়ার স্বজনেরা যে ধরনের সহযোগিতা চাইবে, তা করা হবে।’

বদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাজির হোসেন বলেন, ‘সুফিয়ার বিষয়টি শুনেছি। তার পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ আমার সঙ্গে এখনো যোগাযোগ করেনি। যোগাযোগ করলে অবশ্যই বিষয়টি দেখা হবে।’


পাকিস্তান   সুফিয়া   নিখোঁজ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ছাত্রলীগ নেতাকে হুমকি দিলেন এমপি

প্রকাশ: ০৯:১৩ এএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail ডানে; অভিযুক্ত বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম সরোয়ার টুকু

বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদককে মোবাইল ফোনে পা ভেঙে ফেলার হুমকি দিয়েছেন বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম সরোয়ার টুকু। ফেসবুকে পোস্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে এ হুমকি দেন এমপি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হুমকি দেওয়া কল রেকর্ড ভাইরাল হয়েছে। গত বুধবার (১৭ এপ্রিল) রাতে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে হুমকির ওই কল রেকর্ডটি ভাইরাল হয়।

ভুক্তভোগী ওই ছাত্রলীগ নেতার নাম জুম্মান আহমেদ লিছন। তিনি বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।

৩১ সেকেন্ডের ওই কল রেকর্ডটিতে জেলা ছাত্র লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জুম্মান আহমেদ লিছনকে উদ্দেশ করে সংসদ সদস্য গোলাম সরোয়ার টুকুকে বলতে শোনা যায়, ‘এ তুমি ফেসবুকে কী লিখছো মোর সম্পর্কে? তোমার এতখানি অডাসিটি? ভাবোকি নিজেরে? তাজমহল সাহিত্য চো... না! ঠ্যাং ভাইঙ্গা...দিমু, তুই চেনো আমারে? তুই তাজমহল ল্যাহো, আমি ওহানে গেছি একটা দলের প্রোগ্রামে, পৌরসভার প্রোগ্রামে। আমার সম্পর্কে নেগেটিভ লেখো? তোর রাজনীতি আমি... ভরে দেব। তুই চেনো আমারে? বেশি বাড়ছো তোরা, অসভ্য।’

বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জুম্মান আহমেদ লিছন বলেন, ‘ভুল বোঝাবুঝির জন্য এমনটা হয়েছে। তাকে যে পোস্টের স্ক্রিনশট দেখানো হয়েছে সেটি সুপার এডিট করা। তবে একজন সংসদ সদস্য, জেলা আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে একজন ছাত্রলীগ কর্মীকে যেভাবে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে, সেটা কাম্য নয়।

এ বিষয়ে বরগুনা-১ আসনে সংসদ সদস্য ও বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম সরোয়ার টুকুর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া সম্ভব হয়নি।

বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির বলেন, আমি ঢাকায় যাচ্ছি, এসে মিটিং ডেকে আমাদের মতামত দেব।


ছাত্রলীগ   গোলাম সরোয়ার টুকু  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

কেএনএফের হাতে অপহৃত সেই ব্যাংক ম্যানেজারকে চট্টগ্রামে বদলি

প্রকাশ: ০৮:৩৭ এএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বান্দরবানের রুমায় সন্ত্রাসী গ্রুপ কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) হাতে অপহৃত সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার নেজাম উদ্দীনকে চট্টগ্রামে বদলি করা হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে উদ্ধার হওয়ার পর বান্দরবানের রুমা শাখা থেকে বিশেষ বিবেচনায় তাকে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী শাখার ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, বান্দরবানের রুমা শাখার সিনিয়র অফিসার (ক্যাশ) নারায়ন দাশকে শাখাটির ব্যবস্থাপক (ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছে সোনালী ব্যাংক। সোনালী ব্যাংকের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রীতি কুসুম চাকমার সই করা এক নোটিশে তাদের বদলি করা হয়।

ওই নোটিশ অনুযায়ী, বান্দরবানের রুমা শাখার নেজাম উদ্দীনকে কর্ণফুলী শাখার ম্যানেজার (সিনিয়র অফিসার) ও যুগ্ম-জিম্মাদার (সাধারণ) করা হয়েছে। কর্ণফুলী শাখার ম্যানেজার মু. রেজাউর রহমানকে (প্রিন্সিপাল অফিসার) চট্টগ্রামের কে. বি বাজার শাখায় এবং কে. বি বাজার শাখার ম্যানেজার হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদকে (প্রিন্সিপাল অফিসার) প্রিন্সিপাল অফিস, পটিয়ার (চট্টগ্রাম) প্রিন্সিপাল অফিসার হিসেবে বদলি করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২ এপ্রিল রাতে বান্দরবানের রুমা উপজেলায় সোনালী ব্যাংকে ডাকাতির চেষ্টা করে পার্বত্য এলাকার সন্ত্রাসী গ্রুপ কেএনএফ। তখন ব্যাংকের ভল্ট খুলতে না পেরে হামলাকারীরা ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে ৪ এপ্রিল তাকে উদ্ধার করা হয়।


কেএনএফ   ব্যাংক ম্যানেজার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

সব দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ: সমাজকল্যাণ মন্ত্রী

প্রকাশ: ০৮:২৬ এএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, বাংলাদেশকে নিয়ে আমাদের অনেক স্বপ্ন। এই স্বপ্নটি আমাদের দেখিয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি শুধু স্বপ্ন দেখাননি, আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। আর এখন বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হচ্ছে। 

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাতে চাঁদপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সব দিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা ক্ষুধা, দারিদ্র্য মুক্ত দেশ গড়ে তুলেছি। শিক্ষা,সংস্কৃতি, ক্রীড়া, উন্নয়নসহ সকল দিকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, এতকিছুর পরেও কিছুটা ভয় আমাদের আছে। স্বাধীনতা সংগ্রামে যে পক্ষটি বিরোধিতা করেছে, যারা চেয়েছে, আমরা কখনও স্বাধীন না হই, যারা রবীন্দ্রনাথকে নিষিদ্ধ করেছিল, নজরুলকে খণ্ডিত করেছিল, আমাদের সংস্কৃতি চর্চাকে বাধাগ্রস্ত করেছিল, তারা এখনও বসে নেই। তারা তাদের চক্রান্ত করে যাচ্ছে। তারা আমাদের ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে আমাদের সংস্কৃতি চর্চাকে বাধাগ্রস্ত করছে।

দীপু মনি বলেন, এর থেকে উত্তরণে সংস্কৃতির পুনর্জাগরণ প্রয়োজন। সমাজ-সংসার, ব্যক্তিজীবনে এই জাগরণ প্রয়োজন। ধর্মের খণ্ডিত অপব্যাখ্যা দিয়ে একটি জাতিকে সংস্কৃতি চর্চা থেকে দূরে সরিয়ে রাখলে সে জাতি কখনোই এগিয়ে যেতে পারবে না। আমরা বাঙালি এটিই আমাদের পরিচয়। আমাদের এই পরিচয়কে খণ্ডিত করার অপচেষ্টাকে প্রতিরোধ করতে হবে। সংস্কৃতি আর রাজনীতি যখনই হাতে হাত মিলিয়ে রাজপথে হেঁটেছে, তখনই আমাদের অধিকার আদায় হয়েছে। 

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রজত শুভ, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাড. রনজিত রায় চৌধুরী, যুব লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য অ্যাড. জাফর ইকবাল মুন্না, চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক গোপাল চন্দ্র সাহা, আনন্দধ্বনি সঙ্গীত শিক্ষায়তনের সভাপতি মো. মোশারেফ হোসেন প্রমুখ।


সমাজকল্যাণ মন্ত্রী  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

পাবনায় ভারতীয় চিনিবোঝাই ১২ ট্রাকসহ আটক ২৩

প্রকাশ: ০৮:১৪ এএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

পাবনার আমিনপুরের কাজিরহাট ফেরিঘাটে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় চিনিবোঝাইসহ ১২ ট্রাক জব্দ করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় চালক ও হেলপারসহ ২৩ জনকে আটক করা হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টার দিকে তাদের আটক করা হয় বলে নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার (এসপি) আকবর আলী মুন্সী।

নামপ্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের একটি সূত্র জানায়, ভারতীয় চিনিবোঝাই ট্রাকগুলো সিলেটের জয়ন্তপুর সীমান্ত হয়ে ঢুকে উত্তরবঙ্গে যাচ্ছিল। মানিকগঞ্জের আরিচা ও পাবনার কাজিরহাট ঘাট হয়ে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হবে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আগে থেকেই অবস্থান নিয়েছিল ডিবি। এসব ট্রাকে অন্তত আড়াই শতাধিক টন চিনি আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, ভারতীয় চিনিবোঝাই ট্রাকগুলো আরিচা পার হয়ে পাবনার কাজিরহাট ঘাটে এলে ডিবি পুলিশ আটক করে। এ সময় তারা মালামালের বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। এরপর এগুলো জব্দ করা হয় এবং ২৩-২৪ জনকে আটক করা হয়।

তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন। তদন্তের পর আরও বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।


ভারতীয় ট্রাক   আটক  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন