নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ০৪ এপ্রিল, ২০২০
গত দুই দিনে বাংলাদেশে করোনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। পাঁচশর অধিক করে পরীক্ষা করা হয়েছে এই দুই দিনে। যার ফলে রোগী শনাক্তের সংখ্যাও বেড়েছে। করোনা পজিটিভের সংখ্যা গতকাল ছিল পাঁচজন, আজ তা লাফিয়ে বেড়ে নতুন রোগীর শনাক্তর সংখ্যা পৌঁছেছে ৯ জন এ। এই পর্যন্ত বাংলাদেশে ৭০ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে যে, তাঁরা পরীক্ষার হার আরো বাড়াচ্ছে এবং পর্যায়ক্রমে ১ হাজার বা তাঁর বেশি পরীক্ষার ব্যবস্থা নিচ্ছে। আজ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনলাইন ব্রিফিংয়ে এসিব তথ্য জানানো হয়েছে। বাংলাদেশে একদিনে সর্বোচ্চ ৯ জন রোগী পাওয়া গেছে এটা বিশ্ব প্রেক্ষাপটে গুরুতর কোন খবর নেই। কারণ অন্যান্য দেশ- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, স্পেনে যেভাবে জ্যামিতিক হারে সংখ্যা বাড়ছে, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে সেই পরিস্থিতি হয়নি। বরং বিশ্ব প্রেক্ষাপটে নতুন ৯ জন রোগী শনাক্ত হওয়াটা তেমন উদ্বেগজনক ঘটনা নয়। তবে বিশ্বষজ্ঞরা মনে করছেন, এি নিয়ে যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ রয়েছে।
কারণটা হলো প্রথমত, পরীক্ষা বাড়ানোর পরেই যেহেতু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, তাঁর মানে এখনো অনেক জায়গায় অপরীক্ষিত ব্যক্তি রয়েছে যারা করোনায় আক্রান্ত বা কোভিড-১৯ পজিটিভ। এই ব্যক্তিগুলো এখনো পরীক্ষার আওতার বাইরে আছে। ফলে এদেরকে পরীক্ষা করা হলে রোগীর সংখ্যা বাড়তে পারে- এমনটা আশঙ্কা করছেন অনেক বিশেষজ্ঞ। দ্বিতীয়ত, পরীক্ষার ব্যপ্তি না বাড়ার ফলে এখনো অনেক করোনা পজিটিভ ব্যক্তিরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন এবং সামাজিক সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। এই কারণে করোনা মোকাবেলা কঠিন হয়ে যাবে এবং একটি দীর্ঘমেয়াদি সঙ্কটের দিকে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই এখনই সামাজিক দুরুত্ব এবং সঙ্গ নিরোধটা জোরালো ভাবে কার্যকর করা উচিত।
তৃতীয়ত, অনেকেরই মৃদু সংক্রমণ হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনায় আক্রান্তের ৮০ ভাগেরই মৃদু সংক্রমণ ঘটে এবং মৃদু সংক্রমণের কারণে কোন উপসর্গ ছাড়াই তাঁরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন এবং চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছে না। ফলে পরীক্ষার বাইরে থেকে যাচ্ছে বড় সংখ্যক জনগোষ্ঠী। সে কারণে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমরা যদি এখনই করোনা শনাক্তের পরীক্ষার বিস্তৃতি ঘটাতে না পারি এবং সামাজিক বিচ্ছিন্নতা- যা আগামী ১৪ তারিখ পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে, তা যদি মেনে না চলি তাহলে বাংলাদেশের অবস্থা যেকোন সময়ে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারি এবং মহামারির পথে হাঁটতে পারে বাংলাদেশও। তাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমরা যদি আগামী ৭ দিন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেয়া নির্দেশনা মেনে চলি এবং সঙ্গনিরোধের প্রক্রিয়া পালন করি তাহলে আমরা করোনা মোকাবেলায় সফল হতে পারবো। তা না হলে বাংলাদেশকেও যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন কিংবা ইতালির মতো অবস্থা বরণ করে নিতে হতে পারে।
চিকিৎসকরা বলছেন, সিদ্ধান্তটা আমাদের। আমরা কি বাংলাদেশে মহামারি চাই? নাকি আমরা এর সংক্রমণ ঠেকাতে চাই? এই সিদ্ধান্তটি আমাদেরকেই নিতে হবে। কারণ করোনা মোকাবেলায় ব্যক্তিগত সচেতনতাটাই বেশি, এখানে সরকার বা চিকিৎসকরা প্রাথমিক পর্যায়ে খুবই গৌণ। আমরা যদি সংক্রমিত না হই, আমরা যদি মৃদু উপসর্গেও ঘরে থাকি বা এই কটা দিন যদি সাধারণ মেলামেশা বন্ধ করি তাহলেই আমরা এই মহামারি ঠেকাতে পারবো। আর আমরা যদি দায়িত্বহীনতার পরিচয় দেই,আমরা যদি নানা অজুহাতে ঘর থেকে বের হই, বাজার, দোকান কিংবা মসজিদে গিয়ে ভিড় জমাই, তাহলে বাংলাদেশও হতে পারে পরবর্তী মৃত্যুপুরী।
মন্তব্য করুন
বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদককে মোবাইল ফোনে পা ভেঙে
ফেলার হুমকি দিয়েছেন বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম সরোয়ার টুকু। ফেসবুকে পোস্ট দেওয়াকে
কেন্দ্র করে এ হুমকি দেন এমপি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হুমকি দেওয়া কল রেকর্ড ভাইরাল হয়েছে। গত
বুধবার (১৭ এপ্রিল) রাতে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে হুমকির ওই কল রেকর্ডটি ভাইরাল হয়।
ভুক্তভোগী ওই ছাত্রলীগ নেতার নাম জুম্মান আহমেদ লিছন। তিনি বরগুনা
জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।
৩১ সেকেন্ডের ওই কল রেকর্ডটিতে জেলা ছাত্র লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক
জুম্মান আহমেদ লিছনকে উদ্দেশ করে সংসদ সদস্য গোলাম সরোয়ার টুকুকে বলতে শোনা যায়, ‘এ
তুমি ফেসবুকে কী লিখছো মোর সম্পর্কে? তোমার এতখানি অডাসিটি? ভাবোকি নিজেরে? তাজমহল
সাহিত্য চো... না! ঠ্যাং ভাইঙ্গা...দিমু, তুই চেনো আমারে? তুই তাজমহল ল্যাহো, আমি ওহানে
গেছি একটা দলের প্রোগ্রামে, পৌরসভার প্রোগ্রামে। আমার সম্পর্কে নেগেটিভ লেখো? তোর রাজনীতি
আমি... ভরে দেব। তুই চেনো আমারে? বেশি বাড়ছো তোরা, অসভ্য।’
বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জুম্মান আহমেদ লিছন বলেন,
‘ভুল বোঝাবুঝির জন্য এমনটা হয়েছে। তাকে যে পোস্টের স্ক্রিনশট দেখানো হয়েছে সেটি সুপার
এডিট করা। তবে একজন সংসদ সদস্য, জেলা আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে একজন ছাত্রলীগ
কর্মীকে যেভাবে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে, সেটা কাম্য নয়।
এ বিষয়ে বরগুনা-১ আসনে সংসদ সদস্য ও বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম
সাধারণ সম্পাদক গোলাম সরোয়ার টুকুর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও
তাকে পাওয়া সম্ভব হয়নি।
বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির বলেন,
আমি ঢাকায় যাচ্ছি, এসে মিটিং ডেকে আমাদের মতামত দেব।
মন্তব্য করুন
বান্দরবানের রুমায় সন্ত্রাসী গ্রুপ কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের
(কেএনএফ) হাতে অপহৃত সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার নেজাম উদ্দীনকে চট্টগ্রামে বদলি করা
হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে উদ্ধার হওয়ার পর বান্দরবানের রুমা শাখা থেকে বিশেষ বিবেচনায়
তাকে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী শাখার ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, বান্দরবানের রুমা শাখার সিনিয়র অফিসার (ক্যাশ) নারায়ন
দাশকে শাখাটির ব্যবস্থাপক (ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছে সোনালী ব্যাংক। সোনালী
ব্যাংকের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রীতি কুসুম চাকমার সই করা এক নোটিশে তাদের বদলি
করা হয়।
ওই নোটিশ অনুযায়ী, বান্দরবানের রুমা শাখার নেজাম উদ্দীনকে কর্ণফুলী
শাখার ম্যানেজার (সিনিয়র অফিসার) ও যুগ্ম-জিম্মাদার (সাধারণ) করা হয়েছে। কর্ণফুলী শাখার
ম্যানেজার মু. রেজাউর রহমানকে (প্রিন্সিপাল অফিসার) চট্টগ্রামের কে. বি বাজার শাখায়
এবং কে. বি বাজার শাখার
ম্যানেজার হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদকে (প্রিন্সিপাল অফিসার) প্রিন্সিপাল অফিস, পটিয়ার
(চট্টগ্রাম) প্রিন্সিপাল অফিসার হিসেবে বদলি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২ এপ্রিল রাতে বান্দরবানের রুমা উপজেলায় সোনালী ব্যাংকে
ডাকাতির চেষ্টা করে পার্বত্য এলাকার সন্ত্রাসী গ্রুপ কেএনএফ। তখন ব্যাংকের ভল্ট খুলতে
না পেরে হামলাকারীরা ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে ৪ এপ্রিল তাকে
উদ্ধার করা হয়।
মন্তব্য করুন
সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, বাংলাদেশকে নিয়ে আমাদের
অনেক স্বপ্ন। এই স্বপ্নটি আমাদের দেখিয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
তিনি শুধু স্বপ্ন দেখাননি, আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। আর এখন বঙ্গবন্ধুর কন্যা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হচ্ছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাতে চাঁদপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি
মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সব দিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা ক্ষুধা,
দারিদ্র্য মুক্ত দেশ গড়ে তুলেছি। শিক্ষা,সংস্কৃতি, ক্রীড়া, উন্নয়নসহ সকল দিকে বাংলাদেশ
এগিয়ে যাচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, এতকিছুর পরেও কিছুটা ভয় আমাদের আছে। স্বাধীনতা সংগ্রামে
যে পক্ষটি বিরোধিতা করেছে, যারা চেয়েছে, আমরা কখনও স্বাধীন না হই, যারা রবীন্দ্রনাথকে
নিষিদ্ধ করেছিল, নজরুলকে খণ্ডিত করেছিল, আমাদের সংস্কৃতি চর্চাকে বাধাগ্রস্ত করেছিল,
তারা এখনও বসে নেই। তারা তাদের চক্রান্ত করে যাচ্ছে। তারা আমাদের ধর্মের অপব্যাখ্যা
দিয়ে আমাদের সংস্কৃতি চর্চাকে বাধাগ্রস্ত করছে।
দীপু মনি বলেন, এর থেকে উত্তরণে সংস্কৃতির পুনর্জাগরণ প্রয়োজন।
সমাজ-সংসার, ব্যক্তিজীবনে এই জাগরণ প্রয়োজন। ধর্মের খণ্ডিত অপব্যাখ্যা দিয়ে একটি জাতিকে
সংস্কৃতি চর্চা থেকে দূরে সরিয়ে রাখলে সে জাতি কখনোই এগিয়ে যেতে পারবে না। আমরা বাঙালি
এটিই আমাদের পরিচয়। আমাদের এই পরিচয়কে খণ্ডিত করার অপচেষ্টাকে প্রতিরোধ করতে হবে। সংস্কৃতি
আর রাজনীতি যখনই হাতে হাত মিলিয়ে রাজপথে হেঁটেছে, তখনই আমাদের অধিকার আদায় হয়েছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রজত শুভ, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাড. রনজিত রায় চৌধুরী, যুব লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য অ্যাড. জাফর ইকবাল মুন্না, চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক গোপাল চন্দ্র সাহা, আনন্দধ্বনি সঙ্গীত শিক্ষায়তনের সভাপতি মো. মোশারেফ হোসেন প্রমুখ।
মন্তব্য করুন
পাবনার আমিনপুরের কাজিরহাট ফেরিঘাটে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় চিনিবোঝাইসহ
১২ ট্রাক জব্দ করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় চালক ও হেলপারসহ ২৩ জনকে আটক করা
হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টার দিকে তাদের আটক করা
হয় বলে নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার (এসপি) আকবর আলী মুন্সী।
নামপ্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের একটি সূত্র জানায়, ভারতীয় চিনিবোঝাই
ট্রাকগুলো সিলেটের জয়ন্তপুর সীমান্ত হয়ে ঢুকে উত্তরবঙ্গে যাচ্ছিল। মানিকগঞ্জের আরিচা
ও পাবনার কাজিরহাট ঘাট হয়ে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হবে। গোপন সংবাদের
ভিত্তিতে আগে থেকেই অবস্থান নিয়েছিল ডিবি। এসব ট্রাকে অন্তত আড়াই শতাধিক টন চিনি আছে
বলে ধারণা করা হচ্ছে। পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ভারতীয় চিনিবোঝাই ট্রাকগুলো আরিচা পার হয়ে পাবনার
কাজিরহাট ঘাটে এলে ডিবি পুলিশ আটক করে। এ সময় তারা মালামালের বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি।
এরপর এগুলো জব্দ করা হয় এবং ২৩-২৪ জনকে আটক করা হয়।
তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন। তদন্তের পর আরও বিস্তারিত
তথ্য জানানো হবে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন